বিষয়ঃ সম্পদ (RESOURCE) ভূগোলের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

1 . সম্পদ ( RESOURCE ) ।
উত্তরঃ 1950 খ্রিস্টাব্দের পূর্বে পৃথিবীর সমস্ত বস্তুকেই সম্পদ বলে মনে করা হত , যা সম্পদের স্থিতিশীল সংজ্ঞা নামে পরিচিত । কিন্তু 1950 খ্রিস্টাব্দের পর বর্তমানে সম্পদের গতিশীল সংজ্ঞা দ্বারা যা চাহিদা মেটানাের জন্য সৃষ্ট বা আহৃত সামগ্রী এবং যা জীবমণ্ডলের সংরক্ষণে সহায়তা করে , তাকেই সম্পদ বলে । জিমারম্যানের মতে , ( 1951 খ্রিস্টাব্দে ) সম্পদ হল বস্তুর সেই কাম্য শক্তি যা মানুষের অভাবমােচন করে , চাহিদা মেটায় ’ অর্থাৎ সম্পদ কোন বস্তু বা পদার্থ নয় , বস্তু বা পদার্থের মধ্যথিত কার্যকরী শক্তি ।

2 . সম্পদের বৈশিষ্ট্য ( CHARACTERISTICS OF RESOURCE ) ।
উত্তরঃ যে সকল বৈশিষ্ট্যের জন্য কোন বস্তুকে সম্পদরূপে গণ্য করা হয় , সেগুলি নিম্নরূপ
i ) সম্পদের উপযােগিতা থাকবে ( উদাহরণ – লােহা , কয়লা ) ।
ii ) সম্পদের কার্যকারিতা থাকবে ।
iii ) সম্পদের প্রয়ােগযােগ্যতা ও গ্রহণযােগ্যতা থাকবে ।
iv ) সম্পদের কার্যকারিতা ও উপযােগিতা একমুখী বা বহুমুখী ( যেমন — জল ) ।
v ) ম্যালথাস , মেডােস ও অ্যাডাম স্মিথের মতে , সম্পদ সীমাবদ্ধ ।
vi ) সম্পদের জীবমণ্ডল সংরক্ষণ করার ক্ষমতা আছে ।
vii ) সম্পদের পরিবেশমিত্রতা ধর্ম থাকা প্রয়ােজন ।

3 . সম্পদের প্রকৃতি ( NATURE OF RESOURCE ) ।
উত্তরঃ সম্পদের নিম্নলিখিত প্রকৃতি দেখা যায় । যথা . ( i ) কোন বস্তু বা পদার্থের কার্যকারিতাই সম্পদ ।
( ii ) সম্পদ পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ ,
( iii ) কেবল স্পর্শযােগ্য বস্তুই নয় , স্পর্শ করা যায় না এমন ( যেমন — জ্ঞান, দক্ষতা, গুণ) উপাদানও সম্পদ।
( iv ) সম্পদের ধারণা আপেক্ষিক স্থান – কাল নির্ভর ,
( v ) কিছু সম্পদ বারবার ব্যবহার করা যায়।
( vi ) সম্পদ প্রকৃতি ও মানুষের নিরন্তর সংগ্রামের ফল,
( vii ) সম্পদ মানুষের অর্থনৈতিক প্রগতির ভিত্তি
( viii ) আজ নিরপেক্ষ বস্তু তা কাল সম্পদে পরিণত হতে পারে ।
4 . নিরপেক্ষ উপাদান ( NEUTRAL STAFF ) ।
উত্তরঃ পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত যে সব বস্তু বা পদার্থ সম্পদ নয় আবার সম্পদ উৎপাদনে কোন বাধা বা প্রতিরােধ সৃষ্টি করে না , সেইসব সামগ্রীকেই নিরপেক্ষ উপাদান বলে ।
বৈশিষ্ট্য : . i ) মানুষের উপর নিরপেক্ষ উপাদানের কোন অনুকুল বা প্রতিকূল প্রভাব নেই । ii ) আজ যা নিরপেক্ষ উপাদান তা আগামী দিনে সম্পদে পরিণত হতে পারে । ‘ iii ) সম্পদ ও নিরপেক্ষ উপাদানের সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতী ।
উদাহরণ ; একখণ্ড পতিত জমি আজ নিরপেক্ষ বস্তু হলেও জলসেচ , সার প্রয়োেগ দ্বারা তাকে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব । পৃথিবীতে দিন দিন নিরপেক্ষ উপাদানের সংখ্যা কমছে ।

5 . সম্পদ সষ্টির উপাদানগুলি কী কী ? বা , সম্পদ সৃষ্টিতে মানুষ ও সংস্কৃতির ভূমিকা ।
উত্তরঃ প্রকৃতি ( Nature ) , মানুষ ( Man ) ও সংস্কৃতি ( caplet ) – এই ত্রি শক্তির সুষম সমষ্টিতে সম্পদ সৃষ্টি ।
A ) প্রকৃতি : প্রকৃতিই সম্পদ সৃষ্টির মূল উপাদান বা সম্পদ সৃষ্টির ভিত্তি । জিমারম্যানের মতে , “ প্রকৃতির সাহায্য , নির্দেশ ও সম্মতি নিয়েই সম্পদ সৃষ্টি হয় । এক্ষেত্রে অনুঘটক প্রয়ােজন মানুষ ও সংস্কৃতির ।
B ) মানুষ : মানুষও সম্পদ সৃষ্টির অন্যতম উপাদান । মানুষের ভােগের মাধ্যমেই সম্পদের | সার্থকতা । মানুষই আপন শ্রম ও বুদ্ধি বলে প্রাকৃতিক বস্তুকে সম্পদে পরিণত করে । যেমন | প্রতিকূল পরিবেশ সত্ত্বেও জাইরেতে মানুষের চেষ্টায় রবার উৎপাদিত হচ্ছে । কিন্তু মনুষ্য সম্পদের অভাবে ব্রাজিলে তা সম্ভব হয়নি ।
C ) সংস্কৃতি : জিমারম্যানের ভাষায় – “ শিক্ষা , পাণ্ডিত্য , অভিজ্ঞতা , ধর্ম , সভ্যতা , বুচি , সহযােগিতা ও ন্যায়বিচার এগুলিই সংস্কৃতি ” । প্রাকৃতিক বস্তুকে মানুষ সংস্কৃতি দ্বারা সম্পদে পরিণত করেছে ।

6 . ফ্যানটম পাইল ( PHANTOM PILE ) ।
উত্তরঃ পৃথিবীতে পদার্থের সঞ্চয় নির্দিষ্ট হলেও কার্যকারিতা নির্দিষ্ট নয় । তাই একদিকে সম্পদের ওজন ও আয়তনগত সংকোচন ও অপরদিকে সম্পদের কার্যকরী ক্ষমতা বৃদ্ধির দ্বারা সেই সম্পদের প্রকৃত ক্ষয়ের ক্ষতিপূরণকে ফ্যানটম পাইল বলে । ধরিলাম , বর্তমানে 10 কোটি টন কয়লার সময় আছে এবং কয়লার কার্যকারিতা 3 গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । ফলে 10 x 3 = 30 কোটি টন কয়লার সমান সম্পদ পাওয়া সম্ভব । এই অতিরিক্ত কয়লা সম্পদের কোন প্রকৃত অস্তিত্ব নেই বলে একে ফ্যানটম পাইল বা সম্পদের ভেীতিক । সয় বলা হয় ।

7 . পুনর্ভব বা প্রবাহমান সম্পদ ( RENEWABLE বা FLOW RESOURCE ) ।
উত্তরঃ প্রকৃতিতে এমন কিছু সম্পদ রয়েছে যাকে কোন দিনই ব্যবহার করে শেষ করা যাবে না অর্থাৎ যার কোন শেষ নেই — অসীম , তাদের প্রবাহমান সম্পদ বলে ।
বৈশিষ্ট্য : i ) প্রকৃতি পরিবেশে বারবার ফিরিয়ে দেয় , তাই একে পূরণশীল সম্পদ বলে । ii ) প্রবাহমান সম্পদ পৃথিবীর সর্বত্র প্রাপ্য । iii ) প্রবাহমান সম্পদ কোন পরিবেশ দূষণ করে না ।
উদাহরণ ; বাতাস , সৌরকিরণ ও সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি প্রবাহমান সম্পদের প্রকৃষ্ট উদাহরণ ।

8 . অপনৰ্ভব বা গচ্ছিত সম্পদ ( NON – RENEWABLE বা FUND ) ।
উত্তরঃ প্রকৃতিতে যে সব সম্পদের ব্যবহার সীমিত ও সুনির্দিষ্ট এবং যে সম্পদ ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে শেষ হয়ে যায় , তাকে গচ্ছিত বা অপুনর্ভব সম্পদ বলে ।
বৈশিষ্ট্য : 1 ) এই সম্পদকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না । ii ) গচ্ছিত সম্পদে পরিবেশ দূষণ ব্যাপক হয় ।
উদাহরণ : কয়লা , লৌহ , বক্সাইট , খনিজ তেল ইত্যাদি ।
9 . জৈব সম্পদ ( BIOTIC RESOURCE ) ।
উত্তরঃ প্রাকৃতিক সম্পদের একটি অন্যতম শ্রেণী জৈব সম্পদ । প্রকৃতিমাতার ক্রোড়ে পরম স্নেহে লালিতে ও অবাধে বিচরিত যে সকল সম্পদে জীবনের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয় , তাকে জৈব সম্পদ বলা হয় ।
উদাহরণস্বরুপ উদ্ভিদ , তৃণ , বিভিন্ন জীবজন্তু ও মৎস্য প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য ।

10 . অজৈব সম্পদ ( ABIOTIC RESOURCE ) ।
উত্তরঃ যে সকল প্রাকৃতিক অপুনর্ভব সম্পদের মধ্যে জীবনের ক্ষীণতম আলােটুকুও পরিলক্ষিত হয় না , তাকে অজৈব সম্পদ হিসাবে অভিহিত করা হয় । যেমন — জল , বায়ু , সূর্যালােক , বিভিন্ন খনিজ সম্পদ প্রভৃতি ।

11 . সাংস্কৃতিক সম্পদের কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে ( Cultural resource ) প্রভাব ।
উত্তরঃ সংজ্ঞা সাংস্কৃতিক সম্পদ হল মানুষের মধ্যে বিদ্যা , বুদ্ধি , উদ্ভাবনী ক্ষমতা , সংগঠন , কারীগরী দক্ষতা প্রভৃতি ।
    কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রাকৃতিক ও মানবীয় সম্পদের সাথে সাংস্কৃতিক সম্পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
উদাহরণঃ প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্তেও ব্রাজিল , দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশ সাংস্কৃতিক সম্পদের অভাবে অর্থনৈতিক দিক থেকে পশ্চাদপদ । অপরদিকে , জাপান সহ প্রভৃতি দেশ প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব থাকা সত্তেও উদ্ভাবনী ক্ষমতা , বিদ্যা বৃদ্ধি উন্নত কারিগরী দক্ষতার গুণে অৰ্থনৈতিক উন্নতিকে ত্বরান্বিত করেছে ।

12 . জৈব সম্পদ ও অজৈব সম্পদের পার্থক্য ?
উত্তরঃ বিষয় যে সকল সম্পদ জীবজগৎ থেকে আহরণ করা হয় , তাকে জৈব সম্পদ বলে ।
    যে সকল সম্পদ জীবজাত নয় , তাকে অজৈব সম্পদ বলে ।
প্রকৃতি এই সম্পদ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণ সম্পদ ।
     এই সম্পদ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রবাহমান সম্পদ ।
দূষণ এই সম্পদ ব্যবহারে পরিবেশ কম দূষিত হয় ।
     ব্যাপক পরিবেশ দূষণ হয় ( যেমন জলদূষণ ) ।
উদাহরণ কাষ্ঠ , মৎস্য ও দুগ্ধ ।
   অক্সিজেন , জল ও লৌহ – আকরিক ।

13 . সম্পদের কার্যকারিতা তত ( FUNCTIONAL THEORY OF RESOURCES ) ।
উত্তরঃ 1933 খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক জিমারম্যান সম্পদের কার্যকারিতা তত্ত্ব দেন । মানুষের কাছে কোন অপ্রয়ােজনীয় বস্তুর প্রয়ােজনীয় হয়ে ওঠার কারণ ও পর্যায় ব্যাখ্যা করাই হল সম্পদের কার্যকারিতা তত্ত্বের মূল কথা । মানুষের চাহিদা , সাংস্কৃতিক স্তর ও আর্থ – সামাজিক লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে সম্পদ তৈরি হয় । আর মানুষের শ্রম , দক্ষতা , জ্ঞান , বুদ্ধি , সামর্থ্য ও গবেষণা সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে । তাই মিচেল বলেছেন – “ Greatest among human resources is knowledge . ” এই তত্ত্বের আবিস্কারের । গতি আজও অব্যাহত । তাই বলা যায় , এই তত্ত্ব নিয়তই চিরপরিবর্তনশীল ।

14 . সম্ভাব্য সম্পদ ( POTENTIAL RESOURCE ) ।
উত্তরঃ সম্ভাব্য সম্পদ বলতে বােঝায় যে সমস্ত বস্তু বা উপাদানসমূহ কোন উপযােগিতা ব্যতিরেকেই প্রকৃতিতে অবস্থান করছে , কিন্তু সম্পদ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে না ; ভবিষ্যতে মানুষ ও সংস্কৃতির যৌথ মিলনক্ষেত্রে । ঐ সমস্ত বস্তুর ত্রিসঙ্গমের ফলে উপযােগিতা সৃষ্টি করে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব , সেই সমস্ত উপাদান । বা বস্তু সমূহকে সম্ভাব্য সম্পদ বলে ।
উদাহরণ ; উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে বিপুল পরিমাণ ভূমি বর্তমানে সম্ভাব্য সম্পদের অন্তর্গত । কারণ কৃত্রিম উপায়ে বরফমুক্ত করে ওখানে কিছু পরিমাণ ভূমিকে কৃষির আওতায় আনা সম্ভব ।

15 . সম্পদ প্রত্যক্ষকরণ ।
উত্তরঃ বিশ্বে প্রাকৃতিক সম্পদের বন্টন অসামা । দেখা যায় কোন দেশ প্রাকৃতিক সম্পদে খুবই সমৃদ্ধ ( যেমন ব্রাজিল ) হওয়া সত্তেও অর্থনৈতিক উন্নতি খুব একটা সম্ভব হয়নি অথচ কোন দেশ ( যেমন – জাপান ) প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃণ না হওয়া সত্ত্বেও সেই দেশের উন্নয়ন অভাবনায় । অথাৎ সম্পদের কার্যকারিতা । নির্ভর করে মানুষ কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার বা কাজে লাগাতে পেরেছে তার উপর । সম্পদ সম্পর্কে মানুষের এই ব্যবহারগত আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্পদ প্রত্যক্ষকরণ বলে ।

16 . সম্পদ উপলদ্ধি ( RESOURCE PERCEPTION ) ।
উত্তরঃ কোন দেশের সম্পদের উপলদ্ধিতা নির্ভর করে ওই দেশ কতটা তার প্রযুক্তিবিদ্যাকে কাজে লাগিয়েছে । তার উপর । বুদ্ধি , বিদ্যা , প্রযুক্তি কৌশল ও উদ্ভাবনী শক্তি সম্পদের উপলদ্ধিতা বাড়াতে সাহায্য করে । যেমন — আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন শহরতলীতে আবর্জনা হিসাবে থাকলেও ইউরােপ – আমেরিকার । বিভিন্ন শহরে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগে ।

17 . সম্পদের বিকল্পিকরণ ( RESOURCE SUBSTITUTION ) ।
উত্তরঃ কোন গচ্ছিত সম্পদকে ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহার করার ফলে ওই সম্পদের আয়ু দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে । তাই বিকল্প শক্তির দিকে মানুষকে ঝুঁকতে হয়েছে । কয়লার আয়ুষ্কাল মাত্র 240 বৎসর । তাই বর্তমানে কয়লার পরিবর্তে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে । আর এটিই সম্পদের বিকল্পিকরণ নামে । পরিচিত । এর ফলে যেমন সম্পদের অপচয় কম হয় , তেমনি পরিবেশ দূষণও কম হয় ।

18 . মানব সম্পদ ।
উত্তরঃ মানুষ তার বিদ্যা – বুদ্ধি কর্মকুশলতা , শ্রম দ্বারা খনিজ , বনজ , প্রাণীজ দ্রব্য গুলােকে চাহিদাপূরণের উপায়ে পরিণত করলে সেরূপ মানুষকে মানব সম্পদ বলে । MAN এর M হল Manger , Master and Manufacture A – Accommodating Adviser , Arpiratin , N – Neighbourly অর্থাৎ মানুষ সম্পদ হল , তার কৃষ্টি , শিক্ষা , বিজ্ঞান চেতনা , নৈপুণ্য প্রভৃতি গুণগত দিকগুলাের বিকাশ । তাই Zimmermann বলেছেন — Man plays a unique role in the over all scheme of resource development .

19 . সম্পদের পুনঃনবীকরণ ( RESOURCE RECYCLING ) ।
উত্তরঃ পৃথিবীর সমস্ত সঞ্চিত বা গচ্ছিত সম্পদ সীমাবদ্ধ । যে পদ্ধতিতে কোন সম্পদকে ব্যবহার করার পর পরবর্তীকালে তাকে আরাে ব্যবহার উপযােগী বস্তুতে পরিণত করা হয় , তাকে সম্পদের পুনঃনবীকরণ বলা হয় । এর ফলে একই সম্পদের বারবার ব্যবহার দ্বারা গচ্ছিত সম্পদের যােগান অব্যাহত রাখা হয় । যেমন — কাগজকে বারবার ব্যবহার করা হয় । জাপান , U . S . A . ও অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশে এই বিষয়ে জোর গবেষণা চলছে ।

20 . সম্পদ সংরক্ষণ ।
উত্তরঃ সংরক্ষণ কথাটির অর্থ ‘ বিশেষ উদ্দেশ্যে রক্ষা করা । সুতরাং সম্পদের পরিমিত ব্যবহার , অপচয় । রােধ এবং বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদের ভাণ্ডার বৃদ্ধি করাকে সম্পদ সংরক্ষণ বলে । । জিমারম্যানের মতে , ‘ Resources conservation involves a reduction in the rate of consumption and a corresponding increase in the unused surplus left at the end of a given period . ” সম্পদ ঠিকমতাে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ভবিষ্য বিজ্ঞান ( Futurology ) নামে একটি স্বতন্ত্র বিষয়ে অবতারণা ঘটেছে । যার একমাত্র লক্ষ্য সম্পদ সংরক্ষণের সঠিক পন্থা নির্ধারণ করা ।

21 . সম্পদ সংরক্ষণের উদ্দেশ্য ।
উত্তরঃ ওডামের ( Odum , 1971 ) মতে , সংরক্ষণের দুটি লক্ষ্য রয়েছে । যেমন – ( i ) পরিবেশের গুণগতমান বজায় রাখা ( “ To insure the preservation of a quality environment ” ) । ( ii ) সম্পদের আহরণ ও নবীকরণের মধ্যে সাযুজ্য সৃষ্টি করে প্রয়ােজনীয় গাছপালা , জীবজন্তু ও পণ্যসামগ্রীর যােগান অব্যাহত রাখা । এছাড়াও ( iii ) সম্পদের যথেষ্ট ব্যবহার বন্ধ করা ; ( iv ) সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা ; ( v ) সম্পদের অপচয় রােধ করা এবং ( vi ) ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সম্পদ সঞ্জিত রাখাও সম্পদ সংরক্ষণের । অন্যতম উদ্দেশ্য ।

22 . সম্পদের শ্রেণীবিভাগ ?

উত্তরঃ

23 . সম্পদ সংরক্ষণের পদ্ধতি
উত্তরঃ বর্তমানে সম্পদ সংরক্ষণের আবিষ্কৃত পদ্ধতিগুলি হল — ( i ) সম্পদের অতি ব্যবহার কমানাে ;( ii ) সম্পদের অপচয় রােধ করা ;( iii ) উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে খনিজ দ্রব্যের পুনর্ব্যবহার ;( iv ) দ্রব্যের রূপান্তর ঘটিয়ে ব্যবহার ;( v ) জৈব সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি ( জীবজন্তু ও মৎস্য ) ;( vi ) উৎপাদন ও ভােগের মধ্যে সমতা ;( vii ) সম্পদের কার্যকরী ক্ষমতাকে পরিপূর্ণরূপে ব্যবহার ( জমির শষ্যাবর্তন ) ;( viii ) পুনর্ভব সম্পদের সময়ভিত্তিক ও পরিকল্পনা মাফিক ব্যবহার ( যেমন – মৎস্য ও অরণ্য ) ;( ix ) অপুনর্ভব বা ক্ষয়িষ্ণু সম্পদগুলাের বিকল্প ব্যবহার ও ( x ) সর্বোপরি সম্পদ সংরক্ষণে চেতনার সৃষ্টি হল সম্পদ সংরক্ষণের সর্বশ্রেষ্ঠ ফলপ্রসূ পদ্ধতি ।
24 . জমির বহন ক্ষমতা ।
উত্তরঃ জমিতে উৎপন্ন সম্পদ যখন মানুষের বিভিন্ন রকম চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয় , তখন তাকে ঐ জমির বহন ক্ষমতা বলে । অর্থাৎ , ঐ জমি তার নানান উৎপাদন দ্বারা যতখানি বহন বা ধারণ করতে পারে , তাকে ঐ জমির বহন ক্ষমতা বলে ।
বিভাগ: এটি দুই প্রকার ( i ) বাহ্যিক বহন ক্ষমতা ও ভূ – পৃষ্ঠে উৎপন্ন বিভিন্ন কৃষিজ , বনজ , ঘরবাড়ি , বাজার প্রভৃতি সম্পদ মানুষের যতখানি চাহিদা পূরণ করতে পারে তাকে জমির বাহ্যিক ক্ষমতা বলে । ( ii ) আভ্যন্তরীন বহন ক্ষমতা ও ভূমির অভ্যন্তরভাগের খনিজ পদার্থ থেকে উৎপন্ন সম্পদ , জল মানুষের চাহিদা মিটিয়ে মানুষের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে , তাকে জমির আভ্যন্তরীন বহন ক্ষমতা । বলে ।

সৌজন্যে – ভূগোল শিক্ষা
Bhugolshiksha.com