নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer
নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer

নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর

Class 11 Bengali Noon Question and Answer

নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer : নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই West Bengal WBCHSE Class 11th Bengali Noon Question and Answer, Suggestion, Notes | একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) থেকে রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 11th Eleven XI Bengali Examination – পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন (নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer) গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।

 তোমরা যারা নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো। 

রাজ্য (State) পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)
বোর্ড (Board) WBCHSE, West Bengal
শ্রেণী (Class) একাদশ শ্রেণী (WB Class 11th)
বিষয় (Subject) একাদশ শ্রেণীর বাংলা (Class 11 Bengali)
কবিতা (Kobita) নুন (Noon)
লেখক (Writer) জয় গোস্বামী

[একাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]

নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE Class 11th Bengali Noon Question and Answer 

সংক্ষিপ্ত | নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Bengali Noon SAQ Question and Answer :

  1. “খেতে বসে রাগ চড়ে যায়,…”-বক্তা কখন খেতে বসেন? রাগ চড়ে যাওয়ার কারণ কী?

Ans: দুপুর-রাতে বাড়ি ফিরে বক্তা খেতে বসেন।

গভীর রাতে খেতে বসে বক্তার রাগ চড়ে যায়, যখন তিনি দেখেন যে ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও নেই।

  1. “আমি তার মাথায় চড়ি”-কথক কার মাথায় চড়েন? মাথায় চড়ার কারণ কী?

Ans: কথক রাগের মাথায় চড়ার কথা বলেছেন।

  • গভীর রাতে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও না পেয়ে কবির মানসিক স্থিরতা নষ্ট হয়। তখনই রাগ তাঁর মাথায় চড়ে আর তিনিও রাগের মাথায় চড়েন।
  1. “বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারা পাড়া মাথায় করি”-এই ‘সারা পাড়া মাথায়’ করার কারণ কী? ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।

Ans: গভীর রাতে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও না পেয়ে বাবা এবং ছেলে মিলে সমস্ত পাড়া মাথায় করে।

  • অভাবের তীব্র তাড়নায় বাবা এবং ছেলে যেন জীবনযুদ্ধে সহযোদ্ধা হয়ে যায়। সে কারণেই কবি ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন।
  1. “করি তো কার তাতে কী?”-কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে? এখানে বক্তার মনোভাব কী, তা লেখো।

Ans: গভীর রাতে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা ভাতে নুনটুকু না পেয়ে ‘বাপব্যাটা দু- ভাই’ মিলে সমস্ত পাড়া মাথায় করে। কিন্তু তা নিয়ে তাদের কোনো ভূক্ষেপ নেই। উল্লিখিত মন্তব্যে সেই মনোভাবই দেখা দিয়েছে।

  • আপাতভাবে এই মন্তব্যে ঔদ্ধত্য দেখা গেলেও, যে সমাজ তাদের জীবনযাপনের সামান্যমাত্র নিশ্চয়তা দেয় না কিংবা সহযোগিতা করে না, তার প্রতি একধরনের স্পর্ধা ও প্রতিবাদ যেন এই মন্তব্যে প্রকাশিত হয়েছে।
  1. “আমরা তো সামান্য লোক”-‘সামান্য’ শব্দটি কীসের ইঙ্গিত দেয়? ‘সামান্য লোক’ হিসেবে কথক কী দাবি জানিয়েছেন?

Ans: বৈষম্যের সমাজে নিম্নবিত্ত মানুষদের ন্যূনতম অধিকার রক্ষিত না হওয়ায় ক্রোধ এবং অভিমানের প্রতীক হয়ে থাকে এই ‘সামান্য’ শব্দটি।

  • সামান্য লোক হিসেবে কথক দাবি জানিয়েছেন যে, তাদের শুকনো ভাতে যেন লবণের ব্যবস্থা হয়।
  1. ‘নুন’ কবিতার শেষে কীসের দাবি জানানো হয়েছে? এর তাৎপর্য কী?

Ans: ‘নুন’ কবিতার শেষে ‘শুকনো ভাতে’ লবণের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে।

  • প্রতিদিন জীবনসংগ্রামে ব্যস্ত নিম্নবিত্ত মানুষদের কাছে পঞ্চব্যঞ্জন শোভিত অন্ন প্রায় স্বপ্নের মতো। তাদের ভাতের থালায় থাকে শুকনো ভাত। শুধু একটু লবণ হলেই তাদের খাওয়া এবং বেঁচে থাকা সুনিশ্চিত হয়। উল্লিখিত দাবিতে জীবনের সেই রুক্ষ দিকই প্রকাশিত হয়েছে।
  1. “আমরা তো অল্পে খুশি;”-কারা, কেন অল্পে খুশি হয়?

Ans: সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষেরা অল্পে খুশি হয়।

  • ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’ অতিবাহিত জীবনে অতিরিক্ত চাহিদা বা সুখভোগের কোনো সুযোগ নেই। অল্পে খুশি থাকাটা তাই তাদের জীবনের একধরনের বাধ্যবাধকতা।
  1. “….কী হবে দুঃখ করে?”-দুঃখ করে কোনো লাভ নেই কেন?

Ans: কবি জয় গোস্বামীর মতে নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবনে দুঃখ করে কোনো লাভ নেই, কারণ অভাব আর অসুখের নিত্য সহাবস্থানে অতিবাহিত তাদের যে জীবন সেখানে সুখের কোনো সম্ভাবনাই নেই।

  1. “আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে।”- কাদের কথা বলা হয়েছে? এর মধ্য দিয়ে কোন্ সত্য প্রকাশিত হয়?

Ans: উল্লিখিত অংশে সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষদের কথা বলা হয়েছে।

মন্তব্যটির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে হতদরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষদের কায়ক্লেশে কোনোরকমে দিনযাপনের কথা।

  1. “চলে যায় দিন আমাদের…”-কীভাবে দিন চলে যায়?

Ans: নিম্নবিত্ত পরিবারের দিন অতিবাহিত হয় অসুখ এবং ধারদেনার মধ্য দিয়ে। অনতিক্রম্য সমস্যার সেই জীবনে রাত্রিতে ‘দু-ভাই’ মিলে গঞ্জিকাতে টান দিয়ে যেন অসহনীয় বাস্তব থেকে নিষ্ক্রমণ খোঁজে।

  1. “রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে”-এখানে ‘দু-ভাই’ কারা? এই আচরণ কী ইঙ্গিত করে?

Ans: ‘দু-ভাই’ শব্দের স্পষ্ট ব্যাখ্যা কবি দেননি। হতে পারে তারা সহোদর, আবার পরে অন্য প্রসঙ্গে ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’-এরও উল্লেখ আছে।

  • বাস্তবের জীবনযন্ত্রণাকে ভুলে থাকার জন্য মানুষ নেশার ঘোরে আত্মনিমজ্জন করে। আর তখন যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষগুলোর জীবনে সামাজিক সম্পর্কগুলোর অবস্থানও এলোমেলো হয়ে যায়। এই ইঙ্গিত উল্লিখিত অংশে পাওয়া যায়।
  1. “সব দিন হয় না বাজার,..”-উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য কী?

Ans: নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষদের জীবনে অভাব নিত্যসঙ্গী। ‘অল্পে খুশি’ থাকা তাদের জীবনের নিয়তি। ফলে প্রতিদিন বাজার করা তাদের কাছে বিলাসিতামাত্র।

  1. “…হলে, হয় মাত্রাছাড়া”-কীসের কথা বলা হয়েছে? ‘মাত্রাছাড়া’ কথাটির মাধ্যমে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

Ans: নিম্নবিত্ত মানুষদের প্রতিদিনের বাজার করার কথা বলা হয়েছে।

  • নিম্নবিত্ত মানুষেরা অভাবের কারণে প্রতিদিন বাজার করতে পারে না। কিন্তু যেদিন তারা সুযোগ পায় সেদিন মাত্রাছাড়া বাজার করে, যা তাদের বেহিসাবি এবং অসংযমী জীবন-উচ্ছ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করে।
  1. “বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপচারা”-এই গোলাপচারা কিনে আনার তাৎপর্য কী?

Ans: নিত্য অভাবের মধ্যেও একজন নিম্নবিত্ত মানুষের যেদিন উপার্জন সম্ভব হয়, সেদিন তাকে দেখা যায় জীবনকে উদ্যাপন করতে। প্রতিদিন যার পক্ষে বাজার করা সম্ভব হয় না তাকেই দেখা যায় ‘মাত্রাছাড়া’ বাজার করতে এবং বাড়িতে ফেরার পথে গোলাপচারা কিনে আনতে। অনেক অভাবের মধ্যেও যে শখকে সে মনের মধ্যে লালন করে রেখেছিল তা পূরণের স্বপ্ন থাকে এই গোলাপচারা কিনে আনায়।

  1. “কিন্তু পুঁতব কোথায়?”-কীসের কথা বলা হয়েছে? কথকের এই মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।

Ans: উল্লিখিত অংশে গোলাপচারার কথা বলা হয়েছে।

নিম্নবিত্ত মানুষজন মনের মধ্যে তার শখকে বাঁচিয়ে রাখে। সেকারণেই সুযোগ পেলে সে গোলাপচারা কিনে আনে। কিন্তু কোনোরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটে যার, তার কাছে গোলাপচারা পোঁতার জন্য জায়গা পাওয়া অসম্ভব। উল্লিখিত মন্তব্যে সেই অসহায়তারই প্রকাশ ঘটেছে।

  1. “ফুল কি হবেই তাতে?”-এই সংশয়ের কারণ আলোচনা করো।

Ans: নিম্নবিত্ত মানুষজন তাদের মনের মধ্যে গোপনে লালিত স্বপ্নপূরণের জন্য গোলাপচারা কেনে। কিন্তু তা পোঁতার উপযুক্ত জায়গা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে। তার সমাধান হলেও সেই গাছের উপযুক্ত পরিচর্যা করার সুযোগ ও সময় মেলে না। ফলে আরও অনিশ্চিত হয়ে যায় গোলাপচারায় ফুল ফোটার বিষয়টি।

  1. “সে অনেক পরের কথা।”-কোন্ ‘কথা’? কবির এই মন্তব্যের কারণ কী?

Ans: বহু কষ্টে পোঁতা গোলাপচারায় ফুল হবে কিনা সেই ‘কথা’ প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে।

  • মনের মধ্যে গোপনে লালিত সৌন্দর্যবিলাস পূরণের জন্য বহু কষ্টে গোলাপচারা যদিও-বা পোঁতা হয়, কিন্তু প্রতিদিনের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত মানুষের পক্ষে তাতে ফুল ফুটবে কিনা অর্থাৎ ভবিষ্যতের সুখ বিষয়ে অপেক্ষা করার ধৈর্য বা সুযোগ কোনোটাই থাকে না। এই কারণেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।
  1. “মাঝে মাঝে চলেও না দিন…”-এই না চলা কীসের দিকে ইঙ্গিত করে?

Ans: হতদরিদ্র ‘নিম্নবিত্ত মানুষ অভাব আর অসুখকে নিত্যসঙ্গী করে দিনযাপন করে। ‘অল্পে খুশি’ থেকে ‘হেসে খেলে কষ্ট করে’ তাদের দিনযাপন হয়। কিন্তু সেখানেও যে নিশ্চয়তা থাকে না তারই স্বীকারোক্তি পাওয়া যায় উল্লিখিত পঙ্ক্তিতে। দুপুররাতে বাড়ি ফেরা অর্থাৎ কঠোর পরিশ্রমও সেই দিনযাপনকে নিশ্চিন্ত করতে পারে না।

বিশ্লেষণধর্মী | নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Bengali Noon Short Question and Answer :

  1. “রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে”-উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে জীবনের কোন্ সত্যের প্রকাশ ঘটেছে?

Ans: ‘নুন’ কবিতায় কবি জয় গোস্বামী একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের অসহায়ভাবে কোনোরকমে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার কাহিনি বর্ণনা করেছেন। নিতান্ত বাধ্য হয়েই এই পরিবারের লোকেরা সাধারণ ভাতকাপড়েই নিজেদেরকে সন্তুষ্ট রাখতে শিখেছে। অত্যন্ত অল্পেই খুশি হওয়া ছাড়া তাদের অন্য কোনো উপায় নেই। ধারদেনা এবং অসুখের মধ্য দিয়ে কোনোরকমে দিন কেটে যায় তাদের। কিন্তু, কখনো-কখনো তাদের এই দিনযাপনের গ্লানি বা যন্ত্রণা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তখন সম্পর্কের অবস্থান ভুলে নেশার মধ্যে আত্মনিমজ্জন চলে। উদ্দেশ্য, নেশায় ডুবে গিয়ে কঠোর বাস্তবতাকে অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভুলে থাকা।

  1. “সব দিন হয় না বাজার;”-বাজার হয় না কেন? হলে তা কেমন হয়?

Ans: জয় গোস্বামী তাঁর ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবনযাত্রা এবং তাদের অসহনীয় দুঃখকষ্টের বর্ণনা দিয়েছেন। হতদরিদ্র এই মানুষদের দিন অতিবাহিত হয় অসুখে এবং ধারদেনাতে। সাধারণ ভাতকাপড়ে কোনোরকমে কাটানো এই জীবনে সুখস্বাচ্ছন্দ্যের কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। আর সে কারণেই সব দিন বাজার করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।

  • কোনোরকমে অতিবাহিত জীবনে নিয়মিত বাজারের নিশ্চয়তা না থাকলেও অতিরিক্ত আয় হলে বাজার হয়ে যায় মাত্রাছাড়া। নিম্নবিত্ত মানুষদের বেহিসাবি জীবনযাপনের প্রবণতাই এখানে স্পষ্ট হয়।

এমনকি মনের মধ্যে গোপনে লালন করা সৌন্দর্যবিলাসকে চরিতার্থ করতে বাজার থেকে গোলাপচারা কিনে আনে তারা।

  1. “আমরা তো অল্পে খুশি:”-এই ‘অল্পে খুশি’ হওয়ার তাৎপর্য কী?

Ans: সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবনে প্রতি পদক্ষেপে যেখানে অনিশ্চয়তা, অভাব আর অসুখ নিত্যসঙ্গী, ‘অল্পে খুশি’ হওয়াটা সেখানে যেন একটা বাধ্যবাধকতা। “আমরা তো অল্পে খুশি/কী হবে দুঃখ করে?”-তাদের সামনে দুঃখ থেকে মুক্তির যেহেতু কোনো পথ নেই, তাই বাধ্য হয়ে নিজেদের ভাগ্যকে মেনে নেয় এই অভাবী মানুষরা। ফলে, ‘চলে যাওয়া’ দিনের এই ‘অল্পে খুশি’ হওয়াই তাদের জীবনের অনিবার্য সত্য এবং ভবিতব্য। ‘অল্পে খুশি’, তাই এই আনন্দের প্রকাশ না, আসলে তা বাস্তবকে মেনে নেওয়া ও তার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার এক হৃদয়বিদারক ইতিহাস।

  1. “কী হবে দুঃখ করে?”- কবির এই মন্তব্যের কারণ কী?

Ans: ‘নুন’ কবিতায় কবি জয় গোস্বামী বলেছেন সাধারণ ভাতকাপড়ে আর ‘অসুখে ধারদেনাতে’ যে জীবন নিম্নবিত্ত মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম অতিবাহিত করে, সেখানে অভাব আর বঞ্চনাই একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু তারা জানে, তাদের জীবনে যতই অপ্রাপ্তি থাকুক না কেন, কিছুতেই তাদের সেই অভাব পূরণ হবে না। তাই, নিতান্ত বাধ্য হয়েই অত্যন্ত সামান্য উপকরণের মধ্যে তারা নিজেদের তৃপ্ত রাখতে শিখে নেয়। দারিদ্র্যপীড়িত জীবনের অপ্রাপ্তি বা যন্ত্রণাকে মানিয়ে নিয়ে দিনযাপনের চেষ্টা করে।

  1. “চলে যায় দিন আমাদের অসুখে ধারদেনাতে”-এই চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে জীবনের কোন্ বিশেষ তাৎপর্যের দিকে কবি ইঙ্গিত করেছেন?

Ans: জয় গোস্বামী তাঁর ‘নুন’ কবিতায় এক নিম্নবিত্ত পরিবারের প্রতিদিনকার কষ্টকর জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেন, যেখানে সাধারণ ভাতকাপড়ের সংস্থান করে কোনোক্রমে সেই পরিবারের দিন কেটে যায়। তাদের জীবনে বাহুল্য কিংবা অতিরিক্ত চাহিদার কোনো সুযোগই নেই। দুঃখেরও যেন সেখানে প্রবেশ নিষেধ,-“কী হবে দুঃখ করে?”

ধারদেনা, অসুখ এসবের মধ্য দিয়েই রচিত হয় এই নিম্নবিত্ত মানুষদের বেঁচে থাকার রোজনামচা। এখানে লক্ষণীয় যে, দিন ‘চলে যায়’ কথাটির মধ্যে ভালো থাকার কোনো ইঙ্গিত লক্ষ করা যায় না, পরিবর্তে কোনোরকমে জীবন কাটানোর যে ক্ষতবিক্ষত অভিজ্ঞতা, তাকেই ব্যক্ত করা হয়। নিম্নবিত্তের জীবনের অর্থ যে বেঁচে থাকা নয়, ‘টিকে থাকা’-সেই বাস্তব সত্যই যেন প্রকাশিত হয়েছে প্রশ্নোদ্ভূত অংশে।

রচনাধর্মী | নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Bengali Noon Descriptive Question and Answer:

1. “আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”-কে, কাদের কাছে এই দাবি করেছে এবং কেন?

Ans: উদ্ধৃত অংশের উৎস কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতাটি।

ঘারা, যাদের কাছে : সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি বাপব্যাটা, শাসক শ্রেণি তথা রাষ্ট্রনায়কদের কাছে এই দাবি জানিয়েছে।

দাবি জানানোর কারণ : সমাজে অর্থনৈতিক শ্রেণিবৈষম্যের শিকার নিম্নবিত্ত মানুষেরা সাধারণ ভাতকাপড়েই খুশি থাকে। সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনির শেষে তারা খিদের আগুন নেভায়, শুকনো ঠান্ডা ভাত নুন মেখে খায়। দিন আনা দিন খাওয়া এই মানুষগুলোর অসুখবিসুখ হলে ধারদেনা করা ছাড়া গতি থাকে না। কঠিন বাস্তবকে ভুলতে তারা গাঁজার নেশায় ডুবে থাকে।

সেই শ্রমজীবী মানুষগুলোই রাতদুপুরে বাড়িতে খেতে বসে দ্যাখে, ঠান্ডা ভাতে নুনের অভাব। তখন রাগে আর তাদের মাথার ঠিক থাকে না। না পাওয়ার যন্ত্রণায়, তীব্র ক্ষোভে-চিৎকারে ফেটে পড়ে তারা। সমাজের উচ্চবিত্ত শাসক শ্রেণির বিবেকহীন নিদ্রাবিলাসিতাকে তারা ভেঙে দিতে চায়। হতদরিদ্র মানুষগুলো সোচ্চারে দাবি জানায় যে, তাদের শুকনো ভাতে নুনটুকু অর্থাৎ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম চাহিদাপূরণের ব্যবস্থা হোক।

2. “আমরা তো অল্পে খুশি-কারা, কেন অল্পে খুশি? তাদের জীবনযন্ত্রণার পরিচয় দাও। অথবা, শ্রমজীবী বঞ্চিত মানুষের জীবনযন্ত্রণা ‘নুন’ কবিতায় যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তা সংক্ষেপে লেখো।

অথবা, “আমরা তো অল্পে খুশি”- ‘অল্পে খুশি’ মানুষদের জীবনযন্ত্রণার যে ছবি ‘নুন’ কবিতায় ফুটে উঠেছে, তার পরিচয় দাও।

অথবা, নিম্নবিত্ত জীবনের ছবি ‘নুন’ কবিতায় কীভাবে ফুটে উঠেছে?

Ans: যারা, যে কারণে অল্পে খুশি : জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবী ও বঞ্চিত মানুষের জীবনযন্ত্রণা বাত্ময় হয়েছে। তাদের কাছে জীবনের অর্থ কোনোরকমে টিকে থাকা। তাদের প্রাত্যহিক জীবনপ্রণালী শত অভিযোগ, অনুযোগেও পরিবর্তিত হয় না। এভাবে আপস করতে করতে আক্ষেপ বা বিলাপ করতেও তারা ভুলে যায়। অল্পেই খুশি থাকতে শিখে যায় এই নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা।

জীবনের সমস্যা : শ্রেণিবিভক্ত সমাজে নিম্নবিত্ত মানুষের এই ‘মানিয়ে চলা’-র মধ্যে একে একে তাদের ইচ্ছে, কল্পনা, স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যায়। সঙ্গে মিশে থাকে ভুখা পেটে খিদের যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে তারা স্নায়ুর শৈথিল্যের জন্য গঞ্জিকাসেবনকে বেছে নেয়। চরম অর্থকষ্টেও হাতে হঠাৎ টাকা এলে তারা আবেগের বশবর্তী হয়ে ইচ্ছাপূরণে মেতে ওঠে। সাময়িক আনন্দে রঙিন স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করতে চায় তারা, গোলাপচারা কিনে শৌখিনতার ছোঁয়া আনে। তাদের অতিরিক্ত চাহিদা নেই, সামান্য প্রাপ্তিতেই তারা তাদের সমস্যায় জর্জরিত জীবনে শান্তি খোঁজে।

যন্ত্রণা : সারাদিন পরিশ্রম করে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে তারা কেবল ঠান্ডা ভাতে নুনের প্রত্যাশা করে। কিন্তু সেই ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাটুকু থেকেও তারা বঞ্চিত হয়। তাই উচ্চকিত দাবিতে সোচ্চার হলেও উদাসীন উচ্চবিত্ত সমাজ তাদের দাবি মেটাতে অক্ষম। প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হতে তাদের হাহাকার, প্রতিবাদ ক্রমশ ম্লান হয়ে যায়। তারা তবুও স্বতঃস্ফূর্তভাবে দাবি জানাতে থাকে – “আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।” এভাবেই ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত মানুষের সামগ্রিক জীবনযন্ত্রণার ধারাভাষ্য রচিত হয়েছে।

3. “কী হবে দুঃখ করে?”-এখানে কোন্ দুঃখের কথা বলা হয়েছে এবং বক্তা সেই দুঃখকে অর্থহীন মনে করেছেন কেন?

Ans: দুঃখ : জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় ‘দুঃখ’ বলতে শ্রমজীবী, নিম্নবিত্ত মানুষদের অর্থাভাবের কারণে দিনযাপনের দুঃখকে বোঝানো হয়েছে।

দুঃখ অর্থহীন : সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষদের আর্থিক দুরবস্থা তাদের জীবনকে কঠোর, রুক্ষ বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি মৌলিক চাহিদাপূরণ হলেই ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’ কষ্ট করে তাদের দিন কেটে যায়। অসুখে আর ধারদেনায় তাদের জীবন জর্জরিত। তবু কখনও বাড়তি অর্থসংস্থান হলে তারা সৌন্দর্যচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়। তারা জীবনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে নুনের দাবিতে সোচ্চার হলেও সমাজের উচ্চশ্রেণি তাদের নিয়ে বিচলিত হয় না।

নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে এই নিদারুণ জীবনের দৈন্যে দুঃখ করা অনর্থক। কারণ তারা তাদের জীবনের এই গতানুগতিকতাকেই ভবিতব্য বলে মেনে নিয়েছে। তাই সাময়িক মুক্তির জন্য তারা গঞ্জিকাসেবন করে। স্নায়ুর এই শিথিলতায় তারা কঠোর বাস্তবকে ভুলে থাকতে চায়। আর চেতনা ফিরলে তাদের সামাজিক শ্রেণিগত অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হয়। ক্ষুধানিবৃত্তির জন্য ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুনের ব্যবস্থা না হলে তাদের মাথায় ‘রাগ চড়ে’। রাগবশত চিৎকার-চ্যাঁচামেচি করলেও তাতে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে না। তাই তারা বিলাপ না করে আপস করে নেয়।

4. সাধারণ ভাতকাপড়ে অল্পে খুশি থাকা মানুষগুলো কারা ও তাদের দুঃখ না করার কারণ কী? তাদের দৈনন্দিন জীবন কীভাবে অতিবাহিত হয়? 

অথবা, ‘নুন’ কবিতার কথক কেন দুঃখ করতে চায় না ও কীভাবে তারা দিন কাটায়?

Ans: যারা : সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষদের সঙ্গে পাঠকসাধারণের পরিচয় হয়। তারা ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’ অর্থাৎ ন্যূনতম চাহিদাপূরণ হলেই খুশি থাকে।

দুঃখ না করার কারণ : সমাজের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো অনুযায়ী শ্রেণি বিভাজনে, প্রচলিত নিয়মেই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ সমাজের নীচের সারিতে পড়ে থাকে। তাদের কথা রাষ্ট্রব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক বা সমাজের উচ্চবিত্তরা কখনও ভাবে না। অবহেলা, অনাদর ও উপেক্ষায় তারা কষ্ট পায় না। বরং সামান্য উপার্জনের দ্বারা অর্জিত সাধারণ ভাতকাপড়ে তারা সন্তুষ্ট থাকে।

যেভাবে দিন কাটে : দৈনন্দিন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াইয়ে নিম্নবিত্তেরা বুঝে নিয়েছে, ‘অল্পে খুশি’ থাকার অভ্যাসটাই তাদের ভবিতব্য। কখনো- কখনো ব্যতিক্রম হতে পারে, তবে তা এক-আধ দিন। তাই জীবনকে উপভোগ করার জন্য প্রয়োজনীয় শৌখিন বস্তু পাওয়ার চেষ্টায় সময় নষ্ট করে না নিম্নবিত্ত বাস্তববাদীর দল। তাই সাধারণ ভাতকাপড়েই দিন কাটিয়ে দেয় তারা। সেই অতিসাধারণ জীবনযাপনেই তারা অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ন্যূনতম খাদ্য ও বস্ত্র পেলেই তারা বিনা প্রতিবাদে জীবন কাটিয়ে দেয়। কষ্টকেও আর কষ্ট মনে করে না তারা। সামান্য অন্ন-বস্ত্রের সন্তুষ্টিতেই, তৃপ্তিতে জীবন কাটায় নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ।

5. চলে যায় দিন আমাদের…”-কাদের, কীভাবে দিন চলে যায়? এভাবে দিন চলার কারণ কী?

অথবা, সাধারণ মানুষের অসুখ হলে কীভাবে দিন কাটে এবং এভাবে দিন কাটে কেন?

Ans: দিন চলে যেমন : কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতায় সাধারণ ভাতকাপড়ে, অসুখে ও ধারদেনাতে কঠোর জীবনসংগ্রামে সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষগুলোর দিন চলে যায়।

এভাবে দিন কাটার কারণ : ‘নুন’ কবিতায় কবি নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনের নিত্য অভাব-অনটনের চিত্র তুলে ধরেছেন। শুকনো ভাতে নুনের জোগান দিতেই যাদের নাভিশ্বাস ওঠে তাদের ঘরে অসুখ বড়ো বালাই। কারণ পথ্য ও ওষুধ কেনার মতো বাড়তি অর্থ থাকে না। তাই সুস্থ হওয়ার তাগিদে অন্যের থেকে টাকাপয়সা ধার করে চিকিৎসা চালাতে হয়। নিম্নবিত্ত মানুষেরা শ্রমজীবী, অর্থাৎ তারা দিন আনে দিন খায়। সঞ্চয় বলে তাদের কিছু নেই। তাই হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ধারদেনা করা ছাড়া আর কোনো উপায় তাদের কাছে থাকে না। এই ধারদেনা যদিও তাদের ‘সাধারণ ভাতকাপড়’-এ সন্তুষ্ট থাকা শান্তিময় জীবনে এক উপদ্রবস্বরূপ। কিন্তু নিম্নবিত্তদের জীবনের এক অঙ্গাঙ্গি অংশ হয়ে গিয়েছে ধার করা, ধারদেনা তাদের অসময়ের সম্বল।

6. “রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে”- এখানে ‘দু-ভাই’ কে ও তারা গঞ্জিকায় টান দেয় নেশায় নাকি যন্ত্রণা ভুলতে, তা আলোচনা করো।

Ans: দু-ভাই : জয় গোস্বামীর ‘ভুতুমভগবান’ (১৯৮৮) কাব্যগ্রন্থের ‘নুন’ কবিতা থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘দু-ভাই’ বলতে ‘বাবা ও ছেলেকে’ বোঝানো হয়েছে।

গঞ্জিকাসেবনের প্রকৃত কারণ : ‘নুন’ কবিতায় কবি সমকালীন সমাজের অর্থনৈতিক সংকটের দিকটি ফুটিয়ে তুলেছেন, যার প্রত্যক্ষ প্রভাবে দিনের পর দিন নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দৈনন্দিন জীবনযাপনে নুন একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। কিন্তু এই সামান্য নুনের চাহিদা মেটাতে সাধারণ মানুষেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তথাকথিত উচ্চশ্রেণির তাচ্ছিল্য সহ্য করে। তারা জানে তাদের জীবনে কোনোদিনই সচ্ছলতা আসবে না-তাই অল্পে খুশি থেকে, হেসেখেলে, কষ্ট করে দিন কাটিয়ে দেয় তারা। ধারদেনা কিংবা অসুস্থতাকেও তারা অসম্ভব সহ্যশক্তির দ্বারা অতিক্রম করতে পারে।

কিন্তু যখনই তাদের জীবনের ন্যূনতম চাহিদা অর্থাৎ খাদ্যসংস্থানের জন্য সাধারণ নুন-ভাতের প্রয়োজনটুকুও মেটে না, তখন প্রত্যহিক জীবনের একরাশ দুঃখকষ্ট-যন্ত্রণা ভুলতে তারা নেশায় নিজেদের ডুবিয়ে রাখে ক্ষণিক সুখের জন্য। যে-কোনো প্রকার নেশা সমাজগত দিক থেকে দৃষ্টিকটু কিন্তু নিম্নবিত্ত মানুষদের তা ভাবার আর অবকাশ থাকে না। আবহমানকাল ধরে দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে এই গঞ্জিকাসেবনই একমাত্র উপায়। কারণ গঞ্জিকার নেশাচ্ছন্নতা তাদের মধ্যে স্নায়বিক শিথিলতা সৃষ্টি করে। তাই সাময়িক স্বস্তিলাভের ব্যর্থ প্রয়াসে, যন্ত্রণা ভুলতে তারা গঞ্জিকাতে টান দেয়।

7. দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে।”-কারা টান দেয় ও তাদের ‘দু-ভাই’ বলে সম্বোধন করার কারণ কী? গঞ্জিকায় টান দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে কেন?

Ans: যারা টান দেয় : কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় স্বপ্নকল্পনা নয়, ফুটে উঠেছে রুক্ষ বাস্তবের ছবি। সমাজের নীচের তলায় থাকা মানুষগুলো মাঝে মাঝেই নেশা করার জন্য গাঁজায় টান দেয়। কবিতায় উদ্ধৃতিটি তাদের ‘স্বীকারোক্তি’ হিসেবে ধরা পড়েছে।

দু-ভাই বলার কারণ : কবি তাঁর ‘নুন’ কবিতায় ‘দু-ভাই’ বলতে বুঝিয়েছেন বাবা ও ছেলেকে, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সামান্য নুনটুকুও জোটাতে পারে না। ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ আঞ্চলিক ভাষায় প্রচলিত একটি প্রবাদ। কবিতায় উল্লিখিত ‘বাপব্যাটা’-কে নিম্নবিত্ত মানুষের প্রতিনিধিস্থানীয় বোঝাতে এই ধরনের আঞ্চলিক প্রবাদ ব্যবহার করা হয়েছে।

গঞ্জিকায় টান দেওয়ার প্রয়োজন : সামান্য উপার্জনে সাধারণ ভাতকাপড় জোটাতেই নাভিশ্বাস ওঠে সমাজের নিম্নবিত্তের। শুকনো, ঠান্ডা ভাতে একটু নুন পেলেই তারা খুশি। সুখ-দুঃখের হিসাব তারা করে না। কিন্তু কখনো- সখনো অসুখ নামক আপদ জোটে তাদের কপালে। তাদের সামান্য আয়, ভাতকাপড় জোটাতেই শেষ হয়ে যায়। তাই অসুখবিসুখ সারাতে ধারদেনা করতে হয়। ধারদেনা কীভাবে মেটানো যাবে সেই দুশ্চিন্তার হাত থেকে রেহাই পেতে গাঁজার নেশায় ডুব দেয় তারা। কুলকিনারাহীন দুশ্চিন্তা, খিদের জ্বালা সাময়িক ভুলে থাকতে তারা গাঁজার নেশায় আচ্ছন্ন হয়।

8. “সব দিন হয় না বাজার; হলে, হয় মাত্রাছাড়া”-সব দিন কাদের, কেন বাজার হয় না? মাত্রাছাড়া বাজার করার কারণই বা কী?

অথবা, নিম্নবিত্তদের ‘মাত্রাছাড়া বাজার করার কারণ-সহ নমুনা দাও।

Ans: যাদের, যে কারণে বাজার হয় না : ‘নুন’ কবিতায় কবি জয় গোস্বামী বর্ণনা করেছেন নিম্নবিত্ত মানুষের সংসারে প্রতিদিন বাজার হয় না। রোজের বাজারের খরচ নিম্নবিত্ত মানুষের আয়ের সঙ্গে মেলে না। তাই শুকনো ভাতে নুন জুটলেই দিন চলে যায়। অর্থের অভাবে বাজার থেকে রোজ সবজি ইত্যাদি কেনার বিলাসিতা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না।

মাত্রাছাড়া বাজার হওয়ার কারণ : নিম্নবিত্ত মানুষগুলির এক একদিন দু-চার পয়সা বাড়তি আয় হয়। সেদিন রোজের বাজার করতে না পারার দুঃখ ভুলতে ‘মাত্রাছাড়া’ বাজার করে ফ্যালে তারা। বেহিসাবি হওয়ার সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা সব হৃদয়েই থাকে। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলোয় না। কিন্তু যেদিন সুযোগ আসে সেদিন তাদের হিসাবের বাঁধ ভাঙে, তারা মন খুলে বাজার করে, গোলাপচারা কেনে, পেট আর মন-দুইয়ের খোরাক জোগাতে ‘মাত্রাছাড়া’ হয়ে ওঠে। নিম্নবিত্তদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রাত্যহিক আয় থাকলে তারা সঞ্চয় করার কথা ভাবতে পারত কিন্তু আলেকালে একদিন বেশি আয় হলে তখন আর হিসেবি হওয়া যায় না। প্রয়োজনের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় শখ মেটাতেও সচেষ্ট হয় তারা।

9. ‘নুন’ কবিতাটি কার লেখা এবং কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত? এই কবিতায় শ্রেণিবৈষম্যের চিত্র কীভাবে ফুটে উঠেছে? 

Ans: রচয়িতা ও কাব্যগ্রন্থ : ‘নুন’ কবিতাটি সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘ভুতুমভগবান’ (২৫ বৈশাখ, ১৩৯৫ বঙ্গাব্দ) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

শ্রেণিবৈষম্যের চিত্র : আলোচ্য কবিতায় দেখা যায়, নিম্নবিত্তের জীবনের চরম সত্য ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা। ব্যঞ্জন সহযোগে ভাত তাদের কপালে দৈবাৎ জোটে। বেশিরভাগ দিনই ঠান্ডা, শুকনো ভাত নুন মেখে খেতে হয়। সাধারণ ভাতকাপড়েই সন্তুষ্ট এইসব তুচ্ছ প্রাণ। তারা নিজেদের সামান্য হিসেবেই জানে। অসুখবিসুখ হলে ধারদেনা করে দিন চলে, কারণ সামান্য আয়ে জোটে শুধু নুন-ভাত, কখনো-বা তাও জোটে না। তখন গাঁজার নেশায় বুঁদ হয়ে বাস্তব ভুলে থাকতে চায় তারা। নিত্য অভাবের সংসারে কখনো দু-পয়সা আয় বেশি হয়। মনের আনন্দে সেদিন বাজার হয় মাত্রাছাড়া। সাময়িক আবেগে সৌন্দর্যবোধের চাহিদা মেনে কেনা হয় একটি গোলাপচারা। তবে তাতে ফুল হবে কি না, সে সংশয় থেকেই যায়। রাতদুপুরে বাড়ি ফেরার পর কোনো দিন ঠান্ডা ভাতে নুনও জোটে না। রাগের মাথায় দুই বাপব্যাটা তখন চিৎকার করে উচ্চবিত্তের স্বার্থপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। তবে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয় না। নিম্নবিত্তের ভাতের পাতে নুনের দাবি সমাজের উচ্চশ্রেণির কান অবধিও পৌঁছোয় না।

10. নুন কবিতায় একই সঙ্গে ভাতকাপড়ের লড়াই এবং সৌন্দর্যবোধের উপস্থিতি কীভাবে রূপায়িত হয়েছে? এই কবিতার মূলভাবটি সংক্ষেপে লেখো।

Ans: ভাতকাপড়ের লড়াই : কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্তের কঠোর জীবনসংগ্রামের কাহিনি চিত্রিত হয়েছে। সাধারণ ভাতকাপড়ে তারা সন্তুষ্ট। কিন্তু সেটুকু জোগাড় করতেই তাদের নাভিশ্বাস ওঠে। তবে অতি সাধারণ জীবনের নুন-ভাতেই তারা বেঁচে থাকার আনন্দ খুঁজে নেয়।

সৌন্দর্যবোধের উপস্থিতি : তবুও এই বুক্ষ মরুভূমির মতো জীবনেও থাকে ফুল ফোটানোর সাধ। দু-পয়সা বাড়তি আয় হলে মাত্রাছাড়া বাজারের পাশাপাশি একটি শৌখিন গোলাপচারা কিনে ফ্যালে নিম্নবিত্তের প্রতিনিধিরা। মনের এক কোণে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা সৌন্দর্যবোধ ও শৌখিনতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। প্রমাণ হয় যে, বাস্তবের মাটিতে দৈনন্দিন দারিদ্র্যের কশাঘাত তাদের সৌন্দর্যপিয়াসি মনকে একেবারে রুক্ষ করে দিতে পারেনি।

মূলভাব : সমাজে অর্থনৈতিক শ্রেণিবৈষম্যের শিকার নিম্নবিত্ত মানুষ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অমানুষিক পরিশ্রম করে সাধারণ ভাতকাপড় জোগাড় করে তারা। অসুখের খরচ মেটাতে ধার করে। আবার, দু-পয়সা বেশি আয় হলে ‘গোলাপচারা’ কিনে আনে। প্রাত্যহিক নির্দিষ্ট রোজগার যার নেই সে সঞ্চয় করার কথা স্বভবতই ভাবে না। দুশ্চিন্তা আর অনটন ভুলতে গাঁজার নেশায় ডুবে থাকে তারা। রাতদুপুরে খিদের জ্বালা মেটাতে গিয়ে তারা দ্যাখে, ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুনটুকুও নেই। ‘নুন’ অর্থাৎ সাধারণ জীবনের ক্ষেত্রে সবথেকে প্রয়োজনীয় বস্তু। অথচ নিম্নবিত্তদের বেঁচে থাকার জন্য এই প্রাথমিক শর্তগুলিও পূরণ হয় না।

ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুন অর্থাৎ জীবনধারণের ন্যূনতম চাহিদাপূরণের : দাবি নিয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে তারা। অবশ্য তাতে নিশ্চিন্ত-নিরাপদ জীবনের ঘেরাটোপে উচ্চবিত্তের সুখী নিদ্রাযাপনে কোনো ব্যাঘাত ঘটে না।

11. “রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি – মাথায় রাগ চড়লে কী ঘটনা ঘটে?

অথবা, “রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি”-‘রাগ’ কেন মাথায় চড়ে? তার মাথায় চড়ি – মাথায় চড়লে কী হয়?

অথবা, “রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি- এ কথা যে বলেছে, তার রাগ মাথায় চড়ার কারণ কী? সেই রাগকে নিয়ন্ত্রণ না করে তার মাথায় চড়ে কী বার্তা দিতে চায়?

অথবা, “আমি তার মাথায় চড়ি”-কে, কার মাথায় চড়ে? পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

Ans: রাগ মাথায় চড়ার কারণ : ‘নুন’ কবিতায় বর্ণিত নিম্নবিত্ত মানুষ সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর খেতে বসে যখন দ্যাখে যে, তাদের ঠান্ডা ভাতের পাতে সামান্য নুনের জোগনটুকুও নেই তখন ক্ষুধায়, ক্ষোভে, দুঃখে নিম্নবিত্তের মাথার রাগ চড়ে যায়।

বার্তা : কবিতার কথক যখন বেঁচে থাকার ন্যূনতম চহিদা, ঠান্ডা ভাতে নুনের জোগান না পেয়ে প্রচণ্ড ক্রোধান্বিত হয় তখন দেখা যায়, সে ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ না করে সে রাগের মাথায় চড়ে বসে। অর্থাৎ ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সেই ক্রোধের কারণে সারাপাড়া তথা সমগ্র সমাজ তাৎক্ষণিক সচকিত হলেও পরক্ষণেই উদাসীন হয়ে পড়ে। কারণ সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষের তুচ্ছ অধিকারের লড়াই নিয়ে তারা অনাগ্রহী। ফলে, পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় না। তবুও দ্বিধাহীন চিত্তে শ্রমজীবী মানুষ সভ্যতা ও সমাজের কাছে তাদের প্রতিবাদী বার্তা পৌঁছে দিতে চায়- “… আমরা তো সামান্য লোক/আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।” এই প্রতিবাদ আসলে দীর্ঘদিনের জমে থাকা অভিমান, দুঃখ, বঞ্চনা ও রাগের স্বরূপ।

12. বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি”-বক্তা কেন সারাপাড়া মাথায় করে?

অথবা, ‘বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি”-কারা, কেন পাড়া মাথায় করে?

অথবা, “বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি”-এর অর্থ কী?

Ans: শ্রমজীবী সম্প্রদায় অল্লেই খুশি : বাংলা আধুনিক কবিতার বিশিষ্ট কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতা থেকে প্রশ্নে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত। কবিতায় কবি স্বগতোক্তিতে শ্রমজীবী মানুষের দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবনের বিবরণ দিয়েছেন। এই খেটে খাওয়া, অসহায় মানুষেরা ‘অল্পে খুশি’। তারা দুঃখ করে অনর্থক মন খারাপ করতে চায় না। বরং ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’, ‘অসুখে ধারদেনাতে’ দিন কেটে যাওয়ায় তারা আপস করে নেয়। অর্থাভাবে সব দিন বাজার না হলেও যেদিন তাদের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ থাকে, সেদিন ‘মাত্রাছাড়া’ বাজার করে খুশি হয়। এমনকি, বাড়িতে ফেরার পথে তারা কিনে আনে ‘গোলাপচারা’।

গোলাপচারা ঘিরে অনিশ্চয়তা : নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে শখের গোলাপচারা বেহিসাবির লক্ষণ। যাদের প্রত্যহ ভাত জোটানোর মতো অর্থসংস্থান নেই তাদের পক্ষে শখপূরণ বাহুল্য। তাই গোলাপচারা বসানোর স্থানসংকুলান যেমন তারা করতে পারে না, তেমনই ‘ফুল হবে কি না’- এই ভাবনাও তাদের মধ্যে সংশয় তৈরি করে। এই দোলাচলতা তাদের এক স্বাভাবিক মনোবৃত্তি, জীবনের অনিশ্চয়তার ইঙ্গিতবাহী। শেষমেশ ভাবনার সংগত উত্তর না পেয়ে বাপব্যাটাতে গঞ্জিকার নেশাচ্ছন্নতায় বাস্তবতাকে ক্ষণিকের জন্য ভুলে থাকে।

সামান্য চাহিদার অপূর্ণতা : অল্পে খুশি মানুষদের জীবনচর্যায় প্রায়ই মাঝরাতে বাপব্যাটা বাড়ি ফিরে খেতে বসে দ্যাখে ‘নুন নেই ঠান্ডা ভাতে’। এই অস্থির পরিস্থিতিতে মেজাজ হারিয়ে সেই মানুষগুলো ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে। তাদের রাগ হয় এবং সোচ্চার প্রতিবাদে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

13. “বাপব্যাটা দু-ভাই” – উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য কী? রাগ হলে তারা কী করে?

Ans: তাৎপর্য : কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতা থেকে সংগৃহীত উদ্ধৃতিতে ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ শব্দের ব্যবহারে সম্পর্কের এক অদ্ভুত সমীকরণ দেখা যায়। সাধারণ অর্থে, বাপব্যাটা পিঠোপিঠি দু-ভায়ের মতো। অন্তর্নিহিত ভাবব্যঞ্জনায়, নিম্নবিত্ত মানুষের নিত্য অভাবের সংসারের দায়িত্ব দুই পুরুষ সদস্যের উপর-যারা সামাজিক সম্পর্কে বাপব্যাটা হলেও দায়িত্বপালনে সমান ভাগীদার, সহোদরের মতো। আরও একভাবে বলতে গেলে, অভাবের তাড়নায় সামাজিক সম্পর্কের চিত্রগুলি ও তাদের মধ্যেকার সমীকরণ বদলে যেতে থাকে। বাপব্যাটা তাদের সম্পর্কের মধ্যস্থিত শালীনতার গণ্ডি লঙ্ঘন করে দুই ভাইয়ের মতো কলহে লিপ্ত হয়।

রাগ হলে যা করে : বাপ ও ব্যাটা দুজনেই সাধারণ ভাতকাপড় জোগাড়ের তাগিদে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ প্রবাদটি মাঝে মাঝে রুক্ষ বাস্তব হয়ে ধরা দেয় তাদের জীবনে। কিন্তু যখন মাঝরাতে সর্বগ্রাসী পেটের আগুন নেভানোর জন্য ঠান্ডা ভাতে নুনের জোগানটুকুও থাকে না, তখনই তীব্র রাগে ফেটে পড়ে তারা। চিৎকার করে পাড়ার তথা সমাজের উচ্চবিত্তের সুখনিদ্রা ভেঙে দিতে চায়। রাগের মাথায় তারা অর্থনৈতিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদীর ভূমিকা পালন করে। এখানে বাপ ও ব্যাটার সামাজিক অবস্থান এক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা উভয়েই পরিবারপালনে ব্যর্থ পুরুষের ভূমিকায় রয়েছে, তাই তাদের প্রতিক্রিয়াও হয় একইরকম। দুজনের মধ্যে কেউই থেমে যাওয়ার পাত্র নয়। এই চিৎকার, নিজেদের মধ্যেই এই ঝগড়া তাই বহুদিনের জমে থাকা রাগ, ক্ষুধা, যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ-নিম্নবিত্তের প্রতিবাদের স্বর।

14. আমরা তো সামান্য লোক”-কে, কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছে এবং ‘সামান্য লোক’ শব্দের তাৎপর্য লেখো।

অথবা, “আমরা তো সামান্য লোক”- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য লেখো।

অথবা, “আমরা তো সামান্য লোক-উক্তিটির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত কবির মনোভাব বা ইঙ্গিত ব্যক্ত করো।

Ans: যিনি, যে প্রসঙ্গে : ‘নুন’ কবিতার উল্লিখিত অংশে ‘আমরা’ বলতে কবি জয় গোস্বামী সমাজের সাধারণ শ্রমজীবী, শোষিত ও বঞ্চিত নিম্নবিত্ত মানুষদের কথা বলেছেন।

সামান্য লোক কথার অর্থ : ‘সামান্য লোক’ কথাটির অর্থ সাধারণ মানুষ। কবিতার একেবারে শেষ অংশে দারিদ্র্যপীড়িত নিরন্ন বক্তা, নিজেদেরকে ‘সামান্য লোক’ হিসেবে প্রতিপন্ন করে, সমাজের উচ্চ সম্প্রদায়ের কাছে ন্যূনতম চাহিদা নুনের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন-

“… আমরা তো সামান্য লোক

আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”

সামান্য লোক শব্দপ্রয়োগের তাৎপর্য : ‘সামান্য লোক’ কথাটি শ্লেষ অর্থে প্রযুক্ত। আসলে তথাকথিত উচ্চবিত্ত শ্রেণি সমাজের শ্রমজীবী মানুষগুলিকে ‘সামান্য’, ‘নীচ’ নজরে দ্যাখে। কিন্তু শ্রমজীবী সাধারণ মানুষেরা কখনোই ‘সামান্য’ হতে পারে না। তারাই সমাজের ধারক ও বাহক। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই সমাজ এগিয়ে চলেছে। তবু তাদের জীবনের ঘন অন্ধকারকে দূর করতে কোনো মানুষই অগ্রসর হয় না। কবিগুরু তাঁর ‘ওরা কাজ করে’ কবিতায় এই শ্রমজীবী মানুষদের চিরন্তন অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করেছেন। তাই ব্যাপক অর্থে ‘সামান্য লোক’ সাধারণ শ্রমজীবীরা নয়, বরং আভিজাত্যের অহংকারে অন্ধ উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়, যারা ওদের ‘সামান্য লোক’ বলে উপহাস করে, ঘৃণা করে, তারাই হীন মনের অধিকারী মানুষ।

15. “আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।” – কারা, কাদের কাছে এই দাবি করেছে? এই দাবি কতটা যুক্তিসংগত?

অথবা, “আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”- তাৎপর্য লেখো।

অথবা, “আমরা তো সামান্য লোক / আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”-কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

Ans: যারা, যাদের কাছে : কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি বাপ-ব্যাটা তথা শ্রমজীবী ক্ষুধার্ত মানুষগুলো, অর্থলোভী-স্বার্থপর-অনৈতিক শাসকদল তথা রাষ্ট্রনায়কদের কাছে এই নুন-ভাতের দাবি করেছে। উচ্চবিত্তদের ইঙ্গিত করেই এই দাবিতে সোচ্চার হয়েছে তারা।

ব্যাখ্যা : সমগ্র ‘নুন’ কবিতায় সমাজের নিম্নবর্গীয়, উপেক্ষিত মানুষদের দিনযাপনের বাস্তব চিত্র প্রকাশিত। মানবসভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই প্রান্তিক মানুষেরা সভ্যতার ধারক ও বাহক। অথচ মানবসমাজে এরাই চির উপেক্ষিত, অত্যাচারিত ও ব্রাত্য। প্রজন্মের পর প্রজন্মজুড়ে অনাদর ও অবহেলা এদের একমাত্র প্রাপ্তি। সভ্যতার আলো কখনও এদের জীবনকে আলোকিত করে না। অথচ এই শ্রেণির মানুষেরা সকল অবহেলা মেনে নিয়ে অল্পে খুশি থাকার চেষ্টা করে-তাই সাধারণ ভাতকাপড়, অসুখ-ধারদেনায় তারা জীবন কাটিয়ে দেয়। তা সত্ত্বেও পরিশ্রমের যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় তারা জীবনের মৌলিক চহিদাগুলি মেটাতে পারে না। তাই ভাতের সহযোগী পদ তো দূর, সামান্যতম নুনও জোটে না ঠান্ডা ভাতে। সেই কারণে আলোচ্য কবিতায় ‘নুন’ নিম্নবিত্ত পরিবারের দিনযাপনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ন্যূনতম চাহিদা নুনের প্রয়োজন পূরণ না হওয়ায়-

“খেতে বসে রাগ চড়ে যায়, নুন নেই ঠান্ডা ভাতে”

তবু অবস্থার পরিবর্তন হয় না। নিদারুণ অর্থাভাবে কোনোদিন হঠাৎ হাতে টাকা এলে মাত্রাছাড়া বাজার হয়। এই কবিতায় কেবল একটি পরিবারকে প্রতীকী করে সমাজের বঞ্চিত শ্রেণির কথা বলা হয়েছে। সমাজের কাছে তাদের দাবি ন্যূনতম। সুতরাং, সামান্যতম মানবিক অধিকারের কথাই দাবি হয়ে ধ্বনিত হয় উদ্ধৃতাংশে-

“আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”

বিলাসবাহুল্য নয়, সামান্য লবণের সুব্যবস্থায় বহু মানুষের জীবন লাবণ্যময় হয়ে উঠতে পারে। তাই এই দাবি সম্পূর্ণ যুক্তিসংগত।

16. বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি …”-কী কিনে আনার কথা বলা হয়েছে এবং তা কিনে আনার মধ্যে কোন্ সত্য প্রকাশিত হয়েছে? উদ্ধৃত অংশের মধ্য দিয়ে যে জীবনের কথা কবি বর্ণনা করেছেন, তার পরিচয় দাও।

Ans: যা কিনে আনা হয় : কবি জয় গোস্বামী তাঁর ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত সমাজের কথকরূপে মাত্রাছাড়া বাজার করার নমুনা দিতে গোলাপচারা কিনে আনার কথা বলেছেন।

প্রকাশিত সত্য : নিম্নবিত্ত মানুষদেরও আশা-আকাঙ্ক্ষা, সাধ-আহ্লাদ থাকে, তারাও স্বপ্ন দ্যাখে। চরম আর্থিক সংকটেও সৌন্দর্যপিয়াসি মনের জাগরণ হয় বলেই তারা কিনে আনে দামি গোলাপের চারা-যার মধ্য দিয়ে তাদের হৃদয়ের শৌখিনতা, বিলাসী মনোভাব প্রকাশিত হয়।

জীবনের পরিচয় : ‘নুন’ কবিতায় কবি শ্রেণিবিভক্ত সমাজের কঠোর বাস্তবতাকে লিপিবদ্ধ করেছেন। নিম্নবিত্ত মানুষের অভিশপ্ত এই জীবন কাটে সামান্য ভাতকাপড়ে, অসুখে, ঋণগ্রস্ততায়। এই মানুষগুলি প্রত্যেকদিন খাদ্য ও অর্থের সংস্থান করতে পারে না। তাই হঠাৎ পাওয়া টাকায় কখনো- কখনো অতিরিক্ত খরচও হয়ে যায় অব্যক্ত সাধপূরণের আশায়। কবিতায় সাধপূরণের ‘গোলাপচারা’ নিম্নবিত্তদের শৌখিনতার পরিচায়ক। কিন্তু বাস্তবতার নিষ্ঠুর আঘাত মুহূর্তে ভেঙে ফ্যালে তাদের স্বপ্ন।

অসহায় অবস্থা : মধ্যরাতে ক্ষুধার তীব্র জ্বালায় ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুন না পেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে সামাজিক শিষ্টাচার ভুলে প্রতিবাদ করে হতদরিদ্ররা-তবুও জোটে না প্রাপ্য অধিকার। তাই তাদের আর্তনাদ এমনভাবে একদিন স্তিমিত হয়ে যায়।

17. “ফুল কি হবেই তাতে?”-কোন্ ফুল এবং সেই ফুল কীসের প্রতীক?  ফুল ফোটা নিয়ে সংশয় কেন?

অথবা, “ফুল কি হবেই তাতে?”-কোন্ ফুল? এই সংশয় কেন?

অথবা, “সে অনেক পরের কথা।”-কোন্ কথা? উক্তিটির মর্মার্থ লেখো।

Ans: যে ফুল : কবি জয় গোস্বামী তাঁর ‘নুন’ কবিতায় ‘ফুল’ অর্থাৎ গোলাপচারায় ফুল হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

প্রতীক : ‘নুন’ কবিতায় ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ মানুষ বাড়তি আয়ের পয়সায় প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি একটি গোলাপচারাও কেনে, যা তাদের নিত্য অভাবের সংসারে বড়োই বেমানান। তবুও প্রতিকূল জীবনের কঠিন লড়াইয়ে মনের সৌন্দর্যবোধ ও বেঁচে থাকার প্রতীক এই গোলাপচারাটি।

সংশয়ের কারণ : আলোচ্য কবিতায় সামাজিক শ্রেণিবৈষম্যের চিত্র প্রকাশিত। ‘অল্পে খুশি’ সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরা জানে সমাজের ক্ষমতাশালী মানুষের কাছে তাদের দুঃখের কোনো মূল্য নেই। তাই অর্থাভাবে, প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে তারা ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’ দিন অতিবাহিত করে। তীব্র অর্থসংকটের পাশাপাশি অসুস্থতা তাদেরকে চিন্তাগ্রস্ত করে তোলে। এই বাস্তবতা থেকে মুক্তির উপায় না খুঁজে পেয়ে তখন তারা ক্ষণিক সুখের খোঁজে নেশায় মগ্ন হতে থাকে। তাদের “সব দিন হয় না বাজার; হলে হয় মাত্রাছাড়া”। অর্থাৎ, অর্থাভাবে দিন যাপন করলেও কখনো-সখনো কষ্টার্জিত টাকা হাতে পেলে উৎসাহ-উদ্দীপনায়, ইচ্ছাপূরণের তাগিদে তারা গোলাপচারা কিনে বাড়ি ফেরে। কিন্তু এ কথা ভুলে যায় যে তাদের রোপণযোগ্য জমিটুকুও নেই। সাধারণ জৈবিক চাহিদার কাছে শখ-আনন্দ যে অহেতুক, তা তারা বোঝে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তা তাদের ঘিরে ধরে। অর্থাৎ, চারাগাছটিতে যে ফুল হবে, এমন ভরসা পায় না এই নিম্নবিত্ত মানুষেরা। এই চিন্তা ভুলতে, ভবিষ্যতের ভাবনা পরিত্যাগ করে তারা নেশায় ডুব দেয়। জীবনের নিকষ কালো অন্ধকার দূরীভূত হয়ে নতুন জীবনসূর্য উদিত হবে কি না, সেই সন্দেহই আলোচ্য অংশটিতে প্রকাশ পেয়েছে।

18. “সে অনেক পরের কথা।”-কোন্ কথা ও তা অনেক পরের কথা বলার কারণ কী? সেই কথা ভুলতে কী করা হয়?

Ans: যে কথা : জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত মানুষ সাময়িক ঝোঁকে একটা গোলাপচারা কিনে ফ্যালে। বাড়িতে সেই চারা রোপণের উপযুক্ত পরিস্থিতি নেই। তাই তাতে ফুল ফোটার কথা কল্পনা মাত্র।

তা অনেক পরের কথা বলার কারণ : প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে গোলাপচারা আদৌ ফুল ফোটাতে পারবে কি না, তা সুদূর ভবিষ্যতে বোঝা যাবে। অদেখা ভবিষ্যৎ এখানে তাই ‘অনেক পরের’।

কথা ভুলতে যা করা হয় : ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত মানুষ অভাবের সংসারে কিনে আনে একটি গোলাপচারা। পরিকল্পনাহীনভাবে কেনা গোলাপচারাটির জন্য উপযুক্ত মাটি নেই। সুদূর ভবিষ্যতে তাতে ফুল ফোটা নিয়ে সংশয় জাগে। তা ভুলতে গাঁজায় টান দেয় কথক। শখ-সাধ-স্বপ্ন সমানভাবে থাকা সত্ত্বেও গোলাপচারার মতো সেই স্বপ্নকে লালন করার সুযোগ নিম্নবিত্তের নেই। ক্ষোভ-নৈরাশ্য-দুঃখ-হতাশা তাদের গ্রাস করে। আর তখনই তারা ‘গঞ্জিকাতে’ টান দিয়ে রূঢ় বাস্তব থেকে সাময়িক মুক্তি খোঁজে।

19. “আমরা তো এতেই খুশি; বলো আর অধিক কে চায়?” – তারা কী ‘অধিক’ চায় না? ‘অধিক’ চাহিদা নেই কেন?

Ans: যা অধিক চায় না : উদ্ধৃতিটির উৎস কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতা। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনচর্যার বাস্তব দলিল আলোচ্য কবিতাটি। হতদরিদ্র এই মানুষেরা অল্পে খুশি হতে জানে। সাধারণ ভাতকাপড় তথা দিন গুজরানের জন্য ন্যূনতম সংস্থানটুকুর অধিক আর কিছু তারা চায় না।

ন্যূনতম চাহিদা : সামান্য উপার্জনে অর্জিত সাধারণ ভাতকাপড়েই খুশি থাকে সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণিভুক্তরা। রোজকার অভাব-অনটনের মধ্যে থেকে তারা বুঝেছে ‘অধিক’ চাইলেও তা পাওয়া সহজসাধ্য নয়। ‘অধিক’- এর চাহিদা তাদের কাছে অবাস্তব। কারণ সমাজের নীচের তলার মানুষগুলো অর্থনৈতিক শ্রেণিবৈষম্যের শিকার।

বাস্তববাদী মনোভাব : অবহেলা, অনাদর এবং উপেক্ষার ছবি নিম্নবিত্তদের জীবনজুড়ে। রাষ্ট্র বা সমাজের উচ্চবিত্তরা তাদের ‘ভালো রাখার’ বিষয়ে আগ্রহী নয়। তাই ‘অধিক’ চেয়ে নিজেদের মোহগ্রস্ত করে তোলার চেষ্টা নিম্নবিত্ত মানুষেরা করে না।

20. “বলো আর অধিক কে চায়?” – অধিক না চাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তার কোন্ মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে?

Ans: না পাওয়ার বেদনা : মানুষ আশাবাদী। ধনী-দরিদ্র প্রত্যেকেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়কে পাওয়ার আশা করে কিন্তু সবসময় তা পূরণ হয় না। জয় গোস্বামী ‘নুন’ কবিতায় শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযন্ত্রণার ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। রক্তমাংসে গড়া অন্যান্য মানুষের মতো তারাও চায় ‘দুটো ভাত একটু নুন’, চায় মানুষের মতো বাঁচতে, হৃদয়ের সমস্ত অনুভূতির বাহ্যিক প্রকাশ ঘটাতে। কিন্তু তাদের সেই সামান্য চাওয়া কোনোদিনই পূর্ণ হয় না। ব্যর্থতা সাফল্যের চাবিকাঠি কিন্তু তাদের ব্যর্থতা সর্বদাই তাদের চাওয়া- পাওয়ার দ্বারকে রুদ্ধ করে। বিরহ ও দুঃখযন্ত্রণার আগুনে পুড়ে এরা এতটাই দগ্ধ যে; অধিক কিছু নয়, ঠান্ডা ভাতে একটু নুনই এদের সর্বোচ্চ চাহিদা।

মনোভাব : কবি বলেছেন, দরিদ্র শ্রমজীবীদের আর্তি কেবল সাধারণ মৌলিক চাহিদা আর মানুষের মতো বাঁচা। সাধারণ ভাতকাপড়ে, অসুখে- ধারদেনাতে এদের জীবন অতিবাহিত হয়। অর্ধাহার বা অনাহারে দিন কাটে তাদের। কখনো-বা শৌখিনতার বশে তারা হারিয়ে ফ্যালে ভবিষ্যতের সংস্থান। বাস্তবের আঘাতে রোজ তাদের স্বপ্ন ভাঙে, আশা পূরণ হয় না-তবুও তারা অল্পে সন্তুষ্ট। এই ‘সামান্যের’ জোগাড় করতে তারা সহ্য করে অপার যন্ত্রণা, উচ্চবিত্তের তাচ্ছিল্য। এই অবহেলায় তারা দারিদ্র্য, শ্রেণিবৈষম্যকেই স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে থাকে। উদ্ধৃতাংশে তাদের এই আপসকামী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।

21. “হেসে খেলে, কষ্ট করে, আমাদের দিন চলে যায়”-উদ্ধৃতিটির মধ্যে কবির যে জীবনবোধ প্রকাশিত হয়েছে তা বিবৃত করে, ‘হেসে খেলে কথাটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

Ans: বঞ্চিত মানুষের কথা : কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতায় আছে অসহায়, পীড়িত ও চিরবঞ্চিত মানুষগুলোর দিনযাপনের কথা। দেশ স্বাধীন হলেও, রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে প্রেক্ষাপট বদলালেও এই মানুষগুলোর অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি ঘটেনি। এরা চির উপেক্ষিত। তথাকথিত শিক্ষিত, সভ্য, ভদ্র ক্ষমতাবানদের চোখে তাই তারা নেহাতই ‘সামান্য লোক’।

ধারদেনা নিত্যসঙ্গী : অল্প চাহিদাসম্পন্ন এই মানুষগুলোর স্বীকারোক্তি- তারা ‘অল্পে খুশি’। সাধারণ ভাতকাপড়, অসুখবিসুখ, ধারদেনা নিয়েই এদের দিন কাটে। আবার দু-পয়সা বাড়তি আয় হলে তারা আবেগের বশে মাত্রাছাড়া বাজারেও সিদ্ধহস্ত।

আশাবাদীমন : ফুল ফোটার অনিশ্চয়তা কিংবা গাছের স্থান সংকুলানের অভাব জেনেও এরা আশা হারায় না। অভাব, দুঃখকষ্ট সব কিছু ভুলে তারা হেসে-খেলে জীবন কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।

হেসে খেলে-র তাৎপর্য : ‘নুন’ কবিতায় নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনের চরম সত্য ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’। দৈনন্দিন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেও তারা দুঃখের কাছে পরাজয় স্বীকার করে না। সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও ‘হেসে খেলে’ অর্থাৎ স্বাভাবিক ছন্দে জীবনকে টেনে নিয়ে যায়।

22. “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”- কার মাঝে মাঝে দিন চলে না এবং দিন না চলার কারণ কী? এর মাধ্যমে নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি পাওয়া যায়, তা লেখো।

অথবা, “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”- দিন চলে না কেন? এর ফল কী হয়?

অথবা, “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”- কাদের দিন চলে না? কেন চলে না?

Ans: জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতায় কথক তথা নিম্নবিত্ত মানুষের মাঝে মাঝে দিন চলে না।

দিন না চলার কারণ :

দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষের বেঁচে থাকার মরিয়া লড়াইয়ের এক আশ্চর্য ছবি আলোচ্য কবিতায় ফুটে উঠেছে।

নিরন্তর পরিশ্রমী: শ্রমজীবী মানুষ দিন আনে দিন খায়, প্রতিদিনের গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করে বাঁচে।

সঞ্চয়হীন: স্বল্প আয়ের এই মানুষগুলোর সেই অর্থে সঞ্চয় থাকে না বলেই রোগব্যাধি-অসুস্থতায় এদের ধারদেনা করতে হয়।

অসুস্থতায় সংসার অচল :

দরিদ্র মানুষেরা অল্পেই খুশি। দারিদ্র্যের মধ্যেই হেসে-খেলে, কষ্ট করে দিন চালাতে অভ্যস্ত। আবার, সবসময় হেসে-খেলেও যে তাদের দিন চলে এমন নয়-অভাব, অসুস্থতায় সংসারের চাকা রুদ্ধ হয়। “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”-শব্দবন্ধ প্রান্তিক মানুষের জীবনে আর্থিক অনিশ্চয়তা ও অভাবের ভয়াবহতাকে ফুটিয়ে তোলে।

ফলাফল :

অসংযত আচরণ: খাদ্যের অভাবের মতো তীব্রতর মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণা আর কিছুতে নেই। অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষগুলো সামান্য লবণটুকুও না মেলায় ক্ষোভ উগড়ে দেয়।

প্ৰতিবাদ: বাপব্যাটা মিলে সারাপাড়া মাথায় করে, তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ভদ্র সমাজের কাছে সামান্য নুনের ব্যবস্থাটুকু করার মানবিক অধিকার পেশ করে তারা। কিন্তু তাদের সেই প্রতিবাদী হাহাকার উচ্চবিত্তের নিদ্রার অতলে তলিয়ে যায়।

23. “খেতে বসে রাগ চড়ে যায়”-কাদের, কেন খেতে বসে রাগ চড়ে যায় এবং রাগ চড়ে গেলে তারা কী করে?

Ans: যাদের : উদ্ধৃতির উৎস কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতা। সমাজের নীচের সারিতে কোনোমতে বেঁচে থাকা মানুষদের দিন চলতে চায় না। অক্লান্ত পরিশ্রমী এই মানুষগুলোর কথাই বলা হয়েছে।

খেতে বসে রাগ করার কারণ : সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম, ঘরে ফিরে ঠান্ডা-শুকনো ভাত নুন দিয়ে খেয়ে পেটের আগুন নেভানো-এমনই তাদের রোজনামচা। সাধারণ ভাতকাপড় জোগাড় করতে গিয়েই নাভিশ্বাস ওঠে তাদের। তবুও গড়িয়ে গড়িয়ে কোনোমতে দিন চলে যায়। মাঝে মাঝে সেই চলা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। কারণ ঠান্ডা ভাতে নুনের জোগানটুকুও থাকে না। গভীর রাতে ঘরে ফিরে ঠান্ডা ভাতগুলো খাওয়ার জন্য একমাত্র উপকরণ ছিটোফোঁটা নুনের অভাব দেখে তারা মাথা ঠিক রাখতে পারে না। পেটের খিদের আগুন ‘রাগ’ হয়ে মাথায় চড়ে বসে। সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়, অবসন্ন ক্ষুধার্ত মানুষগুলো চিৎকারে ফেটে পড়ে। গড়িয়ে চলা দিন ‘নুন’-এর অভাবে থেমে যেতে চায়।

রাগ চড়ে গেলে তারা যা করে: নিম্নবিত্ত, পরিশ্রমী মানুষগুলোর রাগ চড়ে গেলে তারা সেই রাগকে আরও প্রশ্রয় দেয়। চক্ষুলজ্জার সংকোচ তাদের মধ্যে নেই। তাই রাগের বশে তারস্বরে চিৎকার করে সারা পাড়ার শান্তি ভঙ্গ করে তারা।

24. “নূন নেই ঠান্ডা ভাতে”- ভাত ঠান্ডা কেন? তাতে নুন-ই বা নেই কেন?

অথবা, “নুন নেই ঠান্ডা ভাতে”- কাদের ভাতে, কেন নুন নেই, তা প্রসঙ্গক্রমে বুঝিয়ে দাও।

Ans: ভরা ভাত ঠান্ডা হওয়ার কারণ : কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘নুন’ কবিতায় সাধারণ শ্রমজীবী, নিম্নবিত্ত মানুষের দিনলিপি রচিত হয়েছে। চরম আর্থিক সংকটে তাদের প্রতিদিন বাজার হয় না, আবার ‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন।’ তাই রোজ উনুনে হাঁড়ি চড়ে না। সে কারণে কখনও নিরন্ন অবস্থায়, কখনো-বা বাসি ভাত তাদের একমাত্র সম্বল হয়। এখানে ‘ঠান্ডা ভাত’ বলতে জল ঢালা বাসি ভাত-কে বোঝানো হয়েছে।

ভাতে নুন না থাকার কারণ : সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরা আর্থিক অনটনের মতো সামাজিক সংকটের কবলে পড়ে বেশিরভাগ সময়ই আধপেটা কিংবা নিরন্ন অবস্থায় দিন কাটায়। দিনযাপনের গ্লানি ভুলতে সাময়িক সুখের জন্য তারা গঞ্জিকা সেবন করে ‘হেসে-খেলে, কষ্ট করে’ দিন যাপন করে। এরা দরিদ্র, দুঃখী-অভাব এদের নিত্যসঙ্গী। অর্থাভাবে – কখনও বাজার হয়, কখনো-বা হয় না। আসলে সামাজিক বৈষম্যের কারণে ধনী-দরিদ্রের সহাবস্থান সত্ত্বেও দরিদ্র শ্রেণির মানুষেরা বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম সাহায্য পায় না। হাড়ভাঙা খাটুনি সত্ত্বেও যোগ্য মূল্য থেকে বঞ্চিত থাকে। ফলে, কোনোমতে বাসি-ঠান্ডা ভাতের ব্যবস্থা করলেও নুনের জোগাড় করে উঠতে পারে না তারা।

25. ‘নুন’ কবিতার শিল্পসার্থকতা আলোচনা করো।

অথবা, ‘নুন’ কবিতায় জয় গোস্বামীর আঙ্গিক নির্মাণকৌশলের কৃতিত্ব আলোচনা করো।

Ans: ভূমিকা : জয় গোস্বামীর ‘ভুতুমভগবান’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘নুন’ কবিতায় কবি নিম্নবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গকে ফুটিয়ে তুলেছেন।

বিষয়সংক্ষেপ : নিম্নবিত্ত পরিবারের জীবনযন্ত্রণাই কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু। এই শ্রেণির মানুষেরা কোনোরকমে ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’ অর্থাভাবে, অর্ধাহারে দিন কাটায়। অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা ভুলতে তারা গঞ্জিকায় নেশাচ্ছন্ন থাকে। তাদের দাবি সম্পর্কে সমাজ সচেতন নয়, তাই তাদের প্রাপ্য সামান্য অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত। কবিতায় বর্ণিত একটি পরিবারের কাহিনি সমগ্র শ্রমজীবী মানুষের প্রতীক, যা তৃতীয় বিশ্বের শ্রেণিবৈষম্যের সামাজিক সমস্যাকে চিহ্নিত করেছে। কবি সেখান থেকে উত্তরণের দিশা দেখাতে চান।

ব্যঞ্জনা : সমগ্র কবিতায় ‘নুন’ শব্দটি দারিদ্র্যের বাস্তব সমস্যাকে প্রতীকায়িত করে। শেষ পঙ্ক্তিতে নুন শব্দের মার্জিত রূপ লবণ ব্যবহার করে কবি সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের উদাসীনতাকে আঘাত করতে চেয়েছেন।

যতিচিহ্নের ব্যবহার : ১৬ লাইনের কবিতাটিতে কবি জীবনযন্ত্রণার নিরন্তর প্রবহমানতাকে সুস্পষ্ট করার জন্য মাত্র চারটি পূর্ণযতি ব্যবহার করেছেন। আবার অন্যদিকে, গভীর জীবনজিজ্ঞাসার প্রতীক হিসেবে প্রশ্নবোধক চিহ্নের অধিক ব্যবহার লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া কমা, সেমিকোলন ইত্যাদি বিরতিচিহ্নের সাহায্যে কবিতাটি ক্রমশ সমাপ্তির দিকে অগ্রসর হয়েছে।

শব্দের ব্যবহার : ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে জীবনের রুক্ষ বাস্তবতা উপস্থাপনে সুললিত কাব্যিক শব্দের পরিবর্তে কথ্য শব্দ যেমন- ‘ভাতকাপড়ে’, ‘বাপব্যাটা, ‘ধারদেনা’ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়েছে। ‘গঞ্জিকা’র মতো তৎসম শব্দের পাশাপাশি এখানে ‘রাত্তির’-এর মতো অর্ধতৎসম শব্দেরও ব্যবহার আছে। এ ছাড়া তদ্ভব, দেশি-বিদেশি শব্দ এবং শব্দদ্বৈতের ব্যবহারও আলোচ্য কবিতায় পরিলক্ষিত হয়েছে। দলবৃত্ত ছন্দে রচিত কবিতাটিতে অলংকারের ক্ষেত্রে অন্ত্যানুপ্রাসই চোখে পড়ে। বিষয়বস্তুর সঙ্গে শিল্প-আঙ্গিক একীভূত হয়ে কবিতাটিকে বিশিষ্ট করেছে।

Class 11th All Semester Question and Answer – একাদশ শ্রেণীর সমস্ত সেমিস্টার প্রশ্নউত্তর

আরোও দেখুন:-

Class 11 All Subjects 1st Semester Question and Answer Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 All Subjects 2nd Semester Question and Answer Click here

Class 11 Suggestion 2025 (Old) – একাদশ শ্রেণীর সাজেশন ২০২৫

আরোও দেখুন:-

Class 11 Bengali Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 English Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Geography Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 History Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Political Science Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Education Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Philosophy Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Sociology Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Sanskrit Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 All Subjects Suggestion 2025 Click here

একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 11th Bengali Question and Answer / Suggestion / Notes Book

আরোও দেখুন :-

একাদশ শ্রেণীর বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here

FILE INFO : নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer with FREE PDF Download Link

PDF File Name নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer PDF
Prepared by Experienced Teachers
Price FREE
Download Link  Click Here To Download
Download PDF Click Here To Download

নুন (কবিতা) অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

Update

[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]

[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]

Info : নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর

 Class 11 Bengali Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Eleven XI (Class 11th) Bengali Question and Answer Suggestion 

” নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Eleven XI / WB Class 11 / WBCHSE / Class 11 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB Class 11 Exam / Class 11th / WB Class 11 / Class 11 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( একাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন / একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Bengali Suggestion / Class 11 Bengali Noon Question and Answer / Class 11 Bengali Suggestion / Class-11 Pariksha Bengali Suggestion / Bengali Class 11 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / Class 11 Bengali Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (Class 11 Bengali Suggestion / West Bengal Eleven XI Question and Answer, Suggestion / WBCHSE Class 11th Bengali Suggestion / Class 11 Bengali Noon Question and Answer / Class 11 Bengali Suggestion / Class 11 Pariksha Suggestion / Class 11 Bengali Exam Guide / Class 11 Bengali Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / Class 11 Bengali Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Bengali Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।

নুন (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর 

নুন (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | নুন (কবিতা) Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।

নুন (কবিতা) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির বাংলা 

নুন (কবিতা) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | নুন (কবিতা) Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer Question and Answer, Suggestion 

একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) | একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) | পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) | একাদশ শ্রেণীর বাংলা সহায়ক – নুন (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । Class 11 Bengali Noon Question and Answer, Suggestion | Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion | Class 11 Bengali Noon Question and Answer Notes | West Bengal Class 11th Bengali Question and Answer Suggestion. 

একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE Class 11 Bengali Question and Answer, Suggestion 

একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | নুন (কবিতা) । Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion.

WBCHSE Class 11th Bengali Noon Suggestion | একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা)

WBCHSE Class 11 Bengali Noon Suggestion একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । নুন (কবিতা) | Class 11 Bengali Noon Suggestion একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।

Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestions | একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) | একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর 

Class 11 Bengali Noon Question and Answer একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর Class 11 Bengali Noon Question and Answer একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । 

WB Class 11 Bengali Noon Suggestion | একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) সাজেশন 

Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – নুন (কবিতা) সাজেশন । Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।

West Bengal Class 11 Bengali Suggestion Download WBCHSE Class 11th Bengali short question suggestion . Class 11 Bengali Noon Suggestion download Class 11th Question Paper Bengali. WB Class 11 Bengali suggestion and important question and answer. Class 11 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।

Get the Class 11 Bengali Noon Question and Answer by Bhugol Shiksha .com

Class 11 Bengali Noon Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 11 Bengali Suggestion with 100% Common in the Examination .

Class Eleven XI Bengali Noon Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Exam 

Class 11 Bengali Noon Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Eleven XI Bengali Suggestion is provided here. Class 11 Bengali Noon Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here. 

নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer 

  অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” নুন (কবিতা) একাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Bengali Noon Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।