কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী
মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer : কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – WBBSE Class 10 Bengali Koni Question and Answer, Suggestion, Notes – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 10th Ten X Bengali Examination – পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।
তোমরা যারা কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো।
শ্রেণী | দশম শ্রেণী (মাধ্যমিক) |
বিষয় | মাধ্যমিক বাংলা |
সহায়ক পাঠ | কোনি (Koni) |
লেখক | মতি নন্দী |
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Koni Question and Answer
রচনা ধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer :
1. বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটের দৃশ্য বর্ণনা করো ।
Ans: ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের শুরুতেই আমরা গঙ্গা ঘাটের এক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করি । হিন্দুদের একটি ধর্মীয় উৎসব ‘ বারুণী ‘ । সেদিন গঙ্গায় পুজো দিয়ে দেবতার উদ্দেশ্যে কাঁচা আম উৎসর্গ করা হয় । এদিন গঙ্গার ঘাটে লোক থিক থিক করে । পুণ্যার্থীরা জলে ডুব দিয়ে কাঁচা আম উৎসর্গ করেন আর একদল ছেলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেই আম সংগ্রহ করে বাজারে বাঞ্ছণীয় দিনের গঙ্গার ঘাটের বর্ণনা কম দামে বিক্রি করে । গঙ্গা স্নানাস্তে পুণ্য অর্জনের পর বেশ কিছুটা পথ কাদা মাড়িয়ে যখন পুণ্যার্থীদের ডাঙায় আসতে হয় তখন লোকমুখে দেখা যায় একরাশ বিরক্তি । পুণ্যার্থীদের অনেকে ঘাটের মাথায় কিংবা ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসে থাকা বামুনের দিকে যায় কেন – না তারা পয়সার বিনিময়ে কাপড় – জামা রাখে , গায়ে মাখা তেল দেয় , কপালে চন্দনের ছাপ ইত্যাদি দেয় । পুণ্যার্থীরা রাস্তার ধারে দেবদেবীর মাথায় জল ঢালতে ঢালতে বাড়িমুখো হয় । পথে বাড়ির জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনে । এমনকি তারা থোড় , ওল , কলা বা লেবু ইত্যাদিও কেনে এবং গরম রাস্তায় পা ফেলে অত্যন্ত দ্রুতপদে বাড়ির দিকে রওনা দেয় ।
2. ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের নামকরণ কতখানি সার্থক হয়েছে , আলোচনা করো ।
Ans: ‘ নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো ।
3. বিচরণ ধরের পরিচয় দাও । তার খাদ্যাভ্যাসের বিবরণ দাও ।
Ans: কোনি ‘ উপন্যাসে গঙ্গার ঘাটে ক্ষিতীশের চোখে পড়ে বিশাল বপুর এই বিষ্টুচরণকে । অত্যন্ত বনেদি বংশের আই এ পাস করা ছেলে বিষ্টুচরণ হল পাড়ার সকলের বেষ্টাদা । সে বনেদিয়ানা ও অর্থের জন্য পাড়ায় বেশ মান্যগণ্য । তার সাতটা বাড়ি , বড়োবাজারে ঝাড়াই মশলার বিচ্ছু ধরের পরিচয় বিশাল ব্যাবসা । ইদানীং সে ভোটে দাঁড়াবার একটা গোপন সদিচ্ছা মনে মনে পোষণ করে পাড়ার যে – কোনো খেলাধুলো বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির পদ অলংকৃত করে থাকে এবং নানানভাবে আর্থিক সাহায্যও করে । তার সাড়ে তিন মন দেহটাকে বয়ে নিয়ে এদিক – ওদিক করে তার পুরোনো একটা অস্টিন । তার একটি বিশেষ শখ হল গঙ্গার ঘাটের মালিশওয়ালাদের দিয়ে মালিশ করানো ।
→ বিচরণের ওজন সাড়ে তিন মন হওয়াতে তিনি খুবই চিন্তিত হয়ে ডায়েটিং শুরু করেছে । অদ্ভুত তার এই ডায়েটিং । আগে যেখানে সে খাদ্যাভ্যাসের বিবরণ জলখাবারে প্রতিদিন কুড়িটা লুচি ও আধকিলো ক্ষীর খেত এখন তা নেমে এসেছে পনেরোটা লুচি ও তিনশো গ্রাম ক্ষীরে । দুপুরে আড়াইশো গ্রাম চালের ভাতের সঙ্গে চার চামচ ঘি । বিকেলে দু – গ্লাস মিছরির শরবতের সঙ্গে কড়াপাকের সন্দেশ চারটে । রাতের খাবার বলতে মাত্র বারোটা রুটি । মাছ – মাংস অবশ্য খায় না ।
4. ইচ্ছাশক্তি সম্বন্ধে ক্ষিতীশের মতামত ব্যাখ্যা করো । ক্ষিতীশ কীভাবে নিজের ইচ্ছাশক্তির প্রমাণ দিয়েছিল ?
Ans: কোনি ‘ উপন্যাসের ক্ষিতীশ ছিলেন প্রবল ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন এক ব্যতিক্রমী চরিত্রের মানুষ । তিনি ছিলেন সাঁতার অন্ত প্রাণ । তিনি একটা নিজস্ব জগৎ গড়ে তুলেছিলেন , যার মধ্যেই তিনি বিচরণ করতেন । শক্তি বলতে তিনি কেবল দৈহিক ইচ্ছাশক্তি সম্বন্ধে ক্ষিতীশের মতামত শক্তিকেই ভাবতেন না , তাঁর মতে , মানসিক ও ইচ্ছাশক্তির জোরই বেশি । এর সাহায্যে মানুষ সব কিছুই করতে পারে , এমনকি শারীরিক অক্ষমতা ও দুর্বলতাকে অতিক্রম পর্যন্ত করতে পারে । শরীরকে দিয়ে ক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ করিয়ে নেয় ইচ্ছাশক্তি । তাই বলে শরীরকে অবহেলা করলে চলবে না । শরীর ও মন পরস্পরের পরিপূরক । মনই শরীরকে নির্দেশ দিয়ে কাজ করিয়ে নেয় ।
বিষ্টুচরণের কাছে ক্ষিতীশ ইচ্ছাশক্তির প্রাবল্য বোঝাবার জন্য নিজের ডান কনুইটা শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে পিস্তল ধরার মতো হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে তা বিষ্টুচরণকে নামাতে বলেন । বিস্টুচরণ তার সাড়ে তিন মন ওজন নিয়ে ক্ষিতীশের শুকনো শিকড়ের মতো হাতের কবজি ধরে নীচের দিকে নামাতে বহুবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় । শেষপর্যন্ত নিজের সর্বশক্তি দিয়ে প্রাণান্তকর পরিশ্রমের পর গলদঘর্ম হলেও ক্ষিতীশের হাত কিন্তু একইরকম অনড় থাকে । ক্ষিতীশের ইচ্ছাশক্তির প্রমাণ ছিল এটাই ।
5. ‘ আপনি নিজের শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না ‘ — বক্তা উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে এমন কথা বলেছেন কেন ? শরীরটাকে চাকর বানানো বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: মতি নন্দীর লেখা ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে ক্ষিতীশ , বিষ্টুচরণ ধরকে এমন কথা বলেছেন । কারণ ক্ষিতীশ বয়সে পঞ্চাশোর্ধ্ব হওয়া সত্ত্বেও ব্যায়াম ও সংযমের মাধ্যমে নিজের শরীরকে সক্ষম রেখেছেন । তিনি এখনও দৌড়োতে পারেন , সিঁড়ি দিয়ে স্বচ্ছন্দে ওঠা – নামা করতে পারেন , এমনকি নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে শরীরের কোনো অঙ্গকে অনড় করে রাখতে পারেন । উলটোদিকে , বিষ্টুচরণ অগাধ অর্থের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসচেতন না হওয়ার কারণে দৈহিকভাবে দুর্বল । অপরিমিত খাদ্যাভ্যাস তার দেহের ওজন বাড়িয়েছে , কিন্তু তার মনের জোর কমিয়ে দিয়েছে । কারণ শরীর আসলে তার মনের কথা শোনে না । বানানো শরীরটাকে চাকর বানানোর অর্থ হল , মনের নির্দেশে শরীরের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হওয়া । ক্ষিতীশের মতে , লোহা চিবিয়ে খেয়েও যদি পাকস্থলীকে মন হজম করার আদেশ দেয় , তবে সে তাই করবে । মন যদি পা – কে পাঁচ মাইল হাঁটার নির্দেশ দেয় , পা জোড়া অমনি পৌঁছে দেবে । বয়স হলেও গাছের ডাল ধরে ঝুলে থাকার শখ হলে , হাত দুটো সে হুকুম তালিম করবে । শরীরটাকে চাকর বানানো বলতে ক্ষিতীশ শরীরের ওপর মনের এই আশ্চর্য । নিয়ন্ত্রণকেই বুঝিয়েছেন ।
[ আরোও দেখুন:- Madhyamik Bengali Suggestion 2025 Click here ]
6. ‘ মা গঙ্গাকে উচ্ছৃন্নো করা আমই রাস্তায় বসে বেচবে — প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: মতি নন্দী রচিত ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে গঙ্গার ঘাটে স্নানরত এক বৃদ্ধের মুখে এই উক্তি শুনতে পাওয়া যায় । বারুণী উৎসবে মা গঙ্গাকে যে কাঁচা আম উৎসর্গ করা হয়ে থাকে , নিম্নবিত্ত পরিবারের কিছু ছোটো ছেলে সেগুলি সংগ্রহ করে ও কম দামে বাজারে বিক্রি করে । আম সংগ্রহ করা নিয়ে তাদের মধ্যে ছোটোখাটো গণ্ডগোলও বেধে থাকে । এমনই এক পটভূমিকায় কোনিকে প্রথম দেখেছিল ক্ষিতীশ । কোনি এবং তার বন্ধুদের বিবাদ লক্ষ করেই বৃদ্ধের এই উক্তি । গঙ্গায় স্নানরত বৃদ্ধের উক্তির মধ্যে দু – ধরনের মানসিকতা লক্ষ করা যায় । প্রথমত , বর্ণ হিন্দু অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনি – সহ নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের নীচু দৃষ্টিতে দেখা হয় ।
দ্বিতীয়ত , কোনি মেয়ে হয়ে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মারামারি করে বেড়াচ্ছে দেখে তাৎপর্য পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভৎসনার সুর ধ্বনিত হয়েছে । এই দুই ক্ষেত্রেই সামাজিক সংস্কার বৃদ্ধের মনে বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছে । লেখক বৃদ্ধের মুখে এই উক্তিটুকু বসিয়ে সমকালীন সামাজিক পরিস্থিতির একটা হদিস দিতে চেয়েছেন । অন্যদিকে , হিন্দুধর্মে দেবী বলে পুঁজিতা গঙ্গাকে উৎসর্গ করা আম পুনরায় বিক্রি করার মধ্যে হিন্দুধর্মের পাপপুণ্যের যে ধারণা রয়েছে , তাকেও এখানে তুলে ধরা হয়েছে ।
7. ক্ষিতীশের বাড়িটির বর্ণনা দাও । তার শোয়ার ঘর ও তার পাশের ঘরটি কীরুপ ছিল ?
Ans: গঙ্গা থেকে মিনিট পনেরোর দূরত্বে সরু গলির মধ্যে ক্ষিতীশের একতলা টালির চালের বাড়ি । বাড়ির সদর দরজার পরই মাটির উঠোন । উঠোনের যা আয়তন , তাতে টেনেটুনে একটি ভলিবল কোর্ট তাতে ধরে যায় । উঠোনে লঙ্কা , পেঁপে , চালকুমড়ো ইত্যাদি ক্ষিতীশের বাড়ির আনাজ ও জবাফুলের গাছে ভর্তি । একদিকে টিনের বর্ণনা চালের রান্নাঘর ও কলঘর , অন্যদিকে দালান ও তার পিছনে দুটি ঘর । চারদিকের উঁচু বাড়িগুলির মধ্যে এই একতলা । বাড়িটিকে খুব শান্ত দেখায় । উত্তর দিকের উঁচু বাড়ির মালিক হলধর বর্ধন ক্ষিতীশের বাড়িটি বারবার কিনতে চাইলেও ক্ষিতীশ তাতে রাজি হননি ।
ক্ষিতীশের শোওয়ার ঘরের দেয়ালে তাঁর বাবা – মায়ের ছবি ছাড়াও ধ্যানমগ্ন মহাদের , কুরুক্ষেত্রে অর্জুনের সারথি শ্রীকৃষ , ম্যাগাজিন থেকে কেটে বাঁধানো মেডেল গলায় ডন শোলান্ডার ও ভিকট্রি স্ট্যান্ডে দু – হাত তুলে দাঁড়ানো জন ফ্রেজারের ছবি পাশাপাশি টাঙানো । এ ছাড়াও আছে খাট , আলমারি , বাক্স , আলনা এবং নানারকম সাংসারিক জিনিস । তার পাশের ঘরে আছে বই , ম্যাগাজিন , একটা তক্তপোেশ আর তার নীচে ট্রেনিংয়ের জন্য রবারের দড়ি , স্প্রিং ও লোহা ছাড়া তেমন কিছুই নেই । পাখা নেই এবং বিছানাও নেই । এর সাহায্যে সংযমী ও শৃঙ্খলাপরায়ণ এক মানুষের জীবনের কঠোর নিয়মানুবর্তিতার ছবি ধরা পড়ে ।
8. ‘ ক্ষিতীশ কখনো যজ্ঞিবাড়ির নিমন্ত্রণে যায় না —ক্ষিতীশ যজ্ঞিবাড়ির নিমন্ত্রণে যায় না কেন ? বাঙালির খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ক্ষিতীশের মনোভাব ব্যাখ্যা করো ।
Ans: ক্ষিতীশ নিজের শারীরিক সক্ষমতা ও সুস্থতা বজায় রাখার ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন । বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করে তিনি । ক্ষিতীশের যজ্ঞিবাড়ির পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সেও নিজেকে সুস্থ – সবল নিমন্ত্রণে না – যাওয়ার রেখেছিলেন । তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল কারণ সংযত জীবনযাত্রা । তাই খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রেও তাঁর এই সংযম ছিল লক্ষণীয় । তাঁর মতে , পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ড . বিধানচন্দ্র রায় বলে গিয়েছিলেন যে , এক একটা বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণ খাওয়া মানে এক এক বছরের আয়ু কমে যাওয়া । এই কথাটিকেই ক্ষিতীশ সবচেয়ে খাঁটি কথা বলে মনে করতেন । তাঁর ক্লাবে সাঁতার শিখতে আসা ছাত্রছাত্রীদেরও তিনি এ কথা বারবার মনে করিয়ে দিতেন । তাঁর মতে , শরীরের নাম মহাশয় , যা সহাবে তাই সয় । ” তাই তিনি সন্ত্ৰীক সেদ্ধ খেয়েই জীবনধারণ করতেন এবং কখনোই যজ্ঞিবাড়ির নিমন্ত্রণে যেতেন না । বাঙালির খাদ্যাভ্যাসের
ক্ষিতীশের ধারণা ছিল , বাঙালি রান্নার তেল – ঝাল – মশলায় স্বাস্থ্য সংরক্ষিত থাকে না । এতে পেটের ক্ষতি করে । সেইজন্যই বাঙালিরা শরীরে জোের পায় না , কোনো খেলাতেই বেশি উঁচুতে উঠতে পারে না । এমন খাদ্য খাওয়া উচিত যাতে সর্বাধিক প্রোটিন ও ভিটামিন পাওয়া যায় । তাই ক্ষিতীশ সমস্ত সেদ্ধ করে খাওয়া মনস্থ করেছিলেন ।
9. জুপিটার ক্লাবে চীশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি কী ছিল ? এগুলির উত্তরে ক্ষিতীশের বক্তব্য কী ছিল ?
Ans: জুপিটারের সাঁতারুরা ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছিল তা সত্য হলেও পিছনে কিন্তু ক্রীড়ারাজনীতির হাত ছিল যথেষ্টই । অভিযোগগুলি হল— > দক্ষ সাঁতারু শ্যামলের সময়কে আমেরিকার বারো বছরের মেয়েদের সময়ের সঙ্গে তুলনা করে জুনিয়রদের কাছে তাকে অপমান করা ।
> গোবিন্দের মতো ব্রেস্ট – স্ট্রোক বেঙ্গল রেকর্ড হোল্ডার ও ন্যাশনালে প্রতিনিধিত্বকারীকে কান ধরে ক্লাব থেকে বের করে দেবার কথা বলা ।
> আর – এক দক্ষ সাঁতারু অসুস্থ সুহাসের বাড়ি গিয়ে তার বাবাকে যা – তা বলা ।
→ দুই মহিলা সাঁতারু অমিয়া ও বেলার পোশাক , চুলকাটা ইত্যাদি নিয়ে খিটমিট করা , তাদের জোর করে ব্যায়াম করানো ।
→ সাঁতারুদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অর্জনে এবং তাদের মেজাজমর্জি বুঝতে অক্ষমতা । কোনো মেডেল জেতার ইতিহাস না – থাকা ।
→ সকল অভিযোগের জবাবে ক্ষিতীশ জানান পঁয়ত্রিশ বছর জুপিটারের সঙ্গে যুক্ত থেকে তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ক্লাবের গৌরব বৃদ্ধি । ক্লাবের গৌরব অভিযোগের প্রত্যুত্তরে দ্বিতীশের বক্তব্য বাড়ায় যে খেলোয়াড়রা , তাদের পারফরমেন্সের উন্নতির জন্য তিনি প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে রুঢ় ব্যবহার করেন । সাঁতারে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেলেও ভারতের তথা বাংলার সাফল্য অনেক পিছিয়ে । শৃঙ্খলাপরায়ণ , আদর্শবান ও দৃঢ়চেতা ক্ষিতীশ আসলে খেলোয়াড় জীবনে শৈথিলা পছন্দ করতেন না ।
10. ‘ কী আবার হবে , ছেড়ে দিলুম / বস্তু এখানে কী ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন ? এর অন্তর্নিহিত কারণ বিশ্লেষণ করো ।
Ans: উদ্ধৃতিটির বক্তা ক্ষিতীশ । তিনি ছিলেন জুপিটার ক্লাবের সাঁতারের চিফ ট্রেনার । ক্লাবের সভায় তাঁর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এনে তাঁকে অপমান করায় তিনি ওই পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন ।
ক্ষিতীশের জুপিটারের চিফ ট্রেনার পদ ছেড়ে দেওয়ার একটি কারণ যদি হয় খেলোয়াড়দের সঙ্গে বনিবনার অভাব তবে অন্যটি অবশ্যই । কলকাতার ক্রীড়াজগতের ঘৃণ্য ক্রীড়ারাজনীতি । এক্ষেত্রে হরিচরণের চিফ ট্রেনার হওয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা পরিস্থিতিকে ক্ষিতীশের বিপক্ষে নিয়ে যায় । জুপিটারের সঙ্গে ক্ষিতীশের ছিল নাড়ির টান । তিনি চাইতেন জুপিটার হোক ভারতসেরা আর তার জন্য খেলোয়াড়দের মধ্যে তিনি একটা জেদি মনোভাব গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন । কেননা তিনি বিশ্বাস করতেন ইচ্ছাশক্তি ও প্রচেষ্টার জোরে মানুষ সব অর্জন করতে পারে । শৃঙ্খলাপরায়ণ , আদর্শবান ও দৃঢ়চেতা ক্ষিতীশ খেলোয়াড়দের জীবনে শৈথিল্য পছন্দ করতেন না । কিন্তু ক্লাব নিয়ে ক্ষিতীশের অনুভূতির সঙ্গে ক্লাব – সদস্য ও খেলোয়াড়দের অনুভূতির পার্থক্য গড়ে উঠেছিল বিস্তর , তাই ক্ষিতীশ একপ্রকার বাধ্য হয়েই ইস্তফা দিয়েছিলেন ।
11. ক্ষিতীশ এইসব অপচয় দেখে বিরক্তি বোধ করে । -এখানে ‘ এইসব অপচয় বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? ‘ বিরক্তি বোধ করার মধ্যে ক্ষিতীশের কোন মানসিকতার পরিচয় ফুটে ওঠে ।
Ans: এইসব অপচয় ‘ বলতে ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে জুপিটার ক্লাবের চিফ ট্রেনার ক্ষিতীশ মানুষের শক্তি বা সামর্থ্যের অপচয়ের কথা বলেছেন । তাঁর মতে চিরাচরিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এইসব অপচয় ক্রীড়াক্ষেত্রের বাইরে যেসব প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় , তাতে মানুষের সহ্যশক্তি ও একগুঁয়েমির পরীক্ষা হয় আর সবশেষে থাকে যশের মোহ । এতে খেলাধুলোর কোনো উন্নতি হয় না । শক্তির অপব্যবহার হয় বলেই ক্ষিতীশ এই অনুষ্ঠানগুলিকে ‘ অপচয় ‘ বলেছেন ।
ক্ষিতীশের মানসিকতা ‘ বিরক্তি বোধ ’ করার মধ্যে দিয়ে ক্ষিতীশের দেশের প্রতি আন্তরিকতা ও চিরাচরিত খেলার প্রতি আস্থা প্রকাশিত হয়েছে । ক্ষিতীশের মতে , যে শক্তি বা সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে খেলাধুলোয় দেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা যেতে পারে , নিজের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে , সেই শক্তিকে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত রেকর্ড ও গৌরববৃদ্ধির জন্য ব্যয় করা অপব্যয়েরই নামান্তর । তাঁর মতে , একজন আদর্শ ক্রীড়াবিদ শৃঙ্খলাবদ্ধ ট্রেনিং , বুদ্ধি ও টেকনিককে কাজে লাগিয়ে নিজের সঙ্গে সঙ্গে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করবে এটাই কাম্য । একটানা কুড়ি ঘণ্টা হাঁটা বা নব্বই ঘণ্টা একনাগাড়ে সাঁতার কেটে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রয়াস আসলে পেশিশক্তির আস্ফালন মাত্র , এতে মানুষের শক্তির অপব্যবহারই হয় ।
12. কোনি ও ক্ষিতীশ একে অপরের পরিপুরক আলোচনা করো ।
অথবা , ‘ কোনি ‘ ও ‘ ক্ষিতীশ ‘ — দুটি চরিত্র ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে প্রতিস্পর্ধী হয়ে উঠেছে কিনা আলোচনা করো ।
অথবা , ক্ষিতীশের ঘরের দেয়ালে টাঙানো অর্জুন ও তার সারথি কৃষ্ণের যে ছবি , তার অন্তর্নিহিত অর্থটি বুঝিয়ে দাও ।
অথবা , ক্ষিতীশের ঘরের দেয়ালে টাঙানো অর্জুন ও সারথি কৃষ্ণের ছবিটি কীভাবে কোনি উপন্যাসে উপমায়িত হয়েছে , তা বুঝিয়ে দাও ।
অথবা , ‘ কোনি ’ ও ‘ ক্ষিতীশ ’ — দুটি চরিত্রকেই ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বলা যায় কিনা , আলোচনা করো ।
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের নামকরণ কোনির নাম অনুযায়ী হলেও এ কথা অনস্বীকার্য যে , প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র বলতে যা বোঝায় , তার উপাদান কোনি ও ক্ষিতীশ উভয়ের মধ্যেই রয়েছে । ক্ষিতীশ একজন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাঁতার প্রশিক্ষক , যে ভাঙে তবু মচকায় না । ‘ হেরে যাওয়া ’ বা ‘ হাল ছাড়া ’ শব্দবন্ধটি ক্ষিতীশের অভিধানে নেই । জুপিটার ক্লাবে পঁয়ত্রিশ বছর কাটানোর পরও যথাযোগ্য সম্মান বা সুযোগ্য শিষ্য – কোনোটির খোঁজই তাঁর শেষ হয়নি । ছাত্রদের কাছে যে আত্মনিবেদন তিনি প্রত্যাশা করেন , তা জীবনের পঞ্চাশ ভাগ কাটিয়ে ফেলার পরেও তিনি পাননি । উলটোদিকে , কোনি একজন সাধারণ মেয়ে , যার মধ্যে ছিল ঔদ্ধত্য , একগুঁয়েমি ও প্রতিশোধস্পৃহা । এগুলি সাধারণের দৃষ্টিতে দোষ বলে বিবেচিত হলেও ক্ষিতীশের জহুরির চোখ তার ভিতরে লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নকে চিনে নিতে ভুল করেনি । কাহিনি যতই এগোতে থাকে ক্রমশ কোনির উত্থান , ক্ষিতীশের শক্ত হাতে প্রশিক্ষণ , কোনির প্রতিশোধস্পৃহা , ক্ষিতীশের হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া , ক্ষিতীশের ঘরের দেয়ালে টাঙানো অর্জুন ও তার সারথি কৃষ্ণের ছবির অন্তর্নিহিত অর্থটা ধীরে ধীরে পাঠকের সামনে স্পষ্ট করে তোলে । অবশেষে ক্ষিতীশের অব্যক্ত যন্ত্রণারূপে কোনির অস্তিত্বে মিশে যাওয়া আর গুরু – শিষ্যের সাফল্য কাহিনিটিকে পরিপূর্ণতা দান করে ।
13. কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও ।
Ans: কোনি ‘ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘ কোনি ‘ ওরফে কনকচাপা পাল সাত ভাই – বোন ও মা – সহ শ্যামপুকুর বস্তির এঁদোগলিতে বাস করে । বাবা যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন আগেই মারা গেছে । মেজো ভাইও মারা গেছে । সেজো ভাই পিসিমার বাড়িতে থাকে । কোনির পরও দু – বোন ও এক ভাই আছে । পরিবারে বড়ো হিসেবে সংসারের দায়িত্ব কোনির দাদা কমলের ওপর । ভালো সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার , কিন্তু সে আশা অচিরেই হারিয়ে গেছে । বাবার মৃত্যুর পর সে এখন মোটর গ্যারেজের দেড়শো টাকা মাইনের কর্মচারী । সম্প্রতি সংসারের প্রয়োজনে এক ভাইকে কমল পনেরো টাকা মাইনেতে চায়ের দোকানে কাজে লাগিয়েছে । সাংসারিক অভাব সামাল দেওয়ার জন্য কোনিকেও সুতো কারখানায় ষাট টাকা মাইনেতে কাজে লাগাবার কথা ওঠে । বারুণী উৎসবের উৎসর্গীকৃত আম সংগ্রহের জন্য কোনিদের সংগ্রাম আসলে তাদের প্রকৃত জীবনসংগ্রামকেই তুলে ধরেছে । পরবর্তীতে ক্ষিতীশ কোনির সব দায়িত্ব – সহ সাঁতার শেখানোর ভার নেন এবং তার মা – কেও একটা কাজ জোগাড় করে দেন ।
14. ‘ হঠাৎ কোনির দু – চোখ জলে ভরে এল— কোনির দু – চোখ জলে ভরে ওঠার কারণ কী ? এরপরে কী ঘটেছিল ?
Ans: রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় একদিকে যেমন বালিগঞ্জ ক্লাবের অভিজাতবংশীয়া হিয়া মিত্র অংশগ্রহণ করেছিল , অন্যদিকে তেমনই ছিল শ্যামপুকুর বস্তির কোনি । সাধারণ সাঁতারু কোনি নিজেকে উজাড় করেও উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিয়া মিত্রের সঙ্গে পেরে ওঠেনি । কোনি তার দাদা কমলকে কথা দিয়েছিল কোনির দু – চোখ জলে যে , মেয়েদের মধ্যে সে প্রথম হবেই । সেইজন্য ধার ভরে ওঠার কারণ করেও বারো টাকা দিয়ে কোনিকে কমল একটি কস্টিউম কিনে দিয়েছিল । কোনি নিজের এই পরাজয় ও দাদাকে দেওয়া কথা না – রাখতে পারার বেদনা মেনে নিতে পারেনি । তার ভিতরে এক ধরনের ক্ষোভ ও আক্ষেপ সৃষ্টি হয়েছিল । তাই ক্ষিতীশের স্নেহভরা কন্ঠস্বর ও সাঁতার শেখানোর প্রস্তাব তাকে দুর্বল করে দিয়েছিল । তার অন্তরের সমস্ত ক্ষোভ , লোভ , দুঃখ , অভিমান অশ্রু হয়ে দেখা দিয়েছিল ।
এরপরেই কোনির জীবনের সবচেয়ে দিশা পরিবর্তনকারী ঘটনা ঘটেছিল । সাদাসিধে পরিবারের কোনি যথেষ্ট ভালো সাঁতার জানলেও , সে কোনোদিন কোনো প্রশিক্ষকের কাছে সাঁতার শেখার পরবর্তী ঘটনা কথা ভাবেনি । কিন্তু তার জীবনের এই পর্যায়ে এসে সে ক্ষিতীশের মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষকের কাছে শেখার সুযোগ পায় , যে সুযোগ তাকে শেষপর্যন্ত পৌঁছে দেয় সাফল্যের শীর্ষে ।
15. ‘ একটা মেয়ে পেয়েছি , তাকে শেখাবার সুযোগটুকু দিও তা হলেই হবে । -বক্তার এমন আকুতির কারণ ব্যাখ্যা করো । উদ্ধৃতাংশে বক্তার কোন্ মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে ?
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাস থেকে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ পঁয়ত্রিশ বছরে জুপিটারের বস্তার আকৃতির কারণ কাছে প্রাপ্য সম্মান না পেলেও জুপিটারকে দিয়েছেন অনেক কিছু । কিন্তু চক্রান্ত করে তাঁকে চিফ ট্রেনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । শিক্ষানবিশ সাঁতারুদের ক্ষোভকে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের হাতিয়াররূপে ব্যবহার করা হয়েছে । কাঠিন্যের আড়ালে তাঁর স্নেহশীল মনটা ছাত্ররা বুঝতে পারেনি । তাই ক্লাব – অন্ত প্রাণ হয়েও জুপিটার থেকে তাঁকে সরে যেতে হয় । কিন্তু তাঁর আবিষ্কার কোনিকে সাঁতার শেখাতে গেলে চাই একটা সুইমিং পুল ।
ক্ষিতীশ তাই অ্যাপোলোর প্রেসিডেন্ট নকুল মুখার্জির শরণাপন্ন হন । শুরুতেই তিনি জানিয়ে রাখেন , তিনি অ্যাপোলোর লোক হবেন না । তবে কোনির সব সাফলা হবে অ্যাপোলোর । কোনিকে শেখানোর কোনো অর্থ চাই না – চাই শুধু সুযোগ । উদ্ধৃতিটিতে ক্ষিতীশের যোগ্য সাঁতারু তৈরির উপযুক্ত সুযোগের জন্য আর্তি ফুটে উঠেছে । উদ্ধৃতাংশে বক্তার মনোভাব উদ্ধৃতাংশের মধ্যে আমরা খুঁজে পেয়েছি একজন যোগ্য শিক্ষককে , যিনি যোগ্য শিষ্যের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতে পারেন । পরিবর্তে কোনো অর্থ বা খ্যাতি তাঁর কাছে কাম্য নয় । তবে উদ্ধৃতাংশে বক্তার মনোভাবে একজন প্রকৃত গুরুর জেদ ও সাঁতারের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসার ছবি ফুটে উঠেছে ।
16. ‘ সাঁতারু অনেক বড়ো সেনাপতির থেকে — উক্তিটি কার ? উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
অথবা , ‘ মেডেল তুচ্ছ ব্যাপার , কিন্তু একটা দেশ বা জাতির কাছে মেডেলের দাম অনেক , হিরোর দাম / – বক্তা কে ? উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হল সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ ।
→ বিস্টুচরণ ধরের বক্তৃতার ভাষ্য লিখতে গিয়ে ক্ষিতীশ বলেছিলেন যে , মেডেল একটি সামান্য চাকতি মাত্র । মেডেলের চেয়ে মেডেলের প্রাপ্তির পিছনে যে – অক্লান্ত পরিশ্রম থাকে , তার দাম অনেক বেশি । কিন্তু একটা দেশ বা জাতির কাছে মেডেলের তাৎপর্য অনেক বেশি । কারণ এক – একটি মেডেল আসলে এক – একজন নায়ক বা ‘ হিরো ’ – র জন্ম দেয় । সেই হিরো সাঁতারু বা সেনাপতি , যেই হোন না কেন , দেশের নবীন প্রজন্মের কাছে তিনি একটি আদর্শের প্রতীক । সেনাপতি বা সাঁতারু একজন এমন আইকন , যাকে দেশবাসী মনেপ্রাণে অনুসরণ করে । কিন্তু তা হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে পার্থক্য আছে । একজন সফল সাঁতারু , জীবন ও প্রাণের প্রতীক , কিন্তু একজন সেনাপতি , মৃত্যু ও ধ্বংসের প্রতীক । সাঁতারুর স্থান তাই সেনাপতির চেয়ে অনেক উপরে । যুদ্ধজয়ী সেনাপতি যেমন মানুষের সমীহ পায় , অন্যদিকে ঘৃণাও পায় । খেলোয়াড় বা সাঁতারুরা সারাপৃথিবীর কাছে কেবলমাত্র আদর্শ ও অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে জীবিত থাকে । একজন সাঁতারু কেবলই জীবনের উৎসবের জয়গানে ব্যাপৃত থাকে ; সে শতসহস্র মানুষের জীবনসংগ্রামের হারতে হারতেও হেরে না – যাওয়ার প্রতীক ও প্রেরণা । অন্যদিকে সেনাপতি এক অর্থে মৃত্যুশোকেরও ভগ্নদূত । এ কারণেই ক্ষিতীশ এমন মন্তব্য করেছেন ।
17. কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে কোন প্রসঙ্গে কার এই উদ্ভি ? এখানে বক্তার চরিত্রের কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে ?
Ans: অ্যাপোলো ক্লাবের সুইমিংপুলে বিভিন্ন পদ্ধতিতে , নানারকম প্রসসহ বস্তার উপদেশ – আদেশ দিয়ে কোনিকে সাঁতার শেখানোর চেষ্টা চালাতে থাকেন ক্ষিতীশ । এই প্রশিক্ষণ চলাকালীন তাঁকে নানাধরনের বাঙ্গোত্তি শুনতে হয় । অ্যাপোলোর দক্ষ সাঁতারু ও বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন অমিয়া , ক্ষিতীশ ও কোনিকে অ্যাপোলোতে দেখে ও কোনির প্রশিক্ষণ লক্ষ করে , অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ও উদ্ধৃত হয়েই কোনি সম্পর্কে উপরোক্ত উক্তিটি করেছিল ।
এই উক্তি থেকে অমিয়ার ঔদ্ধত্য ও অহংকার প্রকাশিত হয় । সে বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন এবং তখনও পর্যন্ত বাংলা সাঁতারুদের মধ্যে অন্যতম । তবে সেরাদের শুধু আত্মবিশ্বাসী হলেই হয় না , মাটিতে পা রেখে চলাটাও অত্যন্ত জরুরি । কিন্তু অমিয়া তা পারেনি । সাফল্যের চূড়ায় বসে সে চরম আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে থাকে । এই ধরনের ব্যক্তিদের বক্তার চরিত্রের মধ্যে এক ধরনের নিশ্চিন্ত আত্মবিশ্বাস লক্ষ করা প্রকাশিত দিক যায় , যে আত্মবিশ্বাস আমরা অমিয়ার মধ্যেও দেখতে পাই । আসলে জীবনে কাউকে কখনও ছোটো করে দেখতে নেই । কারও দক্ষতা বিষয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে নেই । এই ভুলটাই করে ফেলেছিল অমিয়া । কোনি তার পা ধোয়া জল খাবে — এমন উক্তি করে সে শুধু কোনিকেই অপমান করেনি , নিজেকেও খুব ক্ষুদ্র স্তরে নামিয়ে এনেছিল , যা তার অন্ধ – অহংকারী ও সংকীর্ণ মনেরই পরিচায়ক ।
18. ‘ দাঁড়া তোর ওষুধ আমি পেয়েছি — এখানে কাকে ওষুধ বলা হয়েছে ? তাকে ওষুধের সঙ্গে তুলনা করার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?
Ans: আলোচ্য অংশে বক্তা ক্ষিতীশ বালিগঞ্জ ক্লাবের সাঁতারু হিয়া মিত্রের প্রতি কোনির বিতৃয়া এবং ক্ষোভকেই ওষুধ বলে উল্লেখ করেছেন ।
দরিদ্র পরিবারের সাধারণ মেয়ে কোনি তার দাদাকে কথা দিয়েছিল যে , রবীন্দ্র সরোবরের প্রতিযোগিতায় সে মেয়েদের মধ্যে প্রথম হবে । কিন্তু সাঁতারের কোনো প্রথাগত প্রশিক্ষণ না থাকায় দাদাকে দেওয়া কথা সে রাখতে পারেনি । বালিগঞ্জ ক্লাবে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেওয়া , ধনী ও অভিজাত পরিবারের মেয়ে হিয়া মিত্র প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় । ছোটো থেকে কোনির বদ্ধমূল ধারণা ছিল বড়োলোকরা গরিবদের ঘেন্না করে । তাই হিয়ার কাছে পরাজয় কোনি মেনে নিতে পারেনি । হিয়ার প্রতি তার এই বিতৃয়া ও প্রতিশোধস্পৃহাকে কাজে লাগিয়েছিলেন ক্ষিতীশ । প্রবল পরিশ্রমে ক্লান্ত ও অনিচ্ছুক কোনিকে , হিয়া মিত্রের নাম বললেই ম্যাজিকের মতো কাজ হত । তখন সাঁতারের জন্য তার অধ্যবসায় ও আত্মনিবেদনে কোনো ত্রুটি দেখা যেত না । এইজন্য হিয়া মিত্রের নামটিকেই ওষুধের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ।
19. সঙ্গে সঙ্গে বুঝেও গেল , প্রতিদিন ডিম – কলা খাওয়ার জন্য যে টাকা দিয়েছে সেটা কিসে ব্যয় হয়- কে , কাকে টাকা দিত ? সে কী বুঝতে পেরেছিল , তা নিজের ভাষায় লেখো ।
Ans: সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশের দায়িত্ব ছিল কোনির খাওয়াদাওয়া , জীবনযাত্রার দিকে দৃষ্টি রাখা । তাই তিনি রোজ কোনিকে একটি করে টাকা দিতেন , যাতে সে পুষ্টিকর খাবার পেতে পারে । এই টাকা দেওয়ার কথাই এখানে বলা হয়েছে ।
সাঁতারের জন্য শক্তির প্রয়োজন হয় । তাই ক্ষিতীশ কোনিকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার জন্য রোজ একটা করে টাকা দিতেন । কিন্তু কোনি একদিন তার দাদা অসুস্থ থাকায় ক্ষিতীশের কাছে দু – টাকা চায় চাল কিনবে বলে । তখন ক্ষিতীশ এই সত্য উপলব্ধি করেন , যে – টাকা তিনি রোজ কোনিকে পুষ্টিকর খাবার কিনতে দিয়েছেন , সেই টাকা কোনির নয় , কোনির পুরো পরিবারের খোরাকির পিছনেই ব্যয় হয়েছে । কোনি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে । সে ছাড়াও পরিবারে তার মা ও আরও পাঁচ ভাই – বোন রয়েছে । কোনির পক্ষে উপবাসী পরিবারের সামনে একা একা পুষ্টিকর খাবার খাওয়া সম্ভব ছিল না । তাই সে তার ক্ষিদার কাছ থেকে খাবারের পরিবর্তে রোজ টাকার বন্দোবস্ত করে নিয়েছিল । ক্ষিতীশ শুরুতে এ বন্দোবস্ত বুঝে উঠতে না পারলেও পরে সবই হৃদয়ংগম করেছিলেন । তাই এরপর থেকে তিনি কোনির খাওয়ার ব্যবস্থা নিজের বাড়িতেই করেছিলেন ।
20. ‘ হাঁড়িতে ভাত ফোটা শব্দটা শুধু সেই মুহূর্তে একমাত্র জীবন্ত ব্যাপার – প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ‘ ভাত ফোটার শব্দ ’ – টিকে একমাত্র জীবন্ত ব্যাপার বলার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ।
Ans: সাঁতারু হিসেবে কোনির উত্থানের পিছনে যে দুজনের অবদান সবচেয়ে বেশি তাদের একজন যদি হয় ক্ষিতীশ সিংহ তবে অন্যজন অবশ্যই কোনির বড়দা কমল । সে ভালো সাঁতারু ছিল , কিন্তু বাবার অকালমৃত্যুতে সংসারের ভার তার কাঁধে এসে পড়ায় সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন তার কাছে অধরাই থেকে যায় । কমলের ইচ্ছা বোন কোনিকে ভালো সাঁতারু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা । কিন্তু অভাবের সংসারে কোনির সাঁতারের পিছনে খরচ করার মতো পয়সা কোথায় ? ক্ষিতীশ কিন্তু কমলের মনে তার স্বপ্নপুরণের আশা জাগিয়েছিলেন । আর এতেই যক্ষ্মা রোগগ্রস্ত কমল অন্ধকারময় জীবনে সামান্যতম আলো যেন দেখতে পায় ও ক্ষিতীশকে জিজ্ঞাসা করে কোনির পক্ষে ভালো সাঁতারু হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু । আত্মবিশ্বাসী ক্ষিতীশ তাকে জানান ইচ্ছাশক্তি আর চেষ্টায় তা সম্ভব হতে পারে । ক্ষিতীশের কথায় কমল যেন ধ্বংসের মাঝেও সৃষ্টির আশা দেখতে পায় এবং কোনিকে অনেক বড়ো হওয়ার কথা বলে । কোনিও দাদাকে তার স্বপ্নপূরণের কথা দেয় । এর পরেই সেই অভাবদীর্ণ এঁদোগলির ভিতরে একচিলতে ঘরের সকলেই , তাদের নিজের নিজের স্বপ্নে বিভোর হয়ে নিশ্চুপ হয়ে যায় । সেই দরিদ্র নিষ্প্রাণ মানুষগুলির কাছে তখন একমাত্র জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল হাঁড়িতে ভাত ফোটার শব্দ , কারণ তাদের সমস্ত স্বপ্নের মধ্যে ওই একমুঠো ভাত ফোটার শব্দই ছিল বাস্তবের পদধ্বনি ।
21. গাছে অনেক দূর উঠে গেছি । মই কেড়ে নিলে নামতে পারব না ।’— ‘ গাছে উঠে যাওয়া ’ বলতে বস্তু কী বুঝিয়েছেন ? এখানে ‘ মই কেড়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে কেন ?
Ans: গাছে উঠে যাওয়া ‘ শব্দটির অর্থ অনেকটা এগিয়ে যাওয়া । এক্ষেত্রে বস্তু বিচরণ প্রচুর অর্থের মালিক হলেও তার বাস্তব বুদ্ধি ছিল । একটু কমজোরি । তার প্রবল ইচ্ছা এম এল এ বিনোদ ভড়ের বিরুদ্ধে ‘ গাছে উঠে যাওয়া ‘ নির্বাচনে লড়াই করা । বিচরণ ক্ষিতীশকে অশ্বের মতো বিশ্বাস করত । ক্ষিতীশ বিচরণের পরামর্শদাতা হয়ে ওঠে । তার ভরসাতেই বিচরণ নির্বাচনে লড়াই করতে নামে । ক্ষিতীশ তার বক্তৃতা লিখে দেওয়া , বুদ্ধি জোগানোর মতো কাজগুলো করে দিতেন । ক্ষিতীশ তাকে বোঝান যে , বিনোদ ভড় যে যে সংস্থায় আছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলোতে তাকে যোগ দিতে হবে । তাই ক্ষিতীশের সহযোগিতায় বিনোদ ভড়ের জুপিটার ক্লাবের বিপক্ষ অ্যাপোলো ক্লাবের সভাপতি হওয়ার জন্য সে মুখিয়ে ওঠে এবং সাত হাজার টাকা অনুদানের অঙ্গীকারও করে বসে । বিস্টুচরণ একেই গাছে ওঠা বলেছে ।
‘ মই কেড়ে নেওয়া ‘ – র অর্থ কোনো কাজে এগিয়ে দিয়ে পিছন থেকে সরে যাওয়া । ক্ষিতীশ বিচরণকে জানান , অ্যাপোলোর প্রেসিডেন্ট হওয়ার ‘ মই কেড়ে নেওয়া ‘ জন্য তাকে ডোনেশন বাবদ দু – হাজার টাকা আর কোনির একটা সাঁতারের পোশাক বাবদ একশো টাকা খরচ করতে হবে । সেইসঙ্গে সেলামি বাবদ লীলাবতীর দেওয়া পাঁচ হাজার টাকাও ফেরত দিতে হবে । না হলে তিনি বিচরণের জন্য বক্তৃতা লিখে দেবেন না । তখন একদিকে আর্থিক ক্ষতি ও অন্যদিকে বিষ্টুচরণের বক্তৃতা না – লিখে দেওয়ার হুমকির মাঝে দাঁড়িয়ে বিস্টুচরণ এমন উক্তি করেছে ।
22. আমি দু’হাজারী ধরেছি ‘ — ‘ দু’হাজারি ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? দু – হাজারি ধরার কারণ কী ছিল ?
Ans: বিনোদ ভড়ের মতো এম এল এ তথা হবু মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য জনমত গঠনের প্রয়োজন ছিল বিচরণের । এর্ জন্য তাকে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হত , যা কোনো ক্লাবের সভাপতি হলে খুব তাড়াতাড়ি অর্জন করা যায় । তাই বিনোদ দু’হাজারি অর্থ ভড় যে – ক্লাবের সভাপতি তার বিপক্ষ ক্লাবের অর্থাৎ অ্যাপোলোর সভাপতি হওয়ার জন্য বিষ্টুচরণ দু – হাজার টাকা করতেও পিছপা হয়নি । এখানে ‘ দু’হাজারি ‘ বলতে বিচরণ ধরকে ইঙ্গিত করা দু – হাজারি
জুপিটার ক্লাবের চিফ ট্রেনারের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কোনির প্রশিক্ষণের জন্য ক্ষিতীশ অ্যাপোলো ক্লাবের শরণাপন্ন হয় । অ্যাপোলোকে সে কোনোদিনই নিজের ক্লাব মনে করবে না , এ কথা জানার পরও শুধুমাত্র কোনির আনা পদক অ্যাপোলো ক্লাবের গৌরব বৃদ্ধি করবে — এই শর্তে অ্যাপোলোর সহসভাপতি নকুল মুখুজ্জে তাকে নিজেদের সুইমিং পুল ব্যবহারের অনুমতি দেন । পরবর্তী সময়ে নকুল মুখুজ্জে বি এ এস এ – র সিলেকশন কমিটি থেকে বিতাড়িত হলে অ্যাপোলোকে বাঁচানোর জন্য একজন অর্থবান সভাপতির প্রয়োজন হয়ে পড়ে । ক্ষিতীশকে তিনি এই কথা জানালে ক্ষিতীশ হয়তো – বা কৃতজ্ঞতাবশেই বিচরণকে নানা কথার মারপ্যাঁচে ফেলে দু – হাজার টাকা । অনুদানের পরিবর্তে অ্যাপোলোর সভাপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখায় ।
23. ‘ ফিদা এবার আমরা কী খাব ? কার উক্তি ? এই উক্তির আলোকে বস্তুর পরিস্থিতির অসহায়তা বিশ্লেষণ করো ।
Ans: আলোচ্য উত্তিটির বস্তু হল কোনি ।
শ্যামপুকুর বস্তির বাসিন্দা কোনির পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল মানুষ ছিল তার দাদা কমল । একটা সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন দেখা কমল দারিদ্র্যের চাপে উপার্জনের সন্ধানে যোগ দেয় উক্তির আলোকে রাজাবাজারের একটি মোটর গ্যারেজে । সেখান বক্তার পরিস্থিতির থেকে কষ্টার্জিত দেড়শোটি টাকা ছিল তার সংসার অসহায়তা বিশ্লেষণ চালাবার পাথেয় । দু – বেলা দু – মুঠো ভাত ছাড়া আর বিশেষ কিছুর সংস্থান তাতে হত না ঠিকই , কিন্তু প্রাণধারণটুকু হয়ে যেত । পরের দিকে কমল পরিবারের সচ্ছলতার উদ্দেশ্যে এক ভাইকে পনেরো টাকা মাইনের বিনিময়ে একটি চায়ের দোকানে কাজে ঢুকিয়েছিল । কোনিকে ষাট টাকায় এক সুতো কারখানায় ঢোকাবার ইচ্ছে থাকলেও ক্ষিতীশ কোনিকে বড়ো সাঁতারু করার ইচ্ছে প্রকাশ করায় , তা আর হয়ে ওঠেনি । ক্ষিতীশ কোনিকে প্রতিদিন খাওয়ার জন্য একটা টাকা দিত , তাও কোনির সংসারের পিছনেই খরচ হয়ে যেত । এহেন টানাটানির সংসারের প্রধান উপার্জনক্ষম কমল হঠাৎ যক্ষ্মারোগে ভুগে মারা গেলে পরিবারের বাকিদের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়ে । তাই তার মৃত্যুতে শোকের চাইতেও যে প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিকভাবে আঘাত করে পরিবারের সব সদস্যের মনে , সেটিই কোনির মুখ দিয়ে ক্ষিদ্দার উদ্দেশ্যে নির্গত হয়েছে — ‘ এবার আমরা কী খাব ?
24. যন্ত্রণাকে বোঝ , ওটাকে কাজে লাগাতে শেখ , ওটাকে হারিয়ে দে । — কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বক্তা কোনিকে যন্ত্রণা বুঝতে বাধ্য করেছিলেন ? ‘ ওটাকে কাজে লাগাতে শেখ , ওটাকে হারিয়ে দৌ বলার কারণ কী ছিল ?
অথবা , ‘ কমলদিঘিকে টগবগ করে ফুটিয়ে তোল তোর রাগে ” —বক্তব্যটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ।
Ans: কোনির যন্ত্রণাকে বুঝতে বাধ্য করা পরিস্থিতি উত্তর কোনিকে সাঁতার শিখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তুলে ধরাটা ক্ষিতীশের কাছে ছিল দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জ । ক্রীড়াজগতের কাছে প্রশিক্ষক হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার পাশাপাশি হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে কোনির ভিতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভার বিকাশ ঘটানোই ছিল তাঁর লক্ষ্য । কিন্তু কোনিকে এই সাফল্য পেতে গেলে কষ্টের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নিংড়ে নিজের সেরাটা বের করে আনতে হবে , যে কাজটা মোটেই সহজ নয় । আসলে কোনিকে যে আর্থসামাজিক পরিবেশ থেকে ক্ষিতীশ তুলে এনেছেন সেক্ষেত্রে কোনির মধ্যে ইচ্ছাশক্তিটাকে জাগ্রত করাটা বেশ কঠিন । সেই কাজ করতে গিয়ে ক্ষিতীশ একটানা তিন ঘণ্টা সাঁতার কাটিয়েছেন । যখনই সে জল থেকে উঠতে চেয়েছে তখনই ক্ষিতীশ নির্দয়ের মতো ঢিল ছুড়েছেন , বাঁশের লগা দিয়ে ভয় দেখিয়েছেন । কোনির সব কষ্ট , সব যন্ত্রণা বুঝেও তিনি এ কাজ করেছেন শুধুমাত্র কোনিকে বোঝানোর জন্য যে , প্রবল যন্ত্রণাকে হার মানিয়ে নিজের ইচ্ছাশক্তিকে জয়ী । করে তুলতে হবে , তবেই সাফল্য ধরা দেবে । প্রশ্নোত বক্তব্যের ক্ষিতীশের মতে , যন্ত্রণা সইতে পারলে সহ্যশক্তি বাড়বে আর কষ্টকে চ্যালেঞ্জ করে হারানোর নামই সাধনা ।
ক্ষিতীশ এই বোধটাই কোনির মধ্যে জাগিয়ে তুলতে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন ।
25. ‘ কাজটা থেকে বরখাস্ত হলে চল্লিশটা টাকা থেকে তাদের সংসার বঞ্চিত হবে । কোন কাজের কথা এখানে বলা হয়েছে ? কাজ থেকে বরখাস্ত হওয়ার আশঙ্কার কারণ কী ছিল ?
Ans: কমলের মৃত্যুর পর তার রোজগারের দেড়শো টাকার জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় , কোনিদের সংসার তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়ে । এরকম অবস্থায় কোনির সাঁতারও প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে বসে । এই সংকটের সময় ক্ষিতীশ তার স্ত্রী । লীলাবতীর দোকানে কোনিকে চল্লিশ টাকা বেতনে কাজে লাগিয়ে দেন । তার কাজ ছিল ট্রেনিং শেষে বেলা দশটার সময় দোকান খুলে ঝাঁট দেওয়া , কাউন্টার মোছা , কুঁজোয় জলভরা ছাড়াও অন্যান্য ফাইফরমাশ খাটা । রাতে দোকান বন্ধের পর তার ছুটি । বেতনের সঙ্গে সঙ্গে তার দু – বেলা খাবারও জুটত এই কাজের জন্য ।
→ ক্ষিতীশের স্বপ্ন কোনিকে চ্যাম্পিয়ন করা । তাই তিনি প্রতিদিন কোনির ট্রেনিংয়ের সময় বাড়িয়ে চলেন । লীলাবতী ব্যবসায়ী মানুষ । কোনির দোকানে আসার কথা দশটায় কিন্তু ক্ষিতীশের পাল্লায় পড়ে সেদিন কোনির দোকানে আসতে একটু দেরি হয় । দেরির কথা ভেবে কোনি । খাওয়াদাওয়া না করেই ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে যখন দোকানে হাজির হয় , তখন লীলাবতী প্রায় সব কাজই নিজে করে নিয়ে রাগে ফুঁসছেন । তাকে দেখামাত্র লীলাবতী বেরিয়ে যেতে বলেন । অবসন্ন কোনি লীলাবতীর কাছে বাড়ি যাওয়ার আর্জি জানালে তা নাকচ হয়ে যায় । তবুও কোনি কষ্ট সহ্য করে দাঁড়িয়ে থাকে কাজ থেকে বরখাস্ত হওয়ার ভয়ে , কারণ কাজ থেকে পাওয়া চল্লিশটা টাকা যে তাদের সংসারের বড়ো প্রয়োজন ।
26. ‘ এরপর ক্ষিতীশ লক্ষ করল কোনি জল থেকে উঠতে দেরী করছে।- এখানে ‘ এরপর ‘ শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ? কোনির জল থেকে উঠতে দেরির কারণ কী ছিল ? অথবা , ‘ এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে আলোচনা করো ?
Ans: কোনিকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর জন্য ক্ষিতীশ যে – ট্রেনিংটা কোনিকে করাতেন , তা ছিল কোনির কাছে অসহ্য । ঘণ্টার – পর – ঘণ্টা ট্রেনিং করে শরীর অবশ হয়ে আসত ; তবুও ক্ষিতীশের মন গলানো যেত না । সাধনার প্রথম পদক্ষেপ যে সমস্ত যন্ত্রণাকে অতিক্রম করতে শেখা , এ কথা কোনিকে কোনোভাবেই বোঝানো যেত না । তবে ক্ষিতীশের জানা ছিল কোনির দুর্বল জায়গা হল হিয়া মিত্র । হিয়া মিত্রের কাছে হারায় কোনি তার মৃত্যুপথযাত্রী দাদার কথা রাখতে পারেনি । সেই হিয়ার প্রতি তার যে চরম বিতৃয়া থাকবে এটাই স্বাভাবিক । ক্ষিতীশ সেই বিতৃয়াকে কাজে লাগিয়ে কোনিকে উদ্বুদ্ধ করতে চাইতেন । চিড়িয়াখানায় হিয়ার জল প্রত্যাখ্যান করার ঘটনাকে অন্যভাবে পরিবেশন করে , কোনির মধ্যে একটা প্রতিশোধস্পৃহা তৈরি করেন ক্ষিতীশ । এরপর ’ বলতে লেখক এই পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন । ক্ষিতীশ সচেতন ভাবেই হিয়ার প্রতি কোনির হিংস্র এই আক্রোশটাকে , তীক্ষ্ণ করতে চাইতেন । কারণ ওটা কোনির বুকে সজ্জিত থাকলে আসল সময়ে জলের মধ্যে তা অগ্ন্যুৎপাত ঘটাবেই , এ কথা ক্ষিতীশ জানতেন । কোনির জল থেকে উঠতে দেরির কারণ 7 হিয়া মিত্র ছিল কোনির সবচেয়ে বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বী । কোনির জীবনের প্রথম হারটা এসেছিল এই হিয়ার কাছ থেকেই । তাই তার কথা মনে পড়লেই কোনি বারুদের মতো জ্বলে উঠত । তার এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষিতীশ তাকে উদ্বুদ্ধ করলে , সে আর জল থেকে উঠত না । অনুশীলনেও নিজেকে গভীরভাবে মগ্ন রাখত ।
27. ‘ আর একটা দরজির দোকান ঠিক করেছি । দিনে প্রায় হাপ কেজি মাল হয় । – কে , কেন দর্জির দোকান ঠিক করেছিল ? এই সমস্ত কিছুর কারণ কী ?
Ans: ক্ষিতীশের হিতাকাঙ্ক্ষী ভেলো তাঁকে দর্জির দোকান ঠিক করে দিয়েছিল । সেখান থেকে কাপড় এনে সমান মাপ করে কেটে লন্ড্রিগুলোতে বিক্রি করতেন ক্ষিতীশ । এগুলোতে নম্বর লিখে জামাকাপড়ে বেঁধে কাচতে পাঠাবার জন্য , লন্ড্রিতে এর চাহিদা বেশ ভালো । কোনির প্রয়োজনে ক্ষিতীশকে আরও অর্থ রোজগারের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে ভেলো আরও একটা দর্জির দোকানের খবর এনেছিল । কোনির মতো হতদরিদ্র মেয়েকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা ক্ষিতীশের পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব ছিল না । দরিদ্র পরিবারের মেয়ে কোনির শরীরে অপুষ্টির ছাপ স্পষ্ট । সাঁতারের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যেসব খাদ্য থেকে আসে তার কারণ জোগান দেওয়া পরিবারের পক্ষে সম্ভব ছিল না । তাই সব দায়িত্বই ক্ষিতীশকে নিতে হয়েছিল । তাই তাকে বিকল্প আয়ের পথ খুঁজতে হয় ।
ক্ষিতীশ শুধু এখানেই থেমে থাকেনি , ছিট কাপড় কাটার কাজে কোনির মাকেও যুক্ত করে সাংসারিক অভাবমোচনের চেষ্টা করেছিলেন ; এমনকি কোনিকেও তিনি স্ত্রী লীলাবতীর কাছে চল্লিশ টাকা মাইনের কাজ জুটিয়ে দিয়েছিলেন । ক্ষিতীশ জানতেন পরিবারের অন্যরা অভুক্ত থাকলে কোনি সাঁতারে মনোনিবেশ করতে পারবে না । এসবের মধ্য দিয়ে আমরা ক্ষিতীশকে এক মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ হিসেবে প্রতিভাত হতে দেখি ।
28. ‘ তোমার এই গঙ্গা থেকে কুড়োনো মেয়েটা কেমন টাইম করছে ? —কোন্ প্রসঙ্গে কার এই উক্তি ? উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন জুপিটার ক্লাবের বদু চাটুজ্জে । পাশাপাশি প্রসাসহ বস্তার পরিচয় ক্লাব হওয়ায় তারা কোনির ট্রেনিং ও একাগ্রতা এবং ক্ষিতীশের নিষ্ঠা দেখে ভয় পেয়েছিল । ধীরেন ঘোষ ও বদু চাটুজ্জে ভেবে নেয় ক্ষিতীশ জুপিটারকে টক্কর দিতে নিশ্চয় কোনো অসাধ্যসাধন করতে চলেছে । সে কারণেই কোনির ট্রেনিং – এর সময় তারা সেখানে খবরাখবর নেওয়ার জন্য আসেন এবং তাচ্ছিল্যের সুরে ক্ষিতীশের উদ্দেশ্যে উদ্ধৃত উক্তিটি করেন ।
উদ্ধৃত উদ্ভিটির মধ্যে দিয়ে বদু চাটুজ্জেদের মতো মানুষদের নীচতা প্রকাশ পেয়েছে । এইসব হীন ব্যক্তি মানুষের দুর্বল জায়গায় আঘাত করে , তাকে আরও দুর্বল করে দেওয়ায় সিদ্ধহস্ত । কোনির উদ্ধৃতাংশটির মতো সহজাত প্রতিভার অধিকারী , সমস্ত সামাজিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দক্ষ প্রশিক্ষকের হাতে পড়ে যখন পরিপূর্ণতা পেতে শুরু করেছে , তখনই বদু চাটুজ্জেদের মাথাব্যথা শুরু হয়েছে । তাই ‘ গঙ্গা থেকে কুড়োনো মেয়ে ‘ ডন ফ্লেজারের টাইম ধরে ফেলেছে কিনা ইত্যাদি ব্যঙ্গাত্মক কথা বলে কোনি ও ক্ষিতীশকে তিনি ও তারা দুর্বল করতে চেয়েছেন । কিন্তু অভিজ্ঞ ক্ষিতীশ অন্য ধাতুতে গড়া । তাই তিনিও তাচ্ছিল্যের উত্তর কৌশল সহকারেই দিয়েছেন ।
29. তোর আসল লজ্জা জলে , আসল গর্বও জলে – কোনির কোন কথার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলা হয়েছে ? তার আসল লজ্জা ’ ও ‘ আসল গর্ব জলে বলার কারণ কী ?
Ans: ক্ষিতীশ ও কোনিকে প্রশিক্ষক আর সাঁতারু হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে নানান প্রতিবন্ধকতা ও তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে । ধীরেন ঘোষ , বদু চাটুজ্জে , অমিয়া , হরিচরণরা কখনও কোনিকে ক্লাবে ভরতি না করে , কখনও সাঁতারের পুলে তাকে ডিসকোয়ালিফাই করে , কখনও – বা প্রথম হওয়া সত্ত্বেও জোর করে তাকে প্রশ্নোধৃত বক্তব্যের দ্বিতীয় বলে ঘোষণা করে বিপর্যস্ত করে দিতে পরিপ্রেক্ষিত চেয়েছে । আসল কথা ক্ষিতীশ ও কোনিকে ক্রীড়াক্ষেত্রে হারাতে না পেরে তাদের মানসিকভাবে দুর্বল করতে চেয়েছে । এমনকি ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতীর দোকানে অমিয়া ব্লাউজ করতে এসে , কোনিকে ‘ ঝি ‘ বলে সম্বোধন করে তার মনোবল ভাঙতে চেয়েছে । অমিয়ার কথায় ক্ষুব্ধ কোনি ক্ষিতীশের কাছে তার লজ্জা – অপমানের কাহিনি শোনালে , তিনি কোনির উদ্দেশ্যে উপরোক্ত মন্তব্যটি করেন ।
অমিয়ার ব্যঙ্গোক্তিতে কোনি আঘাত পাওয়ায় ক্ষিতীশ তাকে উদ্দেশ্য করে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেন । কোনির সবচেয়ে বড়ো পরিচয় সে একজন সাঁতারু । একজন সাঁতারুর আসল লজ্জা যখন সে প্রতিযোগিতায় পরাজিত হবে আর গর্ব হল যখন সে জয়লাভ করবে । ব্যক্তিগত আক্রমণ ও অপমান একজন সাঁতারুকে কখনও পরাজিত করতে পারে না । ক্ষিতীশ এ কথাই বলতে চেয়েছেন ।
30. ‘ ওর ছিপছিপে শরীরটার মধ্যে দিনে দিনে সজ্জিত যন্ত্রণায় ঠাসা শক্তির ভাণ্ডারটিতে যেন বিস্ফোরণ ঘটল ‘ — ‘ যন্ত্রণায় ঠাসা শক্তির ভাণ্ডার ’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন ? বিস্ফোরণের ফল কী হয়েছিল ?
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে আমরা দেখি , দিনের পর দিন যন্ত্রণায় ঠাসা শক্তির ভাঙার – অর্থ ধরে কঠিন থেকে কঠিনতম প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে কোনিকে তৈরি করেছিলেন ক্ষিতীশ । বহু প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে , নানা হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতিকে দূরে সরিয়ে কোনির মধ্যে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন শক্তি আর সামর্থ্য । ঘণ্টার পর ঘণ্টা অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে উদ্ভূত অমানুষিক যন্ত্রণাকে হার মানাতে গিয়ে কোনিকে বহু কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছিল । ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে তুলে , তাকে কাজে লাগিয়ে দৈহিক সক্ষমতা বৃদ্ধির যে চ্যালেও , তাকে বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে কোনি ও ক্ষিতীশ দিনরাত এক করে ফেলেছিল । আর এই যন্ত্রণার বিনিময়ে কোনির রোগা শরীরে এক অফুরন্ত শক্তির ভাণ্ডার সজ্জিত হয়েছিল । একেই লেখক ‘ যন্ত্রণায় ঠাসা শক্তির ভাণ্ডার ‘ বলে অভিহিত করেছেন । বিস্ফোরণের ফল বহুদিনের সাধনার ফলে কোনির মধ্যে সঞ্চিত শক্তির ভাণ্ডারের বিস্ফোরণ ঘটে । জুপিটার ক্লাবের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় কোনিকে চক্রান্ত । করে বাদ দেওয়া সত্ত্বেও প্রতিযোগিতার বাইরে থেকেও সে অমিয়াকে পরাজিত করেছিল । পাশাপাশি ক্লাব হওয়ার কারণে অ্যাপোলোর অংশে সাঁতার কেটে কোনি অমিয়াকে হারিয়েছিল ।
31. এই বুড়ো বয়সে ধেই ধেই করে নাচছিলে কেন ? —উদ্দিষ্ট ব্যক্তির ধেই ধেই করে নাচার কারণ কী ছিল ? এক্ষেত্রে বস্তার কোন্ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে ?
Ans: উদ্ধৃত অংশটির বক্তা ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী । এক্ষেত্রে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি হলেন ক্ষিতীশ ওরফে কোনির ‘ ক্ষিদা ‘ । কোনির শিক্ষক ক্ষিতীশ ছিলেন তাঁর ছাত্রীর মতোই , লাঞ্ছিত ও অপমানিতের দলে । মিথ্যা অজুহাতে তাঁকে জুপিটারের চিফ ট্রেনারের পদ ছাড়তে হয়েছিল । নিজের দক্ষতাকে প্রমাণের জন্য কোনিই ছিল ক্ষিতীশের তুরুপের তাস । জুপিটারের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় অমিয়াকে হারিয়ে কোনিকে শ্রেষ্ঠ সাঁতারু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা ও নিজেকে সফল কোচ হিসেবে তুলে ধরাই ছিল তাঁর লক্ষ্য । কিন্তু জুপিটারের কর্মকর্তারা তা বাস্তবায়িত হতে দেয়নি । তাই নাছোড় ক্ষিতীশ জুপিটারের লাগোয়া অ্যাপোলোর জলাশয়ে প্রতিযোগিতার বাইরে কোনির সাঁতারের ব্যবস্থা করেন । প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারলেও সময়ের হিসেবে কোনি অমিয়াকে পরাজিত করে । এই প্রমাণের পরীক্ষায় ছাত্রী – সহ সম্মানের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে সমালোচকদের যোগ্য জবাব দেওয়ার আনন্দে ক্ষিতীশ নাচতে শুরু করেছিলেন ।
← এমনিতে কঠিন স্বভাবের হলেও স্বামীর প্রতি লীলাবতীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ছিল যথেষ্ট । কোনির প্রতি তাঁর ব্যবহার ছিল মাতৃসুলভ । বস্তার দৃষ্টিভঙ্গির কোনির অনুরোধ রাখতে তিনি কমলদিঘির সাঁতার প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়েছিলেন দোকানের কর্মচারীদের নিয়ে । কোনির সাফল্যে ক্ষিতীশের নাচ লীলাবতীকে দোকানের কর্মচারীদের কাছে অপ্রস্তুত করে দিয়েছিল । তাই এমন মন্তব্য । আসলে লীলাবতী ছিলেন সংযত ও আত্মসম্মানবিশিষ্টা একজন মহিলা । এখানে তাঁর সেই ব্যক্তিত্ববোধেরই প্রকাশ ঘটেছে ।
32. ‘ আজও ছিল আমার সঙ্গে — কী থাকার কথা এখানে বলা হয়েছে । উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বুঝিয়ে লেখো ।
Ans: কোনির জীবনে তার দাদা কমলের প্রভাব ছিল অত্যন্ত বেশি রকমের । বাবার মৃত্যুর পর সাঁতারু হওয়ার স্বপ্নে বিভোর কমলকে সাত ভাই – বোনের সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য , দেড়শো টাকা মাইনের বিনিময়ে গ্যারেজের কাজ নিতে হয় । কমল তার সাঁতারু হওয়ার অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য কোনিকে উৎসাহ দিত এবং কোনিও দাদার স্বপ্নপুরণের স্বপ্ন দেখত । কিন্তু অনিনের মধ্যেই কমল যক্ষ্মা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায় । মৃত্যুর পরেও কোনি তার দাদল কমলকে এক মুহূর্তের জন্যেও ভুলতে পারেনি । তাই কোনি যখনই সাঁতার কাটত তার মনে হয় , একটা মুখ যেন তার সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে , আর মুখটা ঠিক যেন তার দাদার মতো । আজ অর্থাৎ কমলদিখির সাঁতার প্রতিযোগিতার দিনেও সেই মুখ তার সঙ্গে ছিল । কোনির সাঁতারু জীবনে সবচেয়ে বড়ো উৎসাহদাতা ছিল তার দাদা কমল । কমলের মৃত্যু বাস্তব হলেও সে কোনির অবচেতন মনে একটা চিরস্থায়ী জায়গা করে নেয় । কারণ কমলই ছিল তার সাঁতারু হওয়ার প্রথম উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য অনুপ্রেরণা । তাই কোনি স্বপ্নে দাদার কাছে মেডেল পাওয়ার অঙ্গীকার করে । তাকে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে নিয়ে যাবার আবদার জানায় । আসলে কোনির মনোজগতে নিজের এক পরম প্রিয়জনের শূন্যস্থান তাকে সবসময় আহত করত । তাই জলের নীচে বিভ্রমবশত কোনি তার দাদার মুখ দেখতে পেত । তা ছাড়া আত্মা সম্পর্কিত সংস্কার বা বিশ্বাস থেকেও সে ভয় পেয়েছিল ।
33. ‘ এভাবে মেডেল জেতায় কোনো আনন্দ নেই – বক্তা কে ? তার এমন কথা বলার কারণ কী ছিল ?
অথবা , ‘ তোমার লাস্ট ফরটি মিটারস আমি ভুলব না ‘ — কার উক্তি ? প্রসঙ্গ নির্দেশ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও ।
Ans: উদ্ধৃত উক্তিটির বস্তা হলেন কোনির অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিয়া বক্তার পরিচয় মিত্রের বাবা । নিজের মেয়ে মেডেল জিতলেও কোনির বিরুদ্ধে যেভাবে চক্রান্ত হয়েছিল তা তিনি মেনে নিতে পারেননি । জুপিটারের একসময়ের চিফ ট্রেনার ক্ষিতীশ ও তারই হাতে গড়া অন্যতম সাঁতারু কোনি ছিল জুপিটারের একটি গোষ্ঠীর চক্রান্তের শিকার । এই গোষ্ঠীর চক্রান্তেই স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে দু – বার বক্তার উদ্দিষ্ট কথা ডিসকোয়ালিফাই এবং একবার প্রথম হয়েও দ্বিতীয় স্থান গ্রহণ করতে হয় কোনিকে । ব্রেস্ট – স্ট্রোকের একশো মিটারে কোনির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল হিয়া মিত্র । সেখানে টাইমকিপার বদু চাটুজ্জে কোনিকে মিথ্যা অজুহাতে ফ্ল্যাগ নেড়ে ডিসকোয়ালিফাই করেন । এরপর ফ্রি স্টাইলে কোনি সাঁতার শেষ করে ফিনিশিং বোর্ড ছুঁয়ে মুখ ঘুরিয়ে দেখে অমিয়া এসে ফিনিশিং বোর্ড ছুঁল অথচ নাম ঘোষণার সময় প্রথম হিসেবে অমিয়ার নাম ঘোষিত হয় । এক্ষেত্রে ক্ষিতীশ প্রতিবাদ করলেও তা গ্রাহ্য হয়নি । দুশো মিটার ব্যক্তিগত মেডলি ইভেন্টে কোনিকে বাটারফ্লাইতে , যজ্ঞেশ্বর ভট্টাচার্য আগে থেকেই ফ্ল্যাগ তুলে প্রায় ডিসকোয়ালিফাই করে রেখেছিল । সেদিন সাঁতারের পুলে এই নির্লজ্জতাগুলো সকলের মতো হিয়ার বাবাকেও ছুঁয়ে গিয়েছিল । আর সেজন্যই মেয়ে মেডেল পেলেও সেই জয় তিনি মেনে নিতে না – পেরে উপরোক্ত মন্তব্যটি করেছেন ।
34. ‘ আমার মেয়েদের আমি উইথড্র করে নিচ্ছি ‘ — বস্তা কে ? তার এমন কথা বলার কারণ কী ছিল ?
Ans: আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের ট্রেনার ও হিয়া মিত্রের কোচ প্রণবেন্দু বিশ্বাস । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলা মহিলা সাঁতারু দল নির্বাচনের সভায় প্রণবেন্দু আলোচা উক্তিটি করেছিলেন । ক্ষিতীশের বিরোধী গোষ্ঠীর বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতা কোনির সামনের সব পথ একে একে বন্ধ করে দিচ্ছিল । এমনকি ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলা দলে তার স্থান পাওয়াও বক্তার উদ্দিষ্ট কথা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল । কিন্তু প্রণবেন্দু বিশ্বাস এর প্রতিবাদ করেন । ইতিপূর্বে তিনি কোনির সাঁতার দেখেছেন । একজন প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশের মতো তিনিও কোনির অপ্রতিহত প্রতিভাকে চিনতে পেরেছিলেন । কোনিকে বাংলা দলে রাখলে যে আখেরে রাজ্যেরই লাভ হবে , এটা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন । তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে , ‘ স্প্লিন্ট ইভেন্টে ওর সমকক্ষ এখন বাংলায় কেউই নেই । ‘ কোনি দলে থাকলে যে বাংলা মহারাষ্ট্রের কাছ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপ ছিনিয়ে আনতে পারবে , সেই বিশ্বাসও তাঁর ছিল । তাই কোনিকে দলে জায়গা দেওয়া নিয়ে প্রণবেন্দু অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ধীরেন ঘোষ প্রমুখর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন । শেষপর্যন্ত কোনিকে না নিলে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের সুইমারদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথাও তিনি জানিয়ে দেন । তাঁর এই কৌশলেই কোনি বাংলা দলে সুযোগ পায় ।
35. স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে কোনির বিরুদ্ধে যে – চক্রান্ত করা হয়েছিল , তার বিবরণ দাও ।
Ans: কোনির সাঁতারু জীবনের সূত্রপাত থেকেই তাকে একের – পর এক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়তে হয়েছে । একদিকে তার সামাজিক অবস্থান , অন্যদিকে ক্ষিতীশের শিষ্যা বলেই ক্ষিতীশের বিরোধী গোষ্ঠী বারবার তাকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে বাধা দেয় । স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে কোনির বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য চক্রান্ত করা হয় ।
ব্রেস্ট – স্ট্রোকের ১০০ মিটারে কোনি ও হিয়া একইসঙ্গে ৫০ মিটার থেকে টার্ন নেয় । কিন্তু টাইমকিপার বদু চাটুজ্জে লাল ফ্ল্যাগ নেড়ে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করে দেয় এই অজুহাতে যে , সে টার্ন করেই আন্ডারওয়াটার ডাবল – কিক নিয়েছে । এরপর ফ্রি – স্টাইল ইভেন্টে কোনি সাঁতার শেষ করে ফিনিশিং বোর্ড ছোঁয়ার পর অমিয়া এসে হাত চ্যাম্পিয়নশিপে ছোঁয়াল । কিন্তু প্রথম হিসেবে অমিয়ার নাম ঘোষিত কোনির বিরুদ্ধে চক্রান্তের বর্ণনাহল । ক্ষিতীশের প্রতিবাদ গ্রাহ্যই করা হল না । পরবর্তী ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলি ইভেন্টে কোনি বাটারফ্লাইতে হিয়া ও অমিয়ার কাছে পিছিয়ে পড়লেও , ব্যাক স্ট্রোকে অমিয়াকে ধরে ফেলে টার্ন নিতেই দেখা গেল যে , যজ্ঞেশ্বর ভট্চাজ লাল ফ্ল্যাগ তুলে ধরেছে । এবার ফলটি টার্ন নিয়েছে বলে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করা হল । অথচ যজ্ঞেশ্বর কোনি টার্ন নেবার আগে থেকেই লাল ফ্ল্যাগ তুলে ধরেছিল । এইভাবে স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে তিন – তিনবার কোনিকে চক্রান্তের শিকার হতে হয়েছিল ।
36. ‘ রমা যোশির সোনা কুড়োনো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোন স্বার্থ নেই — উদ্ধৃতাংশটির আলোকে বস্তার চরিত্রবিশ্লেষণ করো ।
Ans: উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের চিহ্ন । ট্রেনার ও হিয়া মিত্রের কোচ প্রণবেন্দু বিশ্বাস । প্রণবেন্দুর মধ্যে ক্রীড়াক্ষেত্রের সংকীর্ণতা ও স্বার্থপরতা ছিল না , ছিল জাতীয়তাবোধ । তাই হিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়াতেও ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রমা যোশির সোনা কুড়োনোকে আটকাতে এবং বাংলার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে কোনি ওরফে কনকচাপা পালকে বাংলা দলে অন্তর্ভুক্তির কথা জাতীয়তাবোধ বলেছিলেন । শুধু বলাই নয় , এই কথা বাস্তবায়িত না হলে তিনি প্রতিযোগিতা থেকে নিজের ক্লাবের মেয়েদের নাম তুলে নেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছিলেন । প্রণবেন্দু তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও সততা বিসর্জন দেননি । তাই স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে কোনিকে অন্যায় ভাবে করে ডিসকোয়ালিফাই করলে কিংবা প্রথম হওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় ঘোষণা করা হলে , তিনি তার প্রতিবাদ করেন । কোচ হিসেবে প্রণবেন্দু ছিলেন যথেষ্ট পেশাদার । তাই ক্ষিতীশ , হিয়ার সাঁতারের সময় জানতে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবে পেশাদারিত্ব উপস্থিত হলে , তিনি হিয়াকে এমনভাবে নির্দেশ দেন যাতে ক্ষিতীশ কোনোভাবেই তার সময়টা বুঝতে না পারে । কোনিকে সাঁতারু হিসেবে তুলে ধরতে যে – কজন সদর্থক ভূমিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে প্রণবেন্দু বিশ্বাসের নাম অবশ্যই করতে হয় ।
37. ‘ গপ্পো লেখ কোনি , তুই মস্তো লেখক হবি ‘ — কোনিকে এমন কথা বলার কারণ কী ? এই মন্তব্য কতদূর সংগত বলে তুমি মনে কর ?
Ans: উদ্ধৃত ব্যঙ্গোক্তিটি কোনির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে । জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের যে – দলটি গিয়েছিল তার মধ্যে কোনিও ছিল । দলের প্রত্যেকেই কোনির বিরুদ্ধাচরণ করত , তাকে একঘরে করতে বদ্ধপরিকর ছিল । হিয়া মিত্র রসিকতা করে বেলার ক্রিম নিয়ে মেখে অবশিষ্টটুকু কোনির গালে মাখিয়ে দেয় । বেলা ক্রিম কম দেখে কোনিকে সন্দেহ করে | এবং অমিয়া কোনির গালে ক্রিমের গন্ধ পেতেই আগুনে ঘি পড়ার মতো বেলা রেগে ওঠে এবং চড় মারে । কোনি আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি দিতে চাইলেও তারা তা বিশ্বাস করেনি । বেলা কোনির যুক্তি না শুনে উলটে তাকে উদ্ধৃত ব্যঙ্গোক্তিটি করে । মন্তব্য কতদূর সংগত এই মন্তব্য কোনো সভ্যসমাজই সমর্থন করে না । এই উক্তিটির মধ্যে দিয়ে বেলা – সহ তার বন্ধুদের শুধু নীচ মানসিকতাই প্রকাশ পায়নি , প্রকাশ পেয়েছে তাদের হীনম্মন্যতা । আভিজাত্যের অহংকারে তারা অন্ধ , তাই সাঁতারের জগতে কোনির মতো হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ের উঠে আসাকে তারা পছন্দ করেনি । হিয়া যে ঘটনার প্রকৃত অপরাধী , তা কোনি বোঝাতে চাইলেও তারা বিশ্বাস করেনি । কারণ হিয়া বিত্তবান পরিবারের মেয়ে । তাই এই উক্তি তাদের অসভ্যতা আর অসংযত ও বহুমাত্রায় অশোভন আচরণ বলেই প্রতিভাত হয়েছে ।
38. তবে একবার কখনো যদি জলে পাই … – কোন্ প্রসঙ্গে কার এই উক্তি ? এখানে ‘ জলে পাওয়া ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: উদ্ধৃতিটির বস্তু কোনি ওরফে কনকচাপা পাল । জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বাংলা থেকে যেসব মহিলা সাঁতারুরা গিয়েছিল তার মধ্যে ছিল কোনি । দলের অন্য মেয়েদের সঙ্গে কোনির সম্ভাব ছিল না । তারা কোনিকে ভয় পেয়েছিল , তাই সাঁতারের বাইরে কোনিকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিতে চেয়েছিল । বেলা , অমিয়া , হিয়ারা তাকে পরোক্ষে চোর অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করে । বড়োলোকের মেয়ে হিয়া বেলার ক্রিম নিয়ে মেখে অবশিষ্টটুকু কোনির গালে মাখিয়ে দেয় । বেলা ক্রিম কম দেখে কোনিকে সন্দেহ করে । তার গালে ক্রিমের গন্ধ আবিষ্কার করে অমিয়া । আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে কোনো কিছু শোনার আগেই বেলা কোনিকে চড় কষিয়ে দেয় । এরপর হিয়া সত্যটা বলতে সকলে শান্ত হয় । সেইসময় কোনি হিয়ার জন্য অপমানিত হয়েছে । বলে তার গালে চড় কষিয়ে দিয়ে জানায় , সে বস্তির মেয়ে , হিয়ার মতো অভিজাতের সঙ্গে তার তুলনা চলে না । তবে যদি সে হিয়াকে কোনোদিন জলে পায় এই পার্থক্য ঘুচিয়ে দেবে । কোনির একমাত্র সম্বল তার প্রতিভা আর আত্মবিশ্বাস । হিয়াকে সে অন্য কোনোদিকে পরাজিত করতে না পারলেও ‘ ছলে পাওয়া ’ – মূল অর্থ সাঁতারে পারবেই— এই আত্মবিশ্বাস তার ছিল । ক্ষিতীশের কথামতো তার লজ্জা ও শরম যে জলেই সে – কথা মনে রেখেই কোনি , হিয়ার দিকে এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল ।
39. ‘ এই মুহূর্তে সে বুঝল তার মাথা থেকে মুকুট তুলে নিয়েছে হিয়া ‘ — কার কথা বলা হয়েছে ? সে কীভাবে এই উপলব্ধিতে উপনীত হল তা বুঝিয়ে দাও ।
অথবা , অমিয়ার চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Ans: ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের উদ্ধৃতাংশে ‘ সে ’ বলতে বাংলার চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু অমিয়াকে বোঝানো হয়েছে । ‘ এই মুহূর্তে ….. মুকুট তুলে নিয়েছে যেভাবে এই উপলব্ধিতে উপনীত হয়েছে অমিয়া ← অমিয়া ছিল বাংলার সেরা সাঁতারুদের মধ্যে অন্যতম । অল্প বয়সে অধিক সাফল্যের কারণে তার মধ্যে দেখা দিয়েছিল ঔদ্ধতা ও অহংকার ; সেইসঙ্গে তার চারপাশে জুটেছিল চাটুকার । সে এতটাই আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েছিল যে , নিজেকে সর্বকালীন সেরা সাঁতারু ভাবতে শুরু করে । কিন্তু বাংলার সাঁতারে হিয়া মিত্রের উত্থান তাকে ধীরে ধীরে বেকায়দায় ফেলতে থাকে । অমিয়ার পায়ের তলার মাটি যে সরে গেছে তা সে বুঝতে পারে মাদ্রাজে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের ক্যাম্পে । তখন তার চাটুকাররাও আর তার পাশে থাকে না । তাই সেদিন অমিয়া , হিয়ার ট্রানজিস্টারে জোরে হিন্দি গান শোনার প্রতিবাদ করলে উত্তরে তাকে শুনতে হয় ‘ আপনি চেঁচাবেন না ‘ । এভাবেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোনি ও তার পুরোনো কোচ ক্ষিতীশের প্রতি তাচ্ছিল্য , অনীহা এবং বিরক্তি প্রকাশ এবং নিজের হারানো সম্মান উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়া অমিয়া ধীরে ধীরে একজন রক্তমাংসের চরিত্র হয়ে ওঠে ।
40. হঠাৎ তার চোখে ভেসে উঠল ‘ ৭০ ‘ সংখ্যাটা -প্রসঙ্গ নির্দেশ করে ‘ ৭০ ‘ সংখ্যাটা চোখে ভেসে ওঠার তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও ।
Ans: মাদ্রাজে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে যাওয়ার আগে পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের একের পর এক সোনাজয়ী সাঁতারু রমা যোশির শুধু নামই শুনেছিল কোনি । মাদ্রাজে গিয়ে রমা যোশির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটে । প্রথমটায় সাধারণ চেহারার মেয়েটিকে চিনতে না পারলেও নাম শুনে সে বুঝে যায় , এই তার সেই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী যাকে হারানোর জন্য কোনিকে অক্লান্ত প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে । সঙ্গে সঙ্গেই তার মনে পড়ে যায় ‘ ৭০ ‘ সংখ্যাটি । ক্ষিতীশ সর্বত্র কোনির চোখের সামনে বড়ো অক্ষরে লাল কালিতে ‘ ৭০ ‘ সংখ্যাটি লিখে ঝুলিয়ে রেখেছিল । এটা হল আসলে ৭০ সেকেন্ড অর্থাৎ ১ মিনিট ১০ সেকেন্ড , যা ছিল রমা যোশির সময়ের চেয়ে ২ মিনিট কম । আর এটাই ছিল কোনির লক্ষ্য । কোনি যাতে সে বছরই রমা যোশির সময়কে অতিক্রম করে যেতে পারে , তাই কোনির চোখে সর্বদাই ওই সময়টিকে ভাসিয়ে রেখেছিল ক্ষিতীশ । শয়নে – স্বপনে কখনও যাতে কোনি এ কথা না – ভোলে , সেইজন্য তার এই বন্দোবস্ত । সেই কথাই রমা যোশিকে দেখে কোনির মনে পড়ে গিয়েছিল ।
41. ‘ আপনারা ক্ষিতীশ সিংহকে জব্দ করার জন্য ওকে ভিক্টিমাইজ করলেন বক্তা কে ? ক্ষিতীশ সিংহকে জব্দ করার জন্য কাকে , কীভাবে ভিকটিমাইজ করা হয়েছে ?
Ans: আলোচ্য অংশের বক্তা হল বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের ট্রেনার ও হিয়া মিত্রের কোচ প্রণবেন্দু বিশ্বাস । কোনির সাঁতারু জীবনের সূত্রপাত থেকেই তাকে একের – পর – এক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়তে হয়েছে । ক্ষিতীশের শিষ্যা বলেই ক্ষিতীশের বিরোধী গোষ্ঠী বারবার তাকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে বাধা দিয়েছে । স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে কোনির বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য চক্রান্ত করা হয়েছিল । লক্ষ্যে পৌঁছোতে বাধা কোনিয় বিরুদ্ধে চক্রান্ত ব্রেস্ট – স্ট্রোকের ১০০ মিটারে কোনি ও হিয়া একইসঙ্গে ৫০ মিটার থেকে টার্ন নেয় । কিন্তু টাইমকিপার বদু চাটুজ্জে লাল ফ্ল্যাগ নেড়ে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করে দেয় এই অজুহাতে যে , সে টার্ন করেই ক্ষিতীশকে অভীষ্ট আন্ডারওয়াটার ডাবল – কিক নিয়েছে । এরপর ফ্রি – স্টাইল ইভেন্টে কোনি অমিয়ার আগে সাঁতার শেষ করে ফিনিশিং বোর্ড ছুঁলেও প্রথম হিসেবে অমিয়ার নাম ঘোষিত হল । পরবর্তী ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলি ইভেন্টে কোনি বাটারফ্লাইতে হিয়া ও অমিয়ার কাছে পিছিয়ে পড়লেও ব্যাক স্ট্রোকে অমিয়াকে ধরে ফেলে টার্ন নিতেই যজ্ঞেশ্বর ভট্চাজ লাল ফ্ল্যাগ তুলে ফলটি টার্নের মিথ্যে অভিযোগে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করল । এইভাবে স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে তিন – তিনবার কোনিকে চক্রান্তের শিকার হতে হয়েছিল । শুধু তাই নয় , মাদ্রাজে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলা দলে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও কোনিকে কোনো প্রতিযোগিতায় নামার সুযোগ দেওয়া হয়নি । শেষপর্যন্ত রিলেতে অমিয়ার পরিবর্তে কোনির নাম ঘোষণা করে প্রণবেন্দু , নিজের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে আলোচ্য উক্তিটি করেছিল ।
42. “ কাল আমাকে দেখাতেই হবে — কাকে , কী দেখাতে হবে ? এর কারণ কী ছিল ?
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটি অমিয়ার শপথবাক্য । ন্যাশনালে চারশো মিটারে হেরে যাওয়ার পর অমিয়া বুঝতে পারে হিয়া মিত্র খুব দ্রুত উঠে এসে তার এতদিনের ধরে রাখা আসনটা যেন নাড়িয়ে দিচ্ছিল । তার চারপাশের চেনা মানুষগুলি শিবির পরিবর্তন করে হিয়ার পাশে ঘুরতে শুরু করেছে । তাই তার হারানো জমি পুনরুদ্ধারে ন্যাশনালের পরের ইভেন্টগুলোতে নিজেকে প্রমাণ করতেই সে এমন শপথ নিয়েছিল ।
সাফল্য অনেক সময় মানুষের মনে জন্ম দেয় উপত্য ও অহংকারের । যেমনটি হয়েছিল অমিয়ার ক্ষেত্রে । সে তারই প্রশিক্ষককে অপমান করে , তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাকে এড়িয়ে যাবার জন্য জুপিটার ছেড়ে অ্যাপোলোতে যোগ দিয়েছে । আর তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে বেলা , অঙ্কুদের মতো চাটুকাররা । অমিয়া নিজের সাফল্যকে চিরস্থায়ী ধরে নিয়ে আত্মবিশ্বাসে ডুবে থেকেছে । আর সেই সুযোগে হিয়া নিজেকে তুলে ধরেছে সকলের সামনে । তার দিন যে ফুরিয়ে এসেছে তা অমিয়া টের পায় মাদ্রাজ ক্যাম্পের নানান ঘটনায় । সব কিছু তার হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার জন্য মরিয়া অমিয়া নিজেকে উদ্দীপিত করতে এ কথা বলেছিল ।
43. ‘ কোনি তুমি আনস্পোটিং ‘ — কোন প্রসঙ্গে , কার এই উক্তি ? কোনিকে ‘ আনস্পোর্টিং ’ বলার কারণ কী ?
Ans: হিয়ার কোচ প্রণবেন্দু বিশ্বাসের ক্ষুরধার যুক্তির কাছে পরাজিত হয়ে বাংলার সাঁতার দলের নির্বাচকরা বাধ্য হয়ে মাদ্রাজের ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনির নাম অন্তর্ভুক্ত করেন । কিন্তু প্রায় সমগ্র টুর্নামেন্টে কোনি স্রেফ দর্শক হিসেবে মনের তীব্র জ্বালা নিয়ে বসে থেকেছে । অবশেষে শেষ গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট রিলেতে অমিয়ার অসুস্থতার কারণে কোনির সামনে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ আসে । প্রণবেন্দুবাবু কোনির নাম প্রস্তাব করেন । হিয়া তার কাছে ছুটে যায় । অপমানিতা কোনি অভিমানবশত তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে হিয়া এই মন্তব্যটি করে । যদিও সাঁতার অন্ত প্রাণ কোনি ‘ আনস্পোর্টিং ’ তকমা ঝেড়ে ফেলে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ।
রিলেতে না – নামতে চাওয়ার পিছনে ছিল কোনির পুঞ্জীভূত ক্ষোভ , যা ছিল সংগত । অন্যদিকে , হিয়ার কাছে ব্যক্তিগত মান – অভিমান , অসন্তোষ – আক্রোশের চেয়ে বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছিল বাংলার স্বার্থ , যা ছিল প্রকৃত খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব । কোনির কাছে চড় খাওয়ার অপমান ভুলেও তাই হিয়া বাংলার স্বার্থে তার কাছে ছুটে গেছে । হিয়া জানত বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য কোনিকে প্রয়োজন । জাতীয় ভাবাবেগের কি কোনির কাছে কোনো মূল্য নেই ? এ কথা ভেবেই হিয়া উক্ত মন্তব্যটি করেছিল ।
44. ‘ জলকণায় তৈরি একটা আচ্ছাদনের ঘেরাটোপের মধ্যে কোনি যেন অশরীরী হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো । বর্মণবা , সেটা থেকে মুক্তি পাবার জন্য সে বারবার নিজেকে ঝাকুনি দিয়ে যাচ্ছে । —বস্তুবা পরিস্ফুট করো ।
অথবা , শিশু যেমন হাত বাড়িয়ে , দীর্ঘ অদর্শনের পর , মাকে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে , সেইভাবে তার হাত সে বাড়াল এবং বোর্ড স্পর্শ করল — উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো ।
অথবা , মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় কোনি যেভাবে সাফল্য পেয়েছিল তা লেখো ।
Ans: ‘ কোনি ‘ উপন্যাস অনুসারে , হিয়া মিত্রের কোচ প্রণবেন্দু উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য তথা বক্তব্যের পরিস্ফুষ্টন বিশ্বাসের হস্তক্ষেপে কোনি ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে মাদ্রাজগামী বাংলা সাঁতারু দলে জায়গা পেলেও , চক্রান্তের বেড়াজাল ভেদ করতে পারেনি । দলের সঙ্গে মাদ্রাজ গিয়েও অজানা কারণে কোনি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে না । দর্শকের মতোই বসে থাকতে হয় তাকে । কিন্তু বাংলা দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে অতি গুরুত্বপূর্ণ শেষ ইভেন্ট রিলেতে , অমিয়ার অসুস্থতার কারণে তার পরিবর্তে প্রণবেন্দু কোনির নাম সুপারিশ করেন । এরপর কোনি ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রমা যোশিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যায় । জলের মধ্যে তিরবেগে এগিয়ে যাওয়া কোনিকে তখন মনে হয় যেন কোনো অশরীরী , যে তার পড়ে পাওয়া সুযোগটুকুকে নিংড়ে নিজের সাফল্যকে ছোঁয়ার চেষ্টা করছে । এতদিন ধরে তিল তিল করে অতিকষ্টে সঞ্চিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে অমানুষিক যন্ত্রণাকে অতিক্রম করেছে কোনি , কখন যেন সেই যন্ত্রণাই তার অন্তরের অপ্রাপ্তিগুলিকে ঘুচিয়ে তাকে সকলের আগে তুলে এনেছে । সাফল্যই সেই যন্ত্রণার মুক্তির স্বরূপ । অবশেষে বহুদিন পর মায়ের দর্শনে শিশু যেমন দু – হাত বাড়িয়ে তার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে , সেভাবেই বুভুক্ষুর মতো কোনি দু – হাত বাড়িয়ে ফিনিশিং বোর্ড স্পর্শ করে । এভাবেই কোনির সমস্ত যন্ত্রণার অবসান ঘটে ।
45. ‘ ওই জলের নীচে লুকিয়ে ছিলুম ।’— কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এমন মন্তব্য করেছেন ? তার এই কথা বলার কারণ কী ছিল ?
Ans: আর্থিক অনটনের জন্য মাদ্রাজে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে যাওয়ার সময় ক্ষিতীশ কোনির সঙ্গে যেতে পারেননি । বিনা টিকিটে ট্রেনে করে মাদ্রাজ যেতে গিয়ে তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে লক – আপে বন্দি থাকেন । অবশেষে কোনি যেদিন রিলেতে প্রসঙ্গের উল্লেখ নামার সুযোগ পেল সেদিনই ক্ষিতীশ মুক্তি পেয়ে সেখানে হাজির হন । তাঁকে দেখে কোনি দ্বিগুণ শান্তি পায় এবং অসামান্য দক্ষতায় বিজয়ীর শিরোপা অর্জন করে । প্রতিযোগিতা শেষে ক্ষিতীশের দেখা পেয়ে কোনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করে , ‘ কোথায় লুকিয়েছিলে তুমি ? ‘ উত্তরে ক্ষিতীশ উদ্ধৃত উক্তিটি করেছিলেন । গুরুর ভাবধারা শিষ্যের মধ্যে প্রবাহিত করাই হল শিক্ষাপ্রক্রিয়া — যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে । ক্ষিতীশ তাঁর জীবনদর্শন দিয়ে কোনিকে গড়ে বক্তার প্রশ্নোত বক্তব্যের কারণ তুলেছিলেন । শারীরিক যন্ত্রণাকে অতিক্রম করে কীভাবে সাফল্যকে ছুঁতে হয় ক্ষিতীশ তা দিনের পর দিন কোনিকে শিখিয়েছেন । কোনির প্রতিদিনের জীবন চালিত হয়েছে ক্ষিতীশের নির্দেশিত পথে । ক্ষিতীশ তার কাছে শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন তার শিক্ষায় , জ্ঞানে , সিদ্ধান্তে । কোনির সবচেয়ে বড়ো অনুপ্রেরক তার দাদা কমল আর ক্ষিদা যেন কখন তার মনের মধ্যে মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছিল । ক্ষিতীশের সেই অমোঘ নির্দেশ ‘ ফাইট কোনি ফাইট ‘ সর্বদাই কোনির সঙ্গে থাকত । এই পরিপ্রেক্ষিতেই ক্ষিতীশের উদ্ধৃত উদ্ভিটি ।
46. ‘ কোনি ‘ উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
অথবা , ‘ সব পারে , মানুষ সব পারে … ফাইট কোনি , ফাইট / — উপরোক্ত উদ্ধৃতির আলোকে বক্তার চরিত্র আলোচনা করো । অথবা , “ ওইটেই তো আমি রে , যন্ত্রণাটাই তো আমি / -উপরোক্ত উদ্ধৃতাংশের মধ্য দিয়ে বক্তার চরিত্রের যে – বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে লেখো ।
Ans: কোনি উপন্যাসে ক্ষিতীশ এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী । ক্ষিতীশের মতে , চ্যাম্পিয়ন তৈরি করা যায় না , তাকে শুধু চিনে নিতে অভিজ্ঞ হয় । গঙ্গার ঘাটে কোনির লড়াকু সত্তাকে চিনে নিতে ভুল করেনি তাঁর অভিজ্ঞ চোখ । ঔদ্ধত্য বা প্রতিকূলতার কাছে এই দৃঢ়চেতা মানুষটি কোনোদিন মাথা নত করেননি । তাঁর বিরুদ্ধে যতই চক্রান্ত করা হোক – না – কেন তিনি নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকে সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন । কোনিকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর জন্য ক্ষিতীশ কঠোর থেকে তার অনুশীলন , শরীরচর্চা , খাওয়াদাওয়া , এমনকি জীবনযাত্রার ধরনকে নিয়ন্ত্রণ অধ্যবসায়ী ও পরিশ্রমী করেছেন । তিনি কোনিকে শেখান , যন্ত্রণা আর সময় তার দুই শত্রু । যন্ত্রণাকে জয় করে চেষ্টা করলে ‘ মানুষ সব পারে । তাই প্রতিনিয়ত তিনি কোনিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন ‘ ফাইট কোনি , ফাইট ‘ বলে । এই জন্যই ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোনি যখন নিজের যন্ত্রণা ব্যক্ত করছিল তখন ক্ষিদা তাকে বলেছিলেন — ‘ ওইটেই তো আমি রে , যন্ত্রণাটাই তো আমি । ‘ দৈহিকভাবে উপস্থিত না থেকেও ক্ষিতীশ কোনির জেতার প্রবল ইচ্ছে , জেতার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা , প্রচেষ্টার যন্ত্রণা সব কিছুর মধ্যেই ভীষণভাবে উপস্থিত ছিলেন ।
47. ওইটেই তো আমি রে , যন্ত্রণাটাই তো আমি ।- বক্তা কে ? উদ্ভিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছেন ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের জুপিটার সুইমিং ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ , ওরফে ক্ষিদ্দা । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে মাদ্রাজে গিয়েও চক্রান্তের শিকার হতে হয় কোনিকে । অকারণে বসিয়ে রাখা হয় তাকে । অন্য সাঁতারুদের থেকে চোর অপবাদও জোটে । অন্যদিকে বিনা টিকিটে ট্রেনে যাত্রা করতে গিয়ে লকাপে বন্দি হতে হয় ক্ষিতীশ সিংহকে । কার্যত কোনির একমাত্র বিশ্বাসের অবলম্বনও অনুপস্থিত । প্রতিযোগিতা শেষে ক্ষিতীশের সঙ্গে কোনির দেখা হলে স্বভাবতই কোনির অভিমানী কণ্ঠস্বরে অভিযোগের সুর বেজে ওঠে । কোনিকে শেষ অবধি চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করাতে বাধ্য হয় চক্রান্তকারীরা । জয়লাভ করে বাংলার হয়ে সোনাও অর্জন করে । ক্ষিদাকে তথা তার ট্রেনার ক্ষিতীশ সিংহকে তার প্রতিযোগিতার মুহূর্তের অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে ক্ষিদ্দা জলের গভীরে তার যে উপস্থিতি অর্থাৎ একজন সাঁতার ট্রেনারের কাছে জলই যে সব তাই নির্দেশ করেন । প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করতে যে প্রবল যন্ত্রণা কোনি পেয়েছে তার স্বরূপ বিশ্লেষণে ক্ষিদ্দা জানিয়েছেন , ওই যন্ত্রণাই তিনি । অর্থাৎ ক্ষিতীশ সংসার ভুলেছেন , নিজের ব্যক্তিসুখ বিসর্জন দিয়েছেন কোনি নামক একটি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে । সহ্য করেছেন বহু লাঞ্ছনা – অপমান । অপমানের সেই তীব্র যন্ত্রণাটা না – থাকলে ক্ষিতীশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারতেন না , তৈরি করতে পারতেন না কোনিকে । দিনের পর দিন যন্ত্রণার আগুনে পুড়িয়ে ইস্পাতকঠিন করেছেন কোনিকে । এই যন্ত্রণা একজন ট্রেনার ও একজন ট্রেনির উভয়েরই । আলোচ্য উক্তিটি প্রকৃতপক্ষে ক্ষিতীশের সংগ্রামী চেতনারই উদ্ভাসিত রূপ ।
48. ফাইট কোনি ফাইট ’ — সাধারণ মেয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে কী ধরনের ফাইট করতে হয়েছিল , নিজের ভাষায় লেখো ।
অথবা , দারিদ্র্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে – লড়াই তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Ans: কোনি জন্মসূত্রেই ছিল এক জাত ফাইটার । শ্যামপুকুর বস্তির এই মেয়েটি জীবনের শুরু থেকেই টিকে থাকার লড়াই করতে অভ্যস্ত । জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই তার লড়াই শুরু হয়েছিল । দারিদ্র্য আর দুর্ভাগ্যের সঙ্গে । বাবার মৃত্যুর পর দাদা হাল ধরলেও সংসারের নৌকায় গতি আসেনি । তাই অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার জন্য দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে যায় কোনি । রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় সে হিয়া মিত্রের কাছে হেরে যায় শুধুই টেকনিক না – জানার কারণে । কিন্তু যথার্থ ফাইটারের মতোই সে এই পরাজয় মেনে নিতে পারেনি । ক্ষিতীশ তাকে সাঁতার শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরু হয় কোনির জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের লড়াই । প্রথমে জুপিটার ক্লাবে ভরতির পরীক্ষা দিয়ে সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েও , শুধু ক্ষিতীশ সিংহের স্থানাভাবের কারণ দেখিয়ে তাকে ভরতি নেওয়া সহায়তায় কোনির হয় না । ক্ষিতীশের সঙ্গে কোনির ভাগ্য জড়িয়ে জীবনসংগ্রাম পড়ায় একের পর এক প্রতিবন্ধকতা তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায় । জুপিটার সুইমিং ক্লাবের প্রতিযোগিতায় কোনির এনটি গৃহীত না – হলেও ক্ষিতীশের চেষ্টায় সে সকলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তার প্রতিভা ও অবস্থান । স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে সে চক্রান্তের শিকার হয়ে দু – বার ডিসকোয়ালিফাই ও একবার প্রথম হয়েও দ্বিতীয় বলে ঘোষিত হয় । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে মাম্রাজে গিয়েও তাকে অকারণে বসিয়ে দেওয়া হয় । এমনকি , অন্য সাঁতারুদের কাছ থেকে চোর অপবাদও জোটে তার । কিন্তু অমিয়ার পরিবর্ত হিসেবে জলে নামার সুযোগ পেয়ে সে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছিল । এভাবেই গঙ্গার এক সাধারণ সাঁতারু থেকে জাতীয় স্তরে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করা এক অপ্রতিহত জীবনযোদ্ধার নাম হয়ে ওঠে কোনি ।
49. কোনির জীবনে ফিদ্দার অবদান আলোচনা করো ।
Ans: সাধারণ এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে থেকে নিজের একগুঁয়েমি , নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়কে পাথেয় করে কোনির কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় উত্তরণের পিছনে যে মানুষটির অবদান অনস্বীকার্য , তিনি হলেন কোনির ‘ ক্ষিদা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ । প্রতিভাকে চিনে নিয়ে তাকে সুশৃঙ্খল প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে চালনা করতে যে – অভিজ্ঞতার প্রয়োজন , তা ক্ষিতীশের ছিল । ক্ষিতীশ দেশের জন্য গৌরব এনে দেওয়া একজন খেলোয়াড় তৈরি করতে জলের মতো অর্থব্যায় করেছেন । নিজের রোজগার বা অন্য কোনো স্বার্থের জন্য নয় , কোনিকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কেবল একজন সুযোগ্য খেলোয়াড় তৈরির জন্য । নিজের সংসারে অভাব থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনির নিয়েছেন , কোনি অনিচ্ছুক হলেও তাকে দিয়ে প্রবল খাওয়া – ঘুমের পরিশ্রম করিয়েছেন , আবার বড়োদাদার মতো তাকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে গেছেন কুমির দেখাতে । যে – ক্ষিদা কোনি কেঁদে ফেললেও প্র্যাকটিস থেকে রেহাই দেননি ; খাওয়ার টোপ দিয়ে সাঁতার কাটানোর মতো অমানবিক আচরণ করেছেন , তিনিই আবার কোনি ঘুমিয়ে পড়লে তার মাথায় হাত বুলিয়েছেন । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনি নিজেকে প্রমাণ করার পর তার মাথার ওপর ঝরে পড়েছে তাঁর আনন্দাশ্রু ।
50. ক্ষিদ্দা কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল সে – সম্পর্কে আলোচনা করো ।
অথবা , কোনি ‘ উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহের যে – জীবনদর্শন ব্যক্ত হয়েছে , তা আলোচনা করো ।
Ans: ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে কোনির ‘ ক্ষিদ্দা ’ অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ আগাগোড়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ । উপন্যাসের শুরুতে বিষ্টুচরণের সঙ্গে কথোপকথনে ক্ষিতীশ নিজের শরীরকে চাকর বানানোর পরামর্শ দেন এবং পরক্ষণেই তার প্রমাণও দেন । তখনই পঞ্চাশোর্ধ্ব ক্ষিতীশের ভিতরকার এক সুস্থ – সবল যুবক যেন আমাদের চোখে পড়ে । তিনি বিস্টুকে জানান যে , শুধু গায়ের জোর নয় , বরং মানসিক জোর বা ইচ্ছাশক্তিও জরুরি । আবার চ্যাম্পিয়ন তৈরি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য , ক্ষিদার প্রেরণায় প্রশিক্ষককে মনস্তাত্ত্বিক হতে হয় । গুরুকে শিষ্যের কাছে শ্রদ্ধেয় হতে হয় । কথা , কাজ ও উদাহরণ দিয়ে তার মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলতে হয় । তাঁর ঘরে পাখা ছিল না , বিছানাও ছিল না । কারণ তিনি মনে করতেন যে , চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে শুধু শিষ্যকেই নয় , গুরুকেও কঠোর জীবনযাপন করতে হয় । ক্ষিতীশের মতে , ব্যক্তিগত রেকর্ড গড়ার জন্য সময় ও শক্তির অপচয় করা ছেড়ে দেশের জন্য গৌরব আনতে হবে । চ্যাম্পিয়ন তৈরি করা যায় না । তাদের চিনে নিতে হয় । কোনিকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শিক্ষা দিতে গিয়ে ফিন্দা তাকে চরম খাটিয়েছেন ; তাকে পরামর্শ দিয়েছেন যন্ত্রণা আর সময়কে হারানোর ; নিজেকে যন্ত্রণার সঙ্গে একাত্ম করেছেন । আর এই জন্যই ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর কোনিকে যন্ত্রণার কথা বলতে শুনে তার ক্ষিদা তাকে বলেছিলেন , ‘ ওইটেই তো আমি রে , যন্ত্রণাটাই তো আমি ।
51. কোনি চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Ans: যে – চরিত্রের নামানুসারে ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের নামকরণ , সেটিই যে উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হবে , তা বলাই বাহুল্য । শ্যামপুকুর বস্তির এই ডানপিটে স্বভাবের মেয়েটির সাফল্যের শিখর ছোঁয়ার কাহিনির মধ্যে দিয়ে । তার চরিত্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পাঠকের সামনে স্পষ্ট হয়ে যায় । গল্পের শুরুতে গঙ্গায় আম কুড়োনো থেকে শুরু করে , ক্লাইম্যাক্সে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের সুইমিংপুলে সর্বত্রই লড়াকু কোনির লড়াকু মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায় ।
শুধু সাঁতারের ক্ষেত্রে নয় , জীবনযুদ্ধের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সে নির্ভীকভাবে লড়াই চালায় প্রতিপক্ষ আর প্রতিকূলতার সঙ্গে । দারিদ্র্য , খিদে , কায়িক শ্রম— যে – কোনো কষ্টকেই কোনি দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে নেয় । তার শিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহও কষ্টসহিষু তাকে সেই শিক্ষাই দেন ।
তার এই কষ্টসহিষ্ণুতা আর অধ্যবসায়ই শেষপর্যন্ত তাকে সাফল্য এনে দেয় । জীবনে বারবার প্রতিকূলতার সম্মুখীন হলেও কখনোই ভেঙে পড়ে না কোনি । সমস্ত দুর্ভাগ্য , প্রতিবন্ধকতা , অপমান আর চক্রান্তের দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করে সে । তার জেদ আর দৃঢ় মনোভাবের দৃঢ়চেতা মধ্যে ক্ষিতীশ সিংহ খুঁজে পান লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নকে । হিয়া কোনিকে ‘ আনস্পোর্টিং ‘ বললেও সমগ্র উপন্যাস জুড়েই আমরা তার খেলোয়াড়সুলভ মনোভাবেরই পরিচয় পাই । শেষপর্যন্ত হিয়ার ‘ আনস্পোর্টিং ‘ অপবাদের জবাবও খেলোয়াড়সুলভ সে খেলোয়াড়সুলভ ভাবেই দেয় । তাই সব মিলিয়ে কোনি হয়ে ওঠে জীবনযুদ্ধের এক নির্ভীক সৈনিক ।
52. অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল । —কোনি কাভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল তা সংক্ষেপে লেখো ।
Ans: উদ্ধৃতাংশটি মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত । বস্তির মেয়ে কোনির সাঁতার কাটার শুরু গঙ্গায় । সেখান থেকে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা করে নেওয়ার পথটা তার জন্য নেহাত সাঁতার দলে জায়গা পাওয়ার প্রাথমিক ধাপ সহজ ছিল না । দারিদ্র্য ও অশিক্ষার কারণে তাকে পদে পদে হেনস্থা হতে হয়েছে তথাকথিত শিক্ষিত , সভ্যসমাজের কাছে । বিশেষত , ক্ষিতীশ সিংহের ছাত্রী হওয়ার দরুন বারবার ক্লাবের সংকীর্ণ রাজনীতি , দলাদলি ও চক্রান্তের শিকার হয়েছে কোনি । কিন্তু তার প্রশিক্ষক প্রতিনিয়ত উৎসাহ জুগিয়েছেন তাকে । কোনির বাংলা দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে অবশ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাস । কোনির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিয়া মিত্রের প্রশিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও কোনির বিরুদ্ধে ঘটে চলা হীন চক্রান্তের প্রতিবাদ করেন তিনি । সংকীর্ণ দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে তিনি বলেন , ‘ বেঙ্গলের স্বার্থেই কনকচাপা পালকে টিমে রাখতে কোনির সাঁতার দলে হবে । ‘ তাঁর অভিজ্ঞ চোখ কোনির প্রতিভাকে চিনে স্থায়ী জায়গা লাভ : নিতে ভুল করেনি । তাই তিনি বুঝেছিলেন , মহারাষ্ট্রের রমা যোশিকে ফ্রি স্টাইলে হারাতে হলে কিংবা স্প্রিন্ট ইভেন্টে জিততে গেলে বাংলা দলে কোনিকে রাখতেই হবে । এমনকি কোনিকে দলে না নিলে প্রণবেন্দু নিজের ক্লাবের সাঁতারুদের নাম প্রত্যাহার করার হুমকিও দেন । এভাবেই নিজের প্রতিভা ও অধ্যবসায়ের পাশাপাশি প্রণবেন্দু বিশ্বাসের ইতিবাচক ভূমিকায় বাংলা দলে জায়গা পায় কোনি ।
53. বিচরণ চরিত্রটির মধ্যে হাস্যরস ও সততার যে পরিচয় রয়েছে , তা আলোচনা করে বুঝিয়ে দাও ।
‘ অথবা , ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে বিচরণ ধরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।
Ans: ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে কোনির সাফল্যলাভ ও ক্ষিতীশের অস্তিত্বরক্ষার সংগ্রামের মধ্যে যে চরিত্রের উপস্থিতি কমিক রিলিফ এনেছে , তা হল বিস্টুচরণ ধর ওরফে বেষ্টাদা । মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া ও পরিশ্রমের অভাব অর্থবান পরিবারের সন্তান বিষ্টুচরণকে সাড়ে তিনমনি দেহের একটি ছোটোখাটো পাহাড়ে পরিণত করেছে । প্রথম দর্শনেই মালিশওয়ালাকে ‘ তানপুরো ছাড় ’ , ‘ ‘ তবলা বাজা ‘ , ‘ সারেগামা কর ’ ইত্যাদি নির্দেশ দিয়ে সে পাঠকের মনকে আকৃষ্ট করে । তাকে দ্বিতীয়বার দেখা যায় অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতার সভাপতির পদে । ক্ষিতীশের কাছে | শোনা কথাগুলির অনুকরণ এবং ক্ষিতীশের রসিকতাপূর্ণ বাক্যগুলি , পাঠককে তার সম্পর্কে আরও কৌতূহলী করে তোলে । বিষ্টু ধর সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়াবার প্রস্তুতি হিসেবে জনমত গঠনের চেষ্টায় টাকা দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করায় ও সেইসব অনুষ্ঠানে সভাপতি হয়ে বক্তৃতা দেয় । এই কারণে ক্ষিতীশকে সে তার বক্তৃতা লেখক হিসেবে বহাল করে । বিভিন্ন সময়ে ক্ষিতীশ ও বেষ্টদা পরস্পরের প্রয়োজনে এগিয়ে এসেছে । ক্ষিতীশের জ্ঞান , বুদ্ধি ও জীবনদর্শনে বিধরও প্রভাবিত হয়েছিলেন । ক্ষিতীশের প্রতি বিস্টুর শ্রদ্ধা ছিল অকৃত্রিম । তাই লীলাবতীর দেওয়া টাকা কিংবা অ্যাপোলো ক্লাবের ডোনেশন— এসব কোনো ক্ষেত্রেই সে ক্ষিতীশের কথার অমান্য করেনি । জুপিটার ক্লাবের সদস্যদের চক্রান্তে প্রতিযোগিতায় কোনির নাম বাদ গেলে বিচরণ প্রেস কনফারেন্স ডাকা , ডিমনস্ট্রেশন দেওয়া , মিছিল করা ইত্যাদির কথা ভাবতে থাকে । জুপিটারের কম্পিটিশনের বাইরে থেকেও কোনি যখন অমিয়াকে পরাজিত করে , তখন সে অতি উত্তেজনায় প্রথমে অজ্ঞান হয়ে গেলেও জ্ঞান ফিরলে দশ কেজি রসগোল্লার অর্ডার দেয় । সুতরাং , বিষ্টুচরণ চরিত্রটির মধ্যে আমরা মজা ও হাসির উপাদানের পাশাপাশি সরলতা ও সততার পরিচয় পাই ।
54. হিয়া মিত্রের চরিত্র আলোচনা করো ।
Ans: হিয়া মিত্র অভিজাত বিত্তবান পরিবারের সন্তান । কোনির মতো দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চ্যালেও তাকে নিতে । হয়নি । বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণবেন্দু বিশ্বাসের মতো কোচ পেতে তাকে কোনো লড়াই জিততে হয়নি ।
বিত্তবান পরিবারের মেয়ে হলেও হিয়া মাটিতে পা রেখে চলতে জানে । অমিয়ার মতো তাকে কখনও অপমানজনক মন্তব্য করতে শোনা যায় না । মজা করে বেলার ক্রিমের কৌটো থেকে ক্রিম নিয়ে নিজে মেখে কোনির গালে লাগিয়ে দিতে হিয়ার এতটুকু দ্বিধা নেই । এই সহজসরল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনির কাছে তাকে চড়ও খেতে হয় । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রিলে রেসে অমিয়ার পরিবর্ত হিসেবে । কোনিকে ডাকতে ছুটে আসে হিয়া ।
গোটা উপন্যাসে খেলোয়াড়সুলত তার মুখে কোনির বিরুদ্ধে কেবল দুটি কথা শোনা যায় । প্রথম , অত হিংসে ভাল নয় ‘ এবং দ্বিতীয় যখন কোনি রিলে নামতে রাজি হয় না তখন ‘ কোনি তুমি আনস্পোর্টিং ‘ । হিয়া ছিল কোনির দুর্বলতা । হিয়াকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যেই যেন কোনির সাফল্যের সূত্রপাত । তাই কোনির উত্থানের পিছনে হিয়া মিত্রের পরোক্ষ অবদানও অস্বীকার করা যায় না ।
55. লীলাবতী চরিত্রটি কীভাবে অন্যতম সহযোগী হয়ে উঠেছে , তা ‘ কোনি ’ উপন্যাস অবলম্বনে আলোচনা করো ।
Ans: ‘ কোনি ’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র যদি হয় কোনি ও ক্ষিতীশ , তা হলে এই দুই চরিত্রকে ধারণ করে রেখেছে ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী । সে কেবল ক্ষিতীশের মেরুদণ্ড বা support system হিসেবেই কাজ করেনি , এক প্রথর ব্যক্তিত্ব ও নিজস্বতারও ছাপ রেখেছে গোটা উপন্যাস জুড়ে ।
সংসার চালানোর অর্থের উৎস যে – দোকানটি , তার উন্নয়নের জন্য দোকানটিকে ক্ষিতীশের হাত থেকে উদ্ধার করে নিজে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে লীলাবতী । সেজন্য নিজের গহনা বন্ধক দিয়েছে এবং প্রচুর পরিশ্রম করে দোকানটি দাঁড় করিয়েছে । উদ্যমী কোনিকে প্রশিক্ষণ দিতে ক্ষিতীশের এক পয়সা রোজগার তো হয়ই । না , বরং নিজের পয়সা খরচ করে কোনির দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্না খাওয়াদাওয়ার ভার নিতে হয় । কিন্তু লীলাবতী এ নিয়ে কোনো অসন্তোষ প্রকাশ করে না , শুধু নতুন দোকানের সেলামি বাবদ টাকা দিতে হবে বলে ব্যয়সংকোচের কথা স্বামীকে মনে করিয়ে দেয় । ক্ষিতীশ স্ত্রীর প্রখর ব্যক্তিত্বকে ভয় করলেও লীলাবতী কিন্তু স্বামীকে শ্রদ্ধা করে । তাই স্বামীর এঁটো থালায় খেতেও সে স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল কুণ্ঠাবোধ করে না । ক্ষিতীশ দৈহিক সুস্থতার হেতু দেখিয়ে সেদ্ধ খাওয়া চালু করলে , অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে তা মেনে চলে । ক্ষিতীশ বিচরণের কাছ থেকে সেলামির টাকা উদ্ধার করে দেবে জানালে সে স্বামীর সে – কথা কায়মনোবাক্যে বিশ্বাস করে । খাওয়াদাওয়ার শর্তে কোনিকে তার দোকানে কাজ করতে হয় , যদিও কোনিকে লীলাবতী বেতনও দেয় । দোকানে যেতে দেরি হলে লীলাবতী সহানুভূতিশীল । যেমন কোনিকে বলে ‘ বেরিয়ে যাও ’ , তেমনই জুপিটার ক্লাবের প্রতিযোগিতা জিতলে কোনিকে সিল্কের শাড়ি পুরস্কার দেওয়ারও কথা দেয় । মোটের উপরে , লীলাবতী চরিত্রটিকে ক্ষিতীশের প্রধান সহযোগী চরিত্র বললে চরিত্রটির যথার্থ মূল্যায়ন করা হয় ।
56. ফিতীশ সিংহ কোনিকে সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন করানোর জন্য যে কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন , তার পরিচয় দাও ।
Ans: নিষ্ঠাবান সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ কোনির ভিতরে লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষণগুলিকে চিনতে পেরেছিলেন । তাই তাকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর লক্ষ্যে তিনি তার জন্য কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন । প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার কোনির কঠোর দু – সপ্তাহের মধ্যেই ক্ষিতীশ কোনিকে সাঁতারের অনুশীলন বিভিন্ন কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন । কিন্তু প্রতিদিন সকাল সাড়ে ছ – টা থেকে সাড়ে আটটা— দু – ঘণ্টা ধরে প্র্যাকটিস চালিয়েও কোনি সেসব কৌশল আয়ত্ত করে উঠতে পারেনি । তখন ক্ষিতীশ তাকে একটা কস্টিউম আর প্রতিদিন দুটো ডিম , দুটো কলা আর দুটো টোস্টের বিনিময়ে বাড়তি আরও এক ঘণ্টা করে প্র্যাকটিসের জন্য রাজি করান । এভাবে ক্ষুধার্ত মানুষকে লোভ দেখিয়ে পরিশ্রম করানোটা অমানবিক জেনেও কোনির স্বার্থেই তিনি একাজ করেন । অনুশীলন চলাকালীন কোনি ক্লান্ত হয়ে জল ছেড়ে উঠে আসতে চাইলে ক্ষিতীশ বাঁশের লগা নিয়ে তার দিকে তেড়ে গিয়ে তার মাথা ভেঙে দেওয়ার ভয় দেখাতেন । আবার এরই পাশাপাশি কোনির স্বাস্থ্যের যত্নও নিতেন তিনি । সে যাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারদাবার খেতে পারে , সেজন্য নিজের বাড়িতে কোনির খাওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি । কোনির ওয়েট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও তিনি করেন । শীতকালেও তিনি কোনির প্র্যাকটিস জারি রাখেন । মহারাষ্ট্রের রমা যোশি ৭২ মিনিটে ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইল শেষ করলে ক্ষিতীশ কোনির চোখের সামনে ‘ ৭০ ’ লিখে রেখে তাকে প্রতিনিয়ত উজ্জীবিত করেন । এভাবেই ক্ষিতীশের কঠোর প্রশিক্ষণে দক্ষ সাঁতারু হয়ে ওঠে কোনি ।
57. ‘ আমি কি ঠিক কাজ করলাম ? অ্যাপোলোয় যাওয়া কি উচিত হলো ? – ‘ আমি ‘ কে ? সে অ্যাপোলোয় কেন গিয়েছিল ? অ্যাপোলোয় যাওয়া নিয়ে তার মনে দ্বন্দ্বের কারণ কী ?
Ans: প্রশ্নোদৃত অংশটি মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের অন্তর্গত । এখানে ‘ আমি ’ বলতে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের কথা বলা হয়েছে । → ক্ষিতীশ ছিলেন জুপিটার ক্লাবের চিফ ট্রেনার । কিন্তু সেখানে তিনি ঘৃণ্য ক্রীড়া – রাজনীতির শিকার হন । আদর্শবাদী ও শৃঙ্খলাপরায়ণ ক্ষিতীশ উদীয়মান সাঁতারুদের মধ্যে কোনোরকম শৈথিল্য পছন্দ করতেন না । এই জন্য ক্লাবের সাঁতারুদের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য দেখা দেয় । সেইসঙ্গে হরিচরণের চিহ্ন ট্রেনার হওয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা পরিস্থিতিকে ক্ষিতীশের বিপক্ষে নিয়ে যায় । ক্লাব পরিচালনা নিয়ে ক্লাবের কর্মকর্তা – সদস্য ও সাঁতারুদের সঙ্গে তাঁর মানসিকতার বিস্তর ব্যবধান গড়ে ওঠে । ক্লাবের সভায় তাঁর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এনে অপমান করায় তিনি জুপিটার ছেড়ে দেন । কিন্তু কোনিকে সাঁতার শেখানোর সংকল্পকে বাস্তবায়িত করতেই শেষে তিনি অ্যাপোলোয় যোগ দেন ।
সাঁতার অন্ত প্রাণ ক্ষিতীশ জুপিটারকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন । তাঁর সঙ্গে জুপিটার ক্লাবের সম্পর্ক ছিল পঁয়ত্রিশ বছরের । জুপিটারকে গৌরবান্বিত করার জন্য কিংবা ভারতসেরা করার জন্য ক্ষিতীশের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না । ক্লাবের ভালোমন্দের কথা ভাবতে গিয়েই তিনি মন দিয়ে দোকান সামলাতে পারেননি । অথচ পরিণামে সেই ক্লাব থেকেই তাঁকে সরে গিয়ে ; চিরশত্রু অ্যাপোলোর শরণাপন্ন হতে হল । কয়েকজন লোভী , মূর্খ ও স্বার্থপরের ষড়যন্ত্রে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে হাত মেলাতে হল । মানসিক এই টানাপোড়েনেই ক্ষিতীশ অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন ।
58. এবার বরং প্রজাপতিকে দেখাশুনা করো । – বক্তা কে ? ‘ প্রজাপতি ’ কী ? বক্তা কেন এমন উপদেশ দিয়েছেন ?
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা ভেলো ।
→ ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী , টেলারিং – এ ডিপ্লোমা পাওয়া দুটি মেয়েকে ‘ প্রজাপতি ‘ কী ? নিয়ে বাচ্চা ও মহিলাদের পোশাক তৈরি করার জন্য ; সিনহা টেলারিংকে সম্পূর্ণ বদলে ফেলে গড়ে তোলে ‘ প্রজাপতি ‘ । বক্তার প্রশ্নোদ্ভূত উপদেশের কারণ → সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশের জুপিটার ক্লাবের সঙ্গে পঁয়ত্রিশ বছরের সম্পর্ক । অথচ ক্লাবের ঘৃণ্য ক্রীড়া – রাজনীতির শিকার হতে হয় তাঁকে । ক্লাবে সভা ডেকে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তাঁকে একপ্রকার ক্লাব ছাড়তে বাধ্য করা হয় । কিন্তু পঁয়ত্রিশ বছর ধরে কমলদিঘির জলের শ্যাওলা আর ঝাঁঝির আঁশটে গন্ধই তাঁকে সাহস জুগিয়েছে । তাঁর মনে হয়েছে , এমন সুঘ্রাণ হয়তো আর কোথাও নেই । আজ হঠাৎ সম্পূর্ণ কর্মহীন হয়ে পড়া দিশাহীন ক্ষিতীশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন । নিজের শিষ্যসম ভেলোর কাছে জানতে চেয়েছেন যে , কী করা যায় । তখন ভেলো উপরোক্ত পরামর্শটি দেয় । একলা মেয়েমানুষ লীলাবতীর চালু দোকান সামলাতে হিমশিম অবস্থা , তাই ক্ষিতীশের উপস্থিতিতে সুবিধাই হবে ভেবে ; সে এমন পরামর্শ দিয়েছিল ।
59. ‘ অভিনন্দন আর আদরে সে ডুবে যাচ্ছে ।’— ‘ সে ‘ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? যে – অভিনন্দন আর আদরে ডুবে যাচ্ছে , তার সংগ্রামী জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।
Ans: প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি মতি নদীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের অন্তর্গত । এখানে ‘ সে ’ বলতে কোনির কথা বলা হয়েছে । দ্বিতীয় অংশের জন্য 48 নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো ।
60. ‘ ভারিবিচালে বিস্টুধর ঘোষণা করল এবং গলার স্বরে বোঝা গেল এর জন্য সে গর্বিত / – বিস্টুধর ভারিভিচালে কী ঘোষণা করেছিল । সে যে বিষয়ের জন্য গর্ববোধ করত তার পরিচয় দাও ।
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের একটি বর্ণময় চরিত্র বিষ্টুচরণ ধর । মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া আর কুঁডেমির ফলে ধনী বিখুঁচরণ প্রায় একটি বিধরের সাড়ে তিনমনি দেহের চর্বির পাহাড়ে পরিণত ভারিতিকালে ঘোষণা হয়েছে । অথচ তার ধারণা , সে যথেষ্ট সংযমী জীবনযাপন করে । তাই বিঈধর ভারিকিচালে ঘোষণা করে যে , খাওয়ার প্রতি তার কোনো লোভ নেই এবং সে নিয়মিত ডায়টিং করে ।
→ সে নিজের ডায়টিং – এর নমুনা পেশ করতে গিয়ে বলে , আগে রোজ আধ কিলো ক্ষীর খেলেও এখন মোটে তিনশো গ্রাম যায় । সেভাবেই জলখাবারের কুড়িটা লুচি এখন কমে দাঁড়িয়েছে পনেরোয় । রাতে মাপমতো আড়াইশো গ্রাম চালের ভাত আর খানবারো রুটি । ঘি খাওয়া প্রায় বন্ধ , তবে গরম ভাতের সঙ্গে নাত্র চার চামচ ; এর বেশি একবিন্দুও নয় । বিকেলের জন্য বরাদ্দ দু – গ্লাস মিছরির শরবত আর চারটে কড়াপাকের সন্দেশ । বাড়িতে রাধাগোবিন্দের মূর্তি থাকায় মাছ – মাংস ছুঁয়েও দ্যাখে না । সুতরাং , সংযম কৃচ্ছ্রসাধনের মধ্যেই সে বেঁচে আছে । এই জন্যেই তার গর্ব ।
61. সফল সাঁতারু হওয়ার ক্ষেত্রে কোনির প্রতিবন্ধকতাগুলি কী ছিল ? সেগুলি কাটিয়ে উঠতে ক্ষিতীশ সিংহ তাকে কীভাবে সাহায্য করেছিলেন ?
Ans: সাঁতারু হওয়ার ক্ষেত্রে কোনির প্রতিবন্ধকতা উত্তর / মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র কোনি এক হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে । বস্তিবাসী কোনির মধ্যে সাহস – জেদ – অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল না । কিন্তু তার পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ প্রতিকূলে । পেটের খাবারের কিংবা শিক্ষার অভাব এবং মা ও সাত ভাই – বোনের সংসারে সীমাহীন দারিদ্র্যের সঙ্গে দিনযাপন— এসব কোনো কিছুই উপেক্ষা করা কোনির পক্ষে সহজ ছিল না । সেইসঙ্গে এটাও স্বীকার্য , সত্যিকারের সাঁতারু হয়ে উঠতে গেলে শুধু সাঁতার জানলেই চলে না , উপযুক্ত প্রশিক্ষণ আর সাধনার প্রয়োজন হয় । এই এতকিছু ‘ নেই’— এর মধ্যেও ক্ষিদ্দা তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নের সহজাত লক্ষণটিকে ঠিক চিনতে পেরেছিলেন ।
ক্ষিতীশ বুঝেছিলেন পেটের খিদে নিয়ে কোনো মহৎ কাজ করা যায় না । তাই তিনি কোনির পেটের খাবারের সঙ্গে তার মাকেও কাজ জুটিয়ে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দিয়ে ; তাদের পরিবারের ন্যূনতম চাহিদাটুকু পুরণের উঠতে ক্ষিতীশ চেষ্টা করেছিলেন । তিনি কোনিকে দিনের – পর – দিন সিংহের সহযোগিতা শিখিয়ে গেছেন শারীরিক যন্ত্রণাকে অতিক্রম করার কৌশল । কোনির দিনরাত নিয়ন্ত্রিত হয়েছে ক্ষিতীশের নির্দেশিত পথে । কোনির নিষ্ঠায় , সংকল্পে ও জ্ঞানে তিনিই হয়ে উঠেছেন অদৃশ্য অনুপ্রেরণা । ‘ ফাইট কোনি ফাইট’— এই মন্ত্রের উজ্জীবনী স্পর্শেই কোনি কমলদিঘির জল থেকে মাদ্রাজে পৌঁছে , যন্ত্রণাকে সাফল্যের স্তরে বদলে দিতে পেরেছিল ।
62. রমা যোশির ক্লান্ত হাত কোনির পিঠে চাপড় দিয়ে গেল । রমা যোশি কে ? কী কারণে সে কোনির পিঠ চাপড়ে দিয়েছিল ?
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাস অনুসারে মহারাষ্ট্রের মহিলা সাঁতারু রমা যোশি ছিল সবচেয়ে দক্ষ এবং মহিলাদের মধ্যে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ।
কোনি অবশেষে হিয়া মিত্রের প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাসের হস্তক্ষেপে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মাদ্রাজগামী বাংলা সাঁতারু দলে জায়গা পায় । কিন্তু সেখানে তার স্থান হয় দর্শকাসনে । ঘৃণ্য চক্রান্তের শিকার কোনিকে কোনো প্রতিযোগিতাতেই অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় না । তবে শেষ ইভেন্ট ৪ × ১০০ মিটার রিলে শুরু হওয়ার আগেই অমিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে । তখন প্রণবেন্দুর তৎপরতায় সকলে কোনিকে ফোনির পিঠ নামানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় । রমা যোশির চাপড়ানোর কারণ । প্রায় তিন সেকেন্ড পরে কোনি জলে পড়ে । প্রথম তিরিশ মিটার খুব একটা কিছু বোঝা না গেলেও , তারপরেই দর্শকেরা টের পায় আজ একটা কিছু ঘটতে চলেছে । নিজের সমস্ত দুঃখ – যন্ত্রণা – বেদনা ও অপ্রাপ্তিকে কোনি জলের মধ্যে উজাড় করে দেয় । জলের মধ্যে কালো প্যান্থারের মতো এগিয়ে চলা কোনিকে অশরীরী বলে মনে হয় । সে যেন অন্ধকারের যন্ত্রণা ছিঁড়ে মাকে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়া শিশুর মতো ; রমা যোশির আগেই হাত দিয়ে বোর্ড স্পর্শ করে । এরপর জল থেকে উঠে সকলের অভিনন্দন আর আদরে কোনি ডুবে যেতে থাকে । তখন পরাজিত রমা যোশির ক্লান্ত হাত তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে যায় ।
63. ‘ জাতীয় সাঁতারের আজ শেষ দিন – কোথায় জাতীয় সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ? শেষ দিনের অবিস্মরণীয় ঘটনাটির বিবরণ দাও ।
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ’ উপন্যাস অনুসারে জাতীয় সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়েছিল মাদ্রাজের চিপকে সমুদ্রতীরের সুইমিং পুলে । দ্বিতীয় অংশের জন্য 48. নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো ।
64. ‘ বিষ্টুধরের বিরক্তির কারণ হাত পনেরো দুরের একটা লোক – বিস্টুধর কে ? তার বিরক্তির কারণ কী ?
Ans: প্রথম অংশের জন্য 3 নং প্রশ্নের উত্তরের প্রথম অংশটি দ্যাখো । বারুণীর দিন এই বিস্টুধর যখন গঙ্গার ঘাটে উপুড় হয়ে মালিশ উপভোগ করছে , তখন সাদা লুঙ্গি – গেরুয়া পাঞ্জাবি ও কাঁধে রঙিন ঝোলা নিয়ে ক্ষিতীশ সিংহ ওরফে ক্ষিদ্দা , সেদিকে তাকিয়ে বিষ্টুধরের বিরক্তির মুচকি হাসছিলেন । বেষ্টাদা ভালোভাবেই বোঝে , এ হাসির কারণ তার শরীরের আয়তন । বাচ্চা ছেলেরাও এমন হাসে কিন্তু একটা বয়স্ক লোকও তাকে দেখে হাসছে দেখে । সে বিরক্ত হয়েছিল ।
65. টেবিলের মুখগুলি উজ্জ্বল হয়ে উঠল , কেউ মাথা নাড়ল , কেউ নড়েচড়ে বসল / – টেবিলের কোন্ কোন্ মুখের কথা বলা হয়েছে । তাদের মুখ উজ্জ্বল হওয়ার কারণ কী ?
Ans: প্রশ্নোদৃত অংশটি মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের অন্তর্গত । এখানে ‘ টেবিলের মুখগুলি বলতে জুপিটার ক্লাবের বিভিন্ন কর্মকর্তার কথা বলা হয়েছে । এরা হলেন ক্লাবের নতুন প্রেসিডেন্ট টেবিলের মুগুলির ও বিধায়ক বিনোদ ভড় , সম্পাদক ধীরেন ঘোষ , যজ্ঞেশ্বর ভট্টাচার্য , প্রযুণ্ণ বসাক , বদু চাটুজে , কার্তিক সাহা ও হরিচরণ মিত্র ।
→ জুপিটারের সাঁতারুরা ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছিল তা সত্য হলেও পিছনে কিন্তু ক্রীড়া – রাজনীতির হাত ছিল যথেষ্টই । অভিযোগগুলি হল—
> দক্ষ সাঁতারু শ্যামলের সময়কে আমেরিকার বারো বছরের মেয়েদের সময়ের সঙ্গে তুলনা করে জুনিয়রদের কাছে তাকে অপমান করা ।
> গোবিন্দের মতো ব্রেস্ট – স্ট্রোক বেঙ্গল রেকর্ড হোল্ডার ও ন্যাশনালে প্রতিনিধিত্বকারীকে কান ধরে ক্লাব থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলা ।
> আর – এক দক্ষ সাঁতারু অসুস্থ সুহাসের বাড়ি গিয়ে তার বাবাকে যা – তা বলা ।
→ দুই মহিলা সাঁতারু অমিয়া ও বেলার পোশাক , চুলকাটা ইত্যাদি নিয়ে খিটখিট করা , তাদের জোর করে ব্যায়াম করানো ।
→ সাঁতারুদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অর্জনে এবং তাদের মেজাজমর্জি বুঝতে কোনো মেডেল জেতার ইতিহাস না থাকা । ক্ষিতীশ এই সমস্ত অভিযোগ সত্য বলে মেনে নেওয়ায় টেবিলের মুখগুলি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল ।
66. প্রথমদিকে লীলাবতী বিদ্রোহী হয়েছিল ।’— লীলাবতীর চরিত্রের পরিচয় দাও । তার বিদ্রোহী হওয়ার কারণ কী ?
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল লীলাবতী । স্বল্পভাষী , কর্মপটু , বাস্তববাদী ও প্রখর ব্যক্তিত্বময়ী এই মহিলাই যেন ; কোনি এবং ক্ষিতীশকে ধারণ করে রেখেছে । সে ক্ষিতীশের স্ত্রী হলেও কখনোই ক্ষিতীশের ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়নি । তাই লীলাবতীর চরিত্র দোকানের বেহাল অবস্থায় সেটিকে ক্ষিতীশের হাত থেকে উদ্ধার করে সে চার বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছে । কোনির প্রতি ক্ষিতীশের দায়দায়িত্বের বহর দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেনি । বরং স্বামীকে সেলামির প্রসঙ্গে ব্যয়সংকোচের কথা সে মনে করিয়ে দিয়েছে । খাবারের ব্যাপারে স্বামীর নির্দেশ মুখ বুজে সহ্য করে নিয়েছে । আবার কোনিকে খাওয়ার শর্তে দোকানে কাজ করতে দিয়েছে , যদিও এজন্য সে বেতনও দিয়েছে । কিন্তু কাজে দেরি হলে কোনিকে যেমন ‘ বেরিয়ে যাও ‘ শুনতে হয়েছে , তেমন সাঁতারে জিতলেই মিলেছে ফ্রক কিংবা সিল্কের শাড়ির প্রতিশ্রুতি । লীলাবতীও লুকিয়ে কোনির সাঁতার দেখতে গেছে আর পেছনে থেকে কোনির সাফল্যের জন্য সাধ্যমতো সাহায্য ও সমর্থন জুগিয়ে গেছে । লীলাবতী চরিত্রটির এই নিজস্বতা পাঠককে মুগ্ধ করে ।
ক্ষিতীশ বিশ্বাস করেন বাঙালিয়ানা রান্নায় স্বাস্থ্য চলে না । ওতে পেটের চরম সর্বনাশ হয় । তিনি প্রায় সবই সেদ্ধ খাওয়ায় বিশ্বাসী । কারণ সেদ্ধ খাবারেই খাদ্যপ্রাণ অটুট থাকে এবং সর্বাধিক প্রোটিন ও ভিটামিন পাওয়া যায় । তাই লীলাবতী প্রথমদিকে সরষে বাটা , শুকনো লঙ্কা বাটা , জিরে – ধনে পাঁচফোড়ন প্রভৃতি বস্তুগুলি রান্নায় ব্যাবহারের সুযোগ না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল ।
67. ‘ জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছে আমার কাছে কোনির এই অভিমানের কারণ কী ? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করো ।
Ans: ‘ কোনি ‘ উপন্যাস জুড়ে দেখা যায় , এক প্রতিভাবান সাঁতারুকে বারবার কেমন নির্লজ্জ চক্রান্তের শিকার হতে হয় । একদল লোভী , স্বার্থপর ও মুখ কর্মকর্তার অন্ধ – বিদ্বেষের ফলে কোনি কখনও বাইরের জলে সাঁতরায় , কখনও ডিসকোয়ালিফায়েড হয় আবার কখনও প্রথম হয়েও স্বীকৃতি পায় না । এভাবেই কোনোক্রমে হিয়া মিত্রের প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাসের তৎপরতায় , সে অবশেষে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মাদ্রাজগামী বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পায় । কিন্তু একই ধরনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে কোনির স্থান হয় দর্শকাসনে । তবে শেষ রিলে ইভেন্টের আগে অমিয়া অসুস্থ হওয়ায় তার ডাক পড়ে , তখন সে দুঃখ ও অভিমানে হিয়া মিত্রের উদ্দেশে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করে । → রমা যোশির প্রায় তিন সেকেন্ড পরে কোনি জলে পড়ে । প্রথম তিরিশ মিটার খুব একটা কিছু বোঝা না গেলেও , তারপরেই দর্শকেরা টের পায় আজ একটা কিছু ঘটতে চলেছে । নিজের সমস্ত দুঃখ – যন্ত্রণা – বেদনা ও অপ্রাপ্তিকে কোনি জলের মধ্যে উজাড় করে দেয় । জলের মধ্যে কালো প্যান্সারের মতো এগিয়ে চলা কোনিকে অশরীরী বলে মনে হয় । সে যেন অন্ধকারের যন্ত্রণা ছিঁড়ে মাকে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়া শিশুর মতো ;
রমা যোশির আগেই হাত দিয়ে বোর্ড স্পর্শ করে । তারপর জল থেকে উঠে সকলের অভিনন্দন আর আদরে কোনি ডুবে যেতে থাকে । তখন পরাজিত রমা যোশির ক্লান্ত হাত তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে যায় । এভাবেই কোনির সমস্ত যন্ত্রণার অবসান ঘটে ।
68. ‘ জাতির নৈতিক চরিত্র সুগঠিত না হলে সেই জাতির পক্ষে খেলাধূলায় উন্নতিসাধন অসম্ভব ।’— ‘ কোনি ‘ উপন্যাসে কীভাবে এই মন্তব্যকে সমর্থন করে , তা আলোচনা করো । পরবর্তী ঘটনা অথবা , লড়াকু ও অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস হিসেবে ‘ কোনি ‘ তোমার মনকে কতটা স্পর্শ করেছে আলোচনা করো ।
Ans: মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের শুরুতেই গঙ্গার ঘাটে বিচরণ ধর ও ক্ষিতীশ সিংহের সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে ঔপন্যাসিক সুকৌশলে শরীরের ওপর মনের নিয়ন্ত্রণ এবং জীবনে শারীরিক সংযম ও কৃচ্ছ্রসাধনের প্রয়োজনীয়তার কথাটি বুঝিয়ে দেন । অর্থাৎ সাঁতার অন্ত প্রাণ ক্ষিতীশের নৈতিক চরিত্র যে ত্যাগ ও শৃঙ্খলাপরায়ণ জীবনাদর্শকে তুলে ধরে ; পাঠক শুরুতেই সেই ইঙ্গিত পেয়ে যায় । এরপর ক্ষিদা লড়াকু , অনমনীয় ও একগুঁয়ে কোনির মধ্যে এক লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নের চরিত্র লক্ষণ খুঁজে পান । যে হারতে জানে না । ক্ষিতীশ সিংহ নিজেও কোনো পরিস্থিতিতেই ‘ হাল ছাড়া ‘ – য় বিশ্বাস করে না । আর এজন্য তিনি ছাত্রের কাছে সম্পূর্ণ নিষ্ঠা এবং আত্মনিবেদন প্রত্যাশা করেন । কারণ আলস্য – শৈথিল্য খেলোয়াড়ের জীবনে ডেকে আনে সর্বনাশ । পৃথিবীর সমস্ত শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ তাদের চরিত্রের সংযম – ত্যাগ – নিষ্ঠা ও সাহসে ভর করেই সাফল্যের শিখর স্পর্শ করেছে । তাই কোনির উত্থান , ক্ষিতীশের শক্ত হাতে প্রশিক্ষণ , কঠোর অনুশীলন ও কোনির অপ্রতিহত লড়াকু মানসিকতা ; এ উপন্যাসে বারবার ঘুরে – ফিরে আসে । ক্ষিতীশ আর কোনি তাদের জীবনের সমস্ত অপ্রাপ্তি , অপমান , অশ্রু ও ক্ষোভকে জীবনের দিশা – পরিবর্তনকারী অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজে লাগায় । তারা ব্যক্তিগত অসম্মান আর আক্রমণের যন্ত্রণাকেই জীবনে এগিয়ে চলার রসদে রূপান্তরিত করে । আর তা সম্ভব হয়েছে তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং লড়াকু মনোভঙ্গির কারণেই । এভাবেই এক সত্যিকারের গুরুর সুযোগ্য শিষ্যা , আমাদের কাছে উন্নত নৈতিক চরিত্র ও অন্তহীন প্রচেষ্টার মহৎ – শিক্ষণীয় দৃষ্টান্তকে তুলে ধরে ।
69. ‘ জুপিটার থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে , তারই শোধ নিল —কাকে , কেন জুপিটার থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ? সে কীভাবে তার শোধ নিল ?
Ans: প্রথম অংশের জন্য 57 নং প্রশ্নের উত্তরের দ্বিতীয় অংশ দ্যাখো ।
← জুপিটার ক্লাবের প্রতিযোগিতায় অন্যায়ভাবে কোনির ‘ এন্ট্রি রিফিউজ করা হয় । এর উপযুক্ত জবাব দিতে প্রতিযোগিতার শেষ দিন জুপিটারের কোনির মধ্য দিয়ে প্ল্যাটফর্মে এসে সাঁতারুরা দাঁড়াতেই , কোনি ঠিক ক্ষিতীশের অপমানের তার পাশেই অ্যাপোলোর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় । গোটা কমলদিঘি এমন আশ্চর্য ঘটনায় উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে পড়ে । শেষে কোনি যখন মসৃণ – স্বচ্ছন্দ কিন্তু হিংস্র ভঙ্গিতে ফিনিশিং বোর্ড ছোঁয় , তখনও অমিয়া অনেক পিছনে । এমন ঘটনায় নির্ভেজাল আনন্দ পেয়ে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে একজন প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করে ।
মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
মাধ্যমিক বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
Madhyamik Suggestion 2025 | মাধ্যমিক সাজেশন ২০২৫
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Bengali Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik English Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Geography Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik History Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Life Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Mathematics Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Physical Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik All Subjects Suggestion 2025 Click here
Info : কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
Madhyamik Bengali Suggestion | West Bengal WBBSE Class Ten X (Class 10th) Bengali Qustion and Answer Suggestion
” কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক মাধ্যমিক পরীক্ষা (West Bengal Class Ten X / WB Class 10 / WBBSE / Class 10 Exam / West Bengal Board of Secondary Education – WB Class 10 Exam / Class 10 Class 10th / WB Class 10 / Class 10 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর ( মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন / মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ও উত্তর । Madhyamik Bengali Suggestion / Madhyamik Bengali Koni Question and Answer / Class 10 Bengali Suggestion / Class 10 Pariksha Bengali Suggestion / Bengali Class 10 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / Madhyamik Bengali Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারেলাগলে, আমাদের প্রয়াস মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর (Madhyamik Bengali Suggestion / West Bengal Ten X Question and Answer, Suggestion / WBBSE Class 10th Bengali Suggestion / Madhyamik Bengali Koni Question and Answer / Class 10 Bengali Suggestion / Class 10 Pariksha Suggestion / Madhyamik Bengali Exam Guide / Madhyamik Bengali Suggestion 2022, 2023, 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030, 2021, 2020, 2019, 2017, 2016, 2015 / Madhyamik Bengali Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Madhyamik Bengali Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
FILE INFO : কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer with FREE PDF Download Link
PDF File Name | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer PDF |
Prepared by | Experienced Teachers |
Price | FREE |
Download Link 1 | Click Here To Download |
Download Link 2 | Click Here To Download |
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী প্রশ্ন ও উত্তর
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – প্রশ্ন ও উত্তর | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী প্রশ্ন ও উত্তর।
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | মাধ্যমিক বাংলা
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন উত্তর।
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | দশম শ্রেণির বাংলা
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন উত্তর – দশম শ্রেণি বাংলা | Madhyamik Class 10 Bengali Koni
দশম শ্রেণি বাংলা (Madhyamik Bengali Koni) – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – প্রশ্ন ও উত্তর | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী | Madhyamik Bengali Koni Suggestion দশম শ্রেণি বাংলা – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী প্রশ্ন উত্তর।
মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | দশম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী প্রশ্ন উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Question and Answer, Suggestion
মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী | মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী | পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী | মাধ্যমিক বাংলা সহায়ক – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – প্রশ্ন ও উত্তর । Madhyamik Bengali Koni Question and Answer, Suggestion | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Notes | West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Question and Answer Suggestion.
মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBBSE Class 10 Bengali Question and Answer, Suggestion
মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর | কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী । Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion.
WBBSE Class 10th Bengali Koni Suggestion | মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী
WBBSE Madhyamik Bengali Koni Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর । কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী | Madhyamik Bengali Koni Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর ।
Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestions | মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী | মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর
Madhyamik Bengali Koni Question and Answer মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর Madhyamik Bengali Koni Question and Answer মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ, সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB Class 10 Bengali Koni Suggestion | মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর
Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী MCQ প্রশ্ন ও উত্তর । Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal Class 10 Bengali Suggestion Download WBBSE Class 10th Bengali short question suggestion . Madhyamik Bengali Koni Suggestion download Class 10th Question Paper Bengali. WB Class 10 Bengali suggestion and important question and answer. Class 10 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দশম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 10 Bengali Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Ten X Bengali Koni Suggestion | West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Class 10 Exam
Madhyamik Bengali Koni Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Class 10 Ten X Bengali Suggestion is provided here. Madhyamik Bengali Koni Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free has been given below.
কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” কোনি (সহায়ক পাঠ) মতি নন্দী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Koni Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।