প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়)
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer : প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – WBBSE Class 10 History Protirodh o Bidroho Question and Answer, Suggestion, Notes – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 10th Ten X History Examination – পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।
তোমরা যারা প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো।
শ্রেণী | মাধ্যমিক দশম শ্রেণী (Madhyamik Class 10) |
বিষয় | মাধ্যমিক ইতিহাস (Madhyamik History) |
বিষয় | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (Protirodh o Bidroho) |
অধ্যায় | তৃতীয় অধ্যায় (3rd Chapter) |
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th History Protirodh o Bidroho Question and Answer
MCQ | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer :
- ‘ বিপ্লব ‘ কথার অর্থ হল –
(A) ধীর পরিবর্তন
(B) আমূল পরিবর্তন
(C) পরিবর্তন
(D) কোনোটিই নয়
Ans: (B) আমূল পরিবর্তন
- ‘ আরণ্যক ‘ আদিবাসীদের বিদ্রোহকে ‘ অশান্ত অরণ্য জীবন ‘ বলেছেন –
(A) দীপেশ চক্রবর্তী
(B) জ্ঞান পাণ্ডে
(C) রামচন্দ্র গুহ
(D) গৌতম ভদ্র
Ans: (C) রামচন্দ্র গুহ
- ভারতবর্ষের বনজ সম্পদের ওপরে ব্রিটিশদের নজর পড়ে—
(A) ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে
- লর্ড কর্নওয়ালিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন –
(A) ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে
- ব্রিটিশ সরকার ‘ অরণ্য আইন ‘ জারি করে –
(A) ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
- ভারতে প্রথম অরণ্য আইন পাস হয় –
(A) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
- ১৮৬৫ সালের ‘ অরণ্য আইন’কে জোরদার করা হয় –
(A) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (D) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
- ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ অরণ্যের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রবর্তন করেন –
(A) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
- ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের অরণ্য আইনে অরণ্যকে ভাগ করা হয় –
(A) দুটি স্তরে
(B) চারটি স্তরে
(C) তিনটি স্তরে
(D) পাঁচটি স্তরে
Ans: (C) তিনটি স্তরে
- ‘ সংরক্ষিত ‘ বনভূমি ছিল—
(A) সরকারের অধীনে
(B) ব্যবসায়ীদের অধীনে
(C) উপজাতিদের অধীনে
(D) প্রহরীদের অধীনে
Ans: (A) সরকারের অধীনে
[ আরোও দেখুন:- Madhyamik History Suggestion 2024 Click here ]
- ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সরকারের অধীনে চলে আসে
বনভূমির—
(A) ২০ শতাংশ
(B) ৬০ শতাংশ
(C) ৪০ শতাংশ
(D) ৮০ শতাংশ
Ans: (A) ২০ শতাংশ
- ব্রিটিশ সরকার কাকে প্রথম ভারতের অরণ্য অঞ্চ পরিচালনার জন্য নিযুক্ত করেন ?
(A) জর্জ এভারেস্ট
(B) ডেইট্রিক ব্রান্ডিস
(C) জেমস ক্লার্ক
(D) ডবলিউ হান্টার
Ans: (B) ডেইট্রিক ব্রান্ডিস
- চুয়াড়রা মূলত বাস করত বাংলার –
(A) মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলায়
(B) দিনাজপুর জেলায়
(C) মালদহ জেলায়
(D) নদিয়া জেলার জঙ্গলমহলে
Ans: (A) মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলায়
- ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে বাংলায় প্রথম আদিবাসী বিদ্রোহ ছিল –
(A) কোল বিদ্রোহ
(B) রংপুর বিদ্রোহ
(C) ভিল বিদ্রোহ
(D) চুয়াড় বিদ্রোহ
Ans: (D) চুয়াড় বিদ্রোহ
- দুর্জন সিং ছিলেন –
(A) কোল বিদ্রোহের নেতা
(B) সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা
(C) মুন্ডা বিদ্রোহের নেতা
(D) চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা
Ans: (D) চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা
- পাইকের কাজ করার বিনিময়ে চুয়াড়রা যে জমি ভোগ করত তার নাম –
(A) খাস জমি
(B) নিলামি জমি
(C) তালুক জমি
(D) পাইকান জমি
Ans: (D) পাইকান জমি
- চুয়াড় বিদ্রোহ কটি ভাগে বিভক্ত ছিল ?
(A) ২ টি ভাগে
(B) ৪ টি ভাগে
(C) ৬ টি ভাগে
(D) ৭ টি ভাগে
Ans: (A) ২ টি ভাগে
- চুয়াড় বিদ্রোহের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয় –
(A) ১৭৬৬-৬৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৬৭- ৬৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৬৮-৬৯ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৬৯-৭০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৭৬৬-৬৭ খ্রিস্টাব্দে
- দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহ চলেছিল –
(A) ৩ বছর ধরে
(B) ৬ বছর ধরে
(C) ২ বছর ধরে
(D) ৫ বছর ধরে
Ans: (C) ২ বছর ধরে
- ধাদকার শ্যামগঞ্জ ছিলেন –
(A) মুন্ডা বিদ্রোহের নেতা
(B) চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা
(C) সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা
(D) নীল বিদ্রোহের নেতা
Ans: (B) চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা
- রানি শিরোমণি ছিলেন –
(A) মেদিনীপুর জেলার রানি
(B) নলহাটির রানি
(C) সুবর্ণগড়ের রানি
(D) কর্ণগড়ের রানি
Ans: (A) মেদিনীপুর জেলার রানি
- ‘ পাইক ‘ সৈনিক গোষ্ঠী যে বিদ্রোহে যুক্ত ছিল—
(A) চুয়াড় বিদ্রোহে
(B) কোল বিদ্রোহে
(C) সাঁওতাল বিদ্রোহে
(D) মুন্ডা বিদ্রোহে
Ans: (A) চুয়াড় বিদ্রোহে
- মেদিনীপুরের চুয়াড় অধ্যুষিত অঞ্চলকে বলা হত –
(A) চুয়াড়মহল
(B) জলমহল
(C) খাসমহল
(D) জঙ্গলমহল
Ans: (D) জঙ্গলমহল
- ‘ দিকু ‘ কথার অর্থ –
(A) স্বদেশি ব্যবসায়ী
(B) নীল ব্যবসায়ী
(C) ব্রিটিশ ব্যবসায়ী
(D) বহিরাগত ব্যবসায়ী
Ans: (D) বহিরাগত ব্যবসায়ী
- ব্র্যাডলে বার্টের মতে , মহাজনরা সাঁওতালদের যে স্তরে নামিয়ে এনেছিল –
(A) ক্রীতদাসের স্তরে
(B) শ্রমিকের স্তরে
(C) মজুরদের স্তরে
(D) ভৃত্যের স্তরে
Ans: (A) ক্রীতদাসের স্তরে
- বাঙালি ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের উৎপাদিত ফসল কিনত –
(A) ন্যায্য দরে
(B) অতিরিক্ত দরে
(C) বাজার দরেl
(D) সস্তা দরে
Ans: (D) সস্তা দরে
- ১৮৫১ সালে কোম্পানি বছরে ‘ দামিন – ই – কোহ ‘ থেকে রাজস্ব আদায় করে –
(A) ২২,০০০ টাকা
(B) ৪৪,০০০ টাকা
(C) ৩৩,০০০ টাকা
(D) ৫৫,০০০ টাকা
Ans: (B) ৪৪,০০০ টাকা
- আদিবাসীরা বহিরাগত ব্যবসায়ীদের বলত –
(A) ইজারাদার
(B) সাউকার
(C) বেনিয়া
(D) দিকু
Ans: (D) দিকু
- সাঁওতাল বিদ্রোহ শুরু হয় –
(A) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে
- সাঁওতাল বিদ্রোহের একজন নেতা হলেন –
(A) কালো প্রামাণিক
(B) চিমনজি যাদব
(C) দুর্জন সিংহ
(D) বীরসা মুন্ডা
Ans: (A) কালো প্রামাণিক
- সিধু ও কানহ ছিলেন—
(A) দুই ভাই
(B) কাকা – ভাইপো
(C) পিতা – পুত্র
(D) মামা – ভাগনে
Ans: (A) দুই ভাই
- সাঁওতাল বিদ্রোহের পর তৈরি হয় –
(A) উত্তর ২৪ পরগনা
(B) দক্ষিণ ২৪ পরগনা
(C) সাঁওতাল পরগনা
(D) কোনোটিই নয়
Ans: (C) সাঁওতাল পরগনা
- সাঁওতাল বিদ্রোহের ঘটনার কথা লেখা আছে—
(A) ‘ লাল মাটি ‘ উপন্যাসে
(B) ‘ আরণ্যক ‘ উপন্যাসে
(C) ‘ গণদেবতা ‘ উপন্যাসে
(D) ” ঋজুদার সাথে জঙ্গলে ‘ নামক উপন্যাসে ”
Ans: (B) ‘ আরণ্যক ‘ উপন্যাসে
- The Santal Insurrection of 1855-57 ‘ গ্রন্থটির লেখক –
(A) কালীকিঙ্কর দত্ত
(B) রমেশচন্দ্র মজুমদার
(C) বীরেন্দ্রনাথ বাস্কে
(D) রমেশচন্দ্র দত্ত
Ans: (A) কালীকিঙ্কর দত্ত
- সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় –
(A) অত্যাচারী মহাজনদেরকে আক্রমণের মাধ্যমে
(B) পুলিশ হত্যা করে
(C) জমিদারদের কাছারি বাড়ি আক্রমণ করে
(D) খাদ্যসামগ্রী লুঠ বা ডাকাতির মাধ্যমে
Ans: D) খাদ্যসামগ্রী লুঠ বা ডাকাতির মাধ্যমে
- ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সিধু ও কার নেতৃত্বে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ সমবেত হয়েছিল –
(A) গড়ের মাঠে
(B) ভাগনাডিহির মাঠে
(C) সাঁওতাল পরগনার মাঠে
(D) মানভূমের মাঠে
Ans: B) ভাগনাডিহির মাঠে
- ভাগনা মাঝির বিশ্বাসঘাতকতায় ধরা পড়ে –
(A) সিধু
(B) চাঁদ ও ভৈরব
(C) ডোমন মাঝি
(D) কানহূ
Ans: (A) সিধু
- ‘ হুল ‘ শব্দের অর্থ –
(A) বিক্ষোভ
(B) বিপ্লব
(C) বিদ্রোহ
(D) অভ্যুত্থান
Ans: (C) বিদ্রোহ
- ‘ হুল ‘ হল –
(A) সাঁওতালদের জাতি সংগঠনের নাম
(B) একটি জনগোষ্ঠীর নাম
(C) অরণ্যের অধিবাসীদের সমাজের নাম
(D) সাঁওতালদের বিদ্রোহের নাম
Ans: (D) সাঁওতালদের বিদ্রোহের নাম
- ভাগনাডিহিতে যে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল—
(A) ভিল বিদ্রোহের
(B) মোপলা বিদ্রোহের
(C) রংপুর বিদ্রোহের
(D) সাঁওতাল বিদ্রোহের
Ans: (D) সাঁওতাল বিদ্রোহের
- মহেশলাল দত্ত , যাঁকে সাঁওতালরা হত্যা করেছিলেন , তিনি ছিলেন একজন—
(A) জমিদার দারোগা
(B) মহাজন
(C) সেনানায়ক
(D) দারোগা
Ans: (D) দারোগা
- সাঁওতাল বিদ্রোহের সময় পাকুড়ে সাঁওতালদের নেতৃত্ব –
(A) কামাররা
(B) সিধু
(C) গোছ মাঝি
(D) কানু
Ans: C) গোছ মাঝি
- বিদ্রোহী সাঁওতালদের তথ্য সরবরাহ করত –
(A) কুমোররা
(B) কালো প্রামাণিক
(C) গোয়ালারা
(D) তেলিরা
Ans: (C) গোয়ালারা
- সাঁওতালরা গ্রাম লুঠ করে সেখানে –
(A) লাল রঙের কাপড় বেঁধে আসতেন
(B) চামড়া – বাঁধা বাঁশ পুঁতে আসতেন
(C) সেগুন গাছ লাগিয়ে আসতেন
(D) পরবর্তী লুঠের পোস্টার দিয়ে আসতেন
Ans: (B) চামড়া – বাঁধা বাঁশ পুঁতে আসতেন
- ডোমন মাঝি যে বিদ্রোহের নেতা ছিলেন—
(A) মুন্ডা বিদ্রোহের নেতা
(B) সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা
(C) কোল বিদ্রোহের নেতা
(D) ভিল বিদ্রোহের নেতা
Ans: (B) সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা
- কার যে ধরনের শাস্তি হয় , তা হল –
(A) গুলি করে হত্যা
(B) ফাঁসি
(C) দ্বীপান্তর
(D) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
Ans: (B) ফাঁসি
- ফ্রেডারিক হ্যাডলি ছিলেন বাংলার –
(A) বড়োলাট
(B) সেজোলাট
(C) মেজোলাট
(D) ছোটোলাট
Ans: (D) ছোটোলাট
- সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল একটি –
(A) কৃষক বিদ্রোহ
(B) শ্রমিক বিদ্রোহ
(C) সিপাহি বিদ্রোহ
(D) উপজাতি বিদ্রোহ
Ans: D) উপজাতি বিদ্রোহ
- সাঁওতালদের দমন করতে এসে পরাজিত হয়েছিলেন—
(A) লেফটেন্যান্ট ফার্গুসন
(B) মেজর বারোস
(C) ক্যাপটেন মর্গ্যান
(D) হ্যাভলক
Ans: (B) মেজর বারোস
- ভিল বিদ্রোহ সংঘটিত হয় –
(A) ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে
- ভাই উত্থান ছিলেন –
(A) কোল বিদ্রোহের নেতা
(B) সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা
(C) মুন্ডা বিদ্রোহের নেতা
(D) ভিল বিদ্রোহের নেতা
Ans: (D) ভিল বিদ্রোহের নেতা
- রংপুর বিদ্রোহ যার বিরুদ্ধে হয়েছিল –
(A) দেবী সিংহ
(B) অচল সিংহ
(C) মানসিংহ
(D) কালীপ্রসন্ন সিংহ
Ans: A) দেবী সিংহ
- রংপুর বিদ্রোহ হয়েছিল –
(A) ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে
- নুরুলউদ্দিন কোন বিদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?
(A) রংপুর বিদ্রোহ
(B) পাবনা বিদ্রোহ
(C) ফরাজি আন্দোলন
(D) ফকির বিদ্রোহ
Ans: (A) রংপুর বিদ্রোহ
- রংপুর বিদ্রোহের নেতা ছিলেন যিনি –
(A) সিউরাম
(B) ভবানী পাঠক
(B) নুরুলউদ্দিন
(C) মজনু শাহ
Ans: (B) নুরুলউদ্দিন
- বাংলাদেশের প্রথম কৃষক বিদ্রোহ ছিল –
(A) নীল বিদ্রোহ
(B) কোল বিদ্রোহ
(C) সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ
(D) মুন্ডা বিদ্রোহ
Ans: C) সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ
সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ গ রংপুর বিদ্রোহ
- বঙ্কিমচন্দ্রের কোন উপন্যাসে সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের প্রেক্ষিত আছে ?
(A) আনন্দমঠ
(B) দেবী চৌধুরানি
(C) দুর্গেশনন্দিনী
(D) বিষবৃক্ষ
Ans: A) আনন্দমঠ
- ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সংঘবদ্ধ বিদ্রোহ ছিল –
(A) মুন্ডা বিদ্রোহ
(B) নীল বিদ্রোহ
(C) কোল বিদ্রোহ
(D) সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ
Ans: (D) সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ
- সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ শুরু হয় ।
(A) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে
- সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল –
(A) রাজশাহিতে
(B) খুলনাতে
(C) ঢাকায়
(D) চট্টগ্রামে
Ans: C) ঢাকায়
- সন্ন্যাসী বিদ্রোহের একজন বিখ্যাত নেতা ছিলেন –
(A) ভবানী পাঠক
(B) কালীচরণ
(C) বিরুচরণ বিশ্বাস
(D) বীরসা মুন্ডা
Ans: A) ভবানী পাঠক
- ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসে যে বিদ্রোহের উল্লেখ আছে –
(A) ভিল বিদ্রোহের
(B) কোল বিদ্রোহের
(C) সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের
(D) মুন্ডা বিদ্রোহের
Ans: C) সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের
- সন্ন্যাসী বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন –
(A) নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসীরা
(B) দশনামী সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসীরা
(C) উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসীরা
(D) ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ভুক্ত সশস্ত্র সন্ন্যাসীরা
Ans: B) দশনামী সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসীরা
- সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহীদের সাহায্য করেছিল –
(A) অত্যাচারিত কৃষকরা
(B) মহাজনরা
(C) ছোটো জমিদাররা
(D) ইজারাদাররা
Ans: (A) অত্যাচারিত কৃষকরা
- সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের ঘটনাকে ‘ যাযাবর ও পেশাদার ডাকাতদের উপদ্রব ‘ বলেছেন—
(A) উইলিয়ম হান্টার
(B) উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক
(C) কর্নেল টড
(D) সি . আর . উইলসন
Ans: A) উইলিয়ম হান্টার
- পূর্ণিয়ায় ইংরেজ বাহিনীর কাছে সন্ন্যাসী বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়েছিলেন—
(A) ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে
- সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময় রংপুরের যুদ্ধে ( ১৭৭২ খ্রি . ) যে ইংরেজ সেনাপতি নিহত হন , তাঁর নাম –
(A) সেনাপতি টমাস
(B) এডওয়ার্ড
(C) সেনাপতি হ্যাভল
(D) সেনাপতি নেলসন্
Ans: (A) সেনাপতি টমাস
- বগুড়া জেলায় মঞ্জুরার যুদ্ধে নিহত হন—
(A) ভবানী পাঠক
(B) চিরাগ আলি
(C) মজনু শাহ
(D) দেবী চৌধুরানি
Ans: (C) মজনু শাহ
- ভবানী পাঠক নিহত হন –
(A) ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে
- সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন অন্তত –
(A) ৪০ হাজার বিদ্রোহী
(B) ৩০ হাজার বিদ্রোহী
(B) ৫০ হাজার বিদ্রোহী
(C) ৬০ হাজার বিদ্রোহী
Ans: (B) ৩০ হাজার বিদ্রোহী
- ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষের প্রথম কৃষক বিদ্রোহ হল –
(A) সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ
(B) নীল বিদ্রোহ
(C) রংপুরের বিদ্রোহ
(D) বারাসত বিদ্রোহ
Ans: (A) সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ
[ আরোও দেখুন:- Madhyamik All Subjects Suggestion 2024 Click here ]
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer :
- প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহে বিদ্রোহীদের কাছে কে পরাজিত হন ?
Ans: স্টিফেন মরগান ( ইংরেজ সেনাপতি ) প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহে বিদ্রোহীদের কাছে পরাজিত হন ।
- ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দের চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব কে দেন ?
Ans: দুর্জন সিং ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দের চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন ।
- দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহ কত খ্রিস্টাব্দে শেষ হয় ?
Ans: ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহ শেষ হয় ।
- কোন্ বড়োলার্টের নির্দেশে ব্রিটিশ সেনাদল সাঁড়াশি আক্রমণ চালিয়ে চুয়াড় বিদ্রোহীদের পর্যদন্তু করে ?
Ans: লর্ড ওয়েলেসলির নির্দেশে ব্রিটিশ সেনাদল সাঁড়াশি আক্রমণ চালিয়ে চুয়াড় বিদ্রোহীদের পর্যুদস্ত করে ।
- আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য চুয়াড় বিদ্রোহের নেতাদের কী করা হয়েছিল ।
Ans: আতষ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য চুয়াড় বিদ্রোহীদের ফাঁসি দেওয়া এবং তাঁদের ঘাঁটিগুলিতে অগ্নিসংযোগ করা ।
- চুয়াড় বিদ্রোহ সম্পর্কে জে সি প্রাইস কী লিখেছেন ?
Ans: জে . সি . প্রাইস ১৭৯৮ ও ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দকে ভয়ংকর চুয়াড় বিদ্রোহের বছর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ।
- কোলরা কোথায় বাস করত ?
Ans: কোলরা বর্তমান ঝাড়খণ্ডের ছোটোনাগপুরে বাস করত ।
- ছোটোনাগপুরে কোলরা ছাড়াও কোন্ কোন্ উপজাতির বাস ছিল ?
Ans: ছোটোনাগপুরে কোলরা ছাড়াও মুন্ডা , হো , ওঁরাও প্রভৃতি উপজাতি বাস করত ।
- অরণ্যের অধিকারকে কোলরা কী মনে করত ?
Ans: অরণ্যের অধিকারকে কোলরা ঈশ্বর প্রদত্ত অধিকার মনে করত ।
- দৰ্পনাথ সাহি কোথাকার রাজা ছিলেন ?
Ans: দর্পনাথ সাহি ছিলেন পালামৌর রাজা ।
- দর্পনাথ সাহির সঙ্গে কোম্পানির কী চুক্তি হয়েছিল ?
Ans: দর্পনাথ সাহির সঙ্গে কোম্পানির ইতিপূর্বে নির্ধারিত বাৎসরিক খাজনা ছাড়াও অতিরিক্ত ছয় হাজার টাকা কোম্পানিকে দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল ।
- কত খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি ও দর্পনাথ সাহির চুক্তি হয় ?
Ans: ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি ও দর্পনাথ সাহির চুক্তি হয় ।
- কোম্পানি কত খ্রিস্টাব্দে ছোটোনাগপুরের শাসনভার সরাসরি গ্রহণ করে ?
Ans: ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি ছোটোনাগপুরের শাসনভার সরাসরি গ্রহণ করে ।
- মাধব সিং কে ছিলেন ?
Ans: মাধব সিং ছিলেন কোম্পানির দেওয়ান ।
- ফসল বিক্রি করতে গেলে কোলদের কারা প্রতারিত করত ?
Ans: ফসল বিক্রি করতে গেলে কোলদের প্রতারিত করত মহাজন , জমিদাররা ।
- কোলদের ঐতিহ্যবিরোধী কাজ কোনটি ছিল ?
Ans: আফিম চাষ ছিল কোলদের ঐতিহ্যবিরোধী কাজ ।
- কোল বিদ্রোহের একটি কারণ লেখো ।
Ans: কোল বিদ্রোহের একটি কারণ ছিল সরকারি কাজে কোলদের বেগার খাটানো ।
- কোল বিদ্রোহের সূচনা করে হয় ?
Ans: ১৮৩১-৩২ খ্রিস্টাব্দে কোল বিদ্রোহের সূচনা হয় ।
- কোল বিদ্রোহ কোথায় প্রথম শুরু হয় ।
Ans: ছোটোনাগপুরের রাঁচিতে কোল বিদ্রোহের সূচনা হয় ।
- কোল বিদ্রোহের নেতৃত্বে কারা ছিলেন ?
Ans: সুই মুক্তা , সিংরাই মানকি , বুদ্বু ভগৎ , জোয়া ভগৎ , খাঁদু পাতর প্রমুখ ছিলেন কোল বিদ্রোহের নেতা ।
- কোন বিদ্রোহে আর কোন কোন উপজাতির লোকেরা যোগ দিয়েছিল ?
Ans: কোল বিদ্রোহে ওঁরাও , মুন্ডা , হো উপজাতির লোকেরা যোগ দিয়েছিল ।
- কোলরা কী বাজিয়ে বিদ্রোহের সূচনা করত ?
Ans: কোলরা ঢাক বাজিয়ে বিদ্রোহের সূচনা করত ।
- কোল বিদ্রোহীদের আক্রমণের লক্ষ্য কারা ছিল ?
Ans: কোল বিদ্রোহীদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিল জমিদার , মহাজন , শস্য ব্যবসায়ী এবং কোম্পানির কর্মচারীরা ।
- কোলরা পুলিশবাহিনীকে কাদের সহযোগী মনে করত ?
Ans: কোলরা পুলিশবাহিনীকে জমিদার ও মহাজনদের সহযোগী মনে করত ।
- কোল বিদ্রোহ দমন করতে কার নেতৃত্বে ইংরেজবাহিনী এসেছিল ?
Ans: কোল বিদ্রোহ দমন করতে ক্যাপটেন উইলকিনসনের নেতৃত্বে ইংরেজবাহিনী এসেছিল ।
- কোলদের সমরাস্ত্র কী কী ছিল ?
Ans: তির , ধনুক , বল্লম প্রভৃতি ছিল কোলদের সমরাস্ত্র ।
- দক্ষিণ – পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি নামক পৃথক অঞ্চল কত খ্রিস্টাব্দে গঠন করা হয় ?
Ans: ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ – পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি নামক পৃথক অঞ্চল গঠন করা হয় ।
- একটি উপজাতি বিদ্রোহের নাম বলো ।
Ans: কোল / সাঁওতাল / মুন্ডা বিদ্রোহ একটি উপজাতি বিদ্রোহ ।
- ‘ দামিন – ই – কোহ্ ‘ বলতে কী বোঝায় ?
Ans: ‘ দামিন – ই – কোহ ‘ বলতে বোঝায় পাহাড়ের প্রাপ্তদেশ ।
- ‘ দামিন – ই – কোহ’তে কতজন সাঁওতাল বাস করত ( ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ) ।
Ans: ‘ দামিন – ই – কোহ’তে প্রায় ৮৩,০০০ জন সাঁওতাল বাস করত ।
- কবে সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ?
Ans: সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন ।
- মুদ্ৰা বিদ্রোহ কবে শুরু হয় ।
Ans: ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু হয় ।
- ‘ উলগুলান ‘ বলতে কী বোঝায় ?
Ans: ‘ উলগুলান ‘ বলতে ভীষণ বিশৃঙ্খলা বা বিদ্রোহকে বোঝায় ।
- মুন্ডারা কেমন মানুষ ছিলেন ?
Ans: মুক্তারা ছিলেন নিরীহ , সহজ – সরল প্রকৃতির মানুষ ।
- মুক্তা উপজাতির লোকেরা কী কাজ করত ।
Ans: মুক্তা উপজাতির লোকেরা কৃষিকাজ করত ।
- কাঠি ‘ বা ‘ খুস্তকটি ’ প্রথা মানে কী ?
Ans: ‘ খুঁৎকাঠি ‘ বা ‘ খুস্তকটি ’ প্রথা মানে জমির যৌথ মালিকানা ।
- মাঝিহাম ‘ মানে কী ?
Ans: ‘ মাঝিহাম ‘ মানে খাসজমি ।
- বেঠ বেগার বেগারি ‘ মানে কী ?
Ans: ‘ বঠ বেগার বেগারি ’ মানে বিনা মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য করা ।
- মুন্ডাদের খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে চেষ্টা করেছিল এমন দুই মিশনারি সম্প্রদায়ের নাম লেখো ।
Ans: মুন্ডাদের খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে চেষ্টা করেছিল লুথারান ও অ্যাংলিকান মিশনারি সম্প্রদায় ।
- ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে শেষ উল্লেখযোগ্য উপজাতি অভ্যুত্থান কোনটি ?
Ans: ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে শেষ উল্লেখযোগ্য উপজাতি অভ্যুত্থান মুন্ডা বিদ্রোহ ।
- মুন্ডা চাষিরা কার আহ্বানে বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে ?
Ans: বীরসা মুন্ডার আহ্বানে মুন্ডা চাষিরা বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে ।
- কবে , কার নেতৃত্বে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু হয় ?
Ans: ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু হয় ।
- বীরসা মুন্ডার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর অনুগামীরা কোন্ সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছিল ?
Ans: বীরসা মুন্ডার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর অনুগামীরা ‘ বীরসা সম্প্রদায় ’ সৃষ্টি করেছিল ।
- মুন্ডা বিদ্রোহের প্রভাবে ওঁরাও সম্প্রদায় যে আন্দোলনটি শুরু করে তার নাম কী ?
Ans: মুন্ডা বিদ্রোহের প্রভাবে ওঁরাও সম্প্রদায় তানা ভগৎ আন্দোলন শুরু করে ।
- মুন্ডা বিদ্রোহ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছিল ।
Ans: মুন্ডা বিদ্রোহ রাঁচি , হাজারিবাগ , ছোটোনাগপুর , সিংভূম অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল ।
- প্রথম জীবনে বীরসা কী কাজ শুরু করেছিলেন ?
Ans: প্রথম জীবনে বীরসা ধর্মপ্রচারের কাজ শুরু করেছিলেন ।
- মুন্ডা বিদ্রোহীরা ব্রিটিশদের কার সঙ্গে তুলনা করেছিল ?
Ans: মুক্তা বিদ্রোহীরা ব্রিটিশদের রাবণের সঙ্গে তুলনা করেছিল ।
- বীরসা মুক্তা গ্রেফতার হওয়ার কতদিন পরে মুক্তি পান ?
Ans: বীরসা মুন্ডা গ্রেফতার হওয়ার ২ বছর বাসে মুক্তি পান ।
- বীরসা মুণ্ডার করে মৃত্যু হয় ।
Ans: ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে বীরসা মুক্তার মৃত্যু হয় ।
- বীরসা মুন্ডাকে তাঁর অনুগামীরা কী রূপে দেখতা ?
Ans: বীরসা মুন্ডাকে তাঁর অনুগামীরা ভগবান রূপে দেখত ।
- কেন ব্রিটিশ সরকার ছোটোনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন পাস করে ?
Ans: ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মুন্ডাদের অভাব – অভিযোগের সুষ্ঠু সমাধানের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার এই আইন পাস করেন ।
- The Curious History of a Munda Fanatic গ্রন্থের লেখক কে ? :
Ans: ‘ The Curious History of a Munda Fanatic ‘ গ্রন্থের লেখক শরৎচন্দ্র রায় ।
- কবে , কার বিরুদ্ধে রংপুর বিদ্রোহ শুরু হয় ?
Ans: ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে ইজারাদার দেবী সিংহের বিরুদ্ধে রংপুর বিদ্রোহ শুরু হয় ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer :
- বিপ্লব বলতে কী বোঝায় ?
Ans: বিপ্লব বলতে বোঝায় — প্রথমত , এটি এমন এক দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া যা পুরোনো অর্থনৈতিক , সামাজিক বা রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর আঘাত হেনে তার আমূল পরিবর্তন ঘটায় । দ্বিতীয়ত , একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই পরিবর্তন সংঘটিত হয় । তৃতীয়ত , বিপ্লবের উদাহরণগুলি হল — আমেরিকার স্বাধীনতা বিপ্লব , ফরাসি বিপ্লব , শিল্প বিপ্লব , চিনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব ।
- “ বিদ্রোহ ’ বলতে কী বোঝায় ?
Ans: বিদ্রোহ বলতে বোঝায় — প্রথমত , কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে নির্দিষ্ট কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে নির্দিষ্ট কিছু দাবি আদায় বা প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের ঘটনা অথবা সহিংস প্রতিবাদের মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টাই হল বিদ্রোহ । দ্বিতীয়ত , বিদ্রো উদ্দেশ্য সীমিত থাকার কারণে তা ক্ষণস্থায়ী এবং আমূল পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয় । তৃতীয়ত , ইংরেজ শাসন – শোষণ ও অত্যাচারই ছিল ভারতে সংঘটিত আদিবাসী বিদ্রোহ , কৃষক বিদ্রোহ ও সিপাহি বিদ্রোহের সাধারণ কারণ ।
- বিপ্লব ও বিদ্রোহের মধ্যে পার্থক্য কী ?
Ans: বিপ্লব বলতে বোঝায় — প্রথমত , এটি এমন এক দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া যা পুরোনো অর্থনৈতিক , সামাজিক বা রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর আঘাত হেনে তার আমূল পরিবর্তন ঘটায় । দ্বিতীয়ত , একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই পরিবর্তন সংঘটিত হয় । বিদ্রোহ বলতে বোঝায় — প্রথমত , কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে নির্দিষ্ট কিছু মানুষের নিজেদের স্বার্থে নির্দিষ্ট কিছু দাবি আদায় বা প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের ঘটনা অথবা সহিংস প্রতিবাদের মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টাই হল বিদ্রোহ । দ্বিতীয়ত , বিদ্রোহের উদ্দেশ্য সীমিত থাকার কারণে তা ক্ষণস্থায়ী এবং আমূল পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয় ।
- বিদ্রোহ , অভ্যুত্থান ও বিপ্লবের পার্থক্যগুলি কী ?
Ans: বিদ্রোহ বলতে আসলে পুঞ্জীভূত অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশকেই বোঝায় । পূর্ববর্তী অবস্থার হঠাৎ বা আকস্মিক পরিবর্তন হল অভ্যুত্থান । অপরদিকে কোনো দেশের শাসন অথবা সমাজব্যবস্থার দ্রুত আমূল পরিবর্তন বা উত্তরণকেই বিপ্লব আখ্যা দেওয়া যায় ।
- ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ?
Ans: ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্যগুলি ছিল – প্রথমত , ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দের পর ভারতে ইংরেজ কোম্পানির নৌবাহিনীতে জাহাজ নির্মাণের জন্য ওক কাঠের প্রয়োজনীয়তা থেকে ভারতীয় বনজ সম্পদের দিকে কোম্পানির নজর পড়ে । দ্বিতীয়ত , উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে রেলপথের বিস্তার শুরু হলে রেললাইনের স্লিপার , রেলগাড়ি অফিসের আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য প্রচুর পরিমাণ কাঠের দরকার পড়ে যা বনভূমি সংরক্ষণের বিষয়টিকে জরুরি করে তোলে । তৃতীয়ত , অরণ্যে বসবাসকারী অধিবাসীরা যাে যথেচ্ছভাবে বৃক্ষচ্ছেদন করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ রাখা দরকার হয়ে পড়ে ।
- অরণ্য আইন কী ?
Ans: ১৮৬৫ ও ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার তাদের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে ভারতের বনজ সম্পদকে ব্যবহারের জন্য দুটি আইন প্রণয়ন করে । এই দুই আইনকেই বলা হয় ‘ অরণ্য আইন ‘ ।
- অরণ্য আইনে কী বলা হয়েছিল ?
Ans: অরণ্য আইন অনুযায়ী— প্রথমত , ভারতের বনভূমিকে তিনভাগে ভাগ করা হয় — ‘ সংরক্ষিত ’ বা ‘ রিজার্ভড ‘ বনভূমি , ‘ সুরক্ষিত ’ বা ‘ প্রোটেক্টেড ’ বনভূমি আর ‘ অশ্রেণিবিভক্ত ’ বা ‘ আনক্লাসিফায়েড ’ বনভূমি । দ্বিতীয়ত , ‘ সংরক্ষিত ’ বনভূমি ছিল সম্পূর্ণভাবে সরকারের অধীনে , যেখানে গাছ কাটা ছিল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ । তৃতীয়ত , সুরক্ষিত বনভূমি থেকে উপজাতিরা প্রথমে বিনা পয়সায় ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কাঠ সংগ্রহ করতে পারত কিন্তু তা বিক্রি করতে পারত না , অশ্রেণিবিভক্ত অরণ্যাঞ্চলে প্রবেশাধিকার ছিল অবাধ ।
- চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব কী ?
Ans: চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্বগুলি হল— প্রথমত , এটি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জমিদার , তার অনুচরবর্গ এবং কৃষকদের বিদ্রোহ হলেও এর প্রাণশক্তি ছিল নিপীড়িত কৃষক । দ্বিতীয়ত , এই বিদ্রোহের মাধ্যমে চুয়াড়রা জমিদারদের নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তির চেয়ে ব্রিটিশ শাসনের অবসান বেশি জরুরি বলে মনে করেছিল । তৃতীয়ত , এই বিদ্রোহ ন্যায্য অধিকার রক্ষার সংগ্রামকে অনুপ্রেরণা দেয় — যা পরবর্তীকালে অনেক আন্দোলনের দিশারি হয়ে দাঁড়ায় ।
- উনিশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দুটি উপজাতি বিদ্রোহের নাম করো ।
Ans: উনিশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দুটি উপজাতি বিদ্রোহ হল কোল বিদ্রোহ ও সাঁওতাল বিদ্রোহ । ১৮৩১-৩২ খ্রিস্টাব্দে কোল বিদ্রোহ শুরু হয় এবং এই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন বুদ্বু ভগৎ , জোয়া ভগৎ , সুই মুন্ডা । অন্যদিকে ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সিধু – কানহুর নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল সাঁওতাল বিদ্রোহ ।
- ‘ কোল কারা ?
Ans: ভারতের আদিম উপজাতিগুলির একটি গোষ্ঠীর নাম হল ‘ কোল ’ এবং এদের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— প্রথমত , এদের বিশেষ কোনো জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয় বলে একটি ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত বলা যায় , যার অন্তর্ভুক্ত ছিল কোল , ভিল , হো , মুন্ডা প্রভৃতি উপজাতি । দ্বিতীয়ত , এদের চেহারা হল খর্বাকৃতি , গায়ের রং কালো এবং নাক চ্যাপটা । তৃতীয়ত , পাহাড়ে ও জঙ্গলে বসবাসকারী এই গোষ্ঠীর মানুষদের ভাষাগুলি ছোটোনাগপুর , ওড়িশা ও মধ্যভারতের এক বিস্তীর্ণ অংশে বহুল পরিমাণে প্রচলিত ।
- কোল বিদ্রোহ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছিল ?
Ans: ছোটোনাগপুরের রাঁচিতে কোল বিদ্রোহের সূচনা হলেও ক্রমশ এই বিদ্রোহ সিংভূম , মানভূম , হাজারিবাগ , পালামৌ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছিল । যদিও বহু আগেই এই বিদ্রোহ প্রকাশ পেয়েছিল সিংভূম জেলার শোনপুর পরগনায় । উত্তর অন্যান্য বিদ্রোহের মতো কোল বিদ্রোহের ক্ষেত্রেও স্থানীয় নেতৃত্বের সৃষ্টি হয় । এঁরা হলেন — সুই মুন্ডা , বুন্ধু ভগৎ , জোয়া ভগৎ , খাদু পাতর , ঝিন্দরাই মানকি , সূর্য , সিংরাই প্রমুখ ।
- দর্শনাথ সাহি কে ছিলেন । তাঁর সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কী চুক্তি হয়েছিল ?
Ans: দর্পনাথ সাহি ছিলেন পালামৌর রাজা । ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে দর্শনাথ সাহির সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চুক্তি হয় যে , বাৎসরিক ছয় হাজার টাকা রাজস্ব – সহ অতিরিক্ত ছয় হাজার টাকা তিনি কোম্পানিকে প্রদান করবেন ।
- কোল বিদ্রোহের উদ্দেশ্য কী ছিল ?
Ans: কোল বিদ্রোহের উদ্দেশ্যগুলি হল প্রথমত , চার্লস মেটকাফ – এর মতে , কোল বিদ্রোহীদের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটানো । দ্বিতীয়ত , এ ছাড়া জমিদার , মহাজন , শস্য ব্যবসায়ী , পুলিশ , কোম্পানির কর্মচারীদের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য । কারণ কোল বিদ্রোহীরা এদের ইংরেজ শাসনের অঙ্গ হিসেবেই দেখেছিল ।
- কোল বিদ্রোহের কারণ কী ? অথবা , কোল বিদ্রোহের দুটি কারণ লেখো ।
Ans: কোল বিদ্রোহের কারণগুলি হল— প্রথমত , ছোটোনাগপুর অঞ্চলে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক উচ্চহারে রাজস্ব বৃদ্ধি , জমিদার – মহাজন – ব্যবসায়ীদের শোষণ ছিল কোল বিদ্রোহের মূল কারণ । দ্বিতীয়ত , অন্য কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — দেশি মদের ওপর কর বসানো , কোলদের ঐতিহ্যবিরোধী আফিম চাষ করতে বাধ্য করা , বেগার খাটানো , নারীদের সম্মান হানি হওয়া । তৃতীয়ত , এ ছাড়া বনজ সম্পদের ওপর কোলদের আজন্ম অধিকার ব্রিটিশরা ছিনিয়ে নিলে কোলরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে ।
- কোল বিদ্রোহের প্রকৃতি আলোচনা করো ।
Ans: কোল বিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় প্রথমত , এটি ছিল বেশ কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠীর সম্মিলিত বিদ্রোহ , কারণ— কোল বিদ্রোহে কোল ছাড়াও ওঁরাও , হো , মুন্ডা উপজাতির মানুষেরা যোগ দিয়েছিল । দ্বিতীয়ত , বিদ্রোহীরা দিকু , অর্থাৎ বহিরাগতদের এলাকা ছেড়ে যেতে নির্দেশ দেয় এবং নির্দেশ অমান্যকারীদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় । তৃতীয়ত , ধর্মীয় কারণে বহু হিন্দুকে আদিবাসী দেবতার সামনে বলি দেওয়া হয় এবং কোলদের আক্রমণে সূত্রধর ও কর্মকার ছাড়া কেউই রক্ষা পায়নি ।
- ‘ বেচারাম ‘ কাকে বলা হয় ?
Ans: বেচারাম আসলে নির্দিষ্ট ওজনের চেয়ে কম ওজনের এক ধরনের বাটখারা যা ‘ ছোটো বাউ ‘ নামেও পরিচিত ছিল । এর দ্বারা সাঁওতালদের কিনতে আসা জিনিসপত্র কম ওজনের বাটখারায় মেপে পরিমাণে কম দিয়ে প্রতারিত করা হত । সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ছিল এই বাটখারা ।
- ‘ কেনারাম কাকে বলে ?
Ans: কেনারাম আসলে নির্দিষ্ট ওজনের চেয়ে বেশি ওজনের এক ধরনের বাটখারা । এর দ্বারা ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের বিক্রি করতে আসা জিনিসপত্র বেশি ওজনের বাটখারার সাহায্যে মেপে ওজনে কম দেখিয়ে সাঁওতালদের ঠকাতো । কেনারামকে বড়ো বাউ – ও বলা হয় ।
- সাঁওতাল বিদ্রোহ কি নিছক একটি উপজাতি বিদ্রোহ ছিল ?
Ans: সাঁওতাল বিদ্রোহকে শুধুমাত্র একটি উপজাতি বিদ্রোহ বলা যায় না , কারণ প্রথমত , এই বিদ্রোহে সাঁওতালরা ছাড়াও নিম্নবর্গের সাধারণ মানুষ , অর্থাৎ কামার , কুমোর , গোয়ালা , তাঁতি ( জোলা ) , তেলি প্রভৃতি নানা পেশার হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায় সাহায্য ও সমর্থন জানায় । দ্বিতীয়ত , নিছকই একটি উপজাতি বিদ্রোহ না বলে বরং সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধেও মহাজন , জমিদার , ব্যবসায়ীদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ সশস্ত্র সংগ্রাম বলাই শ্রেয় ।
- সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকরা কী মত পোষণ করেন ?
Ans: আধুনিক গবেষক ও ঐতিহাসিকগণ সাঁওতাল বিদ্রোহকে শুধুমাত্র একটি উপজাতি বিদ্রোহ মনে করেন না । প্রথমত , রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে , ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দের সাঁওতাল বিদ্রোহ ব্রিটিশ অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ রূপে চিহ্নিত । দ্বিতীয়ত , সুপ্রকাশ রায় সাঁওতাল বিদ্রোহকে ‘ মহাবিদ্রোহের অগ্রদূত ‘ বলেছেন ।
- গিরা কী ? সাঁওতালরা গ্রাম লুঠ করে সেখানে কী রেখে আসতেন ?
Ans: গিরা হল শালগাছের ডাল । সাঁওতালরা গ্রাম লুঠ করে বা ইংরেজদের বাংলোগুলি লুঠ করে সেখানে চামড়া – বাঁধা বাঁশ পুঁতে রেখে আসত । এটি ছিল সাঁওতালদের অধিকার ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিতবাহী ।
- কীভাবে সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয় ?
Ans: স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠার সংকল্প নিয়ে সিধু ও কানহু – র নেতৃত্বে ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন ভাগনাডিহির মাঠে ১০ হাজার সাঁওতাল এই বিদ্রোহের সূচনা করে । প্রথমে তাঁরা দলবদ্ধভাবে পাঁচ কাঠিয়া গ্রাম আক্রমণ করে , দিঘি থানার দারোগা মহেশলাল দত্তকে হত্যা করে , কেনারাম ভগৎ – সহ পাঁচজন কুখ্যাত মহাজনকে তারা হত্যা করে । এ ছাড়াও তারা সরকারের দপ্তরখানা , জমিদারদের কাছাড়ি এবং মহাজনদের আড়তগুলি আক্রমণ করেছিল ।
- কারা সাঁওতালদের ওপর শোষণ করত ।
Ans: সাঁওতালরা অনেকের দ্বারা শোষিত হয়েছিল । এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- ( ১ ) জমিদার ও তাদের নিযুক্ত খাজনা আদায়কারী , ( ২ ) বহিরাগত দিকু বা মহাজন , ( ৩ ) ব্যবসায়ী , ( 8 ) রেলপথ নির্মাণের ঠিকাদার , ( ৫ ) ইউরোপীয় কর্মচারী , ( ৬ ) বহিরাগত শস্য ব্যবসায়ী এবং ( 4 ) নীলকর সাহেব । এরা সকলেই সাঁওতালদের ওপর শোষণ ও অত্যাচার করেছিল ।
- তালদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছেন কারা ?
Ans: সাঁওতাল বিদ্রোহের সময় সাঁওতালদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছিল প্রথমত , দিঘি থানার দারোগা মহেশলাল দত্ত , কেনারাম ভগৎ সহ বহু কুখ্যাত মহাজন , পাকুড়ের রাজবাড়ি , অম্বর পরগনার জমিদার এবং বহু নীলকর সাহেব । দ্বিতীয়ত , রেলপথের ইউরোপীয় কর্মচারী , পদস্থ পুলিশকর্তা , ব্যবসায়ীদের অনেকে সাঁওতালদের দ্বারা নিহত হয় । তৃতীয়ত , সাধারণত বিদ্রোহীদের আক্রমণের লক্ষ্য হত ইংরেজদের বাংলো এবং জমিদারদের গুদাম ও ধানের গোলা ।
- কীভাবে সাঁওতাল বিদ্রোহের অবসান হয় ?
Ans: তির , ধনুক ও বল্লম সম্বল করে সাঁওতালরা কলকাতা দখলের উদ্দেশ্যে দল বেঁধে বেরিয়ে পড়লে ইংরেজ সেনাপতি মেজর বুরাফ ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ১৬ জুলাই পিরপৈত্তির কাছে সাঁওতাল বিদ্রোহীদের হাতে পরাজিত হন । ঐ বছরের নভেম্বরে সাঁওতাল বিদ্রোহীদের অধীনস্থ সমগ্র এলাকায় সামরিক শাসন জারি করে মেজর জেনারেল লয়েডের নেতৃত্বে ৫৫ নং পার্বত্য বাহিনী সাঁওতালদের আক্রমণ করে । ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উভয়পক্ষের সংঘর্ষ চললেও শেষ পর্যন্ত ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতন চালিয়ে ব্রিটিশ সরকার এই বিদ্রোহ দমন করে ।
- সাঁওতালদের পরাজয়ের কারণ কী ?
Ans: সাঁওতালদের পরাজয়ের একাধিক কারণ ছিল । এই কারণগুলি হল – ( ১ ) আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের অভাব , ( ২ ) সিধু ও কার মৃত্যু , ( ৩ ) প্রায় ২০ হাজার সাঁওতালকে নির্মমভাবে হত্যা করা , ( ৪ ) ব্রিটিশবাহিনী কর্তৃক গ্রামের পর গ্রাম ধ্বংস করা প্রভৃতি ।
- সিধু , কান ও অন্য সাঁওতালদের কী শাস্তি হয় ?
Ans: সিধুকে গ্রেফতার করার সাথে সাথে গুলি করে হত্যা করা হয় । কান্তু উপেনবান্দায় গ্রেপ্তার হলে কয়েকদিনের মধ্যে তাঁর ফাঁসি হয় । বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী প্রায় ২০ হাজার সাঁওতালকে হত্যা করা হয় ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer :
1. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে বিভিন্ন উপজাতি বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ভারতে ব্রিটিশ শাসনের প্রথম একশো বছরে নানা প্রতিবাদ , প্রতিরোধ ও বিদ্রোহের সম্মুখীন হতে হয়েছে কোম্পানির সরকারকে । কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে চুয়াড় , কোল , ভিল , মুন্ডা , ওঁরাও , সাঁওতাল , হো প্রভৃতি উপজাতিদের বিক্ষিপ্ত বিদ্রোহগুলি ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ।
বিভিন্ন উপজাতি বিদ্রোহ : ঔপনিবেশিক ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা , মহাজন , বণিক , জমিদার ও মধ্যস্বত্বভোগী গোষ্ঠীর শোষণ , কোম্পানি কর্তৃক সমস্ত বনাঞ্চলকে খাস জমিতে পরিণত করে বন্যসম্পদের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কারণে উপজাতিদের মধ্যে গভীর অসন্তোষের সৃষ্টি হয় , যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিদ্রোহের মাধ্যমে । উপজাতি বিদ্রোহগুলির মধ্যে চুয়াড় , কোল , সাঁওতাল ও মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল উল্লেখযোগ্য ।
চুয়াড় বিদ্রোহ : ব্রিটিশ কোম্পানির সীমাহীন অর্থনৈতিক , শোষণ – অত্যাচার ও নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে মেদিনীপুর , বাঁকুড়া , বীরভূম জেলার চুয়াড়রা যে বিদ্রোহের সূচনা করে , তা চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত । প্রায় ত্রিশ বছর ধরে চলা এই বিদ্রোহে বিভিন্ন সময়ে নেতৃত্ব প্রদান করেন জগন্নাথ ধল , ধাদকার শ্যামগঞ্জন , মাধব সিংহ , দুর্জন সিংহ প্রমুখ । কোম্পানির সেনাবাহিনী নির্মম দমননীতির দ্বারা এই বিদ্রোহ দমন করে ।
কোল বিদ্রোহ : ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যেসব আদিবাসী বিদ্রোহ ঘটে তার অন্যতম ছিল কোল বিদ্রোহ ( ১৮৩১-৩২ খ্রি . ) । রাঁচি , হাজারিবাগ , সিংভূম , পালামৌ প্রভৃতি অঞ্চলে বুদ্বু ভগৎ , জোয়া ভগৎ , ঝিন্দরাই মানকি , সুই মুন্ডার নেতৃত্বে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্রোহ চরম আকার ধারণ করলে ক্যাপটেন উইলকিনসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী বহু কোল উপজাতির নরনারীদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে এই বিদ্রোহ দমন করেন ।
সাঁওতাল বিদ্রোহ : কোম্পানির শোষণ ও শাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য আদিবাসী ও উপজাতিদের দ্বারা সংঘটিত বিদ্রোহগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপজাতি বিদ্রোহ হল ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দের সাঁওতাল বিদ্রোহ । ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ৩০ জুন প্রায় দশ হাজার সাঁওতাল ভাগনাডিহির মাঠে জমায়েত হয়ে সিধু – কানহুর নেতৃত্বে স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য গঠনের পরিকল্পনা করে । ক্রমশ এই বিদ্রোহ ব্যাপ্তি লাভ করলে করে ফাঁসি দেওয়ায় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে এই বিদ্রোহ স্তিমিত হয়ে পড়ে ।
মুন্ডা বিদ্রোহ : ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে বীরসা মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডারা যে বিদ্রোহ করেছিল তা মুন্ডা বিদ্রোহ নামে পরিচিত । ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এটিই ছিল শেষ গুরুত্বপূর্ণ উপজাতি বিদ্রোহ । ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে মুন্ডা বিদ্রোহ , রাঁচি , হাজারিবাগ , সিংভূমের পার্বত্য অঞ্চলে প্রসার লাভ করলে ব্রিটিশ সরকার তীব্র দমননীতি চালিয়ে বীরসা মুন্ডাকে গ্রেপ্তার করে এই বিদ্রোহ দমন করে । মূল্যায়ন চুয়াড় , কোল , সাঁওতাল , মুন্ডা এবং অন্য উপজাতি বিদ্রোহগুলি ব্যর্থ হয়ে গেলেও পরবর্তীকালে স্বাধীনতা আন্দোলনের জমি তৈরির ক্ষেত্রে এইসব আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম ।
2. চুয়াড় বিদ্রোহ সম্পর্কে আলোচনা করো । অথবা , চুয়াড় বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট ও গতিপথ বর্ণনা করো ।
Ans: ভূমিকা : মেদিনীপুর , বীরভূম , বাঁকুড়া , ঘাটশিলায় চুয়াড় উপজাতির কৃষকেরা ১৭৬৮ থেকে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় সাতবার যে বিদ্রোহ করেছিল , তা চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত । এগুলির মধ্যে ১৭৯৮-১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে দুর্জন সিংহের নেতৃত্বে পরিচালিত বিদ্রোহ ছিল দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহ ।
বিদ্রোহের কারণ : চুয়াড় বিদ্রোহের কারণগুলি হল— জমি দখল : কৃষিকাজ ও পশুপালন ছিল চুয়াড়দের প্রধান জীবিকা । বাংলায় কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার পর কোম্পানির কর্তৃপক্ষ এই অঞ্চলের জমিদারদের জমি দখল করে তার ওপর অত্যন্ত চড়া হারে ভূমিরাজস্ব ধার্য করলে জমিদাররা এবং তাদের পাইক চুয়াড়রা এর বিরোধিতা করে ।
জীবিকা সমস্যা : সরকার কর্তৃক নিষ্কর জমি ( পাইকান ) দখল , চুয়াড় বিদ্রোহের অন্যতম কারণ । জমি – নির্ভর চুয়াড়দের অধিকাংশ জমি কোম্পানি দখল করে নিলে তারা জীবিকাহীন হয়ে পড়লে চুয়াড়রা বিদ্রোহের সূচনা করে ।
চুয়াড় বিদ্রোহের ব্যাপ্তি : দ্বিতীয় পর্বের চুয়াড় বিদ্রোহ শুরু হলে রায়পুরের পূর্বতন জমিদার দুর্জন সিংহ , মেদিনীপুরের জমিদার রাণি শিরোমণি এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন । এই বিদ্রোহ রায়পুর , তমলুক , রামগড় , শালবনী , বাসুদেবপুর প্রভৃতি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে । দুর্জন সিং – এর নেতৃত্বে অন্তত ৩০ টি গ্রামের সর্দার ও পাইকরা দল বেঁধে লুটপাট চালায় ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে । এই বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন গোবর্ধন দিকপতি , লাল সিং মোহনলাল প্রমুখ ।
বিদ্রোহর দমন : ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে দুর্জন সিংহের নেতৃত্বে চুয়াড় বিদ্রোহে মেদিনীপুরের শান্তি বিঘ্নিত হলে প্রথমত , লর্ড ওয়েলেসলি দুটি সেনাদলের সাহায্যে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেন । দ্বিতীয়ত , সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের গ্রেপ্তার করে গাছে ঝুলিয়ে ফাঁসি দিয়ে তাদের ঘাঁটিগুলি জ্বালিয়ে , তাণ্ডব চালিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে এই বিদ্রোহ দমন করে । তৃতীয়ত , বিভাজন নীতির আশ্রয় নিয়ে চুয়াড় ও পাইকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এবং জমিদারদের নানাভাবে আশ্বস্ত করে কৌশলে চুয়াড় বিদ্রোহের অবসান ঘটানো হয় । গুরুত্ব : চুয়াড় বিদ্রোহের বেশ ক – টি গুরুত্ব ছিল , যেমন—
কৃষক চৈতন্য : প্রাণশক্তি নিপীড়িত কৃষকরা বুঝেছিল যে , জমিদারদের নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া অপেক্ষা ব্রিটিশ শাসনের অবসান বেশি জরুরি ।
ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম : জমিদার ও কৃষকরা মিলিত হয়ে এই বিদ্রোহ সংগঠিত করেছিল যা অত্যন্ত বিরল ঘটনা ।
অনুপ্রেরণাস্থল : বিদ্রোহীদের আত্মত্যাগ ও ন্যায্য অধিকার রক্ষার সংগ্রাম পরবর্তীকালে আরও বৃহত্তর সংগ্রামের দিশারি ছিল ।
স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ : অধ্যাপক নরহরি কবিরাজ বলেছেন যে চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল নিম্নশ্রেণির মানুষদের স্বতঃস্ফূর্ত অথচ ব্যাপক বিদ্রোহ ।
3. সাঁওতাল বিদ্রোহ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতে ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ ঘটে তার মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক ছিল ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দের সাঁওতাল বিদ্রোহ ।
বিদ্রোহের কারণ : সাঁওতালরা হাজারিবাগ , মানভূম থেকে রাজমহলের পার্বত্য সমতলভূমিতে এসে , সেখানকার জঙ্গলাবৃত অঞ্চল পরিষ্কার করে বসবাস ও কৃষিকাজ শুরু করে অঞ্চলটির নাম দেয় ‘ দামিন – ই – কোহ ‘ বা মুক্ত অঞ্চল । কিন্তু সেখানে তারা জমিদার , মহাজন , বহিরাগত ব্যবসায়ী ও ইংরেজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শেষপর্যন্ত বিদ্রোহের পথ বেছে নেয় ।
বিদ্রোহের লক্ষ্য : বিদ্রোহীদের লক্ষ্য ছিল বহিরাগত মহাজন ( দিকু ) ও ব্যবসায়ীদের অত্যাচার ও এবং জমিদারি ও ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ ঘটিয়ে সাঁওতাল রাজ প্রতিষ্ঠা করা ।
বিদ্রোহের শুরু : ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন সিধু – কানহুর নেতৃত্বে প্রায় দশ হাজার সাঁওতাল নরনারী ভাগনাডিহির মাঠে জমায়েত হয়ে স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য গঠনের পরিকল্পনা নেন । দীঘি থানার অত্যাচারী দারোগা মহেশলাল দত্ত ও কুখ্যাত মহাজন কেনারাম ভগৎকে হত্যার মাধ্যমে এই বিদ্রোহ শুরু হয় ।
সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা সিধু বিদ্রোহের নেতৃত্ব ও ব্যাপ্তি : বিদ্রোহীরা সিধু , কানহু , ডোমন মাঝি , চাঁদ , ভৈরব , কালো প্রামাণিকের নেতৃত্বে মহাজনদের আড়ত , বণিকদের বাড়ি , নীলকুঠি ও জমিদারের কাছারি আক্রমণ করে । রেলস্টেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে । এভাবে রাজমহল থেকে মুরশিদাবাদ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ে । মুরশিদাবাদ , বীরভূমে পাকুড় ও সাঁওতাল পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ইংরেজবাহিনী পর্যদস্তু হয়ে পড়ে । সবশেষে বিদ্রোহীরা তির , ধনুক , বল্লম সম্বল করে কলকাতা দখলের উদ্দেশ্যে দল বেঁধে বেরিয়ে পড়লে শেষপর্যন্ত ইংরেজ কোম্পানি প্রচণ্ড দমনপীড়নের মাধ্যমে এই বিদ্রোহ দমন করে ( ১৮৫৬ খ্রি . ) ।
বিদ্রোহের প্রকৃতি : ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরা একে নিছক বর্বরদের স্থানীয় বিদ্রোহ ও আদিম ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ বললেও আধুনিক ঐতিহাসিকরা একে দেশীয় শোষণ ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক গণসংগ্রাম তথা শ্রমজীবীদের প্রতিরোধ হিসেবে দেখেছেন ।
ফলাফল : এই বিদ্রোহের ফলে ( ১ ) সরকার সাঁওতাল পরগনা নামে একটি স্বতন্ত্র সংরক্ষিত এলাকা সৃষ্টি করে সেখানে সাঁওতালদের আইনকানুন চালু করে ; ( ২ ) সাঁওতালদের উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং মিশনারি ছাড়া সমতলের লোকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয় ; ( ৩ ) সাঁওতাল মোড়ল ও সর্দারদের ক্ষমতা স্বীকার করা হয় ; এবং ( ৪ ) সর্বত্র একই ধরনের ওজন বিধি চালু হয় । উপসংহার : ব্যাপ্তিতে ক্ষুদ্র ও বিক্ষিপ্ত হলেও সাঁওতাল বিদ্রোহের মধ্যে শোনা গিয়েছিল প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পদধ্বনি । ঐতিহাসিক সুপ্রকাশ রায় তাই সাঁওতাল বিদ্রোহকে ‘ মহাবিদ্রোহের অগ্রদূত ’ বলেছেন ।
4. সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের ( ১৭৬৩–১৮০০ ) কারণ ও ব্যর্থতার কারণগুলি আলোচনা করো ।
অথবা , সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের পটভূমি ও পরিণতি উল্লেখ করো ।
Ans: ভূমিকা : কোম্পানির শাসনের প্রথম দিকে কৃষিজীবী হিন্দু সন্ন্যাসী ও মুসলমান ফকিরদের নেতৃত্বে বাংলা – বিহারের কিছু অঞ্চল জুড়ে যে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল , তা সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ নামে পরিচিত । দীর্ঘ চল্লিশ বছর ( ১৭৬৩-১৮০০ খ্রি . ) ব্যাপী এই আন্দোলন ছিল কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সংঘবদ্ধ বিদ্রোহ ।
বিদ্রোহের কারণ : সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের প্রধান প্রধান কারণগুলি হল গ্রে কোম্পানির উচ্চহারে রাজস্ব বৃদ্ধি : ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অত্যধিক রাজস্ব বৃদ্ধি কৃষিজীবী সন্ন্যাসী ও ফকিরদের ক্ষুব্ধ করে তোলে ।
তীর্থকর : সন্ন্যাসী ও ফকিররা মাঝে মাঝে ইচ্ছেমতো দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রে গেলে সরকার থেকে তাদের ওপর তীর্থকর আদায় করা হয় । এতে সন্ন্যাসী ও ফকিররা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ।
কোম্পানির কর্মচারীদের জুলুম : ফকির ও সন্ন্যাসীদের মধ্যে অনেকেই রেশম ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল । কোম্পানির কর্মচারীরা তাদের এই ব্যাবসাতে নানাভাবে জুলুম ও বাধা প্রদান করে ।
মধ্যস্বত্বভোগীদের শোষণ ও অত্যাচার : কোম্পানির কর্মচারী ছাড়াও ইজারাদার , পত্তনিদার প্রভৃতি মধ্যস্বত্বভোগীদের শোষণ – অত্যাচার সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ।
বিদ্রোহের ব্যাপ্তি ও নেতৃত্ব : ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় সর্বপ্রথম সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ শুরু হয় । ক্রমশ তা দাবানলের মতো মালদহ , রংপুর , দিনাজপুর , কোচবিহার , ময়মনসিংহ , ফরিদপুর প্রভৃতি জেলায় ছড়িয়ে পড়ে । অত্যাচারিত ও নির্যাতিত দরিদ্র কৃষক , মুঘল সেনাবাহিনীর বেকার সৈন্য এবং সন্ন্যাসী ও ফকিরদের বিভিন্ন সম্প্রদায় এই বিদ্রোহে অংশ নেয় । ভবানী পাঠক , মজনু শাহ , দেবী চৌধুরানি , চিরাগ আলি , মুসাশাহ প্রমুখ ছিলেন এই বিদ্রোহের নায়ক । প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই বিদ্রোহে অংশ নেয় ।
মূল্যায়ন : সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল প্রথমত , কোম্পানির শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রথম বিদ্রোহ । দ্বিতীয়ত , বিদ্রোহীরা হিন্দু ও মুসলমানদের এক ছাতার তলায় এনে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিল । তৃতীয়ত , ওয়ারেন হেস্টিংস এই বিদ্রোহকে যতই ‘ পেশাদার ডাকাতের উপদ্রব বলে অভিহিত করুক না কেন , এডওয়ার্ড উইলিয়াম হান্টারের মতে , এটি ছিল প্রকৃত কৃষক বিদ্রোহ ।
5. ওয়াহাবি আন্দোলনের ওপর একটি প্রবন্ধ লেখো ।
Ans: ভূমিকা : উনিশ শতকের প্রথমার্ধে ভারতে শাহ ওয়ালিউল্লাহ ও তাঁর পুত্র আজিজ এবং রায়বেরিলির সৈয়দ আহম্মদ রেলভি ভারতে ওয়াহাবি আদর্শের ভিত্তিতে ইসলাম ধর্মের শুদ্ধি আন্দোলন শুরু করেন । বাংলার তিতুমিরের নেতৃত্বে এই আন্দোলন ধর্মীয় , আর্থসামাজিক ও শেষে ব্রিটিশ – বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় ।
আন্দোলনের উদ্দেশ্য : ( ১ ) ইসলামের শুদ্ধিকরণ ও ইসলাম ধর্মের কুসংস্কার দূর করে ‘ তরিকা – ই – মোহম্মদিয়া ‘ প্রতিষ্ঠা করা ; ( ২ ) ভারতকে ‘ দার – উল – হারব ‘ বা বিধর্মীর দেশ থেকে ‘ দার – উল – ইসলাম ‘ বা ইসলামের দেশে পরিণত করা এবং এই উদ্দেশ্যে শিখ ও ইংরেজ বিরোধিতা করা ; ( ৩ ) অত্যাচারী সামস্তদের শোষণ থেকে কৃষকদের মুক্ত করা ; ( ৪ ) নিম্নবর্গের মানুষদের আর্থিক সংকট থেকে মুক্ত করা এবং ( ৫ ) ইংরেজি শিক্ষা ও সরকারি উচ্চপদগুলিতে ইংরেজদের একচেটিয়া আধিপত্যের বিরোধিতা করা ।
সৈয়দ আহম্মদের ভূমিকা : শাহ ওয়ালিউল্লাহ ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা করলেও এই আন্দোলনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রায়বেরিলির সৈয়দ আহম্মদ ব্রেলভি ( ১৭৬৬-১৮৩১ খ্রিস্টাব্দ ) । তিনি এই আন্দোলনের বিস্তার ঘটাতে— প্রথমত , ভারতের নানা স্থানে বিশেষ করে কলকাতায় আবদুল ওয়াহাবের বাণী প্রচার করেন এবং পাটনায় ওয়াহাবিদের প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করেন । দ্বিতীয়ত , চার খলিফা বা আঞ্চলিক শাসকদের মাধ্যমে ভারতে এর সংগঠন বিস্তৃত হয় । ব্রিটিশের বিরুদ্ধে জেহাদের মাধ্যমে তিনি ভারতকে ‘ দার – উল – ইসলাম ‘ – এ পরিণত করতে চান । তৃতীয়ত , উত্তর – পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে তাঁর প্রভাব বৃদ্ধি পায় । ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে শিখদের বিরুদ্ধে বালাকোটার যুদ্ধে তাঁর মৃত্যু হয় ।
তিতুমিরের ভূমিকা : বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ তিতুমির এই আন্দোলনের বিস্তার ঘটাতে – প্রথমত , মহাজন , জমিদার , নীলকর ও তাদের সহযোগী ইংরেজদের অত্যাচার ও দমননীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান । দ্বিতীয়ত , তিনি নারকেলবেড়িয়ায় বাঁশের কেল্লায় সদর দপ্তর স্থাপন করে আশপাশের জমিদারদের কাছে কর দাবি করেন । তৃতীয়ত , ইংরেজ শাসনের অবসানের কথা ঘোষণা করে তিতুমির নিজেকে ‘ বাদশাহ ‘ রূপে তুলে ধরেন । চতুর্থত , শেষপর্যন্ত ইংরেজ সেনাবাহিনীর কামানের আঘাতে বাঁশের কেল্লা ধ্বংস হয় এবং তিতুমিরের মৃত্যু হয় ।
অন্যত্র আন্দোলনের প্রসার : ওয়াহাবি আন্দোলনকে এনায়েত্ আলি ফরিদপুর , নদিয়া , রাজশাহী ও পাটনায় ছড়িয়ে দেন । যশোহর , ঢাকা , ফরিদপুর , নদিয়া , পাবনা , রংপুর , নোয়াখালি , ময়মনসিংহ , ত্রিপুরা ও শ্রীহট্টে এই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে ।
ব্যর্থতার কারণ : গঠনমূলক কর্মসূচির অভাব , উপযুক্ত সংগঠনের অভাব , ধর্মীয় আন্দোলন হিসেবে শুরু হলেও ক্রমশ এই আন্দোলনের রাজনৈতিক রূপ পরিগ্রহ করা , আন্দোলনে হিন্দু সমাজের যোগদান না করা , আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের অভাব , অভিজাত শ্রেণির সাহায্য না পাওয়া , সরকারের দমননীতি ও বিভেদ নীতি ইত্যাদি কারণে এই আন্দোলন শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয় ।
গুরুত্ব : পরবর্তী আন্দোলনগুলির ওপর ওয়াহাবি আন্দোলনের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছিল , যেমন— প্রথমত , এই আন্দোলনের হাত ধরেই ভারতে সর্বপ্রথম মুসলিম সমাজের সংস্কার শুরু হয় । দ্বিতীয়ত , ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে মতাদর্শ গড়ে তুলে এটি ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র রূপ পরিগ্রহ করে , যা আগামী দিনের নতুন পথের সন্ধান দিয়েছিল । প্রশ্ন ।
6. ফরাজি আন্দোলনের ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা করো ।
অথবা , ফরাজি আন্দোলনের সূচনা ও প্রসার আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ঊনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে কৃষক বিদ্রোহের ইতিহাসে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ । ফরাজি আন্দোলন হল এইরকমই একটি কৃষক বিদ্রোহ ।
আন্দোলনের উৎপত্তি : পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর নিবাসী হাজি শরিয়ত উল্লাহ মুসলিম ধর্মের সংস্কারের জন্য ফরাজি আন্দোলনের সূচনা করেন । তিনি ব্রিটিশ – শাসিত ভারতবর্ষকে ‘ দার – উল – হারব ’ বা বিধর্মীদের দেশ বলে অভিহিত করেন । ইসলামের আদি ও অকৃত্রিম আদর্শের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে তিনি ‘ দার – উল – ইসলাম ‘ – এ পরিণত করতে চেয়েছিলেন । পরবর্তীকালে এই বিদ্রোহ কৃষক বিদ্রোহের চরিত্র নেয় ।
আদর্শ : এই আন্দোলনের মূল আদর্শ ছিল- ( ১ ) ইসলাম আদর্শ বিরোধী সকল আচার – অনুষ্ঠান , রীতিনীতি ও কুসংস্কার বর্জন করা , ( ২ ) ইসলামের সাম্যের আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করা এবং ( ৩ ) ভারতবর্ষকে ‘ দার – উল – ইসলামে ‘ পরিণত করা ।
উদ্দেশ্য : কোরানের পবিত্র আদর্শ অনুসরণ করে চলা , ইসলামীয় ভাবধারার পুনরুজ্জীবন করা , জমিদারদের শোষণের হাত থেকে কৃষকদের মুক্ত করা , ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ করে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করা , জমিদার মহাজনের বিরোধিতা করা , সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করাই ছিল এই আন্দোলনের লক্ষ্য ।
দুদু মিঞার ভূমিকা : ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে শরিয়ত উল্লাহের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র দুদু মিঞা ( মোহম্মদ মহসীন ) ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফরাজি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন । তিনি– ( ১ ) বাহাদুরপুরে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে , লাঠিয়াল ও গুপ্তচর বাহিনী গঠন করেন ; ( ২ ) তাঁর প্রভাবাধীন এলাকাকে কয়েকটি হল্কায় বিভক্ত করে খলিফা নিয়োগ করেন এবং ( ৩ ) জমিদার নীলকরদের বিরুদ্ধে আক্রমণ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফরাজি আন্দোলনকে ধর্মীয় আন্দোলন থেকে আর্থসামাজিক – রাজনৈতিক আন্দোলনে উন্নীত করেন । আতঙ্কিত জমিদার , মহাজন , নীলকরদের চাপে ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে , ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে দুদু মিঞাকে গ্রেপ্তার করা হলেও প্রমাণাভাবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় । ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে দুদু মিঞার মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র নোয়া মিঞা এই আন্দোলনে ধর্মীয় আদর্শকে গুরুত্ব প্রদান করলে এর গুরুত্ব কমে যায় ।
প্রকৃতি : ঢাকা , বরিশাল , ফরিদপুর , ময়মনসিংহ , ত্রিপুরা প্রভৃতি জেলায় এই আন্দোলন বিস্তার লাভ করে । ফরাজি আন্দোলন ইসলাম ধর্মের সংস্কার সাধনের উদ্দেশ্যে শুরু হলেও ক্রমশ তা জমিদার – বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় । অধিকাংশ জমিদাররাই হিন্দু হলেও ফরাজি আন্দোলন সম্পূর্ণভাবে হিন্দু – বিরোধী সাম্প্রদায়িক আন্দোলন ছিল না , কারণ এই আন্দোলনে মুসলমান কৃষকদের পাশাপাশি বহু হিন্দু কৃষকও শামিল হয়েছিল ।
ব্যর্থতার কারণ : দুদু মিঞার মৃত্যুর পর যোগ্য নেতৃত্বের অভাব , ধর্মীয় সংকীর্ণতা , রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবে আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে । এ ছাড়া সাধারণ লোককে জোর করে দলভুক্ত করা , অর্থ আদায় , সরকারি দমননীতি প্রভৃতি কারণে ফরাজি আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যায় ।
গুরুত্ব : ফরাজি আন্দোলন শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হলেও ব্রিটিশ বিরোধী কৃষক আন্দোলন হিসেবে এই আন্দোলন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ । ড . অভিজিৎ দত্ত বলেছেন , ফরাজিরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উচ্ছেদ করতে না পারলেও বাংলা থেকে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ কামনা করেছিল ।
7. দুদু মিঞা স্মরণীয় কেন ?
Ans: ভূমিকা : ভারতে উনিশ শতকে মুসলিম সমাজের পুনরুজ্জীবন ও সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে গড়ে ওঠা ফরাজি আন্দোলনের জনক শরিয়ত উল্লাহের মৃত্যুর পর আন্দোলনের দায়িত্ব নেন তাঁর পুত্র দুদু মিঞা ( ১৮৩৭–১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ ) ।
দুদু মিঞা ও ফরাজি আন্দোলন : দুদু মিঞার প্রকৃত নাম মহম্মদ মহসীন । ইতিহাসে তিনি যেসব কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন , সেগুলি হল আন্দোলনের প্রাণপুরুষ : দুদু মিঞার নেতৃত্বেই পূর্ববঙ্গের অত্যাচারী জমিদার , নীলকর ও তাদের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ফরাজি আন্দোলন আরও সুসংহতভাবে পরিচালিত হয় । তার নেতৃত্বে ফরাজি আন্দোলন ধর্মসংস্কার আন্দোলন থেকে ধর্মীয় – সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপ নেয় ।
দুদু মিঞার আহ্বান : দুদু মিঞা ঘোষণা করেন , ‘ জমির মালিক আল্লাহ , তাই জমিদারদের খাজনা আদায় করার কোনো অধিকার নেই । ‘ তিনি তার সমর্থকদের কাছে জমিদারদের খাজনা দেওয়ার , নীলচাষ না করার এবং বিদেশি শাসক ইংরেজদের অগ্রাহ্য করার আহ্বান জানান । তার এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে পূর্ববঙ্গের লক্ষ লক্ষ দরিদ্র কৃষক তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ।
ফরাজি – খিলাফত : দুদু মিঞা ফরাজি খিলাফত নামে একটি প্রশাসন গড়ে তোলেন । এই প্রশাসনের শীর্ষে ছিলেন তিনি স্বয়ং । তাঁকে বলা হত ওস্তাদ ( শীর্ষ প্রশাসক ) । তাঁর সাহায্যকারীদের বলা হত খলিফা । প্রশাসনিক কার্যকে সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য তিনি সমগ্র পূর্ববঙ্গকে কয়েকটি অঞ্চল বা হল্কায় ভাগ করেন এবং প্রত্যেক হল্কায় একজন করে খলিফা নিযুক্ত করেন । দুদু মিঞার নির্দেশমতো নিজের এলাকার কৃষকদের সংগঠিত করা , জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং আসন্ন সংগ্রামের প্রস্তুতি হিসেবে অর্থ সংগ্রহ করা ছিল খলিফাদের প্রধান কাজ ।
জমিদার ও নীলকরদের আক্রমণ : লাঠিয়াল ও গুপ্তচর বাহিনী গঠন করে দুদু মিঞা নিজ প্রভাবাধীন এলাকায় কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে জমিদার ও নীলকরদের আক্রমণ করেন । জমিদার ও নীলকরদের প্রচেষ্টায় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে দুদু মিঞাকে ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তার করে তাঁকে জেলে বন্দি করে । উচ্চতর আদালতের নির্দেশে তিনি ছাড়া পান ।
মূল্যায়ন : দুদু মিঞা ফরাজি আন্দোলনকে ধর্মীয় বৃত্তের বাইরে বের করে যেভাবে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেন সেজন্য তিনি ভারতবাসীর মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ।
8. ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলনের পার্থক্যগুলি ম আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ভারতে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে উনিশ শতকে ইসলামীয় পুনরুজ্জীবনের জন্য যে সমস্ত আন্দোলন হয়েছিল তার মধ্যে ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
পার্থক্য : দুটি আন্দোলনের মধ্যে যথেষ্ট মিল থাকলেও উভয় আন্দোলনের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য লক্ষ করা যায় , যেমন
ব্রিটিশ বিরোধিতা : ওয়াহাবি আন্দোলন তথা তিতুমিরের আন্দোলন যতটা ইংরেজ – বিরোধী ছিল ফরাজি আন্দোলন ততটা ছিল না । তিতুমির ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদের পক্ষে ছিলেন । অন্যদিকে , দুদু মিঞা সরকারের কাছে এক আর্জিতে জানান যে , জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম , ব্রিটিশ রাজ সম্পর্কে তাদের কোনো বিদ্বেষ নেই ।
স্বাধীনতার ধারণা : তিতুমির ব্রিটিশ শাসনকে গুরুত্ব না দিয়ে স্বাধীন ওয়াহাবি রাজ্য ঘোষণা করেন । অন্যদিকে , দুদু মিঞা খিলাফত প্রশাসন নামক একটি স্বশাসিত প্রশাসন গড়ে তোলেন ।
আন্দোলনের পরিধি : ফরাজি আন্দোলন মূলত বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করেছিল কিন্তু ওয়াহাবি আন্দোলনের পরিধি ছিল অনেক বিস্তৃত ।
ধর্মীয় আচরণ : ওয়াহাবিদের বলা হত জুম্মাওয়ালা , কেননা তাঁরা নামাজ ও জুম্মা পাঠ করতেন । অন্যদিকে ফরাজিদের বলা হত বে – জুম্মাওয়ালা । কারণ তাঁদের মতে , ইংরেজ অধিকৃত ভারতবর্ষ ছিল ‘ দার – উল – হারব ‘ । সুতরাং এই অবস্থায় ভারতে জুম্মা প্রার্থনা উচিত নয় বলে তাঁরা মনে করতেন ।
সাম্যের ধারণা : ওয়াহাবিরা প্রত্যেক ওয়াহাবিকে সমান মনে না করলেও ফরাজি মতে সকল ফরাজি ছিল সমান । শীর্ষ নেতৃত্ব তিতুমির ও তাঁর অনুগামীরা সৈয়দ আহম্মদকে গুরু বলে মনে করতেন , কিন্তু ফরাজিরা সৈয়দ আহম্মদের গুরু শাহ ওয়ালিউল্লাহের মতাবলম্বী ছিল ।
মূল্যায়ন : দুটি আন্দোলনের মধ্যে কিছু কিছু পার্থক্য থাকলেও এই আন্দোলন দুটির হাত ধরেই মুসলমান সমাজের সংস্কার শুরু হয় যা পরবর্তীকালের আন্দোলনগুলির পথপ্রদর্শক রূপে চিহ্নিত হয়ে আছে ।
9. ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলনের মধ্যে সাদৃশ্যগুলি আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ভারতে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে উনিশ শতকে ইসলামীয় পুনরুজ্জীবনের জন্য যে সমস্ত আন্দোলন হয়েছিল তার মধ্যে ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ । ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলনের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য থাকলেও উভয় আন্দোলনের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয় ।
বহিরাগত ধারণা : দুটি আন্দোলনেরই প্রেরণা আসে ভারতের বাইরে থেকে । ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক হাজি শরিয়ত উল্লাহ মক্কা থেকে ফিরে এসে ইসলাম ধর্মের আদিম ও অকৃত্রিম আদর্শে মনোনিবেশ করেন ; অন্যদিকে ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রবর্তক ইবন আব্দুল ওয়াহাব যিনি ছিলেন আরব দেশের ধর্ম সংস্কারক অর্থাৎ এই আন্দোলনের সূত্রপাতও আরব দেশে ।
ইসলামের পুনরুজ্জীবন : দুটি আন্দোলনই ছিল ইসলাম ধর্মের পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন । ইসলাম ধর্মের কু – প্রথা দূর করে শুদ্ধিকরণের মাধ্যমে এই ধর্মের পুনরুজ্জীবন ছিল দুটি আন্দোলনেরই লক্ষ্য ।
সামন্ততন্ত্রের বিরোধিতা : আর্থসামাজিক দিক থেকে দুটি আন্দোলনই ছিল সামন্ততন্ত্র – বিরোধী । দুটি আন্দোলনেই ধর্মীয় জাগরণের মধ্যে আর্থসামাজিক শোষণ থেকে মুক্তির পথ খোঁজা হয়েছিল ।
সাম্প্রদায়িক ধারণায় আক্রান্ত : দুটি আন্দোলনেই পরবর্তীকালে সাম্প্রদায়িক প্রভাব ভীষণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল । একদিকে তিতুমিরের আন্দোলনে যেমন সাম্প্রদায়িক মনোভাব ছিল তেমনি ফরাজি আন্দোলনের নেতা নোয়া মিঞার আন্দোলনের একইরকম সাম্প্রদায়িক ভাবধারা পরিলক্ষিত হয় ।
অলৌকিক ব্যক্তিত্ব আরোপ : ফরাজি ও ওয়াহাবি দুটি আন্দোলনে দুদু মিঞা ও তিতুমির উভয়ই নিজেদের অলৌকিক শক্তির অধিকারী বলে মনে করতেন ।
ব্রিটিশ – বিরোধিতা : দুটি আন্দোলনেই ব্রিটিশ – বিরোধিতা লক্ষ করা যায় । তবে ফরাজি আন্দোলনে ওয়াহাবিদের মতো তীব্র ব্রিটিশ – বিরোধিতা ছিল না । সন্ত্রাসের আশ্রয় : উভয় আন্দোলনের মধ্যেই নিজেদের মতবাদ মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য স্ব – ধর্মাবলম্বী মুসলমানদের ওপর জোরজুলুম করা হয় । বিরোধী মুসলমানদের দমন করার জন্য উভয় আন্দোলনের আন্দোলনকারীরাই সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয় ।
নিম্নবর্গের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ : দুটি আন্দোলনেই দরিদ্র কৃষক , জোলা সম্প্রদায়ের অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ লক্ষ করা যায় , যাদের উদ্দেশ্য ছিল শোষণের হাত থেকে মুক্তি । মূল্যায়ন : ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলনের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হলেও ব্রিটিশ – শাসিত ভারতে দুটি আন্দোলনই ছিল গুরুত্বপূর্ণ ।
10. নীল বিদ্রোহ ঘটেছিল কেন ? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করো ।
অথবা , নীল বিদ্রোহ কীভাবে নীলকরদের বিরুদ্ধে আঘাত হেনেছিল ?
Ans: ভূমিকা প্রথম অংশ : নীল বিদ্রোহের কারণ : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে যেসব গণআন্দোলন জাতীয় জাগরণে সর্বাধিক সাহায্য করেছিল তাদের মধ্যে নীল বিদ্রোহ ( ১৮৫৯-৬০ খ্রি . ) অন্যতম ।
বিদ্রোহের কারণ : ইংরেজ নীলকরদের অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংঘটিত নীল বিদ্রোহের কারণগুলি হল _ অলাভজনক নীলচাষ : ইউরোপীয় নীলকররা ধান বা পাট চাষের বদলে চাষিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অলাভজনক নীলচাষে বাধ্য করলে নীলচাষি – নীলকর বিরোধ তীব্র হয় । ২ দাদন প্রথা : নীলকররা নীলচাষিকে চাষের জন্য বিঘা প্রতি দু’টাকা ‘ দাদন ‘ বা অগ্রিম নিতে বাধ্য করে ও বলপূর্বক নীলচাষে বাধ্য করে । একবার দাদন গ্রহণ করলে নীলচাষিদের দুর্দশার শেষ থাকত না ।
উপযুক্ত মূল্যের অভাব : উৎপন্ন নীলের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় তারা বংশানুক্রমে আর্থিক দায়গ্রস্ত থাকত , এমনকি অনেক সময়ে নীলকরদের বেগার শ্রমদান করতেও বাধ্য হত ।
নীলকরদের অত্যাচার : নীলকুঠির লাঠিয়ালরা অবাধ্য চাষিদের ওপর হামলা , তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া , চাষির স্ত্রী – কন্যাদের অপহরণ ও লাঞ্ছনা , কৃষকদের গবাদি পশু আটকে রাখা ইত্যাদি নানা নির্যাতন চালাত । এই রকম অত্যাচার প্রায় দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে চলেছিল । দ্বিতীয় অংশ
বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য : ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে কৃয়নগরের কাছে চৌগাছা গ্রামে কৃষক বিদ্রোহ শুরু হয় । ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাস থেকে বিদ্রোহের আগুন নদিয়া , যশোহর , বারাসত , পাবনা , রাজশাহী , মালদহ , ফরিদপুর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে । প্রায় ৬০ লক্ষ কৃষক এই বিদ্রোহে যোগ দেয় । এই বিদ্রোহে যে বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায় , সেগুলি হল—
কৃষকদের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ : অন্যান্য কৃষক আন্দোলনের তুলনায় নীলবিদ্রোহের তীব্রতা ছিল ব্যাপকতর । এই স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ প্রসঙ্গে ‘ ক্যালকাটা রিভিউ ‘ পত্রিকা মন্তব্য করেছিল ‘ এটা একটা বিদ্রোহ — সমস্ত দেশই এতে যোগ দিয়েছে ।
জমিদারদের অংশগ্রহণ : অন্যান্য কৃষক বিদ্রোহের মতো নীলবিদ্রোহ জমিদার বা মহাজন – বিরোধী আন্দোলন ছিল না , বরং রানাঘাটের শ্রীগোপাল পাল , সাধুহাটির মথুরানাথ আচার্য প্রমুখ বেশ কিছু জমিদার এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেন । ত শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের সমর্থন : শিশিরকুমার ঘোষ , গিরিশ ঘোষ , মনমোহন ঘোষ , কিশোরীচাঁদ মিত্র প্রমুখ শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ব্যক্তিরা নীলবিদ্রোহকে সমর্থন করেন । হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় , দীনবন্ধু মিত্র , মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রমুখ একদিকে যেমন নীল চাষিদের মামলা – মোকদ্দমার খরচ বহন করতেন , অন্যদিকে তাঁদের পত্রপত্রিকার মাধ্যমে নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরেন ।
হিন্দু – মুসলিম ঐক্য : নীলবিদ্রোহ কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক আন্দোলন ছিল না । নিপীড়িত হিন্দু – মুসলমান কৃষক একযোগে নীলকরদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ।
সংবাদপত্রের ইতিবাচক ভূমিকা : ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ , ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ’ , ‘ সোমপ্রকাশ ’ প্রভৃতি পত্রপত্রিকা নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনি প্রকাশ করে নীল বিদ্রোহের ইতিবাচক জনমত গঠনে সহযোগিতা করে ।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য : নীল বিদ্রোহের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হল ( ১ ) এটি শুরুতেই হিংসাত্মক বিদ্রোহ ছিল না ; ( ২ ) নীল বিদ্রোহ শুরুর পরেও বাংলার গভর্নর পিটার গ্রান্টের সরকারি সমর্থন লাভ করেছিল ; ( ৩ ) এই বিদ্রোহ জমিদার ও মহাজনবিরোধী ছিল না বরং তা ছিল নীলকর বিরোধী বিদ্রোহ ।
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – West Bengal Madhyamik Class 10th History Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
মাধ্যমিক ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
Madhyamik Suggestion 2025 | মাধ্যমিক সাজেশন ২০২৫
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Bengali Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik English Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Geography Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik History Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Life Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Mathematics Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Physical Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik All Subjects Suggestion 2025 Click here
Info : প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
Madhyamik History Suggestion | West Bengal WBBSE Class Ten X (Class 10th) History Qustion and Answer Suggestion
” প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক মাধ্যমিক পরীক্ষা (West Bengal Class Ten X / WB Class 10 / WBBSE / Class 10 Exam / West Bengal Board of Secondary Education – WB Class 10 Exam / Class 10 Class 10th / WB Class 10 / Class 10 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর ( মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন / মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ও উত্তর । Madhyamik History Suggestion / Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer / Class 10 History Suggestion / Class 10 Pariksha History Suggestion / History Class 10 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / Madhyamik History Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারেলাগলে, আমাদের প্রয়াস মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর (Madhyamik History Suggestion / West Bengal Ten X Question and Answer, Suggestion / WBBSE Class 10th History Suggestion / Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer / Class 10 History Suggestion / Class 10 Pariksha Suggestion / Madhyamik History Exam Guide / Madhyamik History Suggestion 2022, 2023, 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030, 2021, 2020, 2019, 2017, 2016, 2015, 2031, 2032, 2033, 2034, 2035 / Madhyamik History Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Madhyamik History Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
FILE INFO : প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer with FREE PDF Download Link
PDF File Name | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer PDF |
Prepared by | Experienced Teachers |
Price | FREE |
Download Link 1 | Click Here To Download |
Download Link 2 | Click Here To Download |
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর।
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন উত্তর।
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | দশম শ্রেণির ইতিহাস
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন উত্তর – দশম শ্রেণি ইতিহাস | Madhyamik Class 10 History Protirodh o Bidroho
দশম শ্রেণি ইতিহাস (Madhyamik History Protirodh o Bidroho) – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Suggestion দশম শ্রেণি ইতিহাস – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর।
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | দশম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Question and Answer, Suggestion
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) | পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) | মাধ্যমিক ইতিহাস সহায়ক – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর । Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer, Suggestion | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Notes | West Bengal Madhyamik Class 10th History Question and Answer Suggestion.
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBBSE Class 10 History Question and Answer, Suggestion
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর | প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) । Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion.
WBBSE Class 10th History Protirodh o Bidroho Suggestion | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়)
WBBSE Madhyamik History Protirodh o Bidroho Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর । প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর ।
Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestions | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর
Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ, সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB Class 10 History Protirodh o Bidroho Suggestion | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর
Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর । Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal Class 10 History Suggestion Download WBBSE Class 10th History short question suggestion . Madhyamik History Protirodh o Bidroho Suggestion download Class 10th Question Paper History. WB Class 10 History suggestion and important question and answer. Class 10 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দশম শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 10 History Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Ten X History Protirodh o Bidroho Suggestion | West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Class 10 Exam
Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Class 10 Ten X History Suggestion is provided here. Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free has been given below.
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (তৃতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Protirodh o Bidroho Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।