ভূগোল ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | Geography – Geographical Thought – Short Question and Answer in Bengali
অধ্যায়: ভূগোল আলােচনার বিভিন্ন পদ্ধতি । (নিয়ন্ত্ৰণবাদ , সম্ভাবনাবাদ) APPROACHES TO GEOGRAPHICAL STUDIES । (DETERMINISTIC , POSIBILISTIC)
Q. ভূগােলকে উন্নয়নের বিজ্ঞান বলা হয় — ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ভূগােল অনেক অজানা তথ্য জানতে সাহায্য করে , তাই একে Study of unknown বলে । ফলে পৃথিবীজুড়ে কোথায় কিভাবে পরিবর্তন হচ্ছে এবং উক্ত পরিবেশে কিভাবে উন্নয়ন ঘটানাে সম্ভব তার জন্য কোথায় কি ধরণের পরিকল্পনা করা উচিত , তার নির্দেশ থাকে ভূগােলে । তাই ভূগােলকে বলা হয় Geography is the study of the change and development ।
Q. ভূগােল পৃথিবী ও মানুষের পারস্পরিক সম্বন্ধ গড়ে তােলে — ব্যাখ্যা ।
উত্তরঃ ভূগােল হল এমন এক বিজ্ঞান যা পৃথিবী ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্বন্ধবােধ তৈরী করে । Fairgriove এর মতে “ Geography is the science which treats of the influence on the man local conditions and space relations . ‘ । ভূগােলের বিষয়বস্তু হচ্ছে মানুষের যা তার । প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে মানুষ তার জীবনধারনের প্রয়ােজনীয় চাহিদা মেটানাের কাজ করে । Prof . Macnee – র মতে “ Geography is the study of environment of man physical and social , particularly in its relation on human activities ‘ অর্থাৎ মানুষের উপর স্থানীয় কার্যকরণের প্রভাব ।
Q. ভূগােল কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রাচীন গ্রীক পণ্ডিত এরাটোসথেটেনিস্ ( 276 – 194 B . C . ) প্রথম ‘ Geography শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন । দুটি গ্রীক শব্দ যথাক্রমে ‘ Geo ‘ অর্থাৎ ‘ কঠিন , তরল ও বায়বীয় পদার্থে সৃষ্ট ভূ – মণ্ডল বা পৃথিবী ’ এবং Graphy অর্থ বর্ণনা বা লেখা ’ মিলিত হয়ে Geography শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে । । ভারতীয় হিন্দু পুরাণসমূহে ‘ পৃথিবীর বর্ণনার অর্থে ব্যবহৃত হলেও Geography বলতে বােঝায় মানুষের আবাস এই পৃথিবীর বর্ণনা ।
Q. ভূগােলের সংজ্ঞা ।
উত্তরঃ আভিধানিক অর্থানুযায়ী ভূগােল হল একটি বিজ্ঞান যা পৃথিবী ও তার অধিবাসী মানুষ এই দুইয়ের সমীক্ষা করে । টলেমী বলেন , ‘ ভূগােল সেই মহান বিষয় যা মহাবিশ্বের মধ্যে পৃথিবীর এক ঝলক দেখায় । পিটার হ্যাগেটের মতে , “ The Study of earth ‘ s surface as the space within the human population lives . মার্কিন ভৌগােলিক হার্টসেনের মতে ( 1939 ) ভূগােলের কাজ হল ভূ – পৃষ্ঠের বৈচিত্র্যময় চরিত্রের নির্ভুল , নিয়ম বিন্যস্ত ও যুক্তিসঙ্গত বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দেওয়া । আবার মজ্জহাউস তার ‘ Dictionery of Geography – তে বলেছেন — ‘ মানুষের আবাস হিসাবে ভূ – পৃষ্ঠের স্থানিক পার্থকীকরণ । সমীক্ষা করা নিয়ে গড়ে উঠেছে ভূগােল ।
Q. ভূগােলের প্রাসঙ্গিকতা ।
উত্তরঃ মানুষের প্রতিটি ক্রিয়াকলাপের সাথে ভূগােল যুক্ত । একজন চাষী থেকে একজন পর্যটক , ব্যবসায়ী , রাজনীতিবিদ , পরিসংখ্যানবিদ সকল প্রকার লােকেদের ভূগােল বিষয়ে জ্ঞান রাখতে হয় । তাই সর্বসাধারণ মানুষের কাছে ভূগােলের প্রাসঙ্গিকতা খুবই বেশি । উনবিংশ শতাব্দীতে ক্ষেত্রীয় বিজ্ঞানের উন্নতি । ভ্রমণের সুযােগ বৃদ্ধি এবং অজানা মহাদেশগুলির বিষয়ে বিপুল তথ্য ভূগােলকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে ।
Q. ভূগােলের পরিধি ।
উত্তরঃ ভূগােলে প্রাকৃতিক , অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক , সামাজিক , যাবতীয় বিষয় আলােচিত হয় বলে এর পরিধি ও লক্ষ্য ব্যাপক ।
ভূগােলের পরিধি: ভূগােলের বিস্তৃত পরিধিকে কয়েকটি Aspect – এ ভাগ করা যায় । যেমন —
( i ) earth surface ও interior সম্পর্কে জ্ঞান অধ্যয়ন করা ।
( ii ) স্থান , কাল , ও দেশ অনুসারে Physical and human distribution অধ্যয়ন করা ।
( iii ) প্রকৃতি ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের অধ্যয়ন করা ।
( iv ) বিভিন্ন স্থানের সুসংহত বিষয়ের সাথে বাস্তুসংস্থান গড়ে ওঠার অধ্যয়ন করা ।
( v ) সম্পদের ব্যবহার ও কার্যকারিতা অনুসারে পরিকল্পনা প্রয়ােগ করা ।
ভূগােলের লক্ষ্য: ভূগােলের পরিধি খুব বিস্তৃত বলে এর লক্ষ্যও খুব বিস্তৃত ।
Q. জিওক্র্যাটিক ( GEOCREATIC ) দৃষ্টিভঙ্গী ।
উত্তরঃ মানুষ ও তার পরিবেশের সম্পর্ক বােঝাতে এই দৃষ্টিকোণটি প্রাসঙ্গিকতার দাবী রাখে । এই ধারণা অনুসারে বলা হয় প্রকৃতিই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই মানুষের জীবনযাত্রার ধরন ও প্রণালী গড়ে তুলতে সাহায্য করে । যেমন — প্রতিকূল পরিবেশ মানুষের সভ্যতার উন্নতির পথে বাধাস্বরূপ । মানুষ ও প্রকৃতি সম্পর্কে এই দৃষ্টিভঙ্গীকে গ্রিফিথ টেলর ( Grifith Taylor ) জিওক্র্যাটিক অ্যাখ্যা দেন ।
প্রবক্তা : বিখ্যাত ভৌগােলিক হামবােল্ড ও র্যাটজল এই দৃষ্টিভঙ্গীর প্রবক্তা।
Q. উইক্র্যাটিক ( WEOCREATIC ) দৃষ্টিভঙ্গী ।
উত্তরঃ উইক্র্যাটিক দৃষ্টিভঙ্গী অনুসারে বলা হয় মানুষ ও প্রকৃতি সম্পর্কের মধ্যে প্রকৃতি মানুষের কাছে কতকগুলি সম্ভাবনা তুলে ধরে এবং এগুলির মধ্যে মানুষ তার উন্নত বুদ্ধি ও সংস্কৃতির দ্বারা কতকগুলি বেছে নেয় । অর্থাৎ , এই দৃষ্টিভঙ্গী অনুসারে প্রকৃতির ভূমিকা নিষ্ক্রিয় ও গৌণ এবং মানুষের ভূমিকাই সক্রিয় ও মুখ্য । যা সম্ভাবনাবাদ নামে পরিচিত ।
প্রবক্তা : এই ধারণার সমর্থক ছিলেন লুসিয়েন ফেবর ও ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশ ।
Q. থিওক্র্যাটিক ( THEOCREATIC ) দৃষ্টিভঙ্গী ।
উত্তরঃ মানুষ ও প্রকৃতির পারস্পরিক সম্পর্ক বােঝাতে এই দৃষ্টিকোণ ভূগােলের ধ্রুপদী আলােচনার প্রাসঙ্গিকতার দাবী রাখে । এতে বলা হয় — প্রকৃতিই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে তবে এই নিয়ন্ত্রণের মূলে আছে ঈশ্বরের ইচ্ছা । রিটারের এই বক্তব্য পরমকারণবাদ ( TELEOLOGY ) বলা হয় । মানুষ ও পরিবেশের এই দৃষ্টিভঙ্গীকে গ্রীফিথ টেলর থিওক্র্যাটিক অ্যাখ্যা দিয়েছেন ।
Q. পরমকারণবাদ ( TELEOLOGY ) ।
উত্তরঃ কার্ল রিটার পরমকারণবাদের প্রবক্তা রিটারের মতে , ঈশ্বরের চেষ্টায় পৃথিবীর সৃষ্টি । পৃথিবী ও তার বাসিন্দাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক আছে এ থেকেই পাওয়া যায় মানবকর্তার দৈব উদ্দেশ্য ; যার ফলেই পৃথিবী মানুষের শিক্ষণ ও পােষণ ভূমি । এমনকি পার্থিব পরিবেশের বিবর্তন অর্থাৎ পাহাড় , মালভূমি , সমভূমির সৃষ্টি এবং এককোষী থেকে বহুকোষী প্রাণীর বিবর্তন প্রভৃতি জটিল জৈব প্রাকৃতিক কাজকর্ম বিশ্বব্ৰত্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তার মনে পরিকল্পিত চিত্র আগে থেকেই ছিল । অর্থাৎ , মানুষের কাজকর্ম ও উদ্ভব সবই রিটারের মতে ঈশ্বরের অনুশাসন দ্বারা একান্তভাবে নিয়ন্ত্রিত । অ্যারিস্টটল , হেগেল – এর মতে ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই পৃথিবীর সবকিছুর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আদর্শ আবস্থায় পৌঁছানাের চেষ্টা করে ।
Q. ভূগােলে ধ্রুপদী পর্যায় ( CLASSICAL PERIOD ) ।
উত্তরঃ সুপ্রাচীনকাল থেকেই ভূগােল সম্বন্ধে পরিচ্ছন্ন ধারণা গড়ে উঠেছিল । তবে ভূগােলের প্রকৃত জয়যাত্রা । শুরু হয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে । মূলত জার্মানীর দুই পণ্ডিত আলেকজাণ্ডার ভন হামবােল্ড ও কার্ল রিটারের নেতৃত্বে ভূগােলের যে আমূল পরিবর্তন , যা ভৌগােলিকদের কাছে ধ্রুপদী পর্যায় নামে পরিচিত । চার্লস ডারউইনের ‘ THE ORIGIN OF THE SPECIS ’ – এর প্রকাশের আগে পর্যন্ত ভূগােলের ধ্রুপদী পর্যায় । এই পর্যায়ে আধুনিক ভূগোেল প্রতিষ্ঠিত । হয় প্রকৃতির ঐক্য , কার্যকরণ সম্বন্ধে মানব কেন্দ্রীকতায় ও অভিজ্ঞতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গীতে । ভৌগােলিক হার্টসােন এই জন্যই এই সময়ের ভূগােলকে ধ্রুপদী বলে আখ্যা দিয়েছেন ।
Q. মার্ক্সীয় ভূগােল কাকে বলে ।
উত্তরঃ যখন সমাজের বিভিন্ন জটিল জাত – পাত বৈষম্য , ধনী – দরিদ্র ইত্যাদি । প্রক্রিয়া এবং অন্যদিকে দৈশিক প্রক্রিয়াগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক বা সম্বন্ধ নিয়ে আলােচনা করে একটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞানের যে অংশ তাকে বলে মার্ক্সীয় ভূগোেল ।
প্রবক্তা : মার্ক্সবাদী ভৌগােলিক পিট ( PEET ) মার্ক্সীয় ভূগােল সম্বন্ধে বলেন ।
Q. ভূগােল চিন্তার বিকাশে কার্ল রিটারের ( 1779 – 1859 ) অবদান ।
উত্তরঃ জার্মান পণ্ডিত কার্ল রিটার ছিলেন আধুনিক ভূগােলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা । ভূগােলে তার অবদান নিম্নরূপ –
i ) নিয়ন্ত্রণবাদের জন্মদাতা : কার্ল রিটারের ভূ – কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গীই ভূগােলে নিয়ন্ত্রণবাদের জন্ম দেয় ।
ii ) পরমকারণবাদের প্রবক্তা : ঈশ্বরের ঐকান্তিক চেষ্টায় পৃথিবীর সৃষ্টি বলে রিটার মনে করেন , যা পরমকারণবাদ নামে পরিচিত ।
iii ) মানচিত্রের ব্যবহার : ভৌগােলিক আলােচনার ক্ষেত্রে তিনি মানচিত্রকে সর্বপ্রথম গৱত দেন ।
iv ) বিখ্যাত বই : তিনি ‘ ERDKUNDE ‘ নামে 19টি খণ্ডে ( আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশ সম্বন্ধে ) বিখ্যাত বই রচনা করেন An Earth Science ( 1817 ) ।
v ) মলনীতি : যত্নসহ নিরীক্ষা , অভিজ্ঞতা ও প্রেক্ষণজাত জ্ঞানকে একত্রিত করে সত্যানুসন্ধান ছিল রিটারের মূলনীতি ।
তাই রিটারকে যদিও আরামকেদারায় বসা ভৌগােলিক ‘ বলা হয় তবুও তিনি ছিলেন আদর্শ ভৌগােলিক ।
Q. ভূপােল চিন্তার বিকাশে হামবােল্ডের ( 1769 – 1859 ) অবদান ।
উত্তরঃ আধুনিক ভূগােলের প্রতিষ্ঠাতা ও নানা বিজ্ঞানে পারদর্শী আলেকজাণ্ডার ভন হামবােল্ড ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভা । ভূগােলে তার অবদান নিম্নরূপ-
i ) বিজ্ঞানের ভিত্তি : তিনিই সর্বপ্রথম বলেন নিরপেক্ষভাবে বর্ণিত চোখে দেখা সত্যের উপর বিজ্ঞানের ভিত্তি হওয়া দরকার ।
ii ) কসমস : পৃথিবীর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়ে লিখিত ‘ কসমস ’ বইটি তার অমর সৃষ্টি ।
iii ) প্রণালীবদ্ধ ভূগােলের প্রতিষ্ঠাতা : মানচিত্র অঙ্কন , শুদ্ধতা ও প্রেক্ষণ প্রভৃতির দ্বারা তিনি প্রণালীবদ্ধ ভূগােল প্রতিষ্ঠা করেন ।
iv ) মূল সুর : প্রকৃতির ঐক্য ও কার্যকারণ তত্ত্ব এই সমস্ত দ্বারাই তিনি ভূগােলকে ব্যাখ্যা করেন ।
মেমরী প্লাস : কার্ল রিটার ও আলেকজাণ্ডার ভন হামবােল্ড – ভূগােলের এই দুই দিকপাল মারা যান 1859 খ্রীষ্টাব্দে । আবার 1859 খিস্টাব্দেই প্রকাশিত হয় চার্লস ডারউইনের যুগান্তসৃষ্টিকারী বই – “ THE ORIGIN OF SPECIES .
Q. নিয়ন্ত্রণবাদ ও সম্ভাবনাবাদের কয়েকজন ভৌগােলিকের নাম ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্ৰণবাদ ও সম্ভাবনাবাদের কয়েকজন প্রবক্তা হলেন —
নিয়ন্ত্ৰণবাদী ভৌগােলিক :
i ) ফ্রেডারিক র্যাটজল ( নিয়ন্ত্রণবাদের জনক )
ii ) এডওয়ার্থ হান্টিংটন ( জলবায়ুগত নিয়ন্ত্রণবাদের জনক)
iii ) এডমন্ড ডােমেলা ( পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণবাদের জনক ) ।
iv ) এলেন চার্চিল সেম্পেল ।
v ) উইলিয়াম মরিস ডেভিস ( ক্ষয়চক্রের জনক ) ।
সম্ভাবনাবাদী ভৌগােলিক :
i ) লুসিয়েন ফেবর ।
ii ) ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশ ( সম্ভাবনাবাদের জনক ) ।
iii ) জাঁ ব্রুনস
iv ) অ্যালবার্ট ডেমানজিওন
v ) ম্যাক্সিমিলিয়েন সর ।
Q. ভূগােল চিন্তার বিকাশে ইমানুয়েল কান্টের ( 1724 – 1804 ) অবদান ।
উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক ভূগােল বিকাশে জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট এক নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেন । যেমন
i ) রীতিবদ্ধ ভূগােল ও তাত্ত্বিক ধারণার প্রবক্তা : কান্ট রীতিবদ্ধ ভূগােলের প্রণেতা ও তাত্ত্বিক ধারণার প্রবক্তা ।
ii ) নিমিত্তবাদী তত্ত : ‘ নিমিত্তবাদী তত্ত্ব ’ দ্বারা বিশ্বের সবকিছুই প্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে তিনি বলেন ।
iii ) ইতিহাস ও ভূগােলে পৃথকীকরণ : দেশ ও কালের মধ্যে বিভাজন করে ইতিহাস ও ভূগােলকে পৃথক করেন ।
v ) নীহারিকাবাদ : 1755 খ্রিস্টাব্দে তিনি গ্রহ – নক্ষত্রের উৎপত্তি সম্পর্কে ‘ নীহারিকাবাদ ’ মতবাদ প্রচার করেন ।
iv ) স্বতন্ত্র বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা : ভূগােলকে তিনি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসাবে বর্ণনা করেন ।
Q. নিয়ন্ত্রণবাদ ও সম্ভাবনাবাদের কয়েকজন ভৌগােলিকের নাম ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্ৰণবাদ ও সম্ভাবনাবাদের কয়েকজন প্রবক্তা হলেন —
নিয়ন্ত্ৰণবাদী ভৌগােলিক :
i ) ফ্রেডারিক র্যাটজল ( নিয়ন্ত্রণবাদের জনক )
ii ) এডওয়ার্থ হান্টিংটন ( জলবায়ুগত নিয়ন্ত্রণবাদের জনক)
iii ) এডমন্ড ডােমেলা ( পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণবাদের জনক ) ।
iv ) এলেন চার্চিল সেম্পেল ।
v ) উইলিয়াম মরিস ডেভিস ( ক্ষয়চক্রের জনক ) ।
সম্ভাবনাবাদী ভৌগােলিক :
i ) লুসিয়েন ফেবর ।
ii ) ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশ ( সম্ভাবনাবাদের জনক ) ।
iii ) জাঁ ব্রুনস
iv ) অ্যালবার্ট ডেমানজিওন
v ) ম্যাক্সিমিলিয়েন সর ।
Q. কারিটার ও হামবােন্ডের মতবাদের পার্থক্য ।
উত্তরঃ কার্ল রিটারের মতবাদ :
ধারণার জন্মদাতা : কার্ল রিটার নিয়ন্ত্ৰণবাদ ধারণার জন্মদাতা ।
বিচার পদ্ধতি : অনুভব ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ভৌগলিক | জ্ঞান অর্জন করতেন ।
চিন্তাধারার প্রভাব : অ্যারিস্টটলের চিন্তাধারা প্রভাবিত হন ।
সমর্থক : ভাবলেখী দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থক ।
বিখ্যাত বই : Erdkunde ( এশিয়া ও আফ্রিকা নিয়ে লেখা ) ।
হামবােল্ড মতবাদ :
ধারণার জন্মদাতা : হামবােল্ড প্রণালীবদ্ধ ভূগােলের জন্মদাতা ।
বিচার পদ্ধতি : পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতেন ।
চিন্তাধারার প্রভাব : কান্টীয় চিন্তাধারা প্রভাবিত হন ।
সমর্থক : নিয়মস্থাপনকারী দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থক ।
বিখ্যাত বই : Cosmos ( পৃথিবীর বর্ণনা নিয়ে লেখা ) ।
Q. ভূগােলে মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক ।
উত্তরঃ ভৌগােলিকের কাজ মানুষ – প্রকৃতির পারস্পরিক সম্পর্ক সমীক্ষা করা । এই নিয়ে তিনটি মতবাদ মতবাদ হল-
জিওক্র্যাটিক মতবাদ : মানুষের সমাজ ও জীবনধারণের একান্ত নির্ধারক হল প্রকৃতি । প্রবক্তা:হামবোল্ট ও র্যাটল ।
থিওক্র্যাটিক মতবাদ : ভূ – পৃষ্ঠের প্রাকৃতিক বিষয়গুলি এক অদৃশ্যশক্তি ( ঈশ্বর ) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । প্রবক্তা:কার্ল রিটার ।
উইক্র্যাটিক মতবাদ : মানুষ তার প্রয়ােজন অনুসারে প্রকৃতি থেকে । সম্ভাবনাগুলিকে বেছে নেয় । প্রবক্তা: ভিদাল – দ্য – লা – ব্লাশ ।
Q. ভূগােলে র্যাটজলের অবদান ।
উত্তরঃ জার্মান ভৌগােলিক ফ্রেডারিক র্যাটজলের ( 1844 – 1904 ) ভূগােলে অবদান অনেক । যেমন i ) মানবীয় ভূগােলের প্রতিষ্ঠাতা : র্যাটজলই সর্বপ্রথম মানবীয় ভূগােল সম্পর্কে আলােকপাত করেন । iii ) পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণবাদের জনক : মানুষ কীভাবে পরিবেশের উপর নির্ভরশীল তা র্যাটজল ব্যাখ্যা করেন । iii ) গ্রন্থ : ANTHROPOGEOGRAPHIC ‘ গ্রন্থে তিনি দেখান , মানুষ ও পরিবেশের । কিভাবে বাস্তুতান্ত্রিক সংযুক্তি গড়ে ওঠে । iv ) ভৌগােলিক র্যাটজল : ভ্রমণ , অধ্যয়নের দ্বারা মানুষ ও প্রকৃতি সম্পর্ক ব্যাখ্যায় র্যাটজল প্রয়াসী হন ।
Q. ভূগােল চিন্তার বিকাশে শ্রীমতি এলেন চার্চিল সেম্পেলের ভূমিকা ।
উত্তরঃ বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিককার মার্কিন ভৌগােলিক শ্রীমতি এলেন চার্চিল সেম্পেল । র্যাটজলের শিষ্যা আমেরিকায় পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণবাদের প্রসারে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন । INFLUENCE OF GEOGRAPHICAL ENVIRONMENT বইতে তিনি মানুষকে প্রকৃতির সন্তান ও ‘ ভূ – পৃষ্ঠের ফসল ’ ( Man is a product of the earth ‘ s surface and Child of the earth ) হিসাবে বর্ণনা করেছেন । জেমস ও মার্টিনের মতে , তার লেখায় সম্ভাবনাতত্ত্ব ও প্রত্যক্ষবাদী নিয়ন্ত্রণবাদের ইঙ্গিত রয়েছে ।
Q. ভূগােল চিন্তার বিকাশে এডওয়ার্ড হান্টিংটনের ভূমিকা ।
উত্তরঃ বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগের আমেরিকান ভৌগােলিক এডওয়ার্ড হান্টিংটন । ইনি ছিলেন মার্কিন দেশের পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণবাদের প্রধান প্রবক্তা । জলবায়ু কিভাবে মানুষের সমাজ ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করে এটা ছিল হান্টিংটনের গবেষণার বিষয় । তাই হান্টিংটনকে জলবায়ুগত নিয়ন্ত্রণবাদের জনক বলা হয় । তার দু ’ টি গবেষণাভিত্তিক বই হল ‘ CIVILISATION AND CLIMATE’ 1915 এবং ‘THE PRINCIPLE OF HUMAN GEOGRAPHY’ .
Q. ভূগােল চিন্তার বিকাশে ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লশের ভূমিকা ।
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতাব্দীর শেভভাগের খ্যাতনামা ফরাসী ভৌগােলিক ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশ । তিনি “ Genre de vie ‘ ( জীবনযাত্রার প্রণালী ) তত্ত্বের প্রবক্তা । তিনি নিয়ন্ত্রণবাদের বিরােধিতা করেন এবং ছােট ছােট অঞলে মানুষ ও প্রকৃতির পারস্পরিক ক্রিয়া – প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে যে বিশিষ্ট জীবনযাপন প্রণালী গড়ে ওঠে তা নিয়ে সমীক্ষা করেন । সম্ভাবনাবাদের তাত্ত্বিক কাঠামাে গড়ে তােলার ক্ষেত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয় । Annals – de – geographic ( 1913 ) তাঁর লেখা অন্যতম বই ।
Q. ভূগােল চিন্তার বিকাশে লুসিয়েন ফেবরের ভূমিকা ।
উত্তরঃ লুসিয়েন ফেবর একজন খ্যাতনামা ফরাসী ভৌগােলিক । তিনি তার বই ‘A GEOGRAPHICAL INTRODUCTION TO HISTORY’ ( 1924 ) গ্রন্থে মানুষ ও পরিবেশের সম্পর্ক বর্ণনা করতে গিয়ে পরিবেশের সম্ভাবনাবাদকে তুলে ধরেন । তার ভাষায় ‘প্রয়ােজন বলে কিছুই নেই , যা আছে তা হল সম্ভাবনা ’ ; প্রকৃতি কিছু সুযােগ তুলে ধরে যার থেকে মানুষ ইচ্ছামতাে বেছে নিতে পারে । তিনিই সর্বপ্রথম পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ অগ্রাহ্য করে মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ করে তােলেন ।
Q. নিয়ন্ত্রণবাদ ( DETERMINISM ) ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্ৰণবাদ হল ভৌগােলিক বিশ্লেষণের একটি তত্ত্বগত পদ্ধতি । যে তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ , জাতি , সংস্কৃতি , অর্থনৈতিক কার্যকলাপ , জীবনযাত্রার মান এবং উন্নয়নকে প্রকৃতির উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । বলে বিশ্লেষণ করা হয় । তাকে Deterministic বা নিয়ন্ত্ৰণবাদ বলে ।
মূল ধারণা : নিয়ন্ত্রণবাদের ধারণা অনুসারে মানুষ হল নিষ্ক্রিয় এজেন্ট যার উপর প্রাকৃতিক বিষয়গুলি কাজ করছে এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করছে ।
মূল প্রবক্তা : এলেন চার্চিল সেম্পেল , হান্টিংটন ও ডোমেলা এর প্রবক্তা । জার্মান দার্শনিক ফ্রেডারিক র্যাটজল – কেই নিয়ন্ত্রণবাদের প্রধান প্রবক্তা বলা হয় ।
Q. নব – নিয়ন্ত্ৰণবাদ ( NEO – DETERMINISM ) ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্ৰণবাদ ও সম্ভাবনাবাদের দ্বন্দু থেকে এক নতুন মতবাদ নব – নিয়ন্ত্ৰণবাদ ধারণাটির জন্ম । এর মূল বক্তব্য হল , প্রাকৃতিক পরিবেশ বা প্রকৃতি মানুষের কাজকর্মের ও জীবনযাত্রা প্রণালী নির্ধারণের মূল নিয়ন্ত্রণ হলে মানুষের বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তাভাবনা ও সক্রিয় ভূমিকা তার উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে । এই মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা গ্রিফিথ টেলরের মতে , মানুষের ভূমিকা বড় শহরের যানবাহনের নিয়ন্ত্রকের মতাে , যে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে , কিন্তু দিক পরিবর্তন করতে পারে না । এই প্রসঙ্গে টেলরের বক্তব্য ‘Stop and go Determinism’ । তাই নব – নিয়ন্ত্রণবাদের মূল কথা , প্রকৃতির পরিবেশকে দেখ ও সম্ভাবনার পথে এগিয়ে চলাে ।
Q. জলবায়ুগত নিয়ন্ত্রণবাদ ।
উত্তরঃ এলসওয়ার্থ হান্টিংটন তার ‘Civilisation and Climate’ এবং ‘The Principles of Human Geography’ নামক গ্রন্থে এই প্রকার নিয়ন্ত্রণবাদের কথা বলেন ।
মূল বক্তব্য : এই তত্ত্বে মানুষ ও তার সমাজ , সংস্কৃতি , অর্থনীতি সবকিছুকেই প্রাথমিকভাবে জলবায়ুর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে তিনি মনে করেন । |
নিদর্শন : গ্রীসের স্বর্ণযুগ থেকে বর্তমান বাজারের ওঠাপড়াকে জলবায়ুর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন ।
Q. নিয়ন্ত্রণবাদ পতনের কারণ ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্রণবাদ প্রথমার্ধে খুব জনপ্রিয়তা লাভ করলেও পরবর্তীকালে জনপ্রিয়তা হারিয়ে যায় । কারণ —
i ) অনড় ও অনমনীয় : এই দৃষ্টিভঙ্গীর পতনের মূল সমস্যা এটি অনমনীয় , অনড় ও অচল পদ্ধতি ।
ii ) প্রকৃতি সর্বেসর্বা : নিয়ন্ত্রণবাদীরা মানুষকে শুধুমাত্র প্রকৃতির দাস বা প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত জীব হিসাবে দেখেছেন । তারা কখনােই মানুষকে বুদ্ধিমান , উদ্যমী ও অনুসন্ধিসু জীব হিসাবে দেখেননি । সাইবেরিয়ার শীতল পরিবেশে গম চাষ , মহীসােপান থেকে খনিজ তেল আহরণ করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মানুষ পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করেছে ।
iii ) সীমা : পরিবেশ ও মানুষের প্রভাব কোথায় শুরু ও শেষ তা এই ধারণা থেকে নির্ণয় অসম্ভব । তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণবাদের মূল ধারণার পতন হয় ।
Q. সাংস্কৃতিক বা সামাজিক নিয়ন্ত্ৰণবাদ ( CULTURAL OR SOCIAL DETER MINISM ) ।
উত্তরঃ সাংস্কৃতিক বা সামাজিক নিয়ন্ত্রণবাদের সবচেয়ে বড় প্রবক্তা হল কার্ল সয়ার । তার মতে নিয়ন্ত্ৰণবাদ সম্ভাবনাবাদের মধ্যে আপাত কোন বিরােধ নেই । কোন অঞ্চলের সভ্যতার বিকাশ নির্ভর করে সেই অঞলের সামাজিক বা সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের উপর । আর এই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য অনেকখানি পরিবেশ নির্ভর । তাই সভ্যতার উন্নতিতে শুধু পরিবেশ বা শুধু মানুষের ক্রিয়াকলাপ দিয়ে ব্যাখ্যা না করে সাংস্কৃতিক পরিবেশ দিয়ে ব্যাখ্যা করলে তা পরিপূর্ণ হবে ।
Q. নিয়ন্ত্রণবাদের সাফল্যের পক্ষে যুক্তি ।
উত্তরঃ ( i ) প্রকৃতি নির্ভর জীবন প্রণালী : মানুষের সকল জীবনকৰ্ম প্ৰকৃতি দ্বারা নির্ধারিত হয় । যেমন নিরক্ষীয় অঞলের পিগমী , বাল্টদের আদিকালীন খাদ্য সংগ্রহকারী জীবন প্রণালী , নাতিশীতােষ উঃ আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরােপে শিল্প , কৃষি , বাণিজ্য নির্ভর উন্নত জীবন প্রণালী ।
( ii ) প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অসহায়তা : বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয় , যেমন — খরা , বন্যা , ভূমিকম্প , ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতির উপর মানুষের অসহায়তা দেখা যায় । যেমন — ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের সুনামী , চীন , জাপানের ভূমিকম্প , আমেরিকার টর্নেডাে বার বার দেখেও মানুষ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না ।
( iii ) প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপে বিরূপ প্রতিক্রিয়া : মানুষ উন্নত প্রযুক্তি দ্বারা প্রকৃতিকে নিজের মতাে । করে ব্যবহার করতে গিয়ে বিপর্যয় ডেকে আনছে । যেমন — মৃত্তিকাকে অধিক ব্যবহারের ফলে বদ্ধ প্রবাহ হয়ে তার উৎপাদিকা শক্তি নষ্ট হচ্ছে । বন বিনাশ , শিল্পায়ন , CFC ব্যবহারের ফলে । গ্রীন হাউস প্রভাব , Global Warming , Ozone অবক্ষয় ।
Q. নিয়ন্ত্রণবাদের গুণাবলী ।
উত্তরঃ মানব জীবনে পরিবেশের প্রভাবের যথেষ্ট গুণাবলী / ইতিবাচক দিক রয়েছে । যেমন –
( i ) পরিবেশ নিয়ন্ত্রিত জীবন ও মানুষের সামাজিক জীবন পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । । উদাহরণ — প্রচণ্ড উত্তাপ । নিরক্ষীয় অঞলের লােকেরা কালাে , উচ্চ অক্ষাংশীয় লােকেরা ফর্সা হয় । কম বৃষ্টিযুক্ত স্থানে সমতল ঢাল বিশিষ্ট ছাদ ; নিম্ন অক্ষাংশের ঢালুছাদ যুক্ত ঘর , আবার । তুন্দ্রা অঞ্চলে ইগলু জাতীয় ঘর নির্মিত হয় ।
( ii ) বাস্তুতন্ত্র রক্ষা ও মানুষের উপর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবকে মেনে নিলে বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য । রক্ষা পাবে । কিন্তু হস্তক্ষেপের দরুণ শিল্পায়নের ফলে বাস্তুরীতি নষ্ট হয়ে মানব অস্তিত্ব বিপন্ন ।
Q. নিয়ন্ত্রণবাদের ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা ।
উত্তরঃ
( i ) সামাজিক জীবন প্রভাবিত হয় না : মানুষের সামাজিক জীবন সব ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত নয় । যেমন — মেঘালয়ের খাসি ও মিজোরামের লুসাই একই প্রাকৃতিক পরিবেশের অন্তর্গত হলেও পৃথক জনগােষ্ঠীর সৃষ্টি হয়েছে ।
( ii ) পরিবেশের পরিবর্তন : প্রাকৃতিক পরিবেশের কিছু অংশ মানুষের দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছে যা এই মতবাদকে বিড়ম্বিত করে । যেমন — থর মরুভূমিতে খালের দ্বারা কৃষিকার্য , দামােদর উপত্যকায় বাঁধ দ্বারা দক্ষিণ বঙ্গের বন্যা নিয়ন্ত্রিত হয় ।
( iii ) মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্কে চিরন্তন নিয়ম ও সাধারণ বিষয় সর্বক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযােজ্য হয় না ।
( iv ) মানুষের ভূমিকাকে অবমাননা করা হয়েছে , যা সঠিক নয় ।
( v ) এই চিন্তাধারায় অধিক কঠিনতা ও নমনীয়তার অভাব রয়েছে ।
Q. সম্ভাবনাবাদ ( POSSIBILISM ) ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্রণবাদের সম্পূর্ণ বিপরীত ভৌগােলিক তাত্ত্বিক পদ্ধতি হল সম্ভাবনাবাদ । এই দৃষ্টিকোণ থেকে মনে করা হয় , ভূ – পৃষ্ঠের কোন পরিবেশ সেখানকার মানুষের জন্য কিছু সম্ভাবনা তুলে ধরে এবং এই সকল সম্ভাবনা থেকে মানুষ নিজ পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করে ।
মূল বক্তব্য : পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ বলে কিছু নেই । মানুষ সক্রিয়ভাবে তার নিজস্ব ভাবনা পছন্দ ও বাছবিচার দ্বারা মানুষের সামাজিক উন্নতির পথ নির্দেশ করে ।
মূল প্রবক্তা : লুসিয়েন ফেবর , ক্যামিল ভ্যালু এর প্রবক্তা । তবে ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশ – কে সম্ভাবনাবাদের । জনক বলা হয় ।
Q. সম্ভাবনাবাদের জনক ।
উত্তরঃ সম্ভাবনাবাদের জনক বলা হয় ফরাসী ভৌগােলিক ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশ – কে ( 1845 – 1918 ) । ভিদালই । সর্বপ্রথম বলেন মানুষের প্রাকৃতিক পরিবেশ তার কাজকর্মের ফলে যথেষ্ট বদলায় । তিনি নিয়ন্ত্রণবাদের । বিরােধিতা করেন এবং ছােট ছােট অঞ্চলের মানুষ ও প্রকৃতির পারস্পরিক ক্রিয়া – প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে যে বিশিষ্ট জীবনযাপন প্রণালী গড়ে ওঠে তা নিয়ে সমীক্ষা করেন । সম্ভাবনাবাদের তাত্ত্বিক কাঠামাে গড়ে তােলার ক্ষেত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয় । তাই ভিদাল – দ্যা – লা – ব্লাশকেই সম্ভাবনাবাদের জনক বলা হয় ।
Q. নিয়ন্ত্ৰণবাদ ও সম্ভাবনাবাদের মধ্যে গ্রহণযােগ্য ।
উত্তরঃ নিয়ন্ত্রণবাদে যেমন প্রকৃতির জয়গান গাওয়া হয়েছে , সম্ভাবনাবাদে তেমনি মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠরূপে । কল্পনা করা হয়েছে । তবে নিয়ন্ত্ৰণবাদ চরম সম্ভাবনাবাদ কোনটিই ঠিক নয় । বরং প্রকৃতি ও মানুষ একে অপরের অত্যন্ত নির্ভরযােগ্য পরিপূরক । তাই দুটি দৃষ্টিভঙ্গীকে সামঞ্জস্যভাবে একত্রিত করে গ্রহণ করা হলে মানবসভ্যতার পক্ষে মঙ্গল । এক্ষেত্রে টেলরের নব – নিয়ন্ত্রণ ধারণাই প্রণিধানযােগ্য যে , প্রকৃতির পরিবেশকে দেখ ও সম্ভাবনার পথে এগিয়ে চলাে ।
Q. নিয়ন্ত্রণ ও সম্ভাবনাবাদের মধ্যে পার্থক্য ।
উত্তরঃ ভৌগােলিক আলােচনার দুটি প্রধান তাত্ত্বিক দিক হল — নিয়ন্ত্ৰণবাদ ও সম্ভাবনাবাদ । নিয়ন্ত্রণবাদী । ভৌগােলিকের মতে মানুষ হল নিষ্ক্রিয় এজেন্ট যার উপর প্রাকৃতিক বিষয়গুলি কাজ করছে এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে । অপরদিকে , সম্ভাবনাবাদের মতে প্রকৃতির বদলে মানুষকে সক্রিয়মান করা হয় এবং প্রকৃতির কাছে শুধু মানুষের সামনে কতকগুলি সম্ভাবনা তুলে ধরা হয় । একে সম্ভাবনাবাদ বলে ।
Q. STOP AND GO DETERMINISM ।
উত্তরঃ 1950 দশকের শেষভাগে কিছু ভৌগােলিক ভাবতে শুরু করলেন — মানব সমাজের বিকাশে পরিবেশের ভূমিকা পরােক্ষ গুরুত্বপূর্ণ । এই নবনিয়ন্ত্ৰণবাদী চিন্তাধারার প্রবক্তা ছিলেন গ্রিফিথ টেলর । তার মতে , মানুষ কোন দেশের প্রগতি ত্বরান্বিত বা দীর্ঘায়িত করতে পারে বা থামিয়ে দিতে পারে কিন্তু প্রকৃতি তার খোঁজখবর রাখে না । সে চলে তার নিজ খেয়ালে । অর্থাৎ , টেলরের মতে মানুষকে মুক্ত শক্তি ( Free Agent ) বলা চলে না , কারণ মানুষের মুক্তির দিক নির্ণয় করে প্রকৃতি । এই কারণে টেলরের নিয়ন্ত্ৰণবাদী । মতবাদকে “ Stop and Go Determinism ‘ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে ।
INFO : Geography – Geographical Thought – Question and Answer | ভূগোল – ভূগোল চিন্তার বিকাশ – অধ্যায় : ভূগোেল আলােচনার বিভিন্ন পদ্ধতি । ( নিয়ন্ত্ৰণবাদ , সম্ভাবনাবাদ ) APPROACHES TO GEOGRAPHICAL STUDIES । ( DETERMINISTIC , POSIBILISTIC ) – প্রশ্নোত্তর
” ভূগোল ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ – অধ্যায় : ভূগোেল আলােচনার বিভিন্ন পদ্ধতি । ( নিয়ন্ত্ৰণবাদ , সম্ভাবনাবাদ ) APPROACHES TO GEOGRAPHICAL STUDIES । ( DETERMINISTIC , POSIBILISTIC ) ) “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিভিন্ন শ্রেনীর পরীক্ষা (Class 5, 6, 7, 8, 9, Madhyamik, Higher Secondary – HS, College & University Exam) এবং বিভিন্ন চাকরির (WBCS, WBSSC) পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে BhugolShiksha.com এর পক্ষ থেকে ভূগোল পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নো ও উত্তর উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস ভূগোল Geography ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ – অধ্যায় : ভূগোেল আলােচনার বিভিন্ন পদ্ধতি । ( নিয়ন্ত্ৰণবাদ , সম্ভাবনাবাদ ) APPROACHES TO GEOGRAPHICAL STUDIES । ( DETERMINISTIC , POSIBILISTIC ) / সংক্ষিপ্ত ছোট প্রশ্ন ও উত্তর / SAQ / Short Question and Answer / QNA / FREE PDF Download ) পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর সফল হবে।
Source : Bhugolika
স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ডিজিটাল মাধ্যম BhugolShiksha.com । এর প্রধান উদ্দেশ্য পঞ্চম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় এবং গ্রাজুয়েশনের শুধুমাত্র ভূগোল বিষয়কে সহজ বাংলা ভাষায় আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে সহজ করে তোলা।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই আমাদের ভূগোল শিক্ষা – Bhugol Shiksha – BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। ভূগোল বিষয়ে যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইটটি ফলাে করুন এবং নিজেকে ভৌগোলিক তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।
নিচের বাটনে ক্লিক করে শেয়ার করেন বন্ধুদের মাঝে