শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer : শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই West Bengal WBCHSE Class 11th Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer, Suggestion, Notes | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – থেকে রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 11th Eleven XI Philosophy Examination – পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর দর্শন পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। একাদশ শ্রেণীর দর্শন পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন (শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer) গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।
তোমরা যারা শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো।
রাজ্য (State) | পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) |
বোর্ড (Board) | WBCHSE, West Bengal |
শ্রেণী (Class) | একাদশ শ্রেণী (WB Class 11th) |
বিষয় (Subject) | একাদশ শ্রেণীর দর্শন (Class 11 Philosophy) |
অধ্যায় (Chapter) | শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা (Shrimad Bhagwat Geeta) |
[একাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE Class 11th Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer
বিশ্লেষণধর্মী | শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Short Question and Answer :
1. গীতায় কর্ম কথাটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? আলোচনা করো?
Ans:
গীতায় কর্ম কথাটির অর্থ:
গীতায় কর্ম ‘নিষ্কাম’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। গীতার দ্বিতীয় অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন-
“যোগস্থ কুরু কর্মাণি সঙ্গং ত্যত্ত্বা ধনঞ্জয়।
সিদ্ধ্যসিদ্ধ্যোঃ সমো ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্যতে।।” (২/৪৮)
শ্লোকটির তিনটি অংশ –
শ্লোকটির ব্যাখ্যা তিনটি অংশে বিশ্লেষণ করা যায়।
প্রথম অংশ- যোগস্থ হয়ে কর্ম করবে।
দ্বিতীয় অংশ – আসক্তি ত্যাগ করে কর্ম করবে।
তৃতীয় অংশ – সিদ্ধি ও অসিদ্ধিকে তুল্যজ্ঞান করবে। এক্ষেত্রে ‘যোগ’ বলতে সিদ্ধি ও অসিদ্ধিতে সমত্বজ্ঞানকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তৃতীয় অংশটি প্রথম অংশের সম্প্রসারণ মাত্র। দ্বিতীয় অংশতে ‘সঙ্গ’ অর্থাৎ আসক্তি ত্যাগ করার কথা বলা হয়েছে। কর্তৃত্বের অভিনিবেশ ত্যাগ করে ‘ঈশ্বর কর্তা’ এইরূপ জেনে কর্ম করতে হবে।
শ্রীকৃষ্ণের নিষ্কাম কর্ম বিষয়ক উপদেশ –
নিষ্কাম কর্মযোগ বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ এই অধ্যায়ে অর্জুনকে বলেছেন-
(ক) নিষ্কাম কর্মযোগে প্রচেষ্টার বিনাশ হয় না। বিপরীত ফল হিসেবে কোনো পাপের উৎপত্তি হয় না।
(খ) কাম্যকর্ম সম্পূর্ণ না হলে, অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত সম্পাদন না করলে তা ব্যর্থ হয়ে যায়। কিন্তু নিষ্কাম কর্ম আংশিকভাবে সম্পন্ন হলেও তা কার্যকরী হয়। নিষ্কাম কর্মযোগের অনুসরণে যদি অল্পসংখ্যক কর্মও করা যায় তাহলে সেই কর্মও কর্মীকে মুক্তির পথে নিয়ে যাবে।
(গ) নিষ্কাম কর্মযোগে কর্মটি ক্ষুদ্র কি বৃহৎ, লঘু কি গুরু তা বিবেচনা করার । দরকার নেই। রাজা বা মন্ত্রীর কর্ম অথবা শ্রমিকের কর্ম, ব্রাহ্মণের যাগ-যজ্ঞাদি আর শূদ্রের সেবাকর্ম সবই একই রকম। শূদ্রও যদি ফলের আকাঙ্ক্ষা না করে স্বধর্ম পালনের দ্বারা কর্ম করেন, তবে মুক্তির পথে অগ্রসর হতে পারবেন।
(ঘ) নিষ্কাম কর্মের সাধন মহৎ ভয় থেকে ত্রাণ করে। মহৎ ভয় বলতে জন্ম-মৃত্যুর ভয়, বিত্তনাশের ভয়কে বোঝায়, সকল প্রকার ভয় থেকে নিষ্কাম কর্মযোগী রক্ষা পেয়ে থাকেন।
2. গীতায় বর্ণিত কর্মযোেগ ধারণাটি ব্যাখ্যা করো?
Ans:
কর্মযোগ ;
‘কর্ম’ ও ‘যোগ’- এই দুটি শব্দ যুক্ত হয়ে ‘কর্মযোগ’ শব্দটি নিষ্পন্ন হয়েছে। শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতায় ‘কর্মযোগ’ শব্দটিকে কর্মের কৌশল অর্থে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কর্মযোগ বলতে কর্মের সেই পদ্ধতি বা প্রণালীকে বোঝানো হয়েছে যেখানে কর্মের সিদ্ধি-অসিদ্ধি, লাভ-ক্ষতি, সুখ-দুঃখ প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রে সমমনোভাবাপন্ন হয়ে উদাসীন ও নিরাসক্ত থেকে নিষ্কামভাবে ও নিঃস্বার্থভাবে কর্ম সম্পাদন করা হয়। ভগবদ্গীতায় শ্রীকৃষ্ণ কর্মযোগ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বারবার বলেছেন কর্ম ফললাভের উপায় নয়, কর্মই লক্ষ্য।
গীতায় কর্মযোগের ধারণা –
শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বরকেই সমস্ত জীবের স্রষ্টা ও পরিচালক বলে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ ঈশ্বরকে যন্ত্রী ও সমস্ত মানুষকে যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঈশ্বর আমাদের সকল কর্মের নিয়ামক। তাই গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, আমরা কর্ম করতে পারি; কর্মে আমাদের অধিকার আছে। কিন্তু যেহেতু আমরা কর্মের প্রকৃত কর্তা নই, তাই কর্মফলের প্রতি আমাদের কোনো আকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত নয়।
কর্মযোগের শিক্ষা এই যে, আমাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়, সমস্ত কর্মের পশ্চাতে আত্মা আছে। এই আত্মা দেহ, মন ও ইন্দ্রিয়াদি থেকে স্বতন্ত্র। অথচ দেহ-ইন্দ্রিয়াদি আত্মায় অধিষ্ঠিত থেকেই নিজ নিজ কর্ম সম্পাদন করে। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে সূর্য যেমন সকল বস্তুকে প্রকাশিত করলেও ঐ সকল বস্তুর দোষ-গুণে লিপ্ত হয় না, সেইরকম আত্মাও জীবের কোনো কর্মে লিপ্ত হন না।
গীতায় কর্মযোগের তিন প্রকার ব্যাখ্যা
গীতায় নিষ্কাম কর্ম বা কর্মযোগের তিন প্রকার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
- প্রথম ব্যাখ্যা: “সমত্বম্ যোগঃ উচ্যতে” (২/৪৮), অর্থাৎ যোগী বা স্থিতধী ব্যক্তি কখনোই কর্মের সফলতায় বা বিফলতায় আনন্দিত বা বিষাদগ্রস্ত হন না, তাঁর মনে একই ভাব বর্তমান থাকে।
- দ্বিতীয় ব্যাখ্যা: “যোগঃ কর্মসু কৌশলম্” (২/৫০), অর্থাৎ যোগ হল একপ্রকার কৌশল বা কর্মপ্রণালী যা সফলতায় ও বিফলতায় সমভাব বজায় রেখে পরমগতির দিকে ধাবিত হয়। একে কৌশল বলা হয়েছে এই কারণে যে, কর্ম স্বভাবতই পাপ বা পুণ্য উৎপন্ন করে আত্মার বন্ধনের কারণ হয়। কিন্তু এই কর্মকে ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জনপূর্বক অনুষ্ঠানের দ্বারা মুক্তির উপায়ে পর্যবসিত করা সম্ভব।
- তৃতীয় ব্যাখ্যা: “যোগঃ দুঃখ সংযোগ বিয়োগঃ” (৬/২৩), অর্থাৎ যোগ হল সর্বপ্রকার দুঃখ থেকে বিযুক্ত হওয়া, যা একমাত্র সম্ভবপর হয় দুঃখ ও সুখের সমভাব বর্তমান থাকলে।
3. নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে সেবিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী উপদেশ দেন?
Ans:
নিষ্কাম কর্মযোগ বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ :
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে তা বোঝাতে গিয়ে কিছু উপদেশ দেন। যথা-
নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধির উপদেশ –
নিষ্কাম কর্মযোগীদের স্থির নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধি থাকে, কিন্তু যাদের চিত্ত অস্থির তাদের বুদ্ধি অনন্ত ও বহুশাখাবিশিষ্ট হয়ে থাকে। কর্ম যে বুদ্ধির দ্বারা যুক্ত হয়ে যোগে পরিণত হয় তা স্থির বুদ্ধি। এই বুদ্ধি এক দিকেই ধাবিত হয়, বহুদিকে ধাবিত হয় না। এই বুদ্ধি সত্ত্বগুণযুক্ত এবং কখনোই ব্যভিচারী হয় না। লক্ষ্য সর্বদা স্থির থাকে বলে ব্যক্তি কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। যাদের বুদ্ধি এক নয় বহু শাখাবিশিষ্ট এবং অনন্ত, সেসব ব্যক্তির চিত্ত স্থির নয়। তাই অনন্ত কামনার ফলে তারা নিষ্কাম কর্মের সাধন করতে পারেন না। একারণে নিষ্কাম কর্ম সাধন করতে হলে বুদ্ধি এক এবং স্থির হওয়া প্রয়োজন।
নিৗস্ত্রগুণ্য হওয়ার উপদেশ –
নিষ্কাম কর্মযোগীকে নিস্ত্রৈগুণ্য হওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। ‘নিস্ত্রৈগুণ্য’ শব্দটির অর্থ হল ত্রিগুণের অতীত। ত্রিগুণ বলতে সত্ত্ব, রজো ও তমোকে বোঝানো হয়েছে। ত্রিগুণাত্মিকা প্রকৃতির বশে থাকলে কামনা-বাসনা ত্যাগ করে নিষ্কাম কর্ম করা যাবে না। বৈদিক কর্মগুলি কাম্যকর্ম হওয়ায় ফল দান করে। সেগুলি ত্রিগুণাত্মক। তাই এই কর্ম ত্যাগ করে নিস্ত্রৈগুণ্য হতে হবে।
নির্দ্বন্দ্ব হওয়ার উপদেশ –
কীভাবে ত্রিগুণাতীত হওয়া যাবে সে কথা বলতে গিয়ে শ্রীকৃয় নির্ধন্দ্ব হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন সুখ- দুঃখ, লাভ-অলাভ, রাগ-দ্বেষ, দ্বন্দ্বভাব দূর করতে হবে। সমত্ববুদ্ধিযুক্ত হয়ে স্বধর্মোচিত কর্ম সম্পাদন করে নির্দ্বন্দ্বী হতে হবে। যতদিন চিত্তে দ্বন্দ্বভাব থাকবে ততদিন চিত্ত শান্ত ও সমাহিত হতে পারবে না।
নিত্যসত্ত্বা হওয়ার উপদেশ –
‘নিত্যসত্ত্বস্থ’ শব্দটির অর্থ হল সর্বদা সত্ত্বগুণে অবস্থিত থাকা। সত্ত্বগুণের দ্বারা রজো এবং তমোকে অভিভূত করতে পারলে ত্রিগুণের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব বা বিরোধ আছে, তা আর থাকবে না। চিত্ত তখন সম ও শান্ত হয়ে যাবে।
নির্যোগক্ষেস হওয়ার উপদেশ –
নির্যোগক্ষেম- শব্দের অন্তর্গত যোগ হল অপ্রাপ্ত বস্তুর লাভ এবং ক্ষেম হল প্রাপ্ত বস্তুর রক্ষা। ব্যক্তি নিষ্কাম কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে কোনো অপ্রাপ্ত বস্তু যেমন লাভ করবেন না তেমনি প্রাপ্তবস্তুর রক্ষা করবেন না। ব্যক্তিকে দুটি ব্যাপারে অনাসক্ত থাকতে হবে এবং আত্মস্থ অর্থাৎ অপ্রমত্ত থেকে স্থির ও অচঞ্চল হয়ে নিষ্কাম কর্মের সাধনায় ব্রতী হতে হবে।
ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জনের উপদেশ –
নিষ্কাম কর্মীকে কর্ম সম্পাদনের সময়স মনে রাখতে হবে কর্মেই তার অধিকার; কর্মফলে কোনো অধিকার নেই। কর্মফলের আকাঙ্ক্ষা যেন তার কর্মের প্রবর্তক না হয়।
4. কর্মণ্যেবাধিকারন্তে মা ফলেষু কদাচন এই শ্লোকটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো? কীরূপ কর্মকে নিষ্কাম কর্ম বলা যায় না?
Ans:
শ্লোকটির তাৎপর্য :
ভগবদ্গীতায় ‘সাংখ্যযোগ’ (২য়) অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মের ধারণা সম্বন্ধে উপদেশ দেন। নিষ্কাম কর্মের সাধন কীভাবে সম্ভব তা বোঝাতে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ এই শ্লোকটির উল্লেখ করেন।
“কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেযু কদাচন।
মা কর্মফলহেতুর্ভূমা তে সঙ্গোহত্বকর্মণি।।” (২/৪৭)
শ্লোকটির অর্থ –
এই শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন কেবল কর্মেই তোমার অধিকার। সেই কর্মের ফলে (কর্মফল) তোমার কোনো অধিকার নেই। তাই কর্মফলের হেতু হোয়ো না, আবার অকর্মেও যেন তোমার আসক্তি না থাকে। অর্থাৎ ফললাভের আকাঙ্ক্ষায় তুমি কর্ম কোরো না। আবার কর্ম না করার প্রবৃত্তিও ঠিক নয়।
শ্লোকটির ব্যাখ্যা –
অর্জুন যখন যুদ্ধক্ষেত্রে নৈতিক দ্বন্দ্বের সম্মুখীন হলেন এবং স্বজনবধের আশঙ্কায় অস্ত্রত্যাগ করলেন, তখন শ্রীকৃষ্ণ এই শ্লোকের অবতারণা করেন। শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে বলেন, কর্মে তোমার অধিকার আছে তাই কর্ম করা তোমার আয়ত্তাধীন। কিন্তু কর্মফলের উপর তোমার কোনো অধিকার নেই কারণ ফললাভ তোমার আয়ত্তের মধ্যে নয়। সেকারণে ফলের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে কর্ম করতে হবে। আকাঙ্ক্ষাযুক্ত কর্ম বা সকাম কর্ম সম্পাদন করলে আমরা কর্মফলের দ্বারা আবদ্ধ হব। সুতরাং নিষ্কাম কর্মই সম্পাদন করা উচিত। নিষ্কাম কর্ম সম্পাদন করলে কর্মের ফলে কোনো আসক্তি থাকে না। ফলস্বরূপ কর্মের ফলভোগ করার প্রশ্নই আসে না।
জ্ঞানমার্গী ও কর্মমার্গী –
শ্রীকৃষ্ণের নীতিসম্মত ধর্মতত্ত্বের মূলে আছে প্রাচীন ভারতের সেই সময়ের দুটি বিরুদ্ধ মনোভাব- জ্ঞানমার্গী সাংখ্য তত্ত্ব এবং কর্মমার্গী মীমাংসক তত্ত্ব। বেদের জ্ঞানমার্গকে যারা অনুসরণ করেন তারা কর্মমার্গকে বন্ধনের কারণ বলে মনে করেন। তারা আত্মজ্ঞানলাভকে মোক্ষলাভের একমাত্র পথ বলে মনে করেন। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে এই মত অনুসরণ করে কর্মত্যাগ করার উপদেশ দেননি। অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ জ্ঞানমার্গ ও কর্মমার্গ উভয়কেই অনুসরণের কথা বলেন।
শ্লোকটির মূলকথা –
শ্রীকৃষ্ণের মতে আত্মজ্ঞানলাভ যেমন প্রয়োজন কর্মসম্পাদনও তেমনই প্রয়োজন। কর্মমার্গী মীমাংসকেরা ইহলোকে পশু, পুত্র এবং পরলোকে স্বর্গসুখ প্রদান করতে পারে এমন কাম্যকর্মকে একমাত্র কর্তব্যকর্ম বা ধর্মরূপে উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে বেদের কর্মকাণ্ডই সার্থক। কর্মবাদীদের এই ধর্মমত খুব শীঘ্রই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ধর্মের আসল লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে আড়ম্বরের সঙ্গে যাগযজ্ঞের অনুষ্ঠান হতে থাকে। ধর্মের নামে শুরু হয় প্রাণীহত্যা। ফলে ধর্মের গ্লানি এবং অর্ধমের অভ্যুত্থান হয়। তখন ধর্ম সংস্থাপনের জন্য শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয়।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কর্মমার্গ অনুসরণ করে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হতে বলেন। আর সেই কর্ম হল নিষ্কাম কর্ম। নিষ্কাম কর্ম বিষয়ক এই শ্লোকের মূল তাৎপর্য হল- (ক) কর্ম করো, (খ) ফলের কামনা ত্যাগ করে কর্ম করো, (গ) ফলের কামনায় কর্মে প্রবৃত্ত হবে না। (ঘ) ফলের কামনায় কর্মে নিবৃত্ত হবে না। (ঙ) লাভ-অলাভ, জয়-পরাজয়কে তুল্যজ্ঞান করে যোগস্থ হয়ে কর্ম করো।
কীরূপ কর্ম নিষ্কাম কর্ম নয় –
উদাহরণের সাহায্যে কীরূপ কর্মকে নিষ্কাম বলা যায় না তা বোঝানো যায়- পরোপকার নামক অনুষ্ঠেয় কর্মকে অনেক ক্ষেত্রে নিষ্কাম কর্ম বলা যায় না। কারণ অনেকে পরের উপকার এই অভিপ্রায়ে করে থাকে যে আমি যার উপকার করলাম সে আমার প্রতি উপকার করবে। এটি সকাম কর্ম। এটি বিধি বহির্ভূত।
অনেকে এই অভিপ্রায়ে পরোপকার করে যে এতে আমার পুণ্য সঞ্চয় হবে এবং তার ফলে স্বর্গাদি লাভ হবে। এটিও সকাম কর্ম। এটি বিধি বহির্ভূত।
অনেকে এইরূপ অভিপ্রায়ে পরোপকার করে থাকে যে ঈশ্বর তার প্রতি প্রসন্ন হয়ে তার মঙ্গল করবেন। কিন্তু এটিও নিষ্কাম কর্ম নয়। এটি সকাম এবং এই বিধির বহির্ভূত।
5. গীতায় বর্ণিত নিষ্কাম কর্মতত্ত্ব ব্যাখ্যা করো?
Ans:
নিষ্কাম কর্মতত্ত্ব :
যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুন আত্মীয়স্বজনদের হত্যা ও যুদ্ধের ভয়াবহতা কল্পনা করে দিশেহারা হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে অনুরোধ করলেন তাঁকে সঠিক পথের নির্দেশ দিতে। অর্জুনের এই নৈতিক সমস্যার সমাধানের জন্য ও মোহ দূর করার উদ্দেশ্যে শ্রীকৃষ্ণ নিষ্কাম কর্মতত্ত্বের যে উপদেশ দেন তা নিম্নে আলোচিত হল-
নিষ্কাম কর্ম –
গীতায় যেসকল কর্মের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল সকাম কর্ম ও নিষ্কাম কর্ম। সকাম কর্ম হল কামনাজাত কর্ম এবং কামনা হল কর্মান্তে কর্মফল লাভের আকাঙ্ক্ষা। ফললাভের প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকার কারণে কর্মকর্তাকে সুখ, দুঃখ ভোগ করতে হয়। কারণ কর্মের প্রত্যাশিত ফল পেলে কর্মকর্তার সুখ বা আনন্দ হয়। আর তা না পেলে দুঃখ বা বেদনা উৎপন্ন হয়। কিন্তু নিষ্কাম কর্মের সঙ্গে কোনো ফলাকাঙ্ক্ষা বা কামনা-বাসনা যুক্ত থাকে না। এই কারণে তা সুখ-দুঃখাদি উৎপন্ন করে না।
নিষ্কাম কর্মের সূত্রাবলি –
গীতায় নিষ্কাম কর্ম প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ফলাকাঙ্ক্ষারহিত হয়ে আমরা তখনই কাজ করতে পারি যখন আমরা আমাদের কর্মকে ঈশ্বরে সমর্পণ করি। কর্তৃত্বের অভিমান না থাকলে কর্মফলে আসক্তি চলে যায় এবং নিষ্কাম কর্ম করা সম্ভব হয়। গীতায় নিষ্কাম কর্মের ব্যাখ্যায় যে সূত্রগুলি পাওয়া যায়, তা হল- (ক) শুধু কর্মেই তোমার অধিকার আছে, (খ) কর্মফলে তোমার কোনো অধিকার নেই, (গ) কর্মফলের আকাঙ্ক্ষা যেন কোনো কর্মের প্রবর্তক না হয় এবং (ঘ) কর্মহীনতায় যেন আসক্তি না থাকে।
নিষ্কাম কর্মকৌশল –
গীতায় নিষ্কাম কর্মের উপস্থাপনা প্রসঙ্গে দুই প্রকার কর্মকৌশলের কথা বলা হয়েছে। সেগুলি হল-
নিরবচ্ছিন্ন কর্মের অপরিহার্যতা: কেউই ক্ষণকালমাত্র কাজ না করে থাকতে পারে না। নিঃশেষে কর্ম ত্যাগ করা অসম্ভব, কারণ তাতে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। গীতায় কর্মহীনতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া মানুষের পক্ষে কর্ম ত্যাগ করা সম্ভব নয়।
কর্মফলে আসক্তিত্যাগ: গীতায় অপর একটি কর্ম কৌশলের কথা বলাহয়েছে, তা হল কর্মফলে আসক্তি ত্যাগ। এই আসক্তির কারণ হিসেবে বলা যায় যে মানুষ নিজেকে কর্মের সঙ্গে একাত্ম করে ফেলে এবং তার ফলেই দুঃখবোধ জন্মায়। যে কর্মপ্রণালী মানুষকে সর্বপ্রকার কর্মফলকে ত্যাগ করতে সাহায্য করে তাই হল কর্মযোগ বা নিষ্কাম কর্ম।
নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ –
গীতায় নিষ্কাম কর্ম বিষয়ে যে লক্ষণের কথা বলা হয়েছে তা নিম্নরূপ-
দ্বন্দ্বাতীত হওয়া: নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ হল দ্বন্দ্বাতীত হওয়া। দ্বন্দ্বাতীত হওয়ার অর্থ হল কর্ম করার ক্ষেত্রে সমস্ত দ্বন্দ্ব অতিক্রম করতে হবে, সমস্ত প্রকার আসক্তি ত্যাগ করতে হবে এবং অহংবোধ ও মমত্ববোধ পরিত্যাগ করতে হবে।
আসক্তি ত্যাগ: নিষ্কাম কর্মের আর একটি লক্ষণ হল আসক্তি ত্যাগ। গীতায় বর্ণনা করা হয়েছে যে, নিষ্কাম কর্মযোগী কর্ম করেন আসক্তি ত্যাগ করে আত্মশুদ্ধির জন্য। আসক্তি ত্যাগের ফলে তিনি বন্ধনমুক্ত হন। যদিও গীতায় নিঃশেষে কর্মত্যাগ করার কথা বলা হয়নি। কারণ তার ফলে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। তাই কর্মত্যাগের পরিবর্তে কামনা ত্যাগের কথা বলা হয়েছে। শুধুমাত্র কামনা ত্যাগ নয়, কামনা ত্যাগপূর্বক কর্তব্যকর্মের অনুষ্ঠান করাকেই গীতায় ধর্ম বলে উল্লেখ করা হয়েছে, এ প্রসঙ্গে গীতায় বলা হয়েছে-
“কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেযু কদাচন।
মা কর্মফলহেতুর্ভূমা তে সঙ্গোহত্ত্বকর্মণি।।” (২/৪৭)
এর অর্থ হল, ‘কর্মে মাত্র তোমার অধিকার আছে, ফলে তোমার অধিকার নেই; কর্মফলের হেতু হয়ো না, অকর্মেও যেন তোমার আসক্তি না থাকে’।
কর্তৃত্বাভিমানত্যাগ: নিষ্কাম কর্মের জন্য প্রয়োজন কর্তৃত্বাভিমানত্যাগ। ‘আমাকে’ এই প্রকার কর্মের এই ফল পেতে হবে-এটাই হল কর্তৃত্বাভিমান। ‘আমি কর্তা’, ‘আমি ভোক্তা’-এই প্রকার কর্তৃত্বাভিমান থাকলে নিষ্কাম কর্ম করা সম্ভব নয়।
যোগস্থ হওয়া: গীতায় নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, নিষ্কাম কর্মী যোগস্থ হয়ে সকল কাজ সম্পাদন করে থাকেন। কামনা-বাসনা, কর্তৃত্বাভিমান পরিত্যাগ করে নিজ বুদ্ধিকে ঈশ্বরে সমর্পণ করে একনিষ্ঠ চিত্তে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করতে হবে, এমন অবস্থাই হল যোগস্থ হওয়া। গীতায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-
“যোগস্থঃ কুরু কর্মাণি সঙ্গং ত্যত্ত্বা ধনঞ্জয়।
সিদ্ধ্যসিদ্ধ্যোঃ সমো ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্যতে।।” (২/৪৮)
এখানে ‘যোগস্থ’ কথাটির একাধিক অর্থ করা হয়ে থাকে। সেগুলি হল- (ক) কেবলমাত্র ঈশ্বরার্থে বা ঈশ্বরের প্রতি কর্ম করা, (খ) নিষ্কাম কর্মযোগে স্থিত হয়ে কর্ম করা এবং (গ) সমত্ববুদ্ধিযুক্ত হয়ে কর্ম করা।
ভগবৎপ্রীতির নিমিত্তে কর্ম: কর্ম মাত্রেরই একটি উদ্দেশ্য থাকে এবং সেই উদ্দেশ্যের দ্বারা প্রেরিত হয়ে সাধক কর্ম করে। এই উদ্দেশ্য দুই প্রকারের- (ক) নিজের ইচ্ছা বা কামনার পূরণ এবং (খ) নিজের ইচ্ছাকে বর্জন করে ঈশ্বরের আদেশ পালন। নিষ্কাম কর্মী ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এবং নিজের ইচ্ছাকে ভগবৎ ইচ্ছার সঙ্গে একীভূত করে ভগবানের প্রীতির নিমিত্ত কর্ম করে থাকে। আর এর নামই বুদ্ধিযোগ। এই যোগ সংঘটিত না হলে নিষ্কাম কর্ম করা অসম্ভব। এইজন্য বলা হয়েছে “যোগস্থঃ কুরু কর্মাণি”। এটিই হল নিষ্কাম কর্মযোগের মূলকথা।
যজ্ঞার্থ কর্ম: গীতায় নিষ্কাম কর্মকে বলা হয়েছে যজ্ঞার্থ কর্ম। যজ্ঞরূপ যে কর্ম করা হয় সেই কর্মের ফল কোনো বন্ধন সৃষ্টি করে না। যদি কোনো কর্ম উদ্দেশ্য পূরণে বা সিদ্ধির জন্য করা হয় তবে সেই কর্মকে ভোগার্থ কর্ম বলা হয়। কিন্তু যদি ত্যাগের জন্য কোনো কর্ম করা হয় তবে সেই কর্ম হল যজ্ঞার্থ কর্ম।
ত্রিগুণরহিত কর্ম: গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্ম প্রসঙ্গে ত্রিগুণরহিত ও নিত্যসত্ত্বস্থ ও যোগক্ষেমরহিত হয়ে কর্ম করার উপদেশ দিয়েছেন। জাগতিক সবকিছু, মানুষের সমুদয় কর্ম ও কর্মফল, মানব মনের সকল প্রকার চিন্তাভাবনা ইত্যাদি হল সত্ত্ব, রজো ও তমো- এই ত্রিগুণের কার্য। ত্রিগুণাত্মক কর্মের ফলে মোক্ষলাভ হয় না, কারণ তা আত্মাকে নিরন্তর সংসারচক্রে আবর্তিত করে। একারণে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যথার্থ আত্মজ্ঞান লাভ করে নিস্ত্রৈগুণ্য হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন।
‘নিত্যসত্ত্বস্থ’ শব্দটির অর্থ হল সর্বদা সত্ত্বগুণে অবস্থিত থাকা। সত্ত্বগুণের দ্বারা রজো ও তমোগুণকে পরাভূত করলে ত্রৈগুণ্য বিরোধের অবসান হয় এবং তখন আত্মার স্বরূপকে উপলব্ধি করা যায়। আত্মার এই অবস্থাকে বলা নিস্ত্রৈগুণ্য অবস্থা।
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে আত্মজ্ঞান লাভ করে ‘যোগক্ষেমরহিত’ বা নির্যোগক্ষেম হওয়ার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। অলব্ধ বস্তুর লাভকে ‘যোগ’ এবং লব্ধ বস্তুর সংরক্ষণকে বলে ‘ক্ষেম’। কিন্তু কাম্যবস্তু লাভ ও তাকে সংরক্ষণ করা আত্মজ্ঞানীর লক্ষ্য নয়। কারণ, তিনি জানেন যে, পুরুষ বা আত্মা স্বরূপত নির্লিপ্ত। অতএব পাওয়া না পাওয়ার হিসেব না করে কর্মফলের বাসনাকে সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করে আত্মস্থ হয়ে নিষ্কাম কর্ম করার উপদেশ শ্রীকৃষ্ণ দিয়েছেন।
এভাবেই আত্মজ্ঞানের সঙ্গে যে কর্ম করার উপদেশ শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দিয়েছেন তাই হল গীতায় বর্ণিত নিষ্কাম কর্মতত্ত্ব।
6. কর্মবাদ কি মোক্ষপ্রাপ্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?
অথবা, কর্মবাদের সঙ্গে মোক্ষপ্রাপ্তির কি কোনো বিরোধ আছে?
Ans:
কর্মবাদ কি মোক্ষপ্রাপ্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ –
সর্বজনীন নীতি হিসেবে এ কথা স্বীকার করা হয় যে ‘কর্মমাত্রই জীবকে ফলভোগ করতেই হবে’। কোনো জীবের পক্ষেই কর্মফলকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই কর্মফল ভোগ করার জন্যই জীবকে পুনঃপুন জন্মগ্রহণ করতে হয় এবং সংসার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। কর্মনিয়ম যদি অপ্রতিরোধ্য হয়, কর্মনিয়মকে যদি লঙ্ঘন করা না যায় তাহলে ভারতীয় নীতিশাস্ত্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়- ‘মোক্ষপ্রাপ্তি কীভাবে সম্ভব?’ ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে যারা চতুর্বর্গ পুরুষার্থকে স্বীকার করেন তারা মোক্ষকে পরমপুরুষার্থ বলেন। কর্মমাত্রই যদি ফল দান করে তাহলে জন্মজন্মান্তরে সেই ফলের দ্বারা আমরা আবদ্ধ হয়ে থাকব। সুতরাং পরমপুরুষার্থ মোক্ষকে জীব কোনোভাবেই লাভ করতে পারবে না। যে ব্যক্তি সৎ কর্ম সম্পাদন করে তাকেও ফললাভের জন্য পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয়, ঠিক যেমন অসৎ কর্ম যে ব্যক্তি সম্পাদন করে তাকে অসৎ কর্মের ফলভোগের জন্য জন্মগ্রহণ করতে হয়। অর্থাৎ পুণ্য সঞ্চয় করেও সৎ কর্মের সম্পাদন করেছেন যে ব্যক্তি, সংসার দশা থেকে তিনিও মুক্তি লাভ করতে পারেন না। তাহলে কি কর্মনিয়ম মোক্ষপ্রাপ্তিকে প্রতিহত করে? মোক্ষের ধারণা কি কর্মবাদের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ?
ব্যাখ্যা –
এই প্রশ্নের সমাধানের জন্যই ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে নিষ্কাম কর্মের ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মতত্ত্বের উপদেশ দিয়েছেন। কোনো ফলের আকাঙ্ক্ষা করে যখন কর্ম সম্পাদন করা হয়, তখন সেটিকে সকাম কর্ম বলে। সকাম কর্ম সম্পাদন করলে মানুষকে কর্মের ফলভোগের জন্য বারবার জন্মগ্রহণ করতে হয় এবং বন্ধনদশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয় না। অপরপক্ষে নিষ্কাম কর্ম করলে ফলের আকাঙ্ক্ষা থাকে না, তাতে যেমন কর্মফল সঞ্চিত হয় না, তেমন সঞ্চিত কর্মফল বিনষ্ট হয়। অহংবোধকে দূরে রেখে আত্মজ্ঞান উপলব্ধি হওয়ার পর ব্যক্তি কামনাশূন্য হয়ে যে কর্ম সম্পাদন করে তাই হল নিষ্কাম কর্ম। এই কর্মে কামনা থাকে না তাই ফল উৎপন্ন হয় না এবং ফললাভের জন্য জীবকে পুনরায় জন্মগ্রহণ ও সংসার বন্ধনচক্রে আবর্তিত হতে হয় না। নিষ্কাম কর্ম সম্পাদন করে জীব পুনর্জন্ম থেকে তথা সংসারদশা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারে। অর্থাৎ কর্মের নিয়ম কিন্তু নিষ্কাম কর্মের প্রতি প্রযোজ্য নয়। এইরূপ কর্ম, কর্মনিয়মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়।
সুতরাং বলা যায় যে কর্মবাদের সঙ্গে মোক্ষপ্রাপ্তির কোনো অসংগতি নেই।
7. ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা কীভাবে পরস্পর সম্পর্কিত তা ব্যাখ্যা করো?
Ans:
কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা :
ভারতীয় নীতিশাস্ত্রের একটি মৌলিক বিশ্বাস হল- সমগ্র বিশ্বজগৎ এক অমোঘ নৈতিক নিয়মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। জগতের উৎপত্তি ও গতির মূলে আছে এক শাশ্বত নৈতিক শক্তি। এই অমোঘ মৌলিক নিয়মকে অগ্রাহ্য করা যায় না। কর্মবাদ এবং কর্মনীতিতে বিশ্বাসের থেকে দেখা যায় জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস।
কর্মবাদ –
কর্মবাদ অনুসারে মানুষকে তার কৃতকর্মের ফল অবশ্যই ভোগ করতে হবে। কর্মনিয়ম বলে যে, ভালো-মন্দ সব কাজ ব্যক্তির জীবনে নির্দিষ্ট ফল দান করে। কাজেই ফলের কোনো বিনাশ নেই। এই নিয়মের দ্বারা আমরা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে অদৃষ্টগত ভিন্নতা লক্ষ করি এবং তার ব্যাখ্যা দিয়ে থাকি। জীবনের বৈচিত্র্য আমরা কর্মবাদের দ্বারাই ব্যাখ্যা করে থাকি। কেউ সুখী, কেউ দুঃখী, কেউ ধনী, কেউ নির্ধন, কেউ জ্ঞানী, কেউ মূর্খ অথচ তাদের হয়তো জন্ম হয়েছে একই পরিবেশে, তারা বড়ো হয়েছে একইসঙ্গে। এইরূপ ঘটনাকে আমরা কর্মবাদের দ্বারা ব্যাখ্যা করে থাকি। আমরা মনে করি সুকর্মের জন্য ব্যক্তি ভালো ফল পাবে। কিন্তু সে যদি কোনো মন্দ কর্ম করে থাকে, তাকে খারাপ ফল পেতে হবে।
জন্মান্তরবাদ –
কর্মবাদ বিশ্বাস করলে তার অবশ্যম্ভব পরিণতি হিসেবে জন্মান্তরবাদেও বিশ্বাস করতে হয়। কেন-না কখনো-কখনো কর্মনীতি অনুসারে মানুষের সুখ বা দুঃখ ভোগকে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি না, সেক্ষেত্রে অসংগতি দেখা যায়। দেখা যায় যে যারা ভালো লোক তারা এই জীবনে অত্যন্ত কষ্ট ভোগ করছেন। আবার যারা মন্দ ব্যক্তি তারা দিব্যি সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করছেন। এই অসংগতিকে ব্যাখ্যা করার জন্য জন্মান্তরবাদ স্বীকার করতে হয়।
কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের সম্পর্ক –
কর্মবাদ অনুসারে মানুষকে তার কৃতকর্মের ফলভোগ করতেই হবে। কিন্তু সেই ফলভোগ যদি ইহজীবনে না হয় তাহলে পরবর্তী জীবনে সেই ফলভোগ করতে হবে। অর্থাৎ নতুন এক জন্ম নিয়ে পূর্ব জীবনের কর্মফল ভোগের জন্য আবার তাকে এই জগতে আসতে হবে।
কর্মফল যেহেতু বিনষ্ট হয় না, তাই এই জীবনে না হলেও কোনো ভবিষ্যৎ জীবনে শুভ, অশুভ, পাপ ইত্যাদি সব নৈতিক মূল্য কর্মফলের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকে। এটিকে তাই বলা হয়েছে নৈতিক মূল্যের সংরক্ষণ নিয়ম। চার্বাক ভিন্ন অন্যান্য সব দর্শনেই কর্মবাদ স্বীকার করা হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নিষ্কাম কর্মের জন্য কোনো কর্মফল ভোগ করতে হয় না। এইরূপ কর্ম কোনো ফলের আশা না করেই সম্পাদন করা হয়। কেবল যেসব কর্ম আমরা ফলের আশা করে সম্পাদন করে থাকি সেই সকাম কর্মের জন্য জীবকে ফলভোগ করতে হয়।
8. কর্মের প্রকারভেদ আলোচনা করো?
Ans:
কর্মের প্রকারভেদ :
ভারতীয় দর্শনে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কর্মের প্রকারভেদ লক্ষ করা যায়। সেগুলি নিম্নরূপ-
ফলাকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে কর্মের প্রকার –
কর্মনিয়ম যদি অপ্রতিরোধ্য বা অলঙ্ঘনীয় হয় তাহলে মুক্তি বা মোক্ষলাভ কীভাবে সম্ভব? স্বভাবতই ভারতীয় নীতিশাস্ত্রবিদদের এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। কর্মবাদ যারা মানেন তারা ভারতীয় দর্শনে স্বীকৃত চারটি পুরুষার্থের মধ্যে মোক্ষকেই পরম বা শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ বলে স্বীকার করেছেন। এখন যদি কর্মমাত্রই ফলপ্রসবিনী হয় আর তার অবশ্যম্ভাবী পরিণতিরূপে জন্মান্তর ভোগ করতে হয় তাহলে অসৎ কর্মচারী অর্থাৎ অসাধু ব্যক্তিকে যেমন তার অসৎ কর্মের ফলভোগের জন্য আবারও জন্ম নিতে হবে, তেমনি সৎ কর্মচারী অর্থাৎ সাধু ব্যক্তিকেও তার ভালো কাজের ফলভোগের জন্য আবারও জন্ম নিতে হবে। আর তা যদি হয় তাহলে মোক্ষলাভ কীভাবে সম্ভব হবে? কর্মনিয়ম কি তাহলে মোক্ষলাভের পথে প্রতিবন্ধক? সংগত কারণেই তাই এই প্রশ্ন ওঠে যে মোক্ষের ধারণার সঙ্গে কর্মবাদের কি কোনো অসংগতি আছে?
উপরোক্ত এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরে ভারতীয় দার্শনিক সম্প্রদায় কর্মের দুটি বিভাগের উল্লেখ করেন- একটি হল ফলাকাঙ্ক্ষা-সহ সকাম কর্ম এবং অপরটি হল ফলাকাঙ্ক্ষাবর্জিত নিষ্কাম কর্ম।
সকাম কর্ম: যে কর্মে ফললাভের আকাঙ্ক্ষা থাকে বা ফলভোগের বাসনা থাকে তাকে বলা হয় সকাম কর্ম। ফলের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কোনো কাজ করলে বিষয়ের প্রতি অনুরাগ বা আসক্তি জন্মায়। ফলত সকাম কর্মের কর্তাকে পুর্নজন্ম গ্রহণ করতে হয়। কাজেই বন্ধনদশা থেকে মুক্তিলাভ তার আর হয় না।
নিষ্কাম কর্ম: যে কর্মে কোনো ফললাভের আকাঙ্ক্ষা থাকে না বা ফলভোগের কামনা থাকে না তাকে নিষ্কাম কর্ম বলে। কোনো কামনা বাসনা না থাকায় নিষ্কাম কর্ম কর্মফল সঞ্চয়ও করে না আবার সঞ্চিত কর্মফলকে বিনষ্টও করে। কাজেই নিষ্কাম কর্মের কর্তাকে তার কৃত নিষ্কাম কর্মের ফলভোগের জন্য পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয় না।
ফলভোগের ভিত্তিতে কর্মের প্রকার –
অনেক ভারতীয় দার্শনিক কর্মের ফলভোগকে কেন্দ্র করে কর্মকে আবার দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথা- আরব্ধ বা প্রারব্ধ কর্ম ও অনারব্ধ কর্ম।
আরব্ধ বা প্রারব্ধ কর্ম: পূর্ব জীবন ও বর্তমান জীবনের যেসব কৃতকর্মের ফলভোগ শুরু হয়েছে তাদের বলা হয় আরব্ধ কর্ম বা প্রারব্ধ কর্ম।
দঅনারব্ব কর্ম: পূর্ব জীবন ও বর্তমান জীবনে কৃত যেসব কর্মের ফলভোগ এখনও শুরু হয়নি তাকে অনারব্ধ কর্ম বলে।
আবার অনারব্ধ কর্ম দুইটি ভাগে বিভক্ত। যথা- প্রাক্তন বা সঞ্চিত কর্ম ও ক্রিয়মান বা সঞ্চয়মান কর্ম।
- প্রাক্তন বা সঞ্চিত কর্ম: যে কর্ম অতীতে সম্পাদন করা হয়েছে কিন্তু এখনও ফলপ্রদান করেনি সেই কর্মকে প্রাক্তন বা সঞ্চিত কর্ম বলে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে ফললাভের আশা নিয়ে অতীতে যে কর্ম সম্পাদন করা হয় তাই হল প্রাক্তন কর্ম বা সঞ্চিত কর্ম।
- ক্রিয়মান বা সঞ্চয়মান কর্ম: যে কর্ম বর্তমান জীবনে করা হচ্ছে কিন্তু তার ফলভোগ শুরু হয়নি, ভবিষ্যতে যার ফললাভ হবে তাকে বলে ক্রিয়মান বা সঞ্চয়মান কর্ম।
বৈদিক মতে কর্মের প্রকার –
বৈদিক মতে কর্মকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- নিত্য কর্ম, নৈমিত্তিক কর্ম, কাম্য কর্ম ও নিষিদ্ধ কর্ম।
নিত্য কর্ম: যে কর্ম অবশ্য কর্তব্য, যে কর্ম যাবজ্জীবন কর্তব্য, যে কর্ম না করলে পাপ হয়, তাই নিত্য কর্ম। যেমন- আহার গ্রহণ, সন্ধ্যাহ্নিক, উপাসনা প্রভৃতি কর্ম।
নৈমিত্তিক কর্ম: যে কর্ম বিশেষ ঘটনার নিমিত্ত করা হয়, তাই নৈমিত্তিক কর্ম। যেমন- সূর্যগ্রহণে গঙ্গাস্নান।
কাম্য কর্ম: যে কর্ম স্বর্গ বা অন্য সুখের কামনাপূর্বক সম্পাদিত হয়, তাই কাম্য কর্ম। যেমন- কৃতকারীরী যাগ, দশপূর্ণমাস যাগ প্রভৃতি কর্ম কাম্য কর্ম।
নিষিদ্ধ কর্ম: অন্য কোনো অনিষ্টের হেতু বলে শাস্ত্রে যেসব কর্ম করতে নিষেধ আছে, তাই নিষিদ্ধ কর্ম। যেমন- ব্রহ্মহত্যা, বৃথা হিংসা করা নিষিদ্ধ কর্ম। নিষিদ্ধ কর্ম করলে পাপ হয়। তাই এই কর্ম করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
9. ভারতীয় চিন্তাধারায় কর্মের গুরুত্ব কী?
Ans:
ভারতীয় চিন্তাধারায় কর্মের গুরুত্ব :
ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদ একপ্রকার গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক কার্যকারণবাদ। ব্যক্তি-জীবনের বৈষম্যকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করার জন্যই বাহ্যজগতের কার্যকারণ নিয়মকে নৈতিক জগতে প্রয়োগ করে ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদকে স্বীকার করা হয়েছে।
কৃতকর্মের ফলাভাগ –
কর্মবাদের মূলকথা হল, জীবনে সুখ-দুঃখ ইত্যাদি যা কিছু আমাদের ভোগ করতে হয় তার সবই আমাদের কৃতকর্মের ফল, কৃতকর্ম হল কারণ আর সুখ-দুঃখ ভোগ হল কার্য। কর্মবাদে বলা হয় যে, কর্মের কর্তা ও ফলের ভোক্তা হবে অভিন্ন ব্যক্তি। অর্থাৎ যে যেমন কাজ করবে তাকে তেমন ফলই ভোগ করতে হবে। কর্ম ভালো করলে তার ফলও ভালো হবে। আর কর্ম যদি মন্দ হয় তাহলে তার ফলও মন্দ হবে। কর্মবাদে যদিও কৃতকর্ম সর্বদা তাৎক্ষণিক ফলদান করে না। বাহ্য জগতের কার্যকারণ নিয়মের সঙ্গে এখানেই কর্মবাদের পার্থক্য। অনেকক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত কর্ম অদৃশ্য শক্তিরূপে (অদৃষ্টরূপে) সঞ্চিত থাকে এবং পরজীবনে তা ফলদান করে।
অদৃশ্য শক্তিরূপে সঞ্চিত কর্মফল ভোগ –
পূর্ব জীবনের কর্মফল মানুষকে বর্তমান জীবনে ও বর্তমান জীবনের কর্মফল তাকে তার পরবর্তী জীবনে ভোগ করতে হয়। এক জীবনে যদি কর্মকর্তার কৃত সকল কর্মের ফলভোগ শেষ না হয় তখন সেই কর্মের ফলভোগ করার জন্যই জীবকে আবারও জন্ম নিতে হয়। এটি একটি ব্যতিক্রমহীন কর্মনীতি। আর তাই কর্মবাদকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভারতীয় দার্শনিকদের জন্মান্তরবাদকেও স্বীকার করতে হয়। ভারতীয় নীতিতত্ত্বে কর্মবাদের পরিণতিই হল জন্মান্তরবাদ।
সঞ্চিতকর্মের ফলভোগ
কর্মনিয়ম অপ্রতিরোধ্য ও অলঙ্ঘনীয়। কাজেই কর্মের ফলভোগ থেকে নিষ্কৃতি নেই। ফল তাৎক্ষণিক না হলেও কর্মনিয়ম ব্যর্থ হয় না, কেন-না সেক্ষেত্রে কর্মফল অদৃষ্ট শক্তিরূপে সঞ্চিত বা সংরক্ষিত থাকে। এজন্যই ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মনিয়মকে নৈতিক মূল্যের (ভালো-মন্দ কর্মফলের) সংরক্ষণের নিয়ম (Law of Conservation of Moral Values) বলা হয়েছে। এই সঞ্চিত বা সংরক্ষিত কর্মফল ভোগের জন্যই মৃত্যুর পরেও জীবকে পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয়। এক জন্মে সকল কৃতকর্মের ফলভোগ নিঃশেষিত না হলে সেই কর্মফল ভোগের জন্য জীবকে আবার জন্মগ্রহণ করতে হয়। এভাবেই চলে জন্ম-জন্মান্তর। কোনো ব্যক্তি খারাপ হওয়া সত্ত্বেও এই জীবনে সুখ ভোগ করে তার আগের জন্মে করা ভালো কাজের জন্য, আর এই জীবনের খারাপ কাজের জন্য তাকে পরবর্তী জীবনে দুঃখ ভোগ করতে হয়। এই ভাবেই পূর্ব জন্মের কর্মানুসারে বর্তমান জীবন নির্ধারিত হয় আবার বর্তমান জীবনের কর্মানুসারে তার পরবর্তী জীবন নির্ধারিত হয়। বৌদ্ধ দর্শনে জন্ম-জন্মান্তরের এই শৃঙ্খলাকেই বলা হয়েছে ‘ভবচক্র‘। অপরাপর দর্শন সম্প্রদায় একেই ‘সংসার দশা’ বা ‘ভব-বন্ধন’ বলেছেন।
10. নিষ্কাম কর্মের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো?
অথবা, নিষ্কাম কর্মের ধারণা শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতার কোন অধ্যায়ে কোন্ প্রসঙ্গে অবতারণা করা হয়েছে?
Ans:
নিষ্কাম কর্মের প্রেক্ষাপট –
ভগবদ্গীতার দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সাংখ্যযোগ’ অংশে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মের নৈতিকতা সম্পর্কে উপদেশ দিয়েছেন। হিন্দুদের পবিত্র শাস্ত্র-গ্রন্থ মহাকাব্য মহাভারতের একটি বিশেষ অংশ হল শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা। শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত এই নৈতিকতত্ত্ব ভারতীয় চিন্তাধারায় মর্যাদা ও শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত। ধর্ম ও নৈতিক তত্ত্বের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উদার ও মুক্ত চিন্তাধারা এই গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। সেই সময়ের বিভিন্ন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি এমনকি অধিবিদ্যক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা এই গ্রন্থের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। গীতায় বিভিন্ন আদর্শের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে ওই আদর্শগুলির বিভিন্ন ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে। হিন্দু চিন্তাধারার সবথেকে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল সহনশীলতা। এ কথা এই গ্রন্থের ছত্রে ছত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে, গ্রন্থটি মূলত তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন ও তাঁর সারথি শ্রীকৃষ্ণের মধ্যে কথোপকথনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের রথের সারথি ছিলেন শ্রীকৃয়। শ্রীকৃয় হলেন স্বয়ং ভগবান। অবতাররূপে ধর্মকে গ্লানি মুক্ত করার জন্য তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুন দেখলেন, তাঁকে অস্ত্রধারণ করতে হবে তাঁর স্বজাতি, অত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বিরুদ্ধে। এই কথা ভেবে তাঁর শরীর ও মন অবশ হয়ে এল, তিনি অস্ত্র ত্যাগ করলেন। তাঁর মনে হতে লাগল এই যুদ্ধের ফলে কত প্রাণ, কত সম্পদ নষ্ট হবে। সমাজে কত অবক্ষয় ঘটবে।
শ্রীকৃষ্ণ কতগুলি যুক্তির সাহায্যে অর্জুনকে এই যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা বোঝান। সেগুলির মধ্যে প্রধান কয়েকটি হল-
- আত্মা অমর এবং শরীরের দ্বারা বন্ধ নয়। মানুষের সারধর্ম হল- অপরিবর্তনীয় ও অবিনশ্বর আত্মা, তার শরীর বা ইন্দ্রিয় নয়।
- কর্তব্যের প্রতি একনিষ্ঠ ও নিঃস্বার্থ আনুগত্য জীবনের নীতি। অতএব ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণ ক্ষত্রিয়দের বাধ্যতামূলক কর্তব্য।
অর্জুন আরও যে সব প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেগুলির উত্তর প্রদানের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণ নিজের নৈতিক ও অধিবিদ্যক মতবাদ তুলে ধরেছিলেন। তাদের কথোপকথনে তিনি বারবার অর্জুনকে নিরাসক্তভাবে তাঁর কর্তব্য পালনের উপদেশ দেন- “সুখ ও দুঃখে সমভাব রেখে লাভ ও ক্ষতি, জয় ও পরাজয়ে এক থেকে যুদ্ধে যুক্ত হও, পাপ তোমাকে বদ্ধ করবে না।” গীতাতে শ্রীকৃষ্ণ এভাবে কর্মযোগের এবং নিষ্কাম কর্ম সম্বন্ধে সেটির যে উপদেশ সেটির অবতারণা করেন।
Class 11th All Semester Question and Answer – একাদশ শ্রেণীর সমস্ত সেমিস্টার প্রশ্নউত্তর
আরোও দেখুন:-
Class 11 All Subjects 1st Semester Question and Answer Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 All Subjects 2nd Semester Question and Answer Click here
Class 11 Suggestion 2025 (Old) – একাদশ শ্রেণীর সাজেশন ২০২৫
আরোও দেখুন:-
Class 11 Bengali Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 English Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Geography Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 History Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Political Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Education Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Philosophy Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Sociology Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Sanskrit Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 All Subjects Suggestion 2025 Click here
একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 11th Philosophy Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
একাদশ শ্রেণীর দর্শন সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
FILE INFO : শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer with FREE PDF Download Link
PDF File Name | শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer PDF |
Prepared by | Experienced Teachers |
Price | FREE |
Download Link | Click Here To Download |
Download PDF | Click Here To Download |
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography]
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
Class 11 Philosophy Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Eleven XI (Class 11th) Philosophy Question and Answer Suggestion
” শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Eleven XI / WB Class 11 / WBCHSE / Class 11 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB Class 11 Exam / Class 11th / WB Class 11 / Class 11 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণীর দর্শন পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( একাদশ শ্রেণীর দর্শন সাজেশন / একাদশ শ্রেণীর দর্শন প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Philosophy Suggestion / Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer / Class 11 Philosophy Suggestion / Class-11 Pariksha Philosophy Suggestion / Philosophy Class 11 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / Class 11 Philosophy Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস একাদশ শ্রেণীর দর্শন পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (Class 11 Philosophy Suggestion / West Bengal Eleven XI Question and Answer, Suggestion / WBCHSE Class 11th Philosophy Suggestion / Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer / Class 11 Philosophy Suggestion / Class 11 Pariksha Suggestion / Class 11 Philosophy Exam Guide / Class 11 Philosophy Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / Class 11 Philosophy Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Philosophy Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির দর্শন
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – প্রশ্ন উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Question and Answer, Suggestion
একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – | পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – | একাদশ শ্রেণীর দর্শন সহায়ক – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer, Suggestion | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Notes | West Bengal Class 11th Philosophy Question and Answer Suggestion.
একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE Class 11 Philosophy Question and Answer, Suggestion
একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – । Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion.
WBCHSE Class 11th Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Suggestion | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা –
WBCHSE Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Suggestion একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Suggestion একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestions | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Suggestion | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – সাজেশন
Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – সাজেশন । Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal Class 11 Philosophy Suggestion Download WBCHSE Class 11th Philosophy short question suggestion . Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Suggestion download Class 11th Question Paper Philosophy. WB Class 11 Philosophy suggestion and important question and answer. Class 11 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর দর্শন পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। একাদশ শ্রেণীর দর্শন পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 11 Philosophy Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Eleven XI Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Exam
Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Eleven XI Philosophy Suggestion is provided here. Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.
শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” শ্রীমদ্ভগবতগীতা-নিষ্কাম কর্মের ধারণা – একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Philosophy Shrimad Bhagwat Geeta Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।