ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer : ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – WBCHSE Class 12 Bengali Bhat Question and Answer, Suggestion, Notes – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 12th Twelve XII Bengali Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।
তোমরা যারা ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো।
শ্রেণী | দ্বাদশ শ্রেণী -উচ্চমাধ্যমিক (HS Class 12) |
বিষয় | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা (HS Bengali) |
গল্প | ভাত (Bhat) |
লেখক | মহাশ্বেতা দেবী |
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th Bengali Bhat Question and Answer
MCQ | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer :
- ‘ লোকটার ___ বড়ো বাড়ির বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি ,
(A) হাঁটাচলা
(B) শরীরী ভাষা
(C) কথাবার্তা
(D) চাহনি
Ans: (D) চাহনি
- লোকটার উগ্র চাহনি ছাড়াও বড়ো বউয়ের আর যা যা পছন্দ হয়নি , তা হল—
(A) কোমর পর্যন্ত ছোটো ময়লা লুঙ্গি
(B) ময়লা লুঙ্গি ও বুনো চেহারা
(C) কোমর পর্যন্ত ছোটো ময়লা লুঙ্গি বুনো চেহারা
(D) বুনো চেহারা , উগ্র চাহনি ও ময়লা লুঙ্গি
Ans: (A) কোমর পর্যন্ত ছোটো ময়লা লুঙ্গি
- ভাত খাবে কাজ করবে ।’— এ কথা বলেছিল
(A) বড়ো পিসিমা
(B) বাসিনী
(C) বড়ো বউ
(D) বামুন ঠাকুর
Ans: (D) বামুন ঠাকুর
- ‘ এ সংসারে সব কিছুই চলে ___ নিয়মে বড়ো ।’
(A) বড়ো পিসিমার
(B) বুড়ো কর্তার
(C) বড়ো বউয়ের
(D) বড়ো ছেলের
Ans: (A) বড়ো পিসিমার
- ‘ বুড়ো কর্তা সংসার নিয়ে নাটা – ঝামটা হচ্ছিল ।’— এখানে ব্যবহৃত ‘ নাটা – ঝামটা ‘ শব্দটির অর্থ—
(A) সাংসারিক অশান্তি
(B) সুনাম – দুর্নাম
(C) অকথাকুকথা
(D) নাজেহাল অবস্থা
Ans: (D) নাজেহাল অবস্থা
- বড়ো পিসিমার বিয়ে না হওয়ার মূল কারণ হল –
(A) সাংসারিক দুরবস্থা
(B) বুড়ো কর্তার শারীরিক অবস্থা
(C) বুড়ো কর্তার স্ত্রীর মৃত্যু
(D) সংসার ঠেলবার প্রয়োজন
Ans: (D) সংসার ঠেলবার প্রয়োজন
- বড়ো বাড়ির লোকেরা বলে—
(A) বড়ো পিসিমা খুব ঝগড়াটে
(B) বড়ো পিসিমা দেবতার সেবিকা
(C) বড়ো পিসিমা হাসপাতালের সেবিকা
(D) বড়ো পিসিমা সেবিকা
Ans: (C) বড়ো পিসিমা হাসপাতালের সেবিকা
- দূরদর্শী লোক ছিলেন ।’— কে ?
(A) বড়ো পিসিমা
(B) বড়ো বউ
(C) ছোটো বউয়ের বাবা
(D) বুড়ো কৰ্তা
Ans: (D) বুড়ো কৰ্তা
- ‘ বড়ো বাড়িতে শিবমন্দিরও আছে ___ ।’
(A) দুটো
(B) একটা
(C) চারটে
(D) তিনটে
Ans: (B) একটা
- বুড়ো কর্তা রাস্তার সবগুলো বাড়ির নাম দিয়েছিলেন—
(A) শিব – ভৈরব – মহেশ্বর – উমাপতি
(B) শিব – মহেশ্বর – ত্রিলোচন – উমাপতি
(C) শিব – মহেশ্বর – ব্যোমকেশ – উমাপতি
(D) শিব – মহেশ্বর – ত্রিলোচন – ভৈরব
Ans: (B) শিব – মহেশ্বর – ত্রিলোচন – উমাপতি
- বুড়ো কর্তা তাঁর বাড়িগুলোকে বহু নামে শিবকে দিয়ে । রেখেছিলেন , কারণ-
(A) তাঁর দেবভক্তি
(B) তিনি শৈব ছিলেন
(C) তাঁর স্ত্রীয়ের মৃত্যু
(D) তাঁর দূরদর্শিতা
Ans: (D) তাঁর দূরদর্শিতা
- ‘ মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিও না ।’— বড়ো পিসিমার এমন কথা বলার কারণ—
(A) তিনি অসুস্থ ও শয্যাশায়ী
(B) শিবঠাকুর তাঁর পতিদেবতা
(C) তিনি শিবঠাকুরের দাসী
(D) তিনি দেবদাসী
Ans: (B) শিবঠাকুর তাঁর পতিদেবতা
- উচ্ছবকে বড়ো বাড়িতে কে নিয়ে এসেছিল ?
(A) ভজন চাকর
(B) তান্ত্রিক
(C) বাসিনী
(D) ছোটো বউয়ের বাবা
Ans: (C) বাসিনী
- বাড়িতে ভাড়াটে মিস্তিরি লাগিয়েছিলেন—
(A) বড়ো পিসিমা
(B) বড়ো বউ
(C) বুড়ো কর্তা
(D) ছোটো বউয়ের বাবা
Ans: (A) বড়ো পিসিমা
- বাসিনী উচ্ছবকে ডেকে এনেছিল কারণ –
(A) কাঠ কাটায় উচ্ছব খুব পটু
(B) উচ্ছব এক গরিব ভাগচাষি
(C) ঝড়জলে উচ্ছবের দেশ ভেসে গেছে
(D) উচ্ছব তার গ্রাম – সম্পর্কিত দাদা
Ans: (C) ঝড়জলে উচ্ছবের দেশ ভেসে গেছে
আরোও দেখুন:- HS Bengali Suggestion 2025 Click here
- ‘ তা দিতেও আঙুল বেঁকে যাচ্ছে ? ‘ — এখানে ‘ তা ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে –
(A) দশটা টাকা
(B) দশটা কলা
(C) দশটা পয়সা
(D) বাদার চাল
Ans: (D) বাদার চাল
- ‘ ময়ূরছাড়া কার্তিক আসবে নাকি ? ‘ — যার প্রসঙ্গে এমন উক্তি , সে হল—
(A) বড়ো পিসিমা
(B) উচ্ছব
(C) বড়ো বউ
(D) বুড়ো কর্তা
Ans: (B) উচ্ছব
- ‘ বড়ো পিসিমা শেষ খোঁচাটা মারেন ।’— খোঁচাটা কী ছিল ?
(A) বড়ো বউয়ের শ্বশুরই মরতে বসেছেন
(B) ঝড়জলে উচ্ছবের দেশ ভেসে গেছে
(C) পেটে দুটো খাবে বই তো নয়
(D) কেনা চাল নয় , বাদা থেকে চাল আসছে
Ans: (A) বড়ো বউয়ের শ্বশুরই মরতে বসেছেন
- বাসিনীর মনিব বাড়ির বড়ো কর্তার বয়স হয়েছিল—
(A) আশি বছর
(B) বিরাশি বছর
(C) চুরাশি বছর
(D) তিরাশি বছর
Ans: (B) বিরাশি বছর
- কিন্তু শশুর বেশ টনকো ছিলেন শ্বশুরমশায়ের যে – রোগ হয়েছিল ত হলো –
(A) লিভার ক্যানসার
(B) ব্লাড ক্যানসার
(C) লাং ক্যানসার
(D) কোলন ক্যানসার
Ans: (A) লিভার ক্যানসার
- ‘ সে জন্যেই হোম – যজ্ঞি হচ্ছে ।’— হোমযজ্ঞির কারণ—
(A) সেজ ছেলের বিয়ে
(B) শ্বশুরমশায়ের অসুখ
(C) চন্নুনীর মায়ের নিখোঁজ হওয়া
(D) বড়ো পিসিমার অসুস্থতা
Ans: (B) শ্বশুরমশায়ের অসুখ
- মাছ খাওয়া বুঝি ঘুচে যায় । কার কথা বলা হয়েছে –
(A) শ্বশুর
(B) শাশুড়ি
(C) বড়ো পিসিমা
(D) বুড়ো কর্তা
Ans: (B) শাশুড়ি
- সে একটু বসলে পরে নার্স এসে চা খেয়ে যাবে । এখানে ‘ সে হল –
(A) বড়ো বউ
(B) সেজ বউ
(C) বড়ো পিসিমা
(D) উচ্ছব
Ans: (A) বড়ো বউ
- ‘ এ বাড়ির ছেলেদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি , কারণ
(A) তারা ঘরজামাই থাকে
(B) তারা এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না
(C) তারা অসুস্থ
(D) তারা বাড়ির কাজে ব্যস্ত
Ans: (B) তারা এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না
- বড়ো বাড়ির আয়ের প্রধান উৎস ছিল-
(A) আঠারোখানা দেবত্র বাড়ি
(B) আঠারোখানা দেবত্র বাড়ি ও বাদায় আদায় করা জমি
(C) বাদা অঞ্চলে আসগর জমি
(D) শিবঠাকুরের মন্দির
Ans: (B) আঠারোখানা দেবত্র বাড়ি ও বাদায় আদায় করা জমি
- শ্বশুরমশাইকে ঠাকুর দেবতা বলে মনে করে এ বাড়ির—
(A) মেজ বউ
(B) বড়ো পিসিমা
(C) বাসিনী
(D) বড়ো বউ
Ans: (D) বড়ো বউ
- বুড়ো কর্তার জন্য শরবত বানানো হত—
(A) দই – চিনি দিয়ে
(B) দই – বরফ দিয়ে
(C) দই – ইসবগুল দিয়ে
(D) ইসবগুল – চিনি দিয়ে
Ans: (C) দই – ইসবগুল দিয়ে
- বড়ো বাড়িতে নানান মাছের নানান পদ রান্নার প্রসঙ্গ । আছে , মাছগুলি হল—
(A) ইলিশ , বোয়াল , চিতল , ট্যাংরা , ভেটকি
(B) ইলিশ , বোয়াল , সুটকি , ট্যাংরা , ভেটকি
(C) ইলিশ , রুইমাছ , চিতল , কইমাছ , ভেটকি
(D) ইলিশ , পোনা মাছ , চিতল , ট্যাংরা , ভেটকি
Ans: (D) ইলিশ , পোনা মাছ , চিতল , ট্যাংরা , ভেটকি
- বড়ো বউ ভাবতে চেষ্টা করে ‘ – কী ভাবতে চেষ্টা করে ?
(A) তখন আর মাছ আসবে না
(B) কত কাজ বাকি আছে
(C) তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কিনা
(D) তখনও সসাগরা পৃথিবী থাকবে কিনা
Ans: (C) তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কিনা
- বড়ো বাড়িতে হোমযজ্ঞ করার জন্য তান্ত্রিককে ডেকে এনেছেন—
(A) ছোটো বউ
(B) মেজ বউয়ের বাবা
(C) ছোটো বউয়ের বাবা
(D) বড়ো বউয়ের বাবা
Ans: (D) বড়ো বউয়ের বাবা
- বড়ো বাড়িতে নিরামিষ ডাল তরকারির সঙ্গে খায় –
(A) কনকপানি চালের ভাত
(B) মোটা সাপ্টা চাল চালের ভাত
(C) ঝিঙেশাল চালের ভাত
(D) পদ্মজালি চালের ভাত
Ans: (C) ঝিঙেশাল চালের ভাত
- মাছভাত খেলে বড়ো বাড়িতে কোন্ চালের ব্যবহার –
(A) কনকপানি
(B) রামশাল
(C) ঝিঙেশাল
(D) মোটা সাপ্টা চাল
Ans: B) রামশাল
- ‘ বাবুরা খায় ‘ — বাবুরা কী খায় –
(A) নানাবিধ চাল
(B) নানাবিধ পানীয়
(C) নানাবিধ ফল
(D) নানাবিধ শাক
Ans:
- ‘ কনকপানি ‘ চালের ভাত খান –
(A) বড়োবাবু
(B) ছোটোবাবু
(C) পিসিমা
(D) মেজবাবু
Ans: (A) বড়োবাবু
- বড়ো বাড়িতে কনকপানি চালের ভাত রান্না হয়—
(A) বামুন – চাকর – ঝি – দের জন্য
(B) মেজ আর ছোটোর জন্য
(C) বড়োবাবুর জন্য
(D) নিরামিষ ডাল তরকারির সঙ্গে খাবার জন্য
Ans: (C) বড়োবাবুর জন্য
- মোটা সাপ্টা চালের ভাত খায়—
(A) বড়ো বউ
(B) মেজ ছেলে
(C) বুড়ো কৰ্তা
(D) বামুন – ঝি – চাকর
Ans: (D) বামুন – ঝি – চাকর
- ‘ বাসিনী ব্যাগ্যতা করি তোর ।’— বক্তা কে –
(A) সেজ বউ
(B) হরিচরণ
(C) উচ্ছব
(D) উচ্চব
Ans: (D) উচ্চব
- চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে তার । এর কারণ –
(A) বড়ো বউয়ের হম্বিতম্বি শুনে
(B) পিসিমার বেশভূষা দেখে
(C) নানারকম চালের আয়োজন দেখে
(D) শিবমন্দির দেখে
Ans: (C) নানারকম চালের আয়োজন দেখে
- ‘ তোরেও তো টেনে নেচ্ছেল । ‘ –এমন বলেছিল –
(A) সাধন দাশ
(B) সতীশ মিস্ত্রী
(C) উচ্ছব নাইয়া
(D) সাধন ঘোষ
Ans: (A) সাধন দাশ
- ‘ ভাত ’ গঙ্গে বাদা অঞ্চলের কোন নদীর প্রসঙ্গ রয়েছে ?
(A) কালিন্দী
(B) রায়মঙ্গল
(C) মাতলা
(D) বিদ্যাধরী
Ans: (C) মাতলা
- নিভুই উচ্ছবের জমি চেয়ে দরখাস্তের নকল রাখা ছিল –
(A) টিনের মুখখোলা কৌটোয়
(B) টিনের মুখবন্ধ কৌটোয়
(C) টিনের কৌটোয়
(D) লাহোর তরঙ্গে
Ans: (B) টিনের মুখবন্ধ কৌটোয়
- উচ্ছবের বাবার নাম ছিল –
(A) হরিদাস নাইয়া
(B) হরিচরণ নাইয়া
(C) হরিহর নাইয়া
(D) হরেরাম নাইয়া
Ans: (B) হরিচরণ নাইয়া
- উচ্ছব খিচুড়ি না – পেয়ে কিছুদিন যা খেয়ে কাটিয়েছিল –
(A) ড্রাইঅ্যাশ
(B) ড্রাইরাইস
(C) ড্রাইঝোল
(D) ড্রাইডোল
Ans: (D) ড্রাইডোল
- গ্রামের লোকজন মৃতদের শ্রাদ্ধশাস্তি করার জন্য খবর দেয় –
(A) মহানাম শতপথিকে
(B) মহারাম শতপথিকে
(C) সতীশ মিস্তিরিকে
(D) উচ্ছবকে
Ans: (A) মহানাম শতপথিকে
- ঝড়জলের পরে গ্রামবাসী ও অন্যরা খাওয়ার জন্য ধরেছিল—
(A) সাধনবাবুকে
(B) সরকারকে
(C) মাছ – গুগলি – কাঁকড়া
(D) সতীশবাবুকে
Ans: (C) মাছ – গুগলি – কাঁকড়া
- ‘ সরকার ঘর কত্তে খরচা দেবে শুনছ না ? ’ – এ কথা বলেছিল –
(A) গ্রামের সবাই
(B) সাধনবাবু
(C) সতীশবাবু
(D) ঘ বাসিনীর ভাজ
Ans: (B) সাধনবাবু
- কিছুকাল ঠিকে কাজ করবে বলে কলকাতায় যাচ্ছিল—
(A) বাসিনী
(B) বাসিনীর ভাজ
(C) বাসিনীর বোন
(D) বাসিনীর বোন আর ভাজ
Ans: (D) বাসিনীর বোন আর ভাজ
- ‘ তা দেখে উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল । ‘ –উচ্ছবের মাথায় হাত দেওয়ার কারণ –
(A) তার সংসার মাটিতে লুটোপুটি যাচ্ছে
(B) কার্তিক মাসেই ধান খড় হয়ে গেল
(C) চন্নুনীর মায়ের সাড়া শব্দ নেই
(D) বাসিনীর মনিব বাড়িতে প্রচুর ভাত
Ans: (B) কার্তিক মাসেই ধান খড় হয়ে গেল
- ‘ এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে ‘ — গল্পটা হল—
(A) বাসিনীর মনিব বাড়িতে হেলাঢেলা ভাত
(B) বাসিনীর মনিব খুব ভালো লোক
(C) বাসিনীর মনিব সতীশবাবুর আত্মীয়
(D) বাসিনীর মনিব বাড়িতে লোকের মেলা
Ans: (A) বাসিনীর মনিব বাড়িতে হেলাঢেলা ভাত
- ‘ সর্বস্ব বেঁধে রাখো , হোম হলে খেও ।’- বলেছিল –
(A) বড়ো বউ
(B) বড়ো পিসিমা
(C) উচ্ছৰ
(D) তাত্ত্বিক
Ans: (D) তাত্ত্বিক
- কী উচ্ছবকে বড়ো উতলা করে ।
(A) বাদার চালের গন্ধ
(B) যজ্ঞ শেষে ভাত পাবার আশা
(C) বউ – ছেলেমেয়ের কথা
(D) ফুটন্ত ভাতের গন্ধ
Ans: (D) ফুটন্ত ভাতের গন্ধ
- বুড়ো কর্তার হোম – যজ্ঞির জন্য প্রত্যেকটি কাঠ কাটতে হবে । মাপে –
(A) দু – হাত লম্বা
(B) দেড় হাত লম্বা
(C) একহাত লম্বা
(D) আধ হাত
Ans: (B) দেড় হাত লম্বা
- বাসিনী লুকিয়ে উচ্ছবকে কী খেতে দিয়েছিল –
(A) চিড়ে
(B) বাতাসা
(C) মুড়ি
(D) ছাতু
Ans: (D) ছাতু
- বাসিনীর মতে বড়ো বাড়ি হল—
(A) পিশাচের বাড়ি
(B) ভগবানের বাড়ি
(C) শয়তানের বাড়ি
(D) সুন্দর বাড়ি
Ans: (A) পিশাচের বাড়ি
- ‘ এরা শস্তা দেকে । ’ – কী সস্তা দেখে ?
(A) গরিবের পেট
(B) গরিবের মান
(C) গরিবের শোক
(D) গরিবের গতর
Ans: (D) গরিবের গতর
- অঢেল গুগলি – গেঁড়ি – কচুশাক – সুশনো শাক মেলে—
(A) সতীশ মিস্তিরির পুকুরে
(B) বড়ো বাড়ির বাদায়
(C) সুন্দরবনের গ্রামে
(D) উচ্ছবের বাদায়
Ans: (D) উচ্ছবের বাদায়
- ‘ কিন্তু সাগরে শিশির পড়ে । ‘ বলতে লেখিকা বুঝিয়েছেন—
(A) উচ্ছবের খালি পেটে জল খাওয়া
(B) উচ্ছবের খালি পেটে ছাতু খাওয়া
(C) উচ্ছবের খালি পেটে চাল খাওয়া
(D) উচ্ছবের খালি পেটে ভাত খাওয়া
Ans: (B) উচ্ছবের খালি পেটে ছাতু খাওয়া
- উচ্ছব তাড়াতাড়ি কাঠ কাটছিল , এই কথা ভেবে যে –
(A) বড়ো বউ রাগ করবে
(B) বড়ো পিসিমা রাগ করবে
(C) কাঠ কাটলে হোম হবে , হোম হলে সে ভাত পাবে
(D) তান্ত্রিক রাগ করবে
Ans: (C) কাঠ কাটলে হোম হবে , হোম হলে সে ভাত পাবে
- ‘ খাবার ঘর মুছেচ বাসিনী ? ‘ — এ কথা জানতে চেয়েছিল—
(A) বড়ো পিসিমা
(B) ছোটো বউ
(C) বড়ো বউ
(D) মেজ বউ
Ans: (D) মেজ বউ
- ‘ এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায় ।’— উচ্ছব বুকে বল পায়—
(A) বড়ো বাড়িতে রান্নার আয়োজন সম্পূর্ণ হচ্ছে শুনে
(B) মাতলার জল কম গেছে শুনে
(C) চন্নুনীর মা ফিরে এসেছে শুনে
(D) বাসিনী তার হাতে ছাতু গুঁজে দেয় দেখে
Ans: A) বড়ো বাড়িতে রান্নার আয়োজন সম্পূর্ণ হচ্ছে শুনে
- কালো বিড়ালের লোম দিয়ে তান্ত্রিক কী করেন ?
(A) যজ্ঞ করেন
(B) লোমে রোগকে বেঁধে ফেলেন
(C) বুড়ো কর্তাকে সুস্থ করে তোলেন
(D) উৎসব নাইয়াকে সব ফিরিয়ে দেন
Ans: (B) লোমে রোগকে বেঁধে ফেলেন
- উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে । কারণ –
(A) উচ্ছব কলকাতায় এসেছে
(B) ঝড়জলে সে সকলকে হারিয়েছে
(C) তার পেটে ভাত নেই
(D) সে গাঁ – ছাড়া হয়েছে
Ans: (C) তার পেটে ভাত নেই
- সেই হতেই তো উচ্ছবের আধ – পেটা সিকি – পেটা উপোসের শুরু ।’— ‘ সেই ‘ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে –
(A) ঝড়ের দিন থেকে
(B) বুড়ো কর্তার মারা যাওয়ার দিন থেকে
(C) পোকায় ধান নষ্ট হওয়ার দিন থেকে
(D) কলকাতায় আসার দিন থেকে
Ans: (C) পোকায় ধান নষ্ট হওয়ার দিন থেকে
- কত ____ ভেসে গেল , চন্নুনীর মা তো কোন ছার । ‘
(A) ঘর বাড়ি
(B) ছেলে – মেয়ে
(C) গোরু – মোষ
(D) লোকজন
Ans: (C) গোরু – মোষ
- ‘ ডাক্তারকে কল দিন ।’— এ কথা বলেছিল—
(A) নার্স
(B) তান্ত্রিক
(C) বড়ো বউ
(D) বাসিনী
Ans: (A) নার্স
- বাসিনীর কথায় উচ্ছব চান করতে চায়নি , কারণ—
(A) তার চান করলেই জ্বর আসে
(B) তার শহরে চান করতে ভালো লাগে না
(C) হোমযজ্ঞির বাড়িতে কোথায় চান করবে
(D) মাথায় জল ঢাললে খিদে বেড়ে যায়
Ans: (D) মাথায় জল ঢাললে খিদে বেড়ে যায়
- ভাত খেয়ে দেহে শক্তি পেলে উচ্ছব –
(A) চন্নুনীদের খুঁজে বের করবে
(B) বড়ো বাড়ির বাদাটা খুঁজবে
(C) দেশে ফিরে যাবে
(D) বুড়ো কর্তার সঙ্গে দেখা করবে
Ans: (B) বড়ো বাড়ির বাদাটা খুঁজবে
- উচ্ছবের ঠাকুমা অন্নকে বলত—
(A) মা লক্ষ্মী
(B) মা চণ্ডী
(C) মা দুর্গা
(D) মা সরস্বতী
Ans: (A) মা লক্ষ্মী
- তিনটে ছেলে মন্দিরের চাতালে বসে –
(A) গল্প করে
(B) দাবা খেলে
(C) তামাশা দেখে
(D) তাস পেটে
Ans: (D) তাস পেটে
- ‘ তাস পিটানো ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে ‘ — কারণ
(A) বড়ো বাড়িতে হোমযজ্ঞি হচ্ছে
(B) খিদের জ্বালায় উচ্ছব কাঁদছে
(C) উচ্ছব ঠাকুমার কথা ভেবে কাঁদছে
(D) ঝড়জলে সব নাশ হয়ে গেছে বলে উচ্ছব কাঁদছে
Ans: (D) ঝড়জলে সব নাশ হয়ে গেছে বলে উচ্ছব কাঁদছে
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer :
- ‘ কী রকম যেন উগ্র চাহনি । ‘ – এখানে কার চাহনির কথা বলা হয়েছে ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ’ গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া তথা উচ্ছবের চাহনির কথা এখানে বলা হয়েছে ।
- ‘ বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি । ‘ – ভালো না লাগার কারণ কী ছিল ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ‘ গল্পে উচ্ছবের বুনো চেহারা , উগ্র চাহনি আর ছোটো ময়লা লুঙ্গির জন্য তাকে বড়ো বউয়ের ভালো লাগেনি ।
- ‘ ভাত খাবে কাজ করবে । ‘ –কে বলেছিল ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ’ গল্পে বড়ো বউকে বামুন ঠাকুর বলেছিল যে উচ্ছব বড়ো বাড়িতে কাজ করবে আর বিনিময়ে ভাত খাবে ।
- ‘ এ সংসারে সব কিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে । ‘ বড়ো পিসিমা কে ছিলেন ?
Ans: ‘ ভাত ’ গল্পে বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার অবিবাহিতা বয়স্কা বোন হলেন বড়ো পিসিমা । তিনি সব বউয়ের পিসিশাশুড়ি । সংসারও চলে তাঁরই নিয়মে ।
- কখন বাড়ির কর্তা সংসার নিয়ে ‘ নাটা – ঝামটা ‘ হয়েছিলেন ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ‘ গল্পে আচমকা স্ত্রী – বিয়োগের ফলে বাড়ির বুড়ো কর্তা সংসার নিয়ে ল্যাজেগোবরে অবস্থায় পড়েছিলেন ।
- ‘ ওর বিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে –এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার অবিবাহিতা বোন তথা বাড়ির সকলের বড়ো পিসিমার কাল্পনিক বিয়ে হয়েছিল শিবঠাকুরের সঙ্গে । এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে ।
- ‘ উনি হলেন দেবতার সেবিকা ’ – ‘ দেবতার সেবিকা ’ কে ?
Ans: বড়ো বাড়ির অবিবাহিতা বড়ো পিসিমাকে ‘ দেবতার সেবিকা ‘ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ।
- ‘ তাঁর জন্যেই এরা করে খাচ্ছে — কার জন্য এরা করে খাচ্ছে ?
Ans: ‘ ভাত ‘ গল্পে বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তা আঠারোটা বাড়ি শিবের নামে দেবত্র করে রেখেছিলেন । তাঁর এই দূরদর্শিতার কারণেই ছেলেরা করে খাচ্ছিল ।
- সংসারের প্রয়োজনে বড়ো পিসিমা কী কী করেছেন ?
Ans: ‘ ভাত ’ গল্পে বড়ো পিসিমা চিরকাল বড়ো বাড়িতে হেঁসেল দেখেছেন ; ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগিয়েছেন এবং দাদা তথা বুড়ো কর্তার সেবাযত্ন করেছেন ।
- ‘ দেখ না একতলায় গিয়ে ‘ — বড়ো বউ কী দেখার কথা বলেছিল ?
Ans: বড়ো বাড়ির একতলায় গোলায় থরে থরে সাজানো বাদা থেকে আসা বিভিন্নরকম চাল । এখানে বড়ো বউ সেটা দেখার কথাই বলেছিল ।
- নীচের হলঘরে বসে আছেন ‘ — কে বসে ছিলেন ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ‘ গঙ্গে বড়ো বাড়ির মৃতপ্রায় বুড়ো কর্তার প্রাণ বাঁচাতে আসা তান্ত্রিক নীচের হলঘরে বসে ছিলেন ।
- ঝিঙেশাল চাল এবং রামশাল চাল কী কী দিয়ে খায় ?
Ans: নিরামিষ ডাল – তরকারির সঙ্গে ঝিডেশাল চালের ভাত খাওয়া হয় এবং রামশাল চালের ভাত মাছ দিয়ে খাওয়া হয় ।
- মেজ আর ছোটো ছেলে কোন্ কোন্ চালের ভাত খায় ?
Ans: বড়ো বাড়ির বড়ো ছেলের কনকপানি চাল ছাড়া চলে না আর ছোটো ও মেজর জন্য বারোমাস পদ্মজালি চালের ভাত হয় ।
- বড়ো বাড়িতে ঝি – চাকর ও রাঁধুনিদের জন্য কোন চাল বরাদ্দ ছিল ?
Ans: বড়ো বাড়িতে ঝি – চাকর ও রাঁধুনিদের জন্য মোটা সাপটা চালের ভাত বরাদ্দ ছিল ।
- “ ওই পাঁচ ভাগে ভাত হয় ? ‘ – পাঁচ ভাগটি কী কী ?
Ans: বড়ো বাড়িতে ঝিঙেশাল , রামশাল , কনকপানি , পদ্মজালি ও মোটা সাপ্টা ধানের চাল — এই পাঁচ ভাগে ভাত হত ।
- ‘ বেচেও দিচ্ছে নুব্ধে নুক্কে ।’— কে , কী বেচে দিচ্ছে ?
Ans: বড়ো পিসিমা লুকিয়ে বাসিনীর মাধ্যমে বড়ো বাড়ির চাল বিক্রি করে দেয় । এখানে বাসিনী সে – কথাই বলেছে ।
- ‘ পিসিমা দেকতে পেলে সব্বনাশ হবে । ‘ –এ কথা বলার কারণ কী ?
Ans: অভুক্ত উচ্ছব খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে বাসিনীর কাছে একমুঠো চাল খেতে চাইলে , বাসিনী এ কথা বলেছিল ।
- মাথা নাড়তে নাড়তে চলে যায় ।’— বা সিনী এমন করে চলে গিয়েছিল কেন ?
Ans: খিদেয় কাতর উচ্ছবের দুরবস্থা দেখেও বড়ো বাড়ির লোকেরা তাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিল । তাই ক্ষুব্ধ বাসিনী অসহায় হয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে চলে গিয়েছিল ।
- ‘ কপালটা মন্দ তার ।’— বলার কারণ কী ?
Ans: ঝড়জলে পরিবার ভেসে যাওয়ায় উচ্ছব পাগল হয়ে । উঠেছিল । তাই সে সরকারি খিচুড়ির ভাগও পায়নি । এজন্যই তার কপাল মন্দ বলা হয়েছে ।
- ‘ তার বুদ্ধি হয়ে গিয়েছিল ‘ — কার ‘ বুদ্ধি হরে ’ গিয়েছিল ?
Ans: উচ্ছব ঝড়জলে মাতলার মাতনে বউ – ছেলে – মেয়েকে হারানোয় , তার ‘ বুদ্ধি হয়ে গিয়েছিল ।
- ধনুষ্টঙ্কার রোগীর মতো কেঁপেঝেঁকে উঠছিল ।’— কেন এমন অবস্থা হচ্ছিল ?
Ans: বাদা অঞ্চলে তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে সামান্য ভাগচাষি দরিদ্র উচ্ছবের জীর্ণ কুঁড়েঘরের মাঝ খুঁটিটি প্রবল বাতাসের বেগে কেঁপেঝেঁকে উঠছিল ।
- ঝড়জলের সময় চলুনীর মা কী করছিল ?
Ans: ঝড়জলের সময় চরুনীর মা অর্থাৎ উচ্ছবের বউ ছেলে – মেয়েকে জাপটে ধরে শীতে আর ভয়ে কাঁপছিল ।
- ‘ জল নামল ‘ – এরপর উচ্ছবের কী হয়েছিল ?
Ans: ঝড়বৃষ্টি থামলে ক্রমে মাতলার জলও নেমে যায় । কিন্তু উচ্ছবের সংসার মাতলার জলে ভেসে যায় ।
- ‘ তোরেও তো টেনে নেচ্ছেল , ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: জনৈক সাধন দাশ পাগলপ্রায় উচ্ছবকে বোঝায় যে , তার পরিবারের আর কাউকেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় । শুধু কপাল জোরে উচ্ছব বেঁচে গেছে ।
- সে কৌটোটা বা কোথায় ‘ — এখানে কোন্ কৌটোর কথা বলা হয়েছে ?
Ans: একটি মুখবন্ধ কৌটো ভাগচাষি উচ্ছবের জমি চেয়ে করা দরখাস্তের নকলটি রাখা ছিল , এখানে সেই কৌটোটির কথা বলা হয়েছে ।
- ‘গ্রামের লোকজন বলে— গ্রামের লোকজন কী বলেছিল ?
Ans: গ্রামের লোকজন উচ্ছবকে তার অপঘাতে মৃত বউ – ছেলে ও মেয়ের জন্য শ্রাদ্ধ করতে বলেছিল ।
- গ্রামের লোকজন শ্রাদ্ধের জন্য কাকে খবর দিয়েছিল ?
Ans: গ্রামের লোকজন উচ্ছবের পরিবারের সদস্যদের শ্রাদ্ধের জন্য পুরোহিত মহানাম শতপথিকে খবর দিয়েছিল ।
- মহানাম শতপথি কেন আসতে পারেনি ?
Ans: মহানাম শতপথির আরও দুটি গ্রামে শ্রাদ্ধশান্তির কাজ থাকায় তিনি আসতে পারেননি ।
- উচ্ছবকে কলকাতা যেতে সাধন দাশ বাধা দিতে চেয়েছিল
Ans: বন্যায় মাতলার গর্ভে হারিয়ে যাওয়া পরিবারগুলিকে সরকার ঘর করতে খরচা দেবে , এ কারণে সাধন দাশ এসময় কলকাতা যেতে উচ্ছবকে বাধা দিচ্ছিল ।
- তার বোন আর ভাজ কলকাতা যাচ্ছিল ।’- কেন ?
Ans: বড়ো বাড়ির পরিচারিকা বাসিনীর বোন আর ভাজ কিছুদিন ঠিকে কাজ করবে বলে কলকাতা যাচ্ছিল ।
- ‘ উচ্ছব আগেও গিয়েছিল একবার ।’- সে কোথায় গিয়ে কী দেখেছিল ?
Ans: উচ্ছব আগে একবার কলকাতা গিয়ে বাসিনীর মনিবদের বিশাল বাড়ি , বারবাড়ির ঠাকুর – দালান আর শিবমন্দিরের মাথার পিতলের ত্রিশূল — এইসব বাইরে থেকে দেখেছিল ।
- ‘ এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে ‘ — গল্পটি কী ?
Ans: কলকাতায় বাসিনীর মনিব বাড়িতে যে ভাতের অভাব নেই , এ গল্প গ্রামের সবাই শুনেছে ।
- কোনো কথা গুছিয়ে ভাবতে পারে না ।’- উচ্ছব কেন কোনো কথা গুছিয়ে ভাবতে পারত না ?
Ans: উচ্ছব আচমকা এক রাতে ঘরদোর – বউ – ছেলে – মেয়ে হারিয়ে এবং খিদের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে আর কোনো কিছু গুছিয়ে । ভাবতে পারত না ।
- ” উচ্ছবের হঠাৎ মনে হয় — কী মনে হয়েছিল ?
Ans: উচ্ছবের হঠাৎ মনে হয়েছিল কলকাতায় বাসিনীর মনিব বাড়িতে গিয়ে খেয়ে মেখে আসি ।
- ‘ তুই কাদিস কেন ? ‘ – কে কেঁদেছিল ?
Ans: মনিব সতীশবাবুর ধানে গোছ আসার আগেই ধানের সবুজ রং চলে গিয়ে তা কার্তিক মাসেই খড়ে পরিণত হয়েছিল । এই দেখে উচ্ছব কেঁদেছিল ।
- সতীশ মিস্তিরির কী কী ধানে মড়ক লেগেছিল ?
Ans: সতীশ মিস্তিরির হরকুল , পাটনাই আর মোটা — এই তিন প্রকারের ধানে মড়ক লেগেছিল ।
- ‘ কাঁদব না , সাধনবাবু , কাঁদব না ? ‘ –কে , কেন কেঁদেছিল ?
Ans: হতদরিদ্র ভাগচাষি উচ্ছব মনিব সতীশ মিস্তিরির তিনপ্রকার ধানেই মড়ক লাগায় কেঁদেছিল । কারণ মনিবের ক্ষতি মানে উচ্ছবেরও ক্ষতি ।
- ‘ সে সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল । ‘ -এখানে কোন সন্ধের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: এখানে প্রবল ঝড়বৃষ্টির দাপটে মাতলার বানে উচ্ছবের ঘর – সংসার সর্বস্ব হারানোর সেই দুর্যোগপূর্ণ দিনের সন্ধেবেলার কথা বলা হয়েছে ।
- “ সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল ।’— সে কী খেয়েছিল ?
Ans: উচ্ছব ঝড়বৃষ্টির দিন সন্ধেবেলায় পেট ভরে হিঙে সেদ্ধ , গুগলি সেদ্ধ , নুন আর লংকা পোড় া দিয়ে ভাত খেয়েছিল ।
- ‘ দিনটা এমন ছিল’– দিনটা কেমন ছিল ?
Ans: ঝড়বৃষ্টির দুর্যোগপূর্ণ সেই দিনটিতে উচ্ছবের মতো গ্রামের হতদরিদ্র সকলেই পেট ভরে খেয়েছিল ।
- চন্নুনীর মা খেতে খেতে কী বলেছিল ?
Ans: চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলেছিল যে , আজ দেবতার লক্ষণ ভালো নয় , যারা নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে বেরিয়েছে , তারা নৌকাসমেত ডুবে না মরে ।
- ‘ কোথায় গেল সব , তুমি কোথায় , আমি কোথায় ।’— উচ্ছব কেন এ কথা বলেছে ?
Ans: ঝড়বৃষ্টির সময় বিদ্যুতের আলোয় উচ্ছব দেখে মাতলার জল ছুটে আসছে । তারপর সব একাকার হয়ে যায় । সকলে চিরতরে হারিয়ে যায় । এ অবস্থা বোঝাতেই উচ্ছব প্রশ্নোধৃত উক্তিটি করেছে ।
- ‘ তাহলে উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত আজ ‘ — কী হলে এমন হত ?
Ans: উচ্ছবের ছেলে – মেয়ে – বউ অর্থাৎ চমুনীরা বেঁচে থাকলে , তার বুকে শত হাতির বল থাকত । শেষ হলে ভাত মিলবে । তার মধ্যে মেজ বউ পরিচারিকা বাসিনীকে ডেকে জানতে চায় খাবার ঘর মোছা হলেই সব রান্না খাবার ধরে তোলা হবে ।
- ‘ কালীঘাটে ওদের ছরাদ সেরে দিও ।’- গ্রামের লোকজন এমন বলেছিল কেন ?
Ans: উচ্ছবের বউ – ছেলে – মেয়ের ঝড়জলের রাতে অপঘাতে মৃত্যু হয়েছিল । তাই গ্রামের লোকজন কলকাতা আসার সময় তাকে কালীঘাটে শ্রাদ্ধটা সেরে নিতে বলেছিল ।
- এলে পরে নদীর পাড়ে সারবন্দি ছরাদ হবে ‘ কাদের এভাবে শ্রাদ্ধ হবে ?
Ans: মাতলার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বাদা অঞ্চলে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে , মহানাম শতপথি গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছোটে গণ শ্রাদ্ধ করতে ।
- এ হল ভগবানের মার ।’- কে , কাকে এ কথা বলেছিল ?
Ans: বাদা অঞ্চলের ভাগচাষি উচ্ছব মাতলার বন্যায় ঘরদোর স্ত্রী – পুত্রকন্যা সব হারিয়ে মনিব সতীশ মিস্ত্রির কাছে একমুঠো ভাতের আশায় গেলে তিনি এ কথা বলেন ।
- উচ্ছবকে ‘ মতিচ্ছন্ন ‘ হওয়ার কথা সতীশবাবু বলেছিল কেন ?
Ans: উচ্ছব ঝড়জলের রাতে বউ – ছেলেমেয়েকে হারিয়েও সতীশবাবুর কাছে খিদের জ্বালায় ভাত চেয়েছিল বলে তিনি উচ্ছবের ” মতিচ্ছন্ন হয়েছে বলেছিলেন ।
- ভাত খেতে দিলে না উচ্ছবকে ‘ — সতীশবাবু কেন ভাতা খেতে দেয়নি ?
Ans: উচ্ছবকে ভাত দিলে গ্রামের অন্যান্য অভুক্ত মানুষ । পঙ্গপালের মতো সতীশবাবুর বাড়িতে এসে জুটবে । তাই তিনি উচ্ছবকে ভাত খেতে দেননি ।
- কবে থেকে উচ্ছবের ‘ আধ – পেটা সিকি – পেটা ‘ উপোসের শুরু হয়েছিল ?
Ans: সতীশবাবুর জমির ধান পোকায় কাটার সময় থেকেই উচ্ছবের ‘ আধ – পেটা সিকি – পেটা ‘ উপোসের শুরু হয়েছিল ।
- উচ্ছব কেন প্রেত হয়ে আছে ?
Ans: পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছব প্রেত হয়ে আছে ।
- তখন বউ ছেলে মেয়ের জন্যে কাঁদবে ।’— এখানে ‘ তখন ‘ বলতে কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ক্ষুধার্ত উচ্ছবের পেটে ভাত পড়লে ‘ তখন ‘ সে মৃত । বউ – ছেলে – মেয়ের জন্যে কাঁদবে । এখানে ‘ তখন ‘ বলতে পেটে ভাত পড়ার পরের কথাই বলা হয়েছে ।
- তান্ত্রিক কীভাবে হোম শুরু করেন ?
Ans: তান্ত্রিক মন্ত্র উচ্চারণ করে গর্জে উঠে বুড়ো কর্তার রোগকে দাঁড় করান আর তারপর কালো বিড়ালের লোম দিয়ে রোগকে বেঁধে হোম শুরু করেন ।
- হোম শুরু হতেই কী ঘটেছিল ?
Ans: তান্ত্রিক হোম শুরু করতেই বুড়ো কর্তার ঘর থেকে নার্স ) নেমে এসে ডাক্তারকে খবর দিতে বলেছিল ।
- ‘ ঝেমন হাঁকুড় পাড়লে অমনি করা টাল নিলে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: তান্ত্রিকের মন্ত্র উচ্চারণের বিকট হাঁকডাক শুরু হতেই দোতলার ঘরে বুড়ো কর্তা টলে পড়ল । এখানে সে – কথাই বলা হয়েছে ।
- ‘ ডাক্তারকে কল দিন । –কে , কেন ডাক্তারকে কল দিতে বলেছিলেন ?
Ans: বড়ো বাড়ির সর্বময় কর্তার মৃত্যুকে তান্ত্রিক মন্ত্রে আর হোমে বিলম্বিত করতে চাইলেও নার্স বুঝতে পেরে ডাক্তারকে ডাকার কথা বলেন ।
- একন চান করব নে ।’- উচ্ছবের এমন বলার কারণ কী ?
Ans: উচ্ছবের মাথায় জল পড়লে আর পেটের খিদে বশ মানতে চায় না , তাই সে বাসিনীর কথায় চান ( স্নান ) করতে চায়নি ।
- উচ্ছব সেই বাদাটা খুঁজে বের করবে ।’- কখন খুঁজে বের করবে ?
Ans: ভাত খেয়ে শক্তি পেলে উচ্ছব বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার নানারকম চালের উৎস সেই বাদাটা খুঁজে বের করবে ।
- ‘ তারা বলে ‘ — কারা , কী বলে ?
Ans: মন্দিরের চাতালে তাস পেটাতে ব্যস্ত তিনটি ছেলে বলে , বড়ো বাড়ির কর্তাকে বাঁচাতে হোমযজ্ঞ হচ্ছে — সব ফালতু , অর্থহীন ।
- ‘ উচ্ছবের চোখের কোলে জল গড়ায় ।’— কেন ?
Ans: ঝড়জলের রাতে মাতলার পাগল মাতন না – জেগে উঠলে , তার ছেলে – বউ – মেয়ে অনেকদিন বাঁচত । এসব ভেবেই উচ্ছবের চোখে জল আসে ।
- ‘ সেই আশাতেই প্রেত উচ্ছব মানুষ হয়ে গেল নাকি ? ‘ — এখানে কোন্ আশার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ভাত খাওয়ার আশায় যেন প্রেত উচ্ছব মানুষ হয়ে ওঠে , ছেলে – মেয়ে – বউয়ের দুঃখে কেঁদে ফেলে । সে মন্দিরের চাতালে শুয়ে এমনটাই ভেবেছিল ।
- তাস পিটানো ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে ।’— কেন ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়েছিল ?
Ans: তাস পেটানো ছেলেগুলি উচ্ছবের কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করায় সে বলে , মাতলায় দুর্যোগে তার ঘর – সংসার সর্বস্ব গেছে । তখন তারা অস্বস্তিতে পড়েছিল ।
- উচ্ছবের কীভাবে ঘুম ভেঙেছিল ?
Ans: কোনো একজন পথচারীর পায়ের ধাক্কায় মন্দিরের চাতালে ঘুমন্ত উচ্ছবের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল ।
- ‘ তারপর সে অত্যন্ত ঘাবড়ে যায় ‘ — উচ্ছব কেন ঘাবড়ে গিয়েছিল ?
Ans: সন্ধেবেলায় ঘুম থেকে উঠে বড়ো বাড়ির সামনে বেশ কয়েকটি গাড়ি ও লোকের ছোটো ছোটো জটলা দেখে উচ্ছৰ ঘাবড়ে গিয়েছিল ।
- চুরির মতলবে পড়ে আছ ?? — কে বলেছিল ?
Ans: মন্দিরের চাতালে ঘুমন্ত উচ্ছবকে তুলে এক পথচারী তাকে উপরে উদ্ধৃত প্রশ্নটি করেছিল ।
- বড়ো পিসিমার বিলাপ শোনে ‘ — পিসিমা কী বলে বিলাপ করছিলেন ?
Ans: বুড়ো কর্তার মৃত্যুর জন্য তাঁর ছোটো বেয়াই – এর আনা তান্ত্রিককে ‘ ডাকাতে সন্নেসী ‘ বলে দোষারোপ করে বড়ো পিসিমা বিলাপ করেছিলেন । বুড়ো কর্তার আটানব্বই বছর বেঁচে থাকার কথা , তবে বিরাশি বছর বয়সে তিনি যে চলে যাবেন , কে তা জানতো ।
- তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু ‘ – উচ্ছবের এমন বলার কারণ কী ছিল ?
Ans: সতীশবাবু নদীর পাড়ে মাটির ঘরে থাকে না , তাই সর্বহারা হতদরিদ্র উচ্চবের দুঃখ – দুর্দশা তার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় । এইজন্যই সে এ কথা বলেছিল ।
- ‘ ডাক্তাররা বলে দিয়েছে ‘ — কী বলেছে ?
Ans: ডাক্তাররা বলে দিয়েছে যে , লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত বড়ো বাড়ির কর্তার আর বাঁচার আশা নেই ।
- ‘ শেষ খোঁচাটা মারেন ‘ — খোঁচাটা কী ছিল ?
Ans: বড়ো বউকে বড়ো পিসিমা বলেছিলেন , তার শ্বশুরের জন্যই এই হোমযজ্ঞ হচ্ছে আর সেখানে কাজের প্রয়োজনেই একজন লোক এসেছে ।
- কীর্তনিয়ার দল ছাড়াও বড়ো পিসিমা আর কাদের জন্য অপেক্ষার কথা বলেছিলেন ?
Ans: কীর্তনিয়ার দল ছাড়াও বড়ো পিসিমা বুড়ো কর্তার বোন । আর দিদিদের জন্য অপেক্ষার কথা বলেছিলেন ।
- নইলে দোষ লাগবে’— বলার কারণ কী ?
Ans: মৃত বুড়ো কর্তাকে রাতারাতি দাহ না করতে পারলে দোষ লাগবে । এখানে এমন কথাই বলা হয়েছে ।
- ‘ তিনি লাইন করে ফেলেন তাঁর । ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: বুড়ো কর্তার তিন ছেলে হোম ছেড়ে উঠে যাওয়ায় তান্ত্রিক তাঁকে বাঁচাতে পারেনি । এই অজুহাত খাড়া করেই তান্ত্রিক নিজের ‘ লাইন ‘ করে ফেলেছিল ।
- উচ্ছবের ঠাকুমা কী বলত ?
Ans: উচ্ছবের ঠাকুমা বলত , ‘ রন্ন হল মা নকী ‘ অর্থাৎ অন্নই লক্ষ্মী ।
- বাড়ির বুড়ো কর্তা কখন শ্মশানযাত্রা করেন ?
Ans: বাড়ির বুড়ো কর্তা রাত একটার পর শ্মশানযাত্রা করেন ।
- বাড়ির বুড়ো কৰ্তা কীভাবে শ্মশানযাত্রা করেন ।
Ans: বাড়ির বুড়ো কর্তা বোম্বাই খাটে শুয়ে নাচতে নাচতে । শ্মশানযাত্রা করেন । পেশাদারি দক্ষ শববাহকদের আধা দৌড়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীর্তনিয়ারাও দৌড় লাগায় ।
- ‘ বাসিনী , সব্বস্ব রান্না পথে ঢেলে দিগে যা ।’— বড়ো পিসিমা এমন বলেছিলেন কেন ?
Ans: বুড়ো কর্তা মারা যাওয়ায় অশৌচের কারণে ঘরদোর মুক্ত করার জন্য , বড়ো পিসিমা বাসিনীকে এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer :
1. ‘ ভাত খাবে কাজ করবে । কোন প্রসঙ্গে , কার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে ? সে কীভাবে কাজ করেছিল ?
Ans: মাতলার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বউ – ছেলে – মেয়ে , ঘরবাড়ি সব হারিয়ে হতদরিদ্র দিনমজুর উচ্ছব নাইয়া একটু ভাতের আশায় কলকাতায় কাজ করতে আসে । গ্রাম সম্পর্কের বোন বাসিনী কলকাতার বড়ো বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে । বাসিনীর অনুরোধে বড়ো পিসিমা উচ্ছবকে কাজে নিয়োগ করে । কিন্তু উচ্ছবের উগ্র চাহনি , বুনো বুনো চেহারা , পরনে ছোট্ট ময়লা লুঙ্গি দেখে বাড়ির বড়ো বউয়ের ভালো লাগেনি । বামুন ঠাকুরকে এই লোকটির সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় — বড়ো পিসিমার আদেশে লোকটি কাজ করছে ভাত খাওয়ার বিনিময়ে । উচ্ছব নাইয়া সম্পর্কে বামুন ঠাকুর এ কথা বলেছে ।
বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ায় । ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছেন । তবে , ছোটো বউয়ের বাবার ব্যবস্থাপনায় এক তান্ত্রিক ডেকে আরোগ্যের জন্য হোমযজ্ঞ করে শেষ চেষ্টা করা হচ্ছে । বেল , ক্যাওড়া , অশ্বত্থ , বট , তেঁতুল — এই পাঁচরকম কাঠ কাটতে শরীরের সর্বশক্তি প্রয়োগ উচ্ছবের কাজের পরিচয় করে ধারালো কাটারিটা তোলে আর নামায় । একটু থেমে গেলেই বড়ো পিসিমা খনখনিয়ে ওঠে— কী হল , হাত চালাও বাছা । ’ তান্ত্রিকের নতুন বিধানে আর বুড়ো কর্তা মরে যাওয়ায় । শেষপর্যন্ত উচ্ছব কাজ করলেও ভাত পায়নি । তবে , অশৌচ বাড়ির ভাত দূরে গিয়ে সব ফেলে দেওয়ার দায়িত্ব পেয়ে তা খেতে গিয়ে ডেকচি চুরির দায়ের জেলখানায় ঠাঁই হয় ।
2. ‘ রেঁধে – বেড়ে শাশুড়িকে খাওয়ানো তার কাজ । কার কাজ ? বড়ো বাড়ির বড়ো ও মেজ বউয়ের কাজগুলি কী কী ছিল আলোচনা করো ।
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পে দেখা যায় , বড়ো বাড়ির শাশুড়িকে রেঁধে – বেড়ে খাওয়ানোর কাজটি করে মেজ বউ । বাড়ির বড়ো এবং মেজ বউ উভয়েই দায়িত্ববান , কর্মচঞ্চল এবং সুপটু গৃহিণী । বড়ো বউয়ের কাছে তার বড়ো বউয়ের কাজ শ্বশুরমশাই তথা বুড়ো কর্তা ঠাকুর – দেবতার মতো । সে নিয়মিত শ্বশুরমশাইয়ের জন্য দই পেতে , ইসবগুল দিয়ে শরবত তৈরি করে । বাড়িতে ঠাকুর – চাকর থাকা সত্ত্বেও খেতে আসবার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে , তাঁর জন্য হাতে গরম রুটি – লুচি তৈরি করে দেয় । সেইসঙ্গে রোজ তাঁর বিছানা করে বা প্রয়োজনে পা টিপে দেয় । সে শ্বশুরমশাইকে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা করে বলেই , তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কায় আর চাঁদ – সূর্য উঠবে কি না ভাবে ।
[ ] অন্যদিকে বাড়ির মেজ বউ শাশুড়ির দেখভাল করে । শ্বশুরমশাই লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ায় মৃত্যুপথযাত্রী । তাই সকলের আশঙ্কা শাশুড়ির কপালে আর বেশিদিন মাছ খাওয়া নেই । কারণ সনাতন হিন্দুপ্রথা অনুসারে বিধবারা আমিষ খায় না । এ কারণেই সেজ বউ কয়েক দিন ধরে মাছের বিভিন্ন পদ শাশুড়ির জন্য রান্না করছে । সে উনোনপাড়ে বসে ইলিশ , পাকা পোনার পেটি , চিতলের কোল , ডিমপোরা ট্যাংরা , বড়ো ভেটকি মাছ প্রভৃতি রেঁধে চলেছে ।
3. ‘ ডাক্তাররা বলে দিয়েছে বলেই তো আজ এই যজ্ঞি হোম হচ্ছে ।— ‘ যজ্ঞি হোম ‘ হচ্ছে কেন ? ‘ যজ্ঞি হোম – এর বিবরণ দাও ।
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব । কোনো এক ঝড়জলের রাতে বউ – ছেলে – মেয়ে – সহ তার ঘর – সংসার মাতলার যজ্ঞি হোম গর্ভে ভেসে যায় । শোকে – উপবাসে অস্থির উচ্ছব খিদের জ্বালায় বাধ্য হয়ে কলকাতায় বাসিনীর মনিব বাড়িতে এসে উপস্থিত হয় । সেখানে বাড়ির কর্তা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত । তাই তাঁর আরোগ্যের আশায় তান্ত্রিকের নির্দেশে এই ‘ যজ্ঞি হোম ’ – এর আয়োজন ।
বড়ো বাড়ির ছোটো বউয়ের বাবা এই তান্ত্রিককে ডেকে এনেছেন । তান্ত্রিকের ফরমায়েশে বেল , ক্যাওড়া , অশ্বত্থ , বট ও তেঁতুল গাছের আধ মণ করে কাঠ এসেছে । সেই সমস্ত কাঠকে এক মাপে কেটেছে উচ্ছব । চাকর ভজন যজ্ঞের যজ্ঞি হোমের বিবরণ প্রয়োজনে খুঁজে নিয়ে এসেে শ্মশানের বালি ও কালো বিড়ালের লোম । প্রথমে ঠিক হয়েছিল যজ্ঞের আগেই রান্না – খাওয়া শেষ হবে কিন্তু পরে তান্ত্রিক মত বদলে বলেন , হোম শেষ না – হলে কারও খাওয়া চলবে না । ফলে সমস্ত আয়োজন শেষে যজ্ঞ আরম্ভ হয় । তান্ত্রিক বাজখাই গলায় ‘ ওঁং হ্রীং ঠং ঠং ভো ভো রোগ শৃণু শৃণু ’ বলে রোগকে দাঁড় করিয়ে রোগকে কালো বিড়ালের লোম দিয়ে বাঁধা মাত্রই , নার্স এসে ছেলেদের দ্রুত ডাক্তার ডাকতে বলেন । এভাবেই হোমযজ্ঞ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুড়ো কর্তার মৃত্যু ঘটে ।
4. ‘ বাদায় থাকে অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি বাদায় থাকলেও তার ‘ ভাতের আহিংকে ’ এতখানি কেন ? বাসিনী সম্পর্কে তোমার মতামত আলোচনা করো ।
Ans: ‘ ভাত ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র সুন্দরবন অঞ্চলের হতদরিদ্র ভাগচাষি উচ্ছব । সতীশ মিস্তিরির জমিতে ক – মাস চাষ করে বছরে বেশিরভাগ দিন আধপেটা , সিকিপেটা খেয়ে কোনোক্রমে দিন কাটাচ্ছিল । হঠাৎ ঝড়জলে বন্যায় বউ – ছেলে মেয়ে সহ তার ঘর – সংসার ভেসে যায় । সর্বস্ব হারানো উচ্ছবের পেটে আর ভাত জুটল না । ভাত খাওয়ার আশায় সে গ্রাম – সম্পর্কিত বোন বাসিনীর মনিব বাড়িতে আসে । শোক ও উপবাসে কাহিল উচ্চব বড়ো বাড়িতে বাদার চালের অফুরান ভাণ্ডার দেখে একমুঠো ভাত চায় । কারণ তার বাদায় শুধু গৌড় – গুগলি – কচুশাক – সুশনো শাক পাওয়া যেত । ক্ষুধার্ত উচ্ছবের এই খিদের যন্ত্রণাকেই বড়ো বউয়ের ‘ ভাতের আহিংকে ‘ বলে মনে হয়েছে ।
বাসিনী সম্পর্কে মত : উচ্ছবের গ্রাম – সম্পর্কিত বোন বাসিনী । পেটের জ্বালায় কলকাতার বড়ো বাড়িতে কাজ করলেও , সে গ্রামের মানুষের প্রতি অন্তরের ভালোবাসা পোষণ করে । উচ্ছবকে সে বড়ো বাড়িতে ডেকে আনে । তাই সে লুকিয়ে উচ্ছবের জন্য সামান্য ছাতু জোগাড় করে আনে । বাড়ির বড়ো পিসিমার অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন সে । পিসিমা বাসিনীকে দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে চাল বিক্রি করে । কিন্তু বাসিনী সে – কথা কাউকে জানতে দেয় না । মনুষ্যত্বহীন বড়ো বাড়ির লোকেদের সে অত্যন্ত ভালোভাবে চেনে বলেই বোঝে , এ পিশাচের বাড়িতে উচ্ছবের খাবার জুটবে না । কারণ গরিবের গতরকে এরা সস্তা দেখে । শেষে ক্ষুধার্ত উচ্ছব অশৌচ বাড়ির ভাত নিয়ে দৌড় দিলে , বাসিনী নারীসুলভ অমঙ্গলের আশঙ্কায় বাধা দিতে গিয়ে ব্যর্থ । হয় । এভাবেই সে দয়া – মায়া – মমতা ও কর্তব্যবোধে পরিপূর্ণ একটি উজ্জ্বল মানবিক চরিত্র হয়ে ওঠে ।
5. ‘ এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে ।’- কোন্ গল্পের কথা বলা হয়েছে ? সেই গল্পের বর্ণনা দাও ।
Ans: সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা বাসিনী কলকাতার কালীঘাট অঞ্চলে বড়ো বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে । সেই বাসিনীর মনিবের বাড়িতে যে ‘ হেলা ঢেলা ভাত ‘ অর্থাৎ ভাত খুব সহজলভ্য তা বাসিনীর গ্রামের সবাই শুনেছে ।
■ জলাভূমিময় বাদা অঞ্চলে মাতলার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে গ্রামের পর গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এমনিতে সেটা ছিল মড়কের বছর , অনাবৃষ্টিতে ধানে গোেছ আসার আগেই ধান গাছ থেকে গল্পের বর্ণনা সবুজ রং চলে গিয়েছিল । তার ওপর বন্যার তাণ্ডবে চালের অভাব চূড়ান্ত অবস্থা ধারণ করেছিল । সেই অনাহার , অর্ধাহারের দিনে গ্রামের মানুষের মুখে বাসিনীর মনিবের বাড়ির অঢেল চালের বিষয় আলোচিত হতে লাগল । বড়ো বাড়িতে ঠাকুরদালান আছে , মন্দিরের মাথায় পিতলের ত্রিশূল আছে — এসব উচ্ছব নাইয়া এর আগেরবার বাড়ির বাইরে থেকে দেখে এসেছিল । উচ্ছবের গ্রামের অবস্থাপন্ন ব্যক্তি সতীশ মিস্তিরি জমিতে তিনরকম ধানের চাষ হয় — হরকুল , পাটনাই , মোটা ধান । আর বড়ো বাড়িতে পাঁচ ভাগে ভাত হয় । বিস্মিত উচ্ছব প্রশ্ন করে বাসিনী , এত নানানিধি চাল ? ’ বাসিনী উত্তর দেয় — ‘ বাদায় এদের এত জমি । চাল এনে পাহাড় করেছে । ‘ উচ্চবদের গ্রামে পেটভরে ভাত খাওয়াটাই সৌভাগ্যের বিষয় । হিতে সেদ্ধ আর গুগলি সেদ্ধ নুন দিয়ে লংকা পোড়াসহ মাখা ভালো খাবারের নমুনা । উদয় – অস্ত পরিশ্রম করেও তাদের জীবন বদলায় না । আর বড়ো বাড়িতে আঠারোটা দেবা বাড়ি আর বাদা অঞ্চলে ‘ অসাগর জমি ’ – র সৌজন্যে বাড়ির ছেলেদের কাজ করা তো দূরস্থান , তারা বেলা এগারোটার আগে ঘুম থেকেই ওঠে না ।
6. ‘ কিন্তু এমন দুর্যোগে ভগবানও কাথামুড়ি দিয়ে ঘুমোন বোধ করি।- কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ? এমন মন্তব্যের কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?
Ans: সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে এক দুর্যোগময় ঝড়জলের দিনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চিত্র ‘ ভাত ’ গল্পে ফুটে উঠেছে । মাতলা নদীর পাড়ে দিনমজুর উচ্ছব নাইয়ার মাটির ঘর ।
তুমুল ঝড়জলে ছেলেমেয়েকে জাপটে ধরে তার বউ ভয়ে আর শীতে কাঁপতে থাকে । ঘরের মাঝখানের খুঁটিটি যেন মনে হয় মাটির ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে , আর ভার রাখতে পারছে না । ধনুষ্টঙ্কার রোগীর মতো কাঁপছে খুঁটিটি । আর বাইরে বিদ্যুৎ চমকের আলোয় দেখা যাচ্ছে মাতলার জল ফুলেফেঁপে উঠছে । তখন অসহায় উচ্ছব নাইয়া একমনে বলে চলছিল — ভগমান ! ভগমান ! ভগমান ।
অসহায় পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন আলেখ্য সারাজীবন ধরে মহাশ্বেতা দেবীর সাহিত্যে উঠে এসেছে । সরাসরি তিনি সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত থেকে তাঁদের জীবনযন্ত্রণা প্রত্যক্ষ করেছিলেন । তাই গল্পের বাস্তবতাকে তুলে ধরতে তিনি ভাববাদের থেকে বস্তুবাদকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন । বাদা অঞ্চলের অধিকার কার – উচ্ছব নাইয়াদের মতো প্রান্তিক মানুষদের নাকি সতীশ মিস্তিরি ও কলকাতার বড়োবাবুদের । উচ্ছবরা বাদা থেকে শুধু গুগলি , গেঁড়ি , কচুশাক , হিস্যে শাক , সুশনো শাক পায় । তারা ভূমিহীন , মজদুর , দু – বেলা দু – মুঠো ভাত তাদের সবসময় জোটে না । আর সতীশ মিস্তিরি , কলকাতার জমিদারবাবুর বাড়িতে সেই বাদা থেকে পাওয়া ধান চালই ‘ হেলা ঢেলা ‘ , অঢেল , প্রয়োজনের অতিরিক্ত । তাই মানুষই যখন মানুষকে রক্ষা করতে পারে না , তখন ঈশ্বর তো কল্পনা মাত্র । অসহায় উচ্ছব ভগবানের কাছে নিরুপায় হয়ে আশ্রয় খোঁজে , এবং আরও নিরুপায় হয়ে ভাবে এমন দুর্যোগে ভগবানও হয়তো গরিবের কথা শুনতে পায় না । অসহায়তা থেকে আত্মসান্ত্বনা অথবা অগাধ ঈশ্বর বিশ্বাসের প্রতি পরোক্ষে সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ হয়তো ধরা পড়েছে এই মন্তব্যে ।
7. ‘ যা আর নেই , যা ঝড় – জল – মাতলার গর্ভে গেছে তাই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল । দুর্যোগটির বর্ণনা দাও । দুর্যোগটি উচ্ছবকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল ?
Ans: দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির পর বাদা অঞ্চলে মাতলা নদীসংলগ্ন গ্রামগুলিতে এক রাতে তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় । সেদিন উচ্চবের গ্রামের সকল বাড়িতে সবাই পেট ভরে খেতে পেরেছিল । আকাশের অবস্থা দেখে চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলেছিল — যারা নৌকো নিয়ে বেরিয়েছে , তারা বোধহয় নৌকোডুবে মারা যাবে । দেখতে দেখতে উচ্চবের ঘরের মাঝ – খুঁটিটা ধনুষ্টঙ্কার রোগীর মতো কেঁপে উঠেছিল । ছেলেমেয়েকে জাপটে ধরে উচ্ছবের বউ ভয়ে আর শীতে কাঁপছিল । উচ্ছব প্রাণপণে ভগবানের নাম স্মরণ করতে থাকে । কিন্তু সব আশা শেষ হয়ে যায় । বিদ্যুতের ক্ষণিক আলোকে তারা লক্ষ করে মাতলা নদীতে জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে । সফেন জল ছুটে আসছে সর্বগ্রাসী হয়ে । তারপর অন্ধকার রাতে বন্যার জলে ভেসে যায় গ্রামের পর গ্রাম , ঘরবাড়ি , মানুষজন ।
সৌভাগ্যক্রমে উচ্ছব জলের টানে ভেসে যেতে যেতে গাছের ডালে আটকে যায় । কিন্তু সকাল হলে , জল নামতেই সর্বনাশের বহর চোখে পড়ে । উচ্ছবের বউ , ছেলে , মেয়ে সবাই বন্যার জলের প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়েছিল । সবাইকে হারিয়ে উচ্ছবের সংসার মাটিতে লুটিয়ে গেল । পাগলের মতো কয়েকদিন উচ্ছবের জীবনে ধরে কোনো – না – কোনো ঘরের চালের ভেসে দুর্যোগের প্রভাব যাওয়া ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে তাদের সাড়া পাওয়ার আশা করে খুঁজতে থাকে । কিন্তু বন্যার অপঘাতে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে পড়ে । আর ভূমিহীন উচ্ছব সরকারের কাছে জমি চেয়ে যে – আবেদনপত্র টিনের কৌটোয় সযত্নে রেখেছিল , সেই কৌটোও হারিয়ে যায় ।
8. ‘ লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে তা কাঁদব না এতটুকু ? ’ — উচ্ছবের এমন অনুভূতির কারণ বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ‘ ভাত ’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র হতদরিদ্র ভূমিহীন চাষি উচ্ছব । সতীশ মিস্তিরির জমিতে ভাগে চাষ করত । এক ঝড়জলের রাতে মাতলার গর্ভে তার ঘর – সংসার তলিয়ে যায় । বউ – ছেলে – মেয়েকে হারিয়ে উচ্ছব পাগলের মতো নদীর তীরে তাদের খুঁজে বেড়ায় । ফলে দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ খিচুড়িটুকুও তার কপালে জোটে না । দিনকয়েক পরে , প্রিয়জনকে হারানোর শোক – যন্ত্রণার সঙ্গে তীব্র হয়ে ওঠে খিদে । এই কয়েকদিনের অভিজ্ঞতায় সে যেন দিশেহারা হয়ে গেছে । কোনোক্রমে একটু গুছিয়ে ভাবতে চেষ্টা করলে হতভাগ্য মানুষটার মনিব সতীশ মিস্তিরির চাষের জমির কথা মনে পড়ে । কিন্তু ধানে গোেছ আসার আগেই ধান গাছ থেকে সবুজ রং চলে যায় । ক্রমে কার্তিক মাসেই খড় হয়ে গেল ধান । অত সাধে – যত্নে গড়ে তোলা ধান গাছের অবস্থা দেখে মাথায় হাত দেয় উচ্ছব । মনিবের হরকুল , পাটনাই ও মোটা এই তিন ধানেই মড়ক লাগল । বছরে কয়েক মাস সতীশ মিস্তিরির জমিতে কাজ করেই তো উচ্ছব কোনোক্রমে বাঁচে । ফলে ধান নষ্ট হওয়ায় উচ্চব কাঁদতে থাকে । গ্রামের মানুষ সাধনবাবু মনিবের ধান নষ্ট হওয়ায় উচ্ছবের কাঁদার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে প্রশ্নোদৃত উক্তিটি করে । কৃষিজীবী মানুষের কাছে অন্ন লক্ষ্মীকে হারানোর আকুল যন্ত্রণা যেন উচ্ছরের এই মন্তব্যে ধ্বনিত হয়েছে ।
9. এইবার গুচিয়ে ভাবতে হচ্ছে।- কে গুচিয়ে ভাবে ? সে গুচিয়ে কোন কোন বিষয়ে ভাবতে থাকে ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর অনন্য সৃষ্টি ‘ ভাত ‘ গল্পের বাদা অঞ্চলের সামান্য ভাগচাষি উৎসব নাইয়া বা উচ্ছব নাইয়া ‘ গুচিয়ে ‘ ভাবতে বসে ।
■ মাতলা নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসে এক দুর্যোগময় রাতে উচ্চর বউ – ছেলে – মেয়ে , ঘরবাড়ি সব হারিয়ে ফেলে । ভাগ্যক্রমে উচ্চবও জলের টানে ভেসে গিয়ে একটি গাছের ডালে আটকে যায় । সকাল হতেই পাগলের মতো খুঁজতে থাকে । কিন্তু চন্নুনী , চরুনীর মা , ভাই যে আর নেই উচ্ছব বলে , রা কাড় অ চন্নুনীর মা ! ঘরের পাশ ছেড়ে সে নড়তে চায় না । ‘ সতীশ মিস্তিরির কাছ থেকে অনেক চেয়ে – চিন্তে একটি টিনের কৌটো জোগাড় করে , তার মধ্যে জমি চেয়ে সরকারের কাছে লেখা দরখাস্তের নকল রেখেছিল । বন্যার টানে তাও হারিয়ে গেছে মাতলার গর্ভে । ধাতস্থ হতে হতে ত্রাণের খিচুড়ি তার আর খাওয়া হয়নি । ড্রাইডোল বা শুকনো খাবার পেটে পড়ার পর ভাবতে বসে । দুর্যোগ আসার আগের অবস্থার কথা মনে পড়ে । অনাবৃষ্টি , ধানের মড়ক লাগার জন্য ধানে গোেছ আসার আগেই ধান গাছের সবুজ রং বিবর্ণ হতে থাকে । ‘ কার্তিক মাসেই ধান খড় হয়ে গেল । ‘ মনিব সতীশ মিস্তিরির তিনরকম ধানেই মড়ক লাগে । সাধনবাবু জানতে চায় — মনিবের ধান যায় উচ্ছব কেন কাঁদে । আসলে , সতীশবাবুর জমিতে কাজ করেই যে উচ্ছবের দিন চলে — ‘ লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে তা কাঁদব না এতটুকু ? আমরা খাব কী ? প্রথম ভাবনা সেই ঝড়বৃষ্টির রাতে উচ্ছব সপরিবারে অনেক দিন বাদে অনেক পরিমাণ হিঙে আর গুগলি সেদ্দ , নুন , পোড়া লংকা দিয়ে মেখে তৃপ্তি করে খেয়েছিল । খেতে বসে চন্নুনীর দ্বিতীয় ভাবনা মা বলেছিল — ‘ দেবতার গতিক ভালো নয়কো ‘ । সেই ভাবনা সত্যি হতে সময় লাগেনি । রাত বাড়তেই প্রবল ঝড়ে ঘরের মাঝ খুঁটিটা ধনুষ্টঙ্কার রোগীর মতো কেঁপে উঠেছিল । ঈশ্বরকে বারবার ডেকেও কোনো লাভ হয়নি । বিদ্যুৎ চমকের আলোয় তারা দেখেছিল মাতলার সফেন জল ছুটে আসছে । বন্যার জলে উচ্ছবের সব গেল , শুধু চন্নুনীদের যদি রেখে যেত – উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত ।
10. ‘ গরিবের গতর এরা শস্তা দেকে বক্তা কে ? এই ধরনের মন্তব্য করার কারণ ব্যাখ্যা করো ।
Ans: বাদা অঞ্চলের গরিব বাসিনী কলকাতায় বড়ো বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে । সে ধনী বাড়িতে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে এ কথা বলেছে ।
সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে ‘ অসাগর জমি থেকে আয়ের উৎসে বিষয়ী বুড়ো কর্তা আঠারোটি দেবত্র বাড়ি ও অঢেল সম্পত্তি করে ফেলেছেন । বাড়ির ছেলেদের আর কোনো কাজ করতে হয় না । বেলা এগারোটার আগে তারা ঘুম থেকেই ওঠে না । উচ্চবদের বাদায় তারা শুধু গুগলি , গেঁড়ি , কচুশাক , হিলে শাক , সুশনো শাক পায় । আর সেই বাদা থেকে অঢেল ধান , চাল আসে বড়ো বাড়িতে । পাঁচরকম চালের আলাদা আলাদা ভাত রান্না হয় । উচ্ছব অবাক হয়ে ভাবে — এত তরকারি , এত চাল , এত মাছ এ একটা যঞ্জি বটে । ‘ বাড়ির বামুন , ঝি , চাকরদের জন্য বরাদ্দ থাকে মোটা চালের ভাত । আর বুড়ো কর্তা , ছেলেরা সব শৌখিন চালের আলাদা আলাদা ভাত খায় । বুড়ো কর্তার হোমযজ্ঞের জন্য পাঁচরকম কাঠের আড়াই মণ কাঠ কাটানো হচ্ছে সমান মাপে । কিন্তু পারিশ্রমিক বলতে মোটা ভাত । তাও আবার খেতে দেবে না যতক্ষণ না বুড়ো কর্তার হোমযজ্ঞ সম্পূর্ণ হচ্ছে । বাসিনী লুকিয়ে লুকিয়ে একটু ছাতু খেতে দেয় । কিন্তু অভুক্ত উচ্ছব বাসিনীকে অনুনয় করে । বাদার একমুঠো চাল অন্তত দিলে সে গালে দিয়ে একটু জল খেয়ে শান্তি পায় । খিদে , কষ্টে কাঠ কাটা থামতে দেখলেই বড়ো পিসিমা খনখনিয়ে ওঠে— ‘ হাত চালাও বাছা ‘ । বাসিনীর এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে উচ্চবিত্তের স্বার্থপর মানসিকতা ও মনুষ্যত্ববোধহীনতার দিকটি প্রকাশিত হয়েছে ।
11. উদ্ধৃতাংশের মন্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা ‘ এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়— কখন , কোন্ কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায় ? কেন সে বল পায় ?
Ans: বাদা অঞ্চলে ঝড়জলে , মাতলার বন্যায় সব হারিয়ে উচ্ছব নাইয়া আসে কলকাতায় বড়ো বাড়িতে কাজের সন্ধানে । গ্রাম – সম্পর্কের বোন বাসিনী বড়ো বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে । তার অনুরোধে বাড়ির বড়ো পিসিমা উচ্ছবকে কাজ দেয় । বুড়ো কর্তার আরোগ্যের জন্য আয়োজিত হোমযজ্ঞের উচ্ছব যে – কথায় কাঠ কাটতে হবে । পাঁচরকম কাঠ প্রতিটা দেড় বুকে বল পায় হাত লম্বা করে সমান মাপে আধ মণ করে মোট আড়াই মণ কাঠ কাটতে পারলে দীর্ঘদিন অভুক্ত উচ্ছব একটু ভাত খেতে পারবে । খিদের জ্বালা মেটাতে বাসিনী লুকিয়ে একটু ছাতু খেতে দিয়েছিল উচ্ছবকে । উচ্ছব বাইরে যায় লুকিয়ে জল । ছাতু খেতে । ফিরে আসার পর পিসিমার কথা শোনে — ‘ কাঠ কাটলে হোম , হোম হলে ভাত ‘ । মেজ বউ বাসিনীকে তাড়া দেয় সব রান্না খাবার ঘরে তুলতে হবে । বড়ো বউও সব হয়ে গেল কিনা । জিজ্ঞাসা করে । এইসব কথা শুনে উচ্ছব ভাত খাওয়ার আশায় উজ্জীবিত হয়ে ওঠে ।
উচ্ছবের বাদায় গেঁড়ি – গুগলি – শাকপাতা সহজে পাওয়া যায় । কিন্তু ভাত সহজে তার মতো গরিব মানুষের জোটে না । আর বড়ো বাড়িতে অঢেল ভাত । উচ্ছব ভাবে — এত তরকারি এত চাল এত মাছ এ একটা যজ্ঞি বটে । তার ওপর বন্যায় বউ – ছেলে – মেয়ে , ঘরবাড়ি হারিয়ে শোকে পাথর উচ্ছব দীর্ঘদিন অভুক্ত থেকে প্রেত হয়ে আছে । বড়ো বাড়ির বৈভব , প্রতিপত্তি ‘ এসব নাকি বাদার দৌলতে । উচ্ছব ভাবে – ভাত খেয়ে দেহে শক্তি পেলে উচ্ছব সেই বাদাটা খুঁজে বের করবে । ‘ তাই ভাত পাওয়ার সম্ভাবনার কথা আলোচনা বুঝতে পেরে উচ্ছব ‘ বুকে বল পায় ‘ ।
12. ‘ তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু ! ‘ — ‘ সতীশবাবু কে ? সতীশবাবু সম্পর্কে কোন প্রসঙ্গে কেন এ কথা বলা হয়েছে ?
Ans: বাদা অঞ্চলের অবস্থাপন্ন ব্যক্তি সতীশ মিস্তিরি । দিনমজুর উচ্ছব নাইয়া তাঁর জমিতে কাজ করে ।
সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষই ভূমিহীন । কলকাতার জমিদারবাবু কিংবা সতীশ মিস্তিরিদের মতো লোকদের কাছেই জমির অধিকার কুক্ষিগত হয়ে আছে । সারাবছর হতদরিদ্র মানুষগুলো তাই নির্ভর করে থাকে সতীশবাবুদের মর্জির ওপরে । মনিবের জমিতে দিনমজুরি করলেও ফসলে মড়ক লাগলে উচ্ছব চিন্তিত হয়ে পড়ে । ‘ আমরা খাব কি ? ’ – এই ভাবনায় কেঁদে ফেলে । অথচ , উচ্ছবদের জন্য মনিব সতীশবাবুর কোনো সহানুভূতি জন্মায় না । প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে মাতলার বন্যায় উচ্ছব ঘরবাড়ি , বউ – ছেলে – মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে যায় । ভাতের খিদেতে সতীশবাবুর কাছে গেলে , তিনি বলেন — ‘ তোকে এগলা দিলে চলবে ? তাহলেই পালে পালে পঙ্গপাল জুটবে নে ? এ হল ভগবানের মার । ‘ অদৃষ্টের ওপর দোষ চাপিয়ে মনিব সতীশবাবু দায় অস্বীকার করেন ।
সতীশবাবুর পাকা ঘর , আর উচ্ছবের নদীর পাড়ে কাঁচা মাটির ঘর । উচ্ছব প্রশ্ন করে মনে মনে — ‘ পাকা ঘর কি ঝড় জলে পড়ে ?? পাকাবাড়িতে ধান চাল ভর্তি করে নিরাপদে রাখা , চোর – ডাকাতও নিতে পারবে না । দুর্যোগের দিনে মানুষ ত্রাণের খিচুড়ি খাওয়ার জন্য , ড্রাইডোলের জন্য অপেক্ষা করে । আর সতীশবাবুর বাড়িতে রকমারি রান্না হয় । সংগত কারণেই উচ্ছব মুখের ওপর কিছু বলতে না – পারলেও জানে গরিবের কষ্ট মনিব কখনও বুঝবে না ।
13. ‘ তুমি কি বুঝবে সতীশবাবু— সতীশবাবু কী বুঝবে না ? তিনি উচ্ছবের সঙ্গে এমন আচরণ করেছিলেন কেন ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব সুন্দরবন অঞ্চলের এক হতদরিদ্র ভূমিহীন চাষি । সে মাতলার পাড়ে মাটির ঘরে , ছেলে – মেয়ে – বউকে নিয়ে থাকত আর বছরে ক – মাস সতীশ মিস্তিরির জমিতে ভাগে চাষ করে পেট চালাত । কিন্তু আচমকা এক ঝড়জলের রাতে তার ঘর – সংসার মাতলার গর্ভে তলিয়ে যায় । সর্বস্ব হারিয়ে শোকে উপবাসে অস্থির উচ্ছব খিদের জ্বালায় মনিব সতীশ মিস্তিরির শরণাপন্ন হয় । তিনি অবস্থাপন্ন মানুষ , পাকা ঘরে থাকেন , চালও মজুত রাখেন । দেশজোড়া দুর্যোগে গ্রামসুদ্ধ সবাই যখন লঙ্গরখানায় হত্যে দেয় , তখনও সতীশবাবুর ঘরে রোজ রান্না হয় । কিন্তু সেখান থেকে হাভাতে উচ্ছব বিতাড়িত হয়েই প্রশ্নে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করে । উচ্ছব জানে , হতভাগ্য উচ্ছবদের পেটের খিদে বোঝার কিংবা তাতে কর্ণপাত করার দরদ বা সদিচ্ছে , কোনোটাই সতীশবাবুদের মতো মানুষের থাকে না ।
[ ] মনিব সতীশ মিস্তিরি সুকৌশলে উচ্চবকে ফিরিয়ে দেন । কারণ তিনি জানতেন একজনকে প্রশ্রয় দিলে পঙ্গপালের মতো গ্রামের সমস্ত লোক এসে তার বাড়িতে ভিড় করবে । বিরূপ আচরণের কারণ তাই তিনি বলেন , ভগবানের মারের হাত থেকে উচ্ছবকে রক্ষা করার সাধ্য তার নেই ।
14. ‘ ঠিক আছে ভাই ঘুম এসো – উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে ঘুমোতে বলার কারণ কী ছিল ? পরে কীভাবে তার ঘুম ভেঙেছিল ?
Ans: ‘ ভাত ‘ ছোটোগল্পে মাতলার গর্ভে উচ্ছবের ঘর – সংসার , পরিবার পরিজন তলিয়ে গেলে কয়েক দিন অভুক্ত থাকার পর খিদের জ্বালায় সে বাধ্য হয় কলকাতায় এসে বাসিনীর মনিব বাড়িতে কাজ করতে । বাড়ির কর্তার আরোগ্যের আশায় হোমযজ্ঞের আয়োজন দেখে ক্ষুধার্ত উচ্ছব ভাত খাওয়ার আশায় বুক বাঁধে । খিদেয় অস্থির উচ্ছবকে দেখে বাসিনী লুকিয়ে সামান্য ছাতু দিয়ে যায় । কাজ শেষ করে এসে সে শিবমন্দিরের চাতালে খিদেয় – ক্লান্তিতে শুয়ে কখনও বড়ো বাড়ির বিপুল আয়ের উৎস বাদাটার কথা ভাবে , আবার কখনও তাস পিটতে থাকা ছেলেগুলির কথা শোনে । এই সময় হঠাৎ বউ , চন্নুনী ও ছোটো খোকার অকালমৃত্যুর কথা মনে পড়ায় তার চোখ দিয়ে জল গড়ায় । তাসপিটানো ছেলেগুলি উচ্ছবকে কাঁদতে দেখে , তার অবস্থার বিবরণ শুনে অস্বস্তি বোধ করে । তখন তারা সহানুভূতি সহকারে এই সর্বস্বহারা হতদরিদ্র মানুষটিকে মনের ভার লাঘব করার জন্য ঘুমিয়ে পড়ার কথা বলে । উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে ঘুমোতে বলার কারণ ঘুমিয়ে পড়ার অনেকক্ষণ পরে , প্রায় সন্ধেবেলায় একজনের পায়ের ধাক্কায় উচ্ছবের ঘুম ভাঙে । সে জানতে চায় উচ্ছব চুরির ঘুম কীভাবে ভেঙেছিল মতলবে পড়ে আছে কিনা । তখন উচ্ছব তাকে বড়ো বাড়িতে কাজ করার কথা বলে এবং রাস্তায় গাড়ি ও মানুষের জটলা দেখে অত্যন্ত ঘাবড়ে গিয়ে ঘটনা – পরম্পরা বোঝার চেষ্টা করে ।
15. ‘ কত যে সময় যায় , কত কী যে হতে থাকে । প্রসঙ্গ নির্দেশ করে বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার শেষযাত্রার বিবরণ । লেখো ।
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পের ঘটনা আবর্তিত হয় বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার হোমযজ্ঞের অনুষ্ঠানের দিনটিকে কেন্দ্র করে । লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত কর্তার বাঁচার আশা না থাকায় তান্ত্রিককে ডাকা হয় । তার নির্দেশে বিপুল আয়োজন সত্ত্বেও হোম শুরু হওয়া মাত্রই কর্তা মারা যান ।
মন্দিরের চাতাল থেকে বাড়িতে ঢুকতেই উচ্ছবের কানে আসে । বড়ো পিসিমার বিলাপ । ছোটো বউয়ের বাবা ও তান্ত্রিককে দোষারোপ করে তিনি কাঁদতে থাকেন । বাড়ির বাইরে গাড়ি ও লোকজনের বুড়ো কঠার শেষযাত্রা ছোটো ছোটো জটলার রহস্য তখন স্পষ্ট হয় উচ্ছবের কাছে । বুড়ো কর্তার সৎকারের আয়োজনে বাড়ির সকলেই ব্যস্ত । কেউ চন্দন বাটে , কেউ খাটের টাকা নিয়ে বাগবাজারে ফোন করে । কেউ বা পুরোহিতের ফর্ম মেনে খই , ফুল , ধুতি , শববস্ত্র প্রভৃতির জোগাড় করে । এদিকে বাড়ির মেয়েরা বসে কাঁপে । অন্যদিকে তান্ত্রিক অজুহাত খাড়া করে , নিজের দোষ ঢাকার চেষ্টা করে । এসব আলোচনায় বেশ সরগরম হয়ে ওঠে বাড়ি । আর অশৌচ বাড়িতে উনুন না – জলায় বারবার রাস্তার দোকান থেকে চা আসে । এভাবেই সব আয়োজন শেষে রাত একটার পর পেশাদার দক্ষ শববাহকদের হাতেধরা বোম্বাই খাটে শুয়ে নাচতে নাচতে বুড়ো কর্তা শ্মশানে যাত্রা করেন । তার পেছনে দৌড়ে যায় । কীর্তনের দল । শোকের বদলে বিলাস ও সমারোহের এমন আড়ম্বর দেখে , উচ্ছব আশ্চর্য হয়েই প্রশ্নে উক্ত মন্তব্যটি করেছিল ।
16. সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে ।’- ‘ ওরা ‘ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? ওরা সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন ? ‘ সে ’ কে ? বুঝতে পেরে সে কী করেছিল ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পে ‘ ওরা ‘ বলতে বাসিনী এবং বাড়ির বউদের কথা বলা হয়েছে । → বুড়ো কর্তা মারা যাওয়ায় অশৌচের কারণে ঘরদোর মুক্ত করার জন্য বড়ো পিসিমার নির্দেশে তারা ভাত ফেলে দিতে চেয়েছিল । → ‘ সে ‘ বলতে আলোচ্য গল্পে উচ্ছবকে বোঝানো হয়েছে ।
■ অশৌচ বাড়ির খাবার ফেলে দেওয়া হবে বুঝতে পেরে ক্ষুধার্ত উচ্ছব বাসিনীর কাছ থেকে মোটা চালের ভাতের বড়ো ডেকচি নিয়ে হনহনিয়ে হাঁটতে থাকে । বাসিনী তাকে থামিয়ে অশৌচ বাড়ির ভাত খেতে নিষেধ করলে উচ্ছব হিংস্র হয়ে ওঠে । তার আচরণে বাসিনী থমকে দাঁড়ায় । তখন উচ্ছব দৌড়ে স্টেশনে গিয়ে মুঠো মুঠো ভাত তুলে খায় । “ ভাতে হাত ঢুকিয়ে দিতে সে স্বর্গসুখ পায় ভাতের স্পর্শে ” হাড়িতে ‘ মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ’ ভাত খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়ে “ উচ্ছব হাড়িটি জাপটে কানায় মাথা ছুইয়ে ঘুমিয়ে পড়ে । ”
17. ‘ দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতোই হিংস্র ভঙ্গি করে । – কে , কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল ? তার এরুপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করো ।
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ’ গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব , অশৌচ কার প্রতি কার আচরণ বাড়ির রাঁধা ভাত বাসিনী ফেলে দিতে গেলে গ্রামতুতো বোন বাসিনীর হাত থেকে ভাতের ডেকচি কেড়ে নেওয়ার সময় এরূপ আচরণ করেছিল ।
‘ সুন্দরবন থেকে এসে ভাত খাওয়ার আশায় উচ্ছব বড়ো বাড়িতে হোমযজ্ঞের কাঠ কাটতে শুরু করে । কিন্তু সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করা সত্ত্বেও ; তার কপালে কিছুই বিচিত্র আচরণের জোটে না । অথচ বড়ো বাড়িতে এসে থেকে কারণ বিশ্লেষণ সে দেখেছে ভাতের অফুরান ভাণ্ডার । কনকপানি , পদ্মজালি , ঝিডেশাল , রামশাল প্রভৃতি চালের গন্ধ অভুক্ত উচ্ছবকে ক্রমেই অস্থির করে তুলেছে । সে ভাতের ‘ সোয়াদ ‘ নেওয়ার আশায় হোমযজ্ঞ শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়েছে । পরে সন্ধেবেলায় বুড়ো কর্তা মারা যাওয়ায় বড়ো পিসিমার নির্দেশে । বাসিনী অশৌচ বাড়ির ভাত ফেলে দিতে যায় । উচ্ছব নিজের অন্তরে লালিত স্বপ্নপূরণের আশায় বাসিনীর হাত থেকে ডেকচিটা নিয়ে দূরে ফেলে দিয়ে আসার কথা বলে । অবশেষে উচ্ছব ভাত খাওয়ার অধিকার অর্জন করে ; আনন্দে বিভোর হয়ে সে প্রায় ছুটতে থাকে । এমন পরিস্থিতিতে বাসিনী তাকে অশৌচ বাড়ির ভাত খেতে বারণ করলে , ক্ষুধার্ত উচ্ছব হিংস্র হয়ে ওঠে । এসময় বাসিনীর দাঁত বের করা হিংস্র কামটের মতোই মনে হয় উচ্ছবকে ।
18. ‘ ভাতে হাত ঢুকিয়ে দিতে সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে।- কে , কীভাবে এই অভিজ্ঞতা লাভ করে । উদ্ধৃত অংশের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ।
Ans: মাতলা নদীর পাড়ে বাদা অঞ্চলের কোনো এক গ্রামের হতদরিদ্র উচ্ছব নাইয়া । মাতলার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে এক রাত্রির মধ্যে উচ্ছব বউ , ছেলে , মেয়ে , ঘরবাড়ি সব হারিয়ে শোকে খিদেতে পাগলের মতো আচরণ করতে থাকে । সে কলকাতায় গ্রাম ভাতে হাত ঢুকিয়ে স্বর্গসুখ লাভের ঘটনা সম্পর্কের বোন বাসিনীর মনিবের বাড়িতে আসে । বুড়ো কর্তার আরোগ্যের জন্য আয়োজিত হোমযজ্ঞের আড়াই মণ ওজনের পাঁচ রকমের কাঠ কাটে একটু ভাতের আশায় । কিন্তু তান্ত্রিকের বিধান ও বুড়ো কর্তার মৃত্যুতে একমুঠো ভাতের আশা অধরা থেকে যায় । বড়ো পিসির আদেশে অশৌচ বাড়ির রান্না ভাত – তরকারি ফেলে দেওয়ার জন্য বাসিনী উদ্যোগ নেয় । উচ্ছব বাসিনীর কাছ থেকে মোটা চালের ভাতের ভারী ডেকচি তুলে নেয় । দূরে ফেলে দেওয়ার কথা থাকলেও উচ্ছব ভাতের খিদের তাড়নায় স্টেশনে বসে ডেকচি থেকে মুঠো মুঠো ভাত তুলে খেতে থাকে ।
অভুক্ত মানুষের খিদের তাড়নার জৈবিক প্রবৃত্তির আড়ালে লেখিকা এই কাহিনির মধ্য দিয়ে প্রান্তিক মানুষের জীবন – দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছেন । ‘ ভাত ’ সেখানে একটি বেঁচে থাকার প্রাপ্য লড়াইয়ের প্রতীক মাত্র । ‘ ভাত ’ – ই উচ্ছবদের সুখ , স্বাচ্ছন্দ্য , স্বপ্ন । অন্তর্নিহিত । কারণ , ওইটুকু পাওয়ার জন্য তাদের উদয় অস্ত পরিশ্রম করতে হয় । তাই অশৌচ বাড়ির ভাত খেয়ে উচ্ছব যেন প্রাণ ফিরে পায় । স্ত্রী – পুত্র – কন্যার শোকে স্তব্ধ হয়ে যাওয়া এই সামান্য মানুষটি তাদের প্রত্যেকের নাম করে মুখে ভাত দিতে থাকে । আর শোকের পাথর সরিয়ে উচ্ছব স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে । আবার বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে ‘ ভাত , শুধু ভাত । বাদার ভাত । বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন ।
19. ‘ বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন ।’— ‘ বাদা ‘ কাকে বলে ? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এইরকম মনে হওয়ার কারণ কী ?
অথবা , ‘ সে বাদটা বড়ো বাড়িতে থেকে যায় অঞ্চল হয়ে এখানে ‘ বাদা ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা বড়ো বাড়িে ‘ অচল ‘ হয়ে থেকে যায় কেন ?
Ans: প্রশ্নোদৃত অংশটি মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গঙ্গের অন্তর্গত । সাধারণভাবে ‘ বাদা ‘ শব্দটির অর্থ জল – অ্যালে পূর্ণ নীচু জায়গা । কিন্তু লেখিকা পাঠ্য গাঙ্গে ‘ বাদা ‘ শব্দটিকে দুটি ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করেছেন । বড়ো বাড়ির অধিকৃত ‘ বাদা ‘ ফসলে পূর্ণ উর্বর ভূমি । অন্যদিকে উচ্চবের বাদা জলময় অনুর্বর ; সেখানে শুধু ‘ গুগলি – গেড়ি – কচুশাক সুশনো শাক পাওয়া যায় ।
ক্ষুধার্ত উচ্ছর সর্বস্ব হারিয়ে ভাত খাওয়ার আশায় বাসিনীর মনির বাড়িতে এসে জোটে । সে দেখে বড়ো বাড়ির বাদাই হল তাদের বিপুল আয়ের উৎস । সেখানে রামশাল , ঝিশোল , কনকপানি , পদ্মজালি চালের ছড়াছড়ি । বড়ো বাড়ির পিসিমা লুকিয়ে চাল বিক্রি করলেও এদের পাহাড়প্রমাণ চালের ভাঁড়ারে সামান্য টানও পড়ে না । অথচ উচ্চবের বাদায় তো ধান হয় না । সেখানে তুচ্ছ শাক – পাতা গেঁড়ি – গুগলির সমারোহ । তাই হতদরিদ্র উচ্ছব এই আসল বাদাটাকে খুঁজে বের করতে চায় । আসলে এ স্বপ্ন শুধু তার একার স্বপ্ন নয় , প্রতিটি নিরন্ন মানুষের স্বপ্ন এমন এক বাদা খুঁজে বের করা । উচ্ছ তাদের সকলের হয়ে মনের মধ্যে সেই আকাঙ্ক্ষা লালন করে । ধনীর অধিকৃত বাদার মতো অবিকল আর একটি বাদা হয়তো হতদরিদ্র মানুষের জন্যেও আছে এমনটাই ভাবে সে । কিন্তু প্রান্তিক অবহেলিত মানুষগুলোর কখনোই ইচ্ছাপূরণ হয় না , আর তাই আসল বাদাটা উচ্ছবদের কাছে চিরকাল অধরাই থেকে যায় । সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্যের ‘ বাদা ’ এভাবে সমাজের ‘ বড়ো বাড়িতে ’ – ই অচল হয়ে থেকে যায় ।
20. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ’ ছোটোগল্প হিসেবে কতখানি সার্থক আলোচনা করো ।
Ans: একটি গল্প তার কিছু আস্তর বৈশিষ্ট্যের নিরিখেই ছোটোগল্পের রূপ পায় । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছন্দবদ্ধ পঙ্ক্তিতে ছোটোগল্পের যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তাতে তার আঙ্গিক ও চরিত্রবৈশিষ্ট্য আরও স্পষ্ট ছোটোগল্পের আঙ্গিক হয়ে ওঠে । রবীন্দ্রনাথের ভাষায় , সবরকম বাহুলা ও অতিকথন বর্জন করে অনাবশ্যক চরিত্র ও ঘটনার ভিড় পরিহার করে লেখক যখন তাঁর সৃষ্টিকর্মকে একটি সুক্ষ্ম ব্যঞ্জনায় উন্নীত করেন , তখনই সৃষ্টি হয় সার্থক ছোটোগল্প । অল্পকথায় কোনো অবস্থার চরম পরিণতিতে পৌঁছোনোই ছোটোগল্পের উদ্দেশ্য ।
মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হতদরিদ্র ভূমিহীন চাষি উচ্ছব , এক ঝড়বৃষ্টির রাতে মাতলার দুরস্ত স্রোতে ঘর – সংসার সর্বস্ব হারিয়ে সম্পূর্ণ একলা হয়ে পড়ে । ছোটোগল্পের নিরিখে দিনকয়েক পাগলের মতো ছেলে – মেয়ে – বউকে ‘ ভাত ‘ খুঁজতে গিয়ে তার কপালে সরকারি খিচুড়িটুকুও জোটে না । খিদের জ্বালায় অস্থির উচ্ছব ভাতের আশায় শহরে পাড়ি দেয় । কলকাতায় গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর মনিব বাড়িতে উচ্ছবের কাজ জোটে । বাড়ির বুড়ো কর্তা মরণাপন্ন । ডাক্তাররা জবাব দেওয়ায় , তান্ত্রিকের নির্দেশে সেখানে হোমযজ্ঞের প্রয়োজনে সে কাঠ কাটে । বহু অনুরোধ – মিনতি সত্ত্বেও উচ্ছবের সারাদিন ভাতটুকুও জোটে না । অভুক্ত – পরিশ্রান্ত উচ্ছব সন্ধেবেলায় ঘুম থেকে উঠে সে টের পায় বুড়ো কর্তা মারা গেছে । উচ্ছব দেখে বাসিনী অশৌচ বাড়ির রাঁধা ভাত ফেলে দিতে যায় । বাসিনীর হাত থেকে ভাতের ডেকচি নিয়ে মরিয়া উচ্ছব স্টেশনে চলে যায় । পেট ভরে সেই ভাত খেয়ে সে স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়ে । পরদিন সকালে পেতলের ডেকচি চুরির অপবাদে লোকজন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় । সর্বহারা উচ্ছব নাইয়ার শোক – যন্ত্রণা ও খিদের তাড়নাকে কেন্দ্র করে একমুখী গতিতে কাহিনি চরম মুহূর্তে পৌঁছোয় । বড়োলোকের ‘ আসল বাদা ’ – র খোঁজ পাওয়ার পরিবর্তে দরিদ্র উচ্ছবের হাজতবাসের মর্মান্তিক পরিণতি ‘ ভাত ‘ গল্পে এক চূড়ান্ত নাটকীয় সমাপ্তি ঘটায় । প্রান্তিক মানুষের শ্রেণি চরিত্রের প্রতিনিধি হিসেবে গল্পে উচ্ছব নাইয়ার অবস্থান , সতীশ মিস্তিরি ও বড়ো বাড়ির মানুষজনের সংকীর্ণ মনের পরিচয় গল্পে এক উল্লেখযোগ্য বৈপরীত্য সৃষ্টি করে । গল্পের এই নাটকীয় ব্যঞ্ছিত অভিমুখ গল্পটিকে ছোটোগল্পের শিল্পসম্মত সফল সৃষ্টি করে তুলেছে ।
21. ‘ পাঠ্য ‘ ভাত ‘ ছোটোগল্পটিতে ‘ ভাত ’ একটি অনিবার্য মোটিফ হিসেবে বারবার ফিরে ফিরে আসে—– এই মন্তব্যটি গল্প অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো ।
Ans: এক নিরন্ন মানুষের পেট পুরে ‘ ভাত ’ খাওয়ার স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘ ভাত ‘ গল্পের সার্থকতা । এই কাহিনির নায়ক উচ্ছব এক ঝড়জলের সন্ধেবেলায় সপরিবারে ভাত খেয়েছিল । তারপর মাতলার মাতনে শুধু সে ছেলে – মেয়ে বউকেই হারায় না , সেইসঙ্গে যেন সিকিপেটা – আধপেটা খাওয়ার সামান্য সামর্থ্যটুকুও হারিয়ে ফেলে । এভাবে হঠাৎ ঘর – সংসার হারিয়ে ছেলে – মেয়ে – বউকে পাগলের মতো খুঁজে বেড়ানোর ফলে , উচ্ছব সরকারি খিচুড়ি থেকেও বঞ্চিত হয় । মনিব সতীশ মিস্তিরি তার খিদের জ্বালাকে ‘ মতিচ্ছন্ন অবস্থা বলে মনে করে , তাকে বিদায় করে । ভাত খাওয়ার আশায় সে গ্রামতুতো বোন বাসিনীর কলকাতার মনিববাড়িতে এসে জোটে । সেখানে নাকি ‘ হেলা ঢেলা ভাত ‘ । সারাদিন ভাতের স্বপ্নে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও তার ভাত জোটে না । সন্ধেবেলায় কর্তার মৃত্যু হলে , বাসিনী যখন অশৌচ বাড়ির রাঁধা ভাত ফেলতে যায় , তখন মরিয়া উচ্ছব বাসিনীর হাত থেকে ভাতের ডেকচি প্রায় কেড়ে নিয়ে ভাত খেয়ে , তৃপ্তিতে ঘুমিয়ে । পড়ে । পরদিন ডেকচি চুরির অপরাধে উচ্ছবকে পুলিশ গ্রেফতার করে । ফলত এ গল্পের মূল চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে ভাত । কারণ হতদরিদ্র উচ্ছবেরা এই সমাজে আসল ভাতের বাদার খোঁজে কেবলই মাথা খুঁড়ে মরে , কিন্তু পায় না — ‘ ভাত ‘ শব্দের বিস্তার , ব্যঞ্জনা ও পরিণতিতে সেই সত্যই ফুটে ওঠে ।
22. ‘ ভাত ‘ গল্প অবলম্বনে বড়ো বাড়ির কর্তৃত্বময়ী বড়ো পিসিমার চরিত্রবিশ্লেষণ করো । প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যের বিশ্লেষণ অথবা , ‘ এ সংসারে সব কিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে বড়ো পিসিমা কে ? গঙ্গে তার চরিত্রের কী পরিচয় পাওয়া যায় ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পে বড়ো বাড়ির প্রয়াত বুড়ো কর্তার প্রৌঢ়া অবিবাহিতা কন্যা হল এই বড়ো পিসিমা ।
→ সাংসারিক দায়দায়িত্বের কারণে বড়ো পিসিমা বিয়ে করেননি । তিনি এ বাড়ির হেঁসেল দেখেছেন , ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগিয়েছেন ও বাবার সেবা করেছেন । সংসারের প্রতি म বড়ো পিসিমা চিরকাল , দাপটের সঙ্গে সংসার সামলে এসেছেন । কর্তৃত্ব পরায়ণা বাবার মৃত্যুর পর দাদা সংসারের হাল ধরলেও , তাঁর আধিপত্য আগের মতোই পূর্ণমাত্রায় বজায় থেকেছে । তাই বাড়ির বউরা থাকলেও , সংসার তাঁরই কথায় চলে । বড়ো পিসিমার মর্জিতেই উচ্ছব বড়ো বাড়িতে কাজে বহাল হয়েছে । বড়ো পিসিমা দাদার আরোগ্যের আশায় হোমযজ্ঞের যেমন দেখভাল করেন , আবার তেমনই অর্থের প্রয়োজনে বাসিনীর মাধ্যমে লুকিয়ে বাদার চালও বিক্রি করে দেন । সাবেক সতর্ক দৃষ্টির কালের কুসংস্কারের বশে তিনি তান্ত্রিকের অধিকারিণী কাজকর্মে বিশ্বাস দেখালেও , দাদার মৃত্যুর পরে ছোটো বেয়াইকে দোষারোপ করে তান্ত্রিক ‘ ডাকাতে সন্নেসী ’ বলতেও পিছপা হন না । যে – কোনো পরিস্থিতিতেই বড়ো পিসিমা কর্তৃত্বপরায়ণা , দায়িত্ববান এবং সতর্ক দৃষ্টির অধিকারিণী । দাদার শ্মশানযাত্রা থেকে অশৌচ বাড়ির ইতিকর্তব্য এ – সবই তিনি কড়া হাতে পরিচালনা করেন । এভাবেই ‘ ভাত ’ গল্পের বড়ো পিসিমার চরিত্রটি ধনী বাঙালি বাড়ির কর্ত্রী রূপে , এক জীবন্ত টাইপে পরিণত হয় ।
23. “ পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে ‘ — প্রশ্নোদ্ধৃত উদ্ধৃতাংশটির আলোকে ‘ ভাত ’ গল্প অনুসরণে উচ্ছবের চরিত্রবিশ্লেষণ করো ।
Ans: ‘ ভাত ’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব তথা উচ্ছব নাইয়া । সে সুন্দরবন অঞ্চলের এক প্রত্যন্ত গ্রামের হতদরিদ্র ভাগচাষি । এক ঝড়জলের রাতে মাতলার তাণ্ডবে তার বউ – ছেলে – মেয়ে , ঘরবাড়ি সব ভেসে যায় । ভূমিহীন উচ্ছব দুর্ভাগ্যপীড়িত সরকারের কাছে জমি চেয়ে যে আবেদনপত্র টিনের কৌটোয় সযত্নে রেখেছিল , সেই কৌটোও ভেসে যায় । সর্বস্ব হারালেও উচ্ছবের পেটের খিদে রয়ে যায় । সতীশ মিস্তিরির ধানে মড়ক লাগলে তার প্রাণ কাঁদে , সে উচ্ছরকে ‘ মতিচ্ছন্ন ’ বলে বিদ্রুপ করে তাড়িয়ে দেয় । তাই খিদেয় অস্থির উচ্ছব বাধ্য হয়ে কলকাতায় পাড়ি দেয় । বাসিনীর মনিবের বাড়িতে কাজ পেয়ে তাই সে শোক আর ভাতের হুতাশে কাঠ কাটে । ভাতের কাঙাল ভাত খেতে পাবার আশায় কখনও কালীঘাটে নিজের প্রিয়জনদের শ্রাদ্ধ করার কথা ভাবে , আবার কখনও ছোটো খোকার কথা ভেবে চোখের জল ফেলে । হাভাতে উচ্ছবের মাথায় ঘোরে বড়ো বাড়ির আসল ‘ বাদা ‘ – টাকে খুঁজে বের করার স্বপ্ন । শেষে বাসিনীর হাত থেকে ডেকচি কেড়ে নিয়ে ভাত খেয়ে ‘ প্রেত ‘ । উচ্ছব মানুষ হয়ে ওঠে । সে মনে মনে চরুনীদের এই ভাত খাইয়ে যেন পরমাত্মীয়দের সঙ্গে স্বর্গসুখ ভাগ করে নেয় । সামান্য দু – মুঠো ভাত খাওয়ার স্বপ্নপুরণ করার অপরাধে উচ্ছবের কপালে জোটে চোর অপবাদ ও হাজতবাস । শহরে এসে উচ্চব বুঝতে পারে বড়ো বাড়িতে বাদা অঞ্চলের অঢেল চাল । অথচ তারা বাদা অঞ্চলে থেকেও দু – বেলা দু – মুঠো ভাত সবসময় পায় না । হি েসেদ্ধ আর গুগলি সেদ্ধ নুন লংকা পোড়া দিয়ে মেখে খাওয়াটা উচ্ছবদের কাছে ভালো খাবার । পেটভরে খাওয়াটা কোনো কোনো দিনের বিরল সৌভাগ্য । লেখিকা এভাবেই সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত ও প্রান্তিক মানুষদের ভয়াবহ দুর্দশাকে উচ্ছব চরিত্রের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
24. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ ছোটোগল্প অবলম্বনে বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Ans: লেখিকা ‘ ভাত ‘ ছোটোগল্পে ‘ বুড়ো কর্তা ‘ বলতে দুই পুরুষের কথা উল্লেখ করেছেন । এর মধ্যে একজন বড়ো বাড়ির বড়ো পিসিমার বাবা এবং আর একজন তার বড়ো দাদা । তাই এখানে বুড়ো কর্তার প্রসঙ্গে দুজনের বিষয়েই আলোচনা করা প্রয়োজন । বড়ো পিসিমার বাবা অর্থাৎ পূবর্তন বুড়ো কর্তা ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ মানুষ । তিনি হঠাৎ স্ত্রীকে হারিয়ে সংসার নিয়ে খুব নাজেহাল । অবস্থায় পড়েন । তখন মেয়ে সংসারের হাল ধরায় , তিনি আর তার বিয়ে দেননি । কর্তার দূরদর্শিতার গুণেই আজও তাদের অধিকারে রয়েছে আঠারোটা বাড়ি , শিবমন্দির , বিরাট বসতবাড়ি এবং বাদা অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ জমি । এসবই তিনি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে গিয়েছেন । তিনি রাস্তার সবকটি বাড়িই শিব – মহেশ্বর – ত্রিলোচন – উমাপতি প্রভৃতি নামে শিবঠাকুরকে দেবত্র করে গিয়েছেন । পাঠ্য কাহিনিতে যে – বৃদ্ধ মানুষটির রোগ – অসুস্থতা ও মৃত্যু দেখানো হয়েছে , তিনি হলেন এই প্রয়াত বুড়ো কর্তার ছেলে তথা গল্পের বুড়ো কর্তা । তাঁর চার পুত্র ও বেশ কয়েকটি কন্যাসন্তান । তাঁর স্ত্রী এখনও বর্তমান । বিরাশি বছর বয়সেও বুড়ো কর্তা বেশ ‘ টনকো ’ ছিলেন । তবে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি মৃত্যুপথযাত্রী । বাড়ির বড়ো বউয়ের দায়িত্ব ছিল তাঁকে দেখভাল করার । বুড়ো কর্তার আরোগ্যের উদ্দেশ্যেই হোমযজ্ঞের আয়োজন ও গল্পের কাহিনির বিস্তার ।
25. ‘ ভাত ‘ ছোটোগল্প অবলম্বনে বড়ো বাড়ির ছেলে – বৌমাদের জীবনযাত্রার পরিচয় দাও ।
Ans: বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার চার ছেলে ও বৌমা । চার ছেলের মধ্যে বড়ো , মেজ ও ছোটো বাড়িতেই থাকে । তাদের পিতামহ আঠারোটা বাড়ি মন্দির ও বাদা অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ জমির বন্দোবস্ত করে রেখে যাওয়ায় , ছেলেরা প্রত্যেকেই অলস ও কর্মবিমুখ । বেলা এগারোটার আগে তাদের ঘুম ভাঙে না । একমাত্র সেজ ছেলেটি বিলেতে থাকে । গল্পে বড়ো ও মেজ বউয়ের যে – পরিচয় ফুটে ওঠে , তা থেকে বাড়ির বউদের কর্মতৎপর , সেবাপরায়ণ এবং অন্তঃপুরবাসী বলেই মনে হয় । বড়ো বউয়ের কাছে শ্বশুরমশাই ঠাকুর – দেবতার মতো । সে চিরকাল তাঁর জন্য দই পাতা থেকে ইসবগুলের শরবত করা ; কিংবা নিজে হাতে গরম রুটি – লুচি করা থেকে প্রতিদিন বিছানা করা বা পা টিপে দেওয়ার কাজ পর্যন্ত করে এসেছে । অন্যদিকে মেজ বউ শাশুড়ির দেখভাল করে । মৃত্যুপথযাত্রী শ্বশুরের কিছু হলে শাশুড়ির আর মাছ খাওয়া হবে না বলে সে একা হাতে মাছের বিভিন্নরকম পদ রান্না করে । গঙ্গে ছোটো বউয়ের ভূমিকার কোনো উল্লেখ না থাকলেও , তার বাবা যে কর্তার আরোগ্যের জন্য তান্ত্রিককে ডেকে নিয়ে এসেছিলেন , তা বড়ো বউয়ের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি । সুতরাং ধনী বাড়ির আমুদে – আয়েশি ছেলে আর তাদের নীরব – পরিশ্রমী গৃহিণীদের স্বরুপটিই ছেলে – বৌমাদের জীবনযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ।
26. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ’ গল্পটির নামকরণ কতদূর সংগত হয়েছে , তা গল্প অনুসরণে আলোচনা করো ।
Ans: ‘ নামকরণের তাৎপর্য অংশটি দ্যাখো ।
27. ‘ আসল বাদাটার খোঁজ করা হয় না আর উন্ন ছবের । — উচ্ছব কে ? সে কোন্ বাদার খোঁজ করতে চেয়েছিল ? কেন তার পক্ষে সেই বাদার খোঁজ করা হয়ে উঠল না ?
Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ’ নামাঙ্কিত ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র হল হতদরিদ্র ভূমিহীন চাষি উচ্ছব তথা উৎসব উচ্ছবের পরিচয় নাইয়া । সে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের অধিবাসী ।
সাধারণভাবে ‘ বাদা ‘ শব্দটির অর্থ হল জল – জঙ্গলে পূর্ণ নীচু জায়গা । কিন্তু লেখিকা পাঠ্য গল্পে ‘ বাদা ‘ শব্দটিকে দুটি ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করেছেন । বড়ো বাড়ির অধিকৃত ‘ বাদা ‘ ফসলে পূর্ণ উর্বর ভূমি । অন্যদিকে উচ্ছবের বাদা জলময় অনুর্বর ; সেখানে শুধু ‘ গুগলি – গেঁড়ি – কচুশাক – সুশনো শাক ’ পাওয়া যায় । উচ্ছব এখানে বড়ো বাড়ির অধিকৃত বাদার খোঁজ করতে চেয়েছিল । উচ্ছবের খোঁজা বাদা মাতলার দুরন্ত স্রোতে ঘর – সংসার সব হারিয়ে উচ্ছব কলকাতায় গ্রাম – সম্পর্কিত বোন বাসিনীর মনিব বাড়িতে কাজ করতে যায় পেট ভরে দুটো ভাত পাবার আশায় । হোমযজ্ঞ করেও মনিব বাড়িতে বুড়ো কর্তার প্রাণ বাঁচে না ; অশৌচ বাড়ির রাঁধা আসল বাদা খুঁজে ভাত ফেলে দেওয়ার নির্দেশ এলে বাসিনী ভাতের না পাওয়ার কারণ ডেকচি ধরে ফেলে দিতে যায় । কিন্তু এই ভাত পাবার আশাতেই সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে উচ্ছব । এই দিক্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে অভুক্ত – পরিশ্রান্ত উচ্ছব বাসিনীর হাত থেকে ভাতের ডেকচি কেড়ে নিয়ে মরিয়া হয়ে স্টেশনে চলে যায় । পেট ফরে ভাত খেয়ে স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়ে । পরদিন সকালে পিতলের ডেকচি চুরির অপবাদে লোকজন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় । বড়োলোকের ‘ আসল বাদা ‘ – র খোঁজ পাওয়ার পরিবর্তে দরিদ্র উচ্ছবের হাজতবাস হয় ; আর এখানেই গল্পের পরিসমাপ্তি ঘটে । এই কারণেই উচ্ছবের ‘ আসল বাদা ‘ – র সন্ধান করা হয় না ।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – West Bengal HS Class 12th Bengali Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
HS Suggestion 2025 | উচ্চ মাধ্যমিক সাজেশন ২০২৫
আরোও দেখুন:-
HS Bengali Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS English Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS History Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Geography Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Political Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Philosophy Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Sanskrit Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Education Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Sociology Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Physics Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Biology Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Chemistry Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Mathematics Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS Computer Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
HS All Subjects Suggestion 2025 Click here
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
HS Bengali Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Twelve XII (Class 12th) Bengali Qustion and Answer Suggestion
” ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (West Bengal Class Twelve XII / WB Class 12 / WBCHSE / Class 12 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB Class 12 Exam / Class 12 Class 12th / WB Class 12 / Class 12 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর ( উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন / উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ও উত্তর । HS Bengali Suggestion / HS Bengali Bhat Question and Answer / Class 12 Bengali Suggestion / Class 12 Pariksha Bengali Suggestion / Bengali Class 12 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / HS Bengali Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর (HS Bengali Suggestion / West Bengal Twelve XII Bhat Question and Answer, Suggestion / WBCHSE Class 12th Bengali Bhat Suggestion / HS Bengali Bhat Question and Answer / Class 12 Bengali Suggestion / Class 12 Pariksha Suggestion / HS Bengali Exam Guide / HS Bengali Suggestion 2022, 2023, 2024, 2025, 2026, 2027, 2021, 2020, 2019, 2017, 2016, 2015, 2028, 2029, 2030 / HS Bengali Bhat Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / HS Bengali Bhat Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
FILE INFO : ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer with FREE PDF Download Link
PDF File Name | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer PDF |
Prepared by | Experienced Teachers |
Price | FREE |
Download Link 1 | Click Here To Download |
Download Link 2 | Click Here To Download |
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন ও উত্তর
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – প্রশ্ন ও উত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন ও উত্তর।
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন উত্তর।
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন উত্তর – দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা | HS Class 12 Bengali Bhat
দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা (HS Bengali Bhat) – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – প্রশ্ন ও উত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী | HS Bengali Bhat Suggestion দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন উত্তর।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer Question and Answer, Suggestion
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী | পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সহায়ক – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – প্রশ্ন ও উত্তর । HS Bengali Bhat Question and Answer, Suggestion | HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion | HS Bengali Bhat Question and Answer Notes | West Bengal HS Class 12th Bengali Bhat Question and Answer Suggestion.
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE Class 12 Bengali Bhat Question and Answer, Suggestion
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর | ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী । WBCHSE Class 12 Bengali Bhat Question and Answer Suggestion.
WBCHSE Class 12th Bengali Bhat Suggestion | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী
WBCHSE HS Bengali Bhat Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর । ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী | HS Bengali Bhat Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর ।
HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestions | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর
HS Bengali Bhat Question and Answer উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর HS Bengali Bhat Question and Answer উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ, সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB Class 12 Bengali Bhat Suggestion | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর
HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী MCQ প্রশ্ন ও উত্তর । HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal Class 12 Bengali Suggestion Download WBCHSE Class 12th Bengali short question suggestion . HS Bengali Bhat Suggestion download Class 12th Question Paper Bengali. WB Class 12 Bengali suggestion and important question and answer. Class 12 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the HS Bengali Bhat Question and Answer Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
HS Bengali Bhat Question and Answer Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 12 Bengali Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Twelve XII Bengali Bhat Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 12 Exam
HS Bengali Bhat Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 12 Twelve XII Bengali Suggestion is provided here. HS Bengali Bhat Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free has been given below.
ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” ভাত (গল্প) মহাশ্বেতা দেবী – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Bhat Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।