সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer
সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer : সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই West Bengal WBCHSE Class 11th Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer, Suggestion, Notes | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – থেকে রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 11th Eleven XI Political Science Examination – পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন (সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer) গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।
তোমরা যারা সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো।
রাজ্য (State) | পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) |
বোর্ড (Board) | WBCHSE, West Bengal |
শ্রেণী (Class) | একাদশ শ্রেণী (WB Class 11th) |
বিষয় (Subject) | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান (Class 11 Political Science) |
অধ্যায় (Chapter) | সরকারের বিভিন্ন রূপ (Sarkarer Bibhinno Rup) |
[একাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]
সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE Class 11th Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer
সংক্ষিপ্ত | সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup SAQ Question and Answer :
- উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে কী বোঝ?
Ans: যে গণতন্ত্রের ভিত্তি জনসম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং জনগণের নিকট দায়িত্বশীল একটি সরকার থাকে, তাকে বলে উদারনৈতিক গণতন্ত্র। তা ছাড়াও উদারনৈতিক গণতন্ত্রে একটি নির্বাচিত সরকারের অবস্থিতির কথা বলা হয়, যে সরকার জনগণের স্বার্থে নিয়োজিত। উদারনৈতিক গণতন্ত্রে স্বাধীনতা, সাম্য, পরমতসহিষুতা, সমমর্যাদা প্রভৃতি প্রদান করা হয়।
- উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
অথবা, উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দুটি নীতি উল্লেখ করো।
Ans: উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-(1) উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় জনগণের সার্বভৌমত্বের ওপর ভিত্তি করে। (2) এরূপ গণতন্ত্রে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হয় এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সরকার গঠন করে।
- গণতন্ত্র সম্পর্কে মার্কসবাদীদের অভিমত কী?
Ans: মার্কস, লেনিন প্রমুখ দার্শনিকগণ মনে করেন যে, বুর্জোয়া শাসনের অবসানের পর প্রোলেতারীয় একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে কার্যত শ্রমিক শ্রেণিই ক্ষমতার অধিকারী হবে এবং তারা যে নতুন শাসনব্যবস্থা কায়েম করবে তার ভিত্তি হবে প্রোলেতারীয় একনায়কতান্ত্রিক গণতন্ত্র।
- গণতন্ত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
Ans: গণতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য চারটি বৈশিষ্ট্য হল-(1) জনমতের ওপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। (2) গণসার্বভৌমিকতার ধারণাটি গণতন্ত্রেই বিদ্যমান। (3) গণতন্ত্রে প্রযুক্ত শাসন হল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন। (4) গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিটি নাগরিক যেমন অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে, তেমনই এখানে জনমত কার্যকর করার নানা সুযোগ থাকে।
- মার্কসবাদীরা গণতন্ত্র সম্পর্কে কীরূপ অভিমত দিয়েছেন?
Ans: মার্কসবাদ অনুসারে শ্রমিক শ্রেণি পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করলে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটবে এবং গণতন্ত্র এক নতুন রূপ পরিগ্রহ করবে। শ্রমিকশ্রেণির একনায়কত্ব কায়েম হলে গণতন্ত্র আর সংখ্যালঘুর স্বার্থে সংখ্যালঘুর গণতন্ত্র থাকবে না, তা হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্র। অর্থাৎ শ্রমিক শ্রেণির একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে পূর্বের বুর্জোয়া গণতন্ত্রের সাথে প্রোলেতারীয় গণতন্ত্রের যে পার্থক্যটি সুস্পষ্ট হবে তা হল, বুর্জোয়া ব্যবস্থায় সংখ্যালঘু শ্রেণি গণতন্ত্রকে কায়েম করায় তাদের স্বার্থই রক্ষিত হয়, কিন্তু প্রোলেতারীয় একনায়কত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণি গণতন্ত্রকে কায়েম করায় সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বার্থ রক্ষিত হবে।
- গণতান্ত্রিক সমাজবাদ বলতে কী বোঝ?
Ans: গণতান্ত্রিক সমাজবাদ বলতে এমন একটি রাজনৈতিক মতাদর্শকে বোঝায়, যেখানে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সমন্বয় সাধন করা হয়। গণতান্ত্রিক সমাজবাদ মার্কসবাদের বিপরীত একটি মতবাদ যা শান্তিপূর্ণ পথে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী।
- গণতান্ত্রিক সমাজবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
Ans: গণতান্ত্রিক সমাজবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-(1) গণতান্ত্রিক সমাজবাদ রাষ্ট্র বিষয়ে বিবর্তনের ধারাকে আলোকপাত করেছে। তাঁদের দৃষ্টিতে রাষ্ট্র হল একটি শ্রেণি-নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। গণতান্ত্রিক সমাজবাদীরা মনে করেন সমাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় একটি প্রতিষ্ঠান হল রাষ্ট্র। (2) গণতান্ত্রিক সমাজবাদ ব্যক্তি মালিকানার কোনোরূপ বিলোপ চায়নি। তাঁরা চেয়েছেন মিশ্র-অর্থনীতির তত্ত্বটিকে প্রয়োগ করতে। মিশ্র অর্থ ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রই সমানভাবে প্রসারিত হয়।
- গণতান্ত্রিক সমাজবাদের পক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
Ans: গণতান্ত্রিক সমাজবাদের পক্ষে দুটি যুক্তি হল-(1) গণতান্ত্রিক সমাজবাদ যেহেতু পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ইতিবাচক দিকগুলিকে নিয়ে গড়ে উঠেছে, সেহেতু এই মতবাদ পুঁজিতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ত্রুটিসমূহ থেকে মুক্ত একটি মতবাদ। (2) গণতান্ত্রিক সমাজবাদ হিংসাবর্জিত একটি মতবাদ। কারণ গণতান্ত্রিক সমাজবাদ চায় শান্তিপূর্ণ পথে ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে বাস্তবায়িত করতে।
- গণতান্ত্রিক সমাজবাদের বিপক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
Ans: গণতান্ত্রিক সমাজবাদের বিপক্ষে দুটি যুক্তি হল-(1) অনেকে গণতান্ত্রিক সমাজবাদকে ‘সোনার পাথরবাটি’র মতো এক অলীক কল্পনা বলে মনে করেন। কারণ তাঁরা মনে করেন, গণতান্ত্রিক সমাজবাদীরা পুঁজিবাদের কাঠামোর মধ্যেই সমাজতন্ত্রকে বাস্তবায়িত করার কথা বলেন। কিন্তু পুঁজিবাদে সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বার্থই উপেক্ষিত হয়। (2) মার্কসবাদীরা গণতান্ত্রিক সমাজবাদের সমালোচনা করে বলেন যে, রাষ্ট্র যেহেতু শ্রেণি শাসনের যন্ত্র, সেহেতু রাষ্ট্র শ্রেণি নিরপেক্ষভাবে অবস্থান করে সংখ্যাগরিষ্ঠের কল্যাণ সাধন করতে পারে না।
- সর্বাত্মকবাদী ব্যবস্থা কাকে বলে?
Ans: সর্বাত্মকবাদ বলতে এমন একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত শাসন- ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে রাষ্ট্রের কোনো প্রকার বিরোধিতা বা সমালোচনা সহ্য করা হয় না, যেখানে শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি সকল বিষয়ই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং যে শাসনব্যবস্থায় প্রাধান্য পায় উগ্রজাতীয়তাবাদ ও কমিউনিস্ট বিরোধিতা।
- সর্বাত্মকবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
Ans: সর্বাত্মকবাদের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল-(1) সর্বাত্মকবাদীরা রাজনৈতিক সর্বনিয়ন্ত্রণবাদকে আশ্রয় করেছে। (2) এই ব্যবস্থায় একটিমাত্র রাজনৈতিক দলের কথা বলা হয়। এবং সর্বাত্মকবাদ চায় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের দ্বারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে সংকুচিত করতে।
- সর্বাত্মকবাদের দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।
Ans: সর্বাত্মকবাদের দুটি সীমাবদ্ধতা হল-(1) সর্বাত্মকবাদ জনগণের সার্বভৌমিকতাকে উপেক্ষা করে একদলীয় ও একনেতার শাসনকে স্বাগত জানায়। তাই এটি ভুল নীতি। (2) সর্বাত্মকবাদ গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে কার্যত স্বাধীনতা, সাম্যের আদর্শকে পাশ কাটিয়ে গেছে।
- সর্বাত্মকবাদ বলতে কী বোঝায়?
Ans: সর্বাত্মকবাদ হল এক ধরনের সামগ্রিক স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। এ এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে কোনো বিরোধী কণ্ঠস্বর বা বিরোধী দল বা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি কোনো কিছুই থাকে না। যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন স্বৈরাচারী শাসকের হাতে কুক্ষীগত থাকে। এই স্বৈরাচারী শাসক তাঁর অবাধ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব কিছুই, এমনকি নাগরিকদের ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনকেও নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
- সর্বাত্মকবাদের সংজ্ঞা দাও।
Ans: সর্বাত্মকবাদ হল এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে বিরোধী দল ও বিরোধী মত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকে। এ হল এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে সমস্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন স্বৈরাচারী শাসকের হাতে কুক্ষীগত থাকে যিনি তার সর্বগ্রাসী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের মানুষদের জীবন ও স্বাধীনতাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন।
- সর্বাত্মকবাদ সম্পর্কে মুসোলিনির বক্তব্য কী ছিল?
Ans: ইতালির একনায়ক সর্বাত্মকবাদের প্রবক্তা বেনিতো মুসোলিনির বক্তব্য ছিল, ‘সব কিছুই রাষ্ট্রের মধ্যে, রাষ্ট্রের বাইরে কিছু নেই, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও কিছু নেই’।
- সর্বাত্মকবাদের উদাহরণ উল্লেখ করো।
Ans: সর্বাত্মকবাদের ঐতিহাসিক উদাহরণ হল হিটলারের নাৎসি জার্মানি (১৯৩৩-৪৫), স্ট্যালিনের সোভিয়েত ইউনিয়ন (১৯২৪-৫৩), মুসোলিনির ইতালি (১৯২২-৪৩), মাও জে দঙ-এর চিন (১৯৪৯- ৭৬) এবং নে উইনের বার্মা (১৯৬২-৮৮)। বর্তমান সময়ে সর্বাত্মকবাদের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন-এর রাজনৈতিক ব্যবস্থা।
- সর্বাত্মকবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী?
Ans: সর্বাত্মকবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল-(1) সর্বাত্মক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, (2) রাষ্ট্রের জন্য ব্যক্তি, ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র নয়, (3) একদলীয় ব্যবস্থা, (4) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অনুপস্থিতি, (5) গণমাধ্যমের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি।
- সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি দোষের কথা উল্লেখ করো।
Ans: সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি দোষ হল-(1) ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী, (2) অগণতান্ত্রিক, (3) একদলীয় শাসন, (4) ব্যক্তি পরিসরে রাষ্ট্রের প্রবেশ এবং সৃজনশীলতার চরম শত্রু।
- সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি গুণ-এর কথা উল্লেখ করো।
Ans: সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি গুণ হল-(1) দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণ ও রূপায়ণের ক্ষমতা, (2) সংকটকালীন সময়ের উপযোগী, (3) আর্থিক বিকাশ, (4) একত্রে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং (5) সামাজিক শৃঙ্খলা ও কঠোর অনুশাসন।
- কর্তৃত্ববাদ কাকে বলে?
Ans: কর্তৃত্ববাদ হল গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি মতবাদ। কর্তৃত্ববাদ বলতে এমন এক মতবাদকে বোঝায় যেখানে সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রক হল কর্তৃত্ব বা কর্তৃপক্ষ। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, কর্তৃত্বের প্রতি অন্ধ আনুগত্য হল কর্তৃত্ববাদ।
- কর্তৃত্ববাদের উৎস হিসেবে কোন্ মতবাদের কথা বলা হয়?
Ans: কর্তৃত্ববাদের উৎস হিসেবে ঊনবিংশ শতাব্দীর ভাববাদ বা আদর্শবাদের কথা বলা হয়। আদর্শবাদ অনুসারে আগে রাষ্ট্র পরে ব্যক্তি। রাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে ব্যক্তি তার অস্তিত্বকে কল্পনা করতে পারে না। তাই রাষ্ট্রবিরোধী কোনো অধিকার নাগরিকদের থাকবে না। রাষ্ট্র কর্তৃত্ব যাই আদেশ দিক তা নাগরিকদের মেনে চলতে হবে।
- কর্তৃত্ববাদের সংজ্ঞা দাও।
Ans: কর্তৃত্ববাদ এমন এক মতবাদ যেখানে ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তা ও স্বাধীন কর্মকাণ্ডের বদলে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের প্রতি অন্ধ আনুগত্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায় সমস্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন নেতা বা গোষ্ঠীর কর্তৃত্বে থাকে, এই নেতা বা গোষ্ঠী দেশের সংবিধানকে অগ্রাহ্য করে স্বেচ্ছাচারীভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখেন।
- কর্তৃত্ববাদের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করো।
Ans: কর্তৃত্ববাদের দৃষ্টান্ত হিসেবে স্পেনে ফ্রাঙ্কোর শাসনের (১৯৩৯) কথা, কম্বোডিয়ায় কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির শাসনের (১৯৭৯) কথা, আর্জেন্টিনায় জুয়ান পেরনের শাসনের কথা, ইজিপ্টে প্রেসিডেন্ট নাসের-এর শাসনের কথা উল্লেখ করা যায়।
- কর্তৃত্ববাদের পাঁচটি শ্রেণির কথা উল্লেখ করো।
Ans: কর্তৃত্ববাদের পাঁচটি শ্রেণি হল-(1) দলীয় শাসনের কর্তৃত্ববাদ, (2) সামরিক শাসনের কর্তৃত্ববাদ, (3) ব্যক্তিতান্ত্রিক শাসনের কর্তৃত্ববাদ, (4) পরোক্ষ সামরিক শাসনের কর্তৃত্ববাদ এবং (5) মিশ্র গণতন্ত্রের কর্তৃত্ববাদ।
- কর্তৃত্ববাদের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের বিবরণ দাও।
Ans: কর্তৃত্ববাদের কতকগুলি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে এগুলি হল- (1) সীমিত রাজনৈতিক স্বাধীনতা, (2) নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম, (3) বহু মত বহু পথের বহুত্ববাদের প্রত্যাখ্যান, (4) কর্তৃত্বের হাতে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা এবং নামমাত্র গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব।
- কর্তৃত্ববাদের সুবিধাগুলি কী?
Ans: কর্তৃত্ববাদের উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলি হল-(1) কর্তৃত্ববাদী প্রশাসন জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, (2) কর্তৃত্ববাদে সরকারের স্থিতিশীলতা বা স্থায়িত্ব বজায় থাকে, (3) কর্তৃত্ববাদী প্রশাসন একক নেতৃত্বের পরিচালনায় চালিত হয় বলে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব হয় এবং ④ কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বাস্তব রূপায়ণ অনেক সহজ হয়।
- কর্তৃত্ববাদের অসুবিধাগুলি কী?
Ans: কর্তৃত্ববাদের অসুবিধাগুলি হল-(1) কর্তৃত্ববাদে সীমিত রাজনৈতিক অধিকার দেওয়া হয় বলে নাগরিক স্বাধীনতাও সীমিত থাকে।(2) কর্তৃত্ববাদে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের ফলে দুর্নীতির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। (3) কর্তৃত্ববাদে যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন কর্তৃত্ববাদী শাসক বা গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষীগত থাকে বলে স্বৈরাচারের আধিক্য দেখা দেয়। (4) কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করে রাখা হয় বলে নাগরিকদের মধ্যে নতুন উদ্ভাবনা বা সৃজনশীল কাজের বিকাশ ঘটে না। (5)কর্তৃত্ববাদে যেভাবে বিরুদ্ধ মতামতকে দমন করা হয় তার ফলে জনগণের মধ্যে সামাজিক অস্থিরতা ও অসন্তোষ দেখা দেয়।
- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বিলুপ্তির দুটি কারণ উল্লেখ করো।
Ans: প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বিলুপ্তির দুটি কারণ হল-(1) প্রাচীন গ্রিসের যে নগররাষ্ট্রগুলিতে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র একসময় চালু ছিল তা আধুনিক রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। কারণ আধুনিক রাষ্ট্রের আয়তন ও জনসংখ্যা অনেক বেশি। (2) আধুনিক রাষ্ট্রের কাজকর্মের প্রকৃতি অনেক জটিল। তাই রাষ্ট্রীয় কাজকর্মের সব বিষয়ে জনগণের পক্ষে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ কোনোমতেই সম্ভব নয়।
- ‘গণতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো?
Ans: ‘গণতন্ত্র’ কেবল একটি শাসনব্যবস্থা বা সরকারের ধরনকেই বোঝায় না, গণতন্ত্র বলতে এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে জনগণের সম্মতি ও রাজনৈতিক মর্যাদা সাম্যের নীতির ওপর এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্র সমতার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
- গণতন্ত্রের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ উল্লেখ করো।
Ans: ইংরেজি ‘Democracy’ শব্দটির বাংলা অর্থ হল ‘গণতন্ত্র’। গ্রিক শব্দ ‘Demos’ এবং ‘Kratos’ থেকে ‘Democracy’ শব্দটি এসেছে, যার প্রথমটির অর্থ হল ‘People’ বা ‘জনগণ’ এবং দ্বিতীয়টির অর্থ হল ‘authority’ বা ‘কর্তৃত্ব’। অতএব ‘গণতন্ত্র’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল-‘জনগণের কর্তৃত্ব’ বা ‘জনগণের শাসন’।
- সর্বপ্রথম কে, কোন্ গ্রন্থে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি ব্যবহার করেন?
Ans: প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিক থুকিডিডিস তাঁর ‘পেলোপনেশীয় যুদ্ধের ইতিহাস’ সংক্রান্ত বইতে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন।
- গণতন্ত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
Ans: গণতন্ত্রের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য-(1) গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় জনমতের ওপর। (2) গণতন্ত্রে ‘গণসার্বভৌমিকতা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। (3) গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক রাজনৈতিক কার্যে অংশগ্রহণের এবং জনমত কার্যকর করারও সুযোগ পায়। (5) গণতন্ত্র হল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন।
- ব্যাপক অর্থে ‘গণতন্ত্র’ বলতে কী বোঝ?
Ans: ব্যাপক অর্থে ‘গণতন্ত্র’ হল এমন একটি ধরন, যেখানে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্য গড়ে ওঠে। এইরূপ গণতন্ত্রে জনগণের হাতে চূড়ান্ত ক্ষমতা ন্যস্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। ব্যাপক অর্থে সেই রাষ্ট্রব্যবস্থাকেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বলা হয়েছে, যে রাষ্ট্রব্যবস্থা সাম্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। গণতন্ত্র মানুষকে সমমর্যাদা সম্পন্ন করে।
- সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?
Ans: সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে সেই শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যে শাসনব্যবস্থা জনগণ দ্বারা পরিচালিত হয়।
- গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে কয়ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী?
Ans: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়, যথা- (1) প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র, (2)💐 পরোক্ষ গণতন্ত্র। আবার শ্রেণিগত দিক থেকে গণতন্ত্রকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন- [a] উদারনৈতিক গণতন্ত্র এবং [b] সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র।
- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বলতে কী বোঝ?
Ans: যে শাসনব্যবস্থায় শাসনকার্য পরিচালনার জন্য জনগণ সরাসরি ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে; একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হয়ে শাসনতান্ত্রিক নীতি নির্ধারণ, আইন প্রণয়ন, রাষ্ট্রের আয়-ব্যয় নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে মতামত গ্রহণ প্রভৃতি করে থাকে; এ ছাড়া সরকারকে এইসব ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে, তাকে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বলা হয়।
- গণতন্ত্র সম্পর্কে আব্রাহাম লিঙ্কনের সংজ্ঞাটি উল্লেখ করো।
Ans: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন গণতন্ত্রের একটি গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্র হল “জনগণের জন্য, জনগণ দ্বারা, জনগণের সরকার” (Government of the people, by the people and for the people)।
- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের নিয়ন্ত্রকগুলি কী?
Ans: প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রকে তিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যথা-(1) গণভোট, (2) গণ উদ্যোগ এবং প্রত্যাহার।
- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।
Ans: প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। এগুলির মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য হল-(1) প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে বিপ্লব বা বিদ্রোহের সম্ভাবনা থাকে না। কারণ, এই ব্যবস্থায় জনগণই সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে সরকারের নীতি নির্ধারণে সাহায্য করে। (2) প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনগণ সরাসরি ও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় বলে আমলাতান্ত্রিকতার শাসন থেকে এই ব্যবস্থা প্রায় মুক্ত থাকে।
- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।
Ans: প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বর্তমানে অচল। কারণ এর কতকগুলি অসুবিধা রয়েছে। এগুলির মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য হল-(1) সরকার পরিচালনার জন্য প্রয়োজন বিশেষ জ্ঞানের কিন্তু প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় যেসকল সাধারণ জনগণ উপস্থিত থাকেন, তাদের সকলের সরকার পরিচালনার মতো জ্ঞান থাকে না। (2) ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের পক্ষেই প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করা যায়, বৃহৎ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা অসম্ভব।
- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের প্রচলন কোথায় ছিল? বর্তমানে কোথায় প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র প্রচলিত আছে?
Ans: প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র প্রচলিত ছিল প্রাচীন গ্রিস এবং রোমে।
- বর্তমানে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র প্রায় বিলুপ্ত হলেও সুইটজারল্যান্ডের ছোটো ছোটো কয়েকটি ‘ক্যান্টন’-এ এই ব্যবস্থা প্রচলিত আছে।
- ‘পরোক্ষ গণতন্ত্র’ বা ‘প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র’ বলতে কী বোঝ?
Ans: যে শাসনব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা করে এবং প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের কাজের জন্য নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে দায়বদ্ধ থাকে, তাকে পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র বলে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সরকারি নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবে তা রূপায়ণ করে থাকেন।
- পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র প্রচলিত আছে এমন চারটি দেশের নাম করো।
Ans: পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র প্রচলিত আছে এমন চারটি দেশের নাম হল-(1) ভারত, (2) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, (3) গ্রেট ব্রিটেন, (4) ফ্রান্স।
- পরোক্ষ গণতন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
Ans: পরোক্ষ গণতন্ত্রের দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল-প্রথমত, এরূপ গণতন্ত্রে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের দুটি অংশ থাকে-(1) একটি রাজনৈতিক অংশ এবং (2) অপরটি অ-রাজনৈতিক অংশ। রাজনৈতিক অংশটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে তাঁরা পদচ্যুত হতে পারেন। দ্বিতীয়ত, পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে একাধিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।
- ‘গণভোট’ বলতে কী বোঝ?
Ans: ‘গণভোট’ বলতে সেই ব্যবস্থাকে বোঝায়, যে ব্যবস্থা অনুসারে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে জনগণ মতামত দেন এবং এক্ষেত্রে জনগণ সরাসরি তাঁদের মতামত জানান। বেশিরভাগ জনগণের মতামত পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি গৃহীত হয়।
- ‘গণ উদ্যোগ’ বলতে কী বোঝ?
Ans: প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের কখনও কোনো আইন সরকার দ্বারা মনোনীত না হলে জনগণ নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে আইনটি প্রণয়নের জন্য এগিয়ে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে সরকার অবশেষে আইন প্রণয়নে বাধ্য হন। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় গণ উদ্যোগ।
- ‘প্রত্যাহার’ কী?
Ans: প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন করেন তাঁদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়নের জন্য। জনপ্রতিনিধিগণের কাজে জনগণ সন্তুষ্ট না হলে অথবা প্রতিনিধি যদি শাসনব্যবস্থার কাজে অযোগ্য বা দুর্নীতিপরায়ণ হয়, তবে তাকে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ‘পদচ্যুত’ (Recall) করতে পারেন। একে বলা হয় প্রত্যাহার।
- গণতন্ত্রের দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।
Ans: গণতন্ত্রের দুটি সুবিধা হল-(1) গণতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতার পূর্ণ বিকাশ ঘটে। এই ব্যক্তিস্বাধীনতা সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত হয়। (2) সরকারের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণ শান্তিপূর্ণ পথ গ্রহণ করতে পারে, বিপ্লবের পথ এড়ানো সম্ভব হয়।
- গণতন্ত্রের দুটি অসুবিধা বা ত্রুটি উল্লেখ করো।
Ans: গণতন্ত্রের দুটি অসুবিধা হল-(1) অতিরিক্ত স্বাধীনতা প্রদানের ফলে গণতন্ত্রে উচ্ছৃঙ্খলতা লক্ষ করা যায়। এই ব্যবস্থায় ব্যক্তি শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ ভঙ্গ করে। (2) গণতন্ত্রকে কেউ কেউ মূর্খের শাসনও বলেছেন। কারণ সমাজে মূর্খের সংখ্যা যেহেতু বেশি সেহেতু তাদের দ্বারা নির্বাচিত ব্যক্তিরাই ক্ষমতায় আসেন।
- গণতন্ত্রের সাফল্যের শর্তগুলি কী?
Ans: গণতন্ত্রকে সাফল্য পেতে হলে কতকগুলি শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন-(1) গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য দরকার গণতান্ত্রিক জনগণ ও গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানসিকতা। (2) গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্যতম শর্ত হল, গণতন্ত্রকে গ্রহণ করার মতো জনগণের ইচ্ছা ও ক্ষমতা। (3) গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা। (4) ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন।
- গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছেন, এমন কয়েকজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর নাম করো।
Ans: কোনো কোনো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছেন এবং ত্রুটি দেখিয়েছেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-(1) প্লেটো, (2) অ্যারিস্টট্ল, (3) কার্লাইল, (4) হেনরি মেইন, নিক্সে, ( ট্রিটস্ক প্রমুখ।
- গণতন্ত্রকে সমর্থন করেছেন এমন কয়েকজন রাষ্ট্রদার্শনিকের নাম করো।
Ans: গণতন্ত্রকে যাঁরা সমর্থন করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযো-ট হলেন-(1) জন লক, (2) মঁতেস্কু, (3) জেমস্ মিল, (4) জাঁ জ্যাক রুশো, (5) ব্যোম, (6) এস মিল, (7) হবহাউস, (8) টি এইচ গ্রিন, (9) আর্নেস্ট বার্কার, (10) হ্যারল্ড ল্যাস্কি, (11) আব্রাহাম লিঙ্কন, (12) ম্যাকাইভার প্রমুখ।
- প্লেটো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কী কী আপত্তি তুলেছেন?
Ans: প্রাচীন গ্রিসের এথেন্সে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল, তার করুণ অবস্থার কথা মনে করেই প্লেটো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলে বলেছেন যে, (1) এরূপ ব্যবস্থায় যোগ্য এবং অযোগ্য ব্যক্তি-উভয়েই সমানভাবে সুযোগ পায় (2) এরূপ ব্যবস্থায় উচ্ছৃঙ্খলতা বৃদ্ধি পায়। (3) গণতন্ত্রে নৈতিকতা বিকাশের অবনতি ঘটে।
- রাষ্ট্রতাত্ত্বিকগণ গণতন্ত্রকে কয়ভাগে ভাগ করেছেন?
Ans: ‘গণতন্ত্র’ ধারণাটিকে বিভিন্ন রাষ্ট্রদার্শনিক ও রাষ্ট্রতাত্ত্বিক বিভিন্নভাবে ভাগ করেছেন। তবে অনেকেই বলেছেন যে, একে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-(1) উদারনৈতিক গণতন্ত্রের তত্ত্ব, (2) গণতন্ত্রের প্রবর বা এলিট তত্ত্ব, (3) গণতন্ত্রের বহুত্ববাদী তত্ত্ব, (4) গণতন্ত্রের মার্কসীয় তত্ত্ব।
বিশ্লেষণধর্মী | সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer :
1. গণতন্ত্রের প্রকৃতি আলোচনা করো?
Ans:
গণতন্ত্রের প্রকৃতি :
বর্তমান যুগে গণতন্ত্র শব্দটি দ্বারা এক বিশেষ সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, এমনকি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝায়। গিডিংসের ভাষায় বলা যায়-গণতন্ত্র হল সরকারের অথবা রাষ্ট্রের আকার কিংবা সমাজের রূপ কিংবা এই তিনটি বিষয়ের সমাহার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় যেসকল শব্দ ও ব্যঞ্জনার মাধ্যমে গণতন্ত্রের ধারণাটিকে বোঝানো হয়, তাদের বিশ্লেষণের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের ধারণাটির প্রকৃতি অনুধাবন করা যায়, যা নিম্নে আলোচনা করা হল-
(i) গণতান্ত্রিক সমাজ: সমাজজীবনের সকল ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলে গণতান্ত্রিক সমাজ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ সাম্যের ভিত্তিতে যে সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়, তাকে গণতান্ত্রিক সমাজ বলা হয়। গণতান্ত্রিক সমাজে সকল ব্যক্তি সমমর্যাদাসম্পন্ন। সকল নাগরিক সমাজে সমানাধিকার ও সমান সুযোগ ভোগ করে থাকে। এই ধরনের গণতন্ত্রে জন্মগত বা শ্রেণিগত কিংবা ধনগত বৈষম্যকে অস্বীকার করা হয়। এখানে বলপ্রয়োগের কোনো সুযোগ থাকে না।
(ii) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র: গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বোঝায়, যা রাজনৈতিক সাম্য নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিক সম-রাজনৈতিক সুযোগ ও মর্যাদা ভোগ করে থাকেন। হারশ, জন স্টুয়ার্ট মিল প্রমুখ তাত্ত্বিকেরা এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কারণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণই চূড়ান্ত ক্ষমতা ও সমগ্র কর্তৃত্বের অধিকারী, অর্থাৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল অর্থ হল ‘সার্বভৌমত্বে সকলের প্রবেশাধিকার’।
(iii) গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও গণতন্ত্র সংকীর্ণ অর্থে অভিন্ন। জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত এবং প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে পরিচালিত শাসনব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বলে। প্রাচীন গ্রিসে এই ধরনের প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। বর্তমান যুগে জনসংখ্যাবৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন বৃহদায়তন রাষ্ট্রে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের জায়গায় পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে।
(iv) গণতান্ত্রিক সরকার: গণতান্ত্রিক সরকার বলতে এমন এক শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যে শাসনব্যবস্থায় জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা করে অর্থাৎ এইরূপ সরকারের শাসন জনগণের দ্বারা পরিচালিত হয়।
(v) অর্থনৈতিক গণতন্ত্র : গণতান্ত্রিক আদর্শের সম্প্রসারণের মাধ্যমে সমাজ থেকে যাবতীয় অর্থনৈতিক শোষণ ও বৈষম্য দূর করে, অর্থনৈতিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। সমাজতন্ত্রবাদীরা অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের আদর্শের সপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র একমাত্র সমাজতন্ত্রেই লক্ষ করা যায়। কারণ এখানে অর্থনৈতিক গণতন্ত্র বিরাজমান। ল্যাস্কি ‘A Grammar of Politics’ গ্রন্থে বলেছেন, অর্থনৈতিক গণতন্ত্র ছাড়া রাজনৈতিক গণতন্ত্র অর্থহীন।
(vi) গণতান্ত্রিক জীবনাদর্শ: রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের কাছে গণতন্ত্র কেবলমাত্র একটি সামাজিক ব্যবস্থা নয় কিংবা অর্থনৈতিক আদর্শও নয়, গণতন্ত্র হল একটি জীবনাদর্শ বা জীবনযাপন পদ্ধতি। এই জীবনচর্চা বলতে মূলত গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, গণতান্ত্রিক চেতনা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক আচরণকে বোঝায়। গণতান্ত্রিক জীবনাদর্শ বলতে বোঝায়, আলাপ-আলোচনার উপর নির্ভরশীলতা এবং যে-কোনো রকম বৈষম্যের অবসান, অন্যায়ের প্রতিবাদ, অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রভৃতি।
2. গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো?
Ans:
গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ :
গণতন্ত্রের বেশ কয়েকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ এবং অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(i) গণসার্বভৌমত্ব: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারি কর্তৃপক্ষ জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং টিকে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণ তাদের এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে।
(ii) আইনের অনুশাসন : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সকল ব্যক্তি এবং সমাজস্থ সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানসমূহ রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি অনুগত থাকে। যে-কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আইনের প্রতি দায়বন্ধশীল থেকে নিজ নিজ কার্যসম্পাদন করতে হয়, অন্যথায় এই আইন বাস্তবে সকলের উপর সমভাবে প্রযুক্ত হয়। একেই আইনের অনুশাসন (Rule of Law) বলা হয়।
(iii) রাজনৈতিক সাম্য : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা মূলত রাজনৈতিক সাম্যের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। রাজনৈতিক সাম্য বলতে, রাজনীতি তথা রাষ্ট্রনীতিতে সকলের অংশগ্রহণের সমান সুযোগসুবিধাকে বোঝায়। প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা ভোটদানের অধিকার, নির্বাচিত হওয়ার অধিকার বা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমান সুবিধা ভোগ করাকেই রাজনৈতিক সাম্য বলে মনে করা হয়। এখানে রাজনৈতিক অংশগ্রহণে জন্মগত বা ধনগত বৈষম্যকে স্বীকার করা হয় না, সকলেই সমমর্যাদা ও সমানাধিকারসম্পন্ন।
(iv) সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন ও সংখ্যালঘু অধিকার সংরক্ষণ : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার ফলে এই ধরনের শাসনব্যবস্থা সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনে পরিণত হয়। রাজনৈতিক ভোটাভুটিতে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, সেই দলের নেতা বা নেত্রী সরকার গঠন ও পরিচালনা করার সুযোগ পান। অনেকে তাই মনে করেন, গণতন্ত্র কখনোই সমাজের সমগ্র অংশের শাসন নয়, কেবলমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশেরই শাসনমাত্র।**
(v) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন (Free and Fair Election)। এখানে নির্বাচন প্রক্রিয়াটি নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হয়, যাতে রাষ্ট্রের সকল যোগ্য নাগরিক যে-কোনো দলের প্রার্থী কিংবা যে-কোনো দলের সদস্যপদ গ্রহণের সমান সুযোগ ভোগ করতে পারে।
(vi) প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার: গণতন্ত্র বলতে বর্তমানে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই বোঝায়। বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ রাষ্ট্রই বর্তমানে আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে বৃহৎ। ফলত, জনসাধারণের পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে বা সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাই আধুনিককালে পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র (Indirect or Representative Democracy) প্রাধান্য পেয়েছে।
(vii) প্রতিনিধি নির্বাচন: এই শাসনব্যবস্থায় জনগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করে না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনগণ সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধিদের দ্বারা শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। জনপ্রতিনিধিরাই শাসনক্রিয়াকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
(viii) গণঅংশগ্রহণ: গণতন্ত্রে নাগরিকরা কখনও সরাসরি আবার কখনও বা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয় সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে থাকে।
(ix) ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উপস্থিতি: গণতন্ত্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির (Separation of Powers) উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। অর্থাৎ, সরকারের তিনটি বিভাগ যথা-শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে তাদের কার্যসম্পাদন করে। কিন্তু সরকারের কোনো একটি বিভাগ যাতে স্বৈরাচারী হয়ে না ওঠে বা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে না ফেলতে পারে, সেক্ষেত্রে বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতি (Checks and Balance)-টিও প্রাধান্য পেয়েছে।
(x) বহুত্ববাদ: আধুনিক গণতন্ত্রের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল বহুত্ববাদ (Pluralism)-এর স্বীকৃতি। বর্তমানে রাজনৈতিক মতামতের বৈচিত্র্যময়তা, বহুবিধ রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি, স্বার্থগোষ্ঠীসমূহের অস্তিত্বকে গণতন্ত্রে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সহাবস্থানকে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
(xi) দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা: গণতন্ত্রে সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। সরকারি কার্যাবলির উপর জনগণের বিশ্বাস সুনিশ্চিত করতে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করতেই সরকারকে জনসাধারণের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। ফলে সরকারি কার্যের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়।.
(xii) জনসম্মতিতে এবং জনস্বার্থে পরিচালিত: গণতন্ত্রে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণির হাতে ন্যস্ত থাকে। কিন্তু, এই শাসনকার্য কেবলমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বার্থেই নয়, জনগণের সার্বিক কল্যাণের জন্যও পরিচালিত হয়। এই শাসনব্যবস্থায় সংখ্যালঘু স্বার্থ সংরক্ষণ ও তাদের মতামতকেও স্বীকৃতি প্রদান করা হয়, তাই রাষ্ট্রের সংখ্যালঘু অংশও গণতন্ত্রকে সমর্থন করে। অর্থাৎ, রাষ্ট্রের সমগ্র অংশই গণতন্ত্রকে সমর্থন করে। এই কারণেই গণতন্ত্রকে জনসম্মতির উপর প্রতিষ্ঠিত সরকার (Government based on Consent) বলে অভিহিত করা হয়।
(xiii) জনমতের গুরুত্ব : গণতন্ত্র যেহেতু জনমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, তাই অনেকে জনমতকে গণতন্ত্রের প্রাণ বলার পক্ষপাতী। জনমতকে উপেক্ষা করে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হতে পারে না। তাই সকল সরকারি সিদ্ধান্ত জনমতের ভিত্তিতে গৃহীত হয়।
(xiv) মানবাধিকারের সংরক্ষণ : গণতন্ত্রের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল মানবাধিকারের সংরক্ষণ। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা, বাক্ ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, আইনসভায় মতামত প্রকাশের অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রভৃতির মাধ্যমে রাষ্ট্র নাগরিকদের মানবাধিকার সংরক্ষিত রাখার প্রচেষ্টা করে।
3. গণতন্ত্রের বিকাশ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো?
Ans:
গণতন্ত্রের বিকাশ :
বর্তমানে ‘গণতন্ত্র’ হল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বহু আলোচিত একটি বিষয়। তবে এটি কোনো আধুনিক ধারণা নয়। ক্রমাগত যুগ বিকাশের মধ্য দিয়ে নিত্য নতুন ধ্যানধারণা গণতন্ত্রের আলোচনাকে সমৃদ্ধ করেছে। বিভিন্ন সমাজব্যবস্থায় গণতন্ত্রের ধারণা বিভিন্ন রকম অর্থে ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রাচীন রোমে ও গ্রিসে ভিন্ন অর্থে গণতন্ত্র শব্দটির প্রচলন ছিল। তবে মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের মহাসনদ (ম্যাগনা কার্টা, ১২১৫ খ্রি.), গৌরবময় বিপ্লব (১৬৮৮ খ্রি.), আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৭৭৫- ১৭৮৩ খ্রি.), ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯ খ্রি.), পরবর্তীকালে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ (Individualism), হিতবাদ ও উদারনৈতিক চিন্তাধারা (Liberalism) প্রভৃতি তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে উদারনৈতিক গণতন্ত্র (Liberal Democracy)-এর ধারণার বিকাশ ঘটে।
প্রাচীন গ্রিস ও রোমে গণতন্ত্র: প্রাচীন গ্রিস ও রোমের নগররাষ্ট্রে বিশুদ্ধ গণতন্ত্রের পীঠস্থান ছিল বলে মনে করা হয়। প্রাচীন গ্রিসের এথেন্স নগরীতে সর্বপ্রথম গণতন্ত্র বিষয়ক চর্চা শুরু হয়। গ্রিক ঐতিহাসিক থুকিডিডিস তাঁর পেলোপনেসীয় যুদ্ধের ইতিহাসে গণতন্ত্রের উল্লেখ করেছিলেন। গ্রিক দার্শনিক হেরোডোটাস খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে গণতন্ত্রের আলোচনায় ‘বহুজনের শাসন’ ও ‘সমান অধিকার’-এর কথা বলেছিলেন। এই সময় ক্লিওন নামক এক গ্রিক পণ্ডিতও গণতন্ত্রকে জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন বলে উল্লেখ করেছিলেন। আবার, স্টোয়িক দার্শনিকরা গ্রিক জনগণের মধ্যে আইনের প্রতি আনুগত্য, ব্যক্তি মানুষের দায়িত্ব, মানুষের স্বাভাবিক সাম্য ইত্যাদি ধারণাগুলি ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন। গ্রিক দার্শনিক পেরিক্লিস এথেন্সের গণতন্ত্রকে আদর্শ গণতন্ত্র বলে মনে করতেন। কিন্তু, এখানে গণতন্ত্র খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ফলে এই সম্পর্কিত ধারণার আর বিকাশ ঘটেনি। তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বা অ্যারিস্টটল-এর মতে, ‘গণতন্ত্র’ পলিটির বিকৃত রূপ হলেও বর্তমানে জনতার শাসনব্যবস্থা বা জনতাতন্ত্র (Mobocracy)-ই গণতন্ত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
অপরদিকে, প্রাচীনকালে রোম ছিল রাজতন্ত্র। পরবর্তীকালে, রাজতন্ত্রের অবসানের মধ্য দিয়ে প্যাট্রিসিয়ানরা (Patricians) ক্ষমতা দখল করলে প্লেবিয়ানদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এর ফলস্বরূপ একসময় উভয়ের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সেখানকার শাসনব্যবস্থা অভিজাতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের এক সংমিশ্রিত রূপ ধারণ করে।
অষ্টাদশ শতাব্দী ও তার পরবর্তীকালে গণতন্ত্র: অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে গণতন্ত্র নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনার সূচনা ঘটে। আর বিংশ শতাব্দীর গোঁড়ার দিকেই এই আলোচনা বিশ্বজগতে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করে বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সমাজজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যদি সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন সেই সাম্যভিত্তিক সমাজকেই গণতান্ত্রিক সমাজ বলা হয়। এই ধরনের সমাজে সমাজস্থ সকল ব্যক্তিই সমমর্যাদাসম্পন্ন হয়ে থাকে। এই কারণে জনগণই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চূড়ান্ত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।
আধুনিককালের গণতন্ত্র: বর্তমানে গণতন্ত্রকে ‘জনমত কর্তৃক পরিচালিত শাসনব্যবস্থা’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ এর মাধ্যমেই জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, মতামত, ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রভৃতির প্রকাশ ঘটে। জনমতবিরোধী কোনো আইন পাস হওয়ার অর্থ হল প্রতিকূল জনমতের সম্মুখীন হওয়া, যার ফলস্বরূপ পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকারের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। তাই গণতন্ত্রে জনমতের উপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়।
আবার, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে ‘শাসিতশ্রেণির সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত শাসন’ বলেও অ্যাখ্যায়িত করা হয়। এই ধরনের শাসনব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সরকার গঠন ও পরিচালনা করে এবং সংখ্যালঘু দল সরকারি কার্যকলাপ, নীতিসমূহ ইত্যাদির সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে সংযত রাখে। এ প্রসঙ্গে বার্কার তাই মন্তব্য করেছিলেন, “… a system of government by discussion.” অর্থাৎ, গণতন্ত্র হল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিচালিত একটি শাসনব্যবস্থা।
মাকর্সবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে গণতন্ত্র: মার্কসবাদী তাত্ত্বিকরা মনে করেন যে, একটি ধনবৈষম্যমূলক সমাজে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র জনসাধারণ এরূপ ব্যবস্থায় কখনই রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করতে পারে না। ফলে এরূপ গণতন্ত্রে শাসনক্ষমতা মুষ্টিমেয় বাছাই করা কিছু ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত হয়। এঁনারা মনে করেন, গণতন্ত্রের প্রকৃত বা আদর্শ রূপ তখনই গড়ে উঠবে, যখন একটি সমাজে কেবলমাত্র রাজনৈতিক সাম্য নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও সাম্য, সমানাধিকার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হবে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ল্যাস্কি মন্তব্য করেছিলেন যে, “অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গণতন্ত্র ছাড়া রাজনৈতিক গণতন্ত্র অর্থহীন।”
4. গণতন্ত্রের উদ্ভবের কারণগুলি ব্যাখ্যা করো?
Ans:
গণতন্ত্রের উদ্ভবের কারণসমূহ :
গণতন্ত্র একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ঐতিহাসিক, দার্শনিক, সামাজিক কারণগুলির সংমিশ্রণ থেকে উদ্ভূত হয়, যা এর উত্থান এবং স্থায়িত্বে অবদান রাখে। এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষাণাবেক্ষণে অবদানকারী কিছু মূল কারণ রয়েছে। এগুলি হল-
(i) আলোকদ্বীপ্ত ধারণার উদ্ভব: ১৭ এবং ১৮ শতকে আলোকদীপ্তির সময়কালে জন লক্, জ্যাঁ জ্যাক্ রুশো এবং মন্তেস্কু-এর মতো দার্শনিকরাও প্রাকৃতিক অধিকার, সামাজিক চুক্তি তত্ত্ব এবং ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিগুলির সম্পর্কে বলেছিলেন। এই ধারণাগুলি শাসিতের সম্মতি, আইনের সমতা এবং ব্যক্তির অধিকারের সুরক্ষার উপর জোর দিয়ে, গণতান্ত্রিক শাসনে জ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
(ii) গণতান্ত্রিক বিপ্লব: আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৭৭৬ খ্রি.)-এর সময় আমেরিকার উপনিবেশগুলি ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের জন্য লড়াই করেছিল, যার ফলে পরবর্তীকালে আমেরিকায় প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার সুরক্ষার মতো গণতান্ত্রিক নীতিগুলির উপর ভিত্তি করে একটি সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঐক্যবদ্ধ – রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পরবর্তীকালে ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯ খ্রি.) জনপ্রিয় সার্বভৌমত্ব, সাম্য, স্বাধীনতা এবং নাগরিক অধিকারের ভিত্তিতে রাজতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল, যা ভবিষ্যতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথকে ত্বরান্বিত করেছিল।
(iii) শ্রমিক আন্দোলনের প্রভাব: শ্রমিক আন্দোলন এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলি রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব, শ্রমিকদের অধিকার এবং সামাজিক সংস্কারের জন্য দাবি জানাতে থাকে। তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল ভোটাধিকার সম্প্রসারণের মাধ্যমে সকলের রাজনৈতিক অধিকারকে সুনিশ্চিত করা এবং গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণকে বৃদ্ধি করা। শ্রমিক সংগঠনগুলির এই দাবি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছিল।
(iv) নাগরিক অধিকার আন্দোলনের প্রভাব: স্বাধীন গণমাধ্যম, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (NGO) এবং তৃণমূল স্তরের আন্দোলন-সহ শক্তিশালী পৌর সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলি গণতান্ত্রিক সংস্কার দ্বারা নাগরিকদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করে এবং সরকারকে দায়বদ্ধ থাকতে বাধ্য করে। চরম সাম্যবাদ, নারীর অধিকার, আদিবাসী অধিকার এবং এল জি বি টি (LGBT) অধিকার আন্দোলনে প্রান্তিক গোষ্ঠিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গণতান্ত্রিক নীতিগুলি প্রসারিত হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমতাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
(v) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন: নিয়মিত নির্বাচন নাগরিকদের তাদের প্রতিনিধি চয়ন করতে, রাজনৈতিক পছন্দ প্রকাশ করতে সাহায্য করে এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধ থাকতে বাধ্য করে, যা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য উপাদান হিসেবে গণ্য হয়।
(vi) মধ্যবিত্তাশ্রণির সম্প্রসারণ: অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং মধ্যবিত্তের উত্থান ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব, সম্পত্তির অধিকারের সুরক্ষা এবং দায়বদ্ধতামূলক শাসনের সাথে জড়িত, যা গণতন্ত্রের উত্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
(vii) শিক্ষা ও স্বাক্ষরতা: উচ্চস্তরের শিক্ষা ও স্বাক্ষরতা নাগরিকদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে, সিদ্ধান্ত নিতে এবং রাজনৈতিক সমালোচনা করতে সাহায্য করে।
(viii) আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রভাব: মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক শাসন তথা আইনের শাসনের প্রচারকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা, চুক্তি এবং তাদের নিয়মগুলি গণতান্ত্রিক সংস্কারসমূহ এবং গণতান্ত্রিক নীতিসমূহকে সমুন্নত রাখার জন্য দেশগুলির উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে।
(ix) কুটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক : বাণিজ্য, কূটনীতি ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রগুলির যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তার ভিত্তিতেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বৈধতা অর্জনের জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কার গ্রহণ করতে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা উৎসাহিত হয়।
(x) দায়িত্বশীল নেতৃত্ব: রাজনৈতিক নেতারা, যারা তাদের নাগরিকদের চাহিদা এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল, নিজেদের সম্পাদিত কর্মের জন্য দায়বদ্ধ, গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গঠন করতে ও তা টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(xi) কর্তৃত্ববাদী উত্তরণ: স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত দেশগুলি শান্তিপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে অথবা জনপ্রিয় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রায়শই গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে, রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে উন্নত করতে এবং মানুষের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়।
5. ব্যাপক ও সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে কী বোঝায়? গণতন্ত্রের সর্বাধুনিক সংজ্ঞাগুলি আলোচনা করো?
Ans: ব্যাপক ও সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে কী বোঝায়? গণতন্ত্রের সর্বাধুনিক সংজ্ঞাগুলি আলোচনা করো
ব্যুৎপত্তিগত অর্থে গণতন্ত্র বলতে জনগণের শাসনকে বোঝানো হয়। তবে তত্ত্বগত পর্যালোচনায় গণতন্ত্র শব্দটিকে ব্যাপক ও সংকীর্ণ এই দুই অর্থে ব্যবহার করা হয়।
ব্যাপক অর্থে গণতন্ত্র :
ব্যাপক অর্থে গণতন্ত্র বলতে এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝানো হয় যেখানে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাম্য ও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত থাকে। এইরূপ শাসনব্যবস্থায় নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র, জ্ঞানী-মূর্খ সকলেই সমান অধিকার লাভ করতে পারে। এখানে যে-কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণকে অস্বীকার করা হয়। সি ডি বার্নসের মতে, একটি আদর্শ হিসেবে গণতন্ত্র হল এমন একটি সমাজব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি মানুষ সামাজিক দিক থেকে ভিন্ন পর্যায়ভুক্ত হলেও এক অর্থে তারা অভিন্ন সামাজিক মর্যাদার অধিকারী। অর্থাৎ সমাজের সকল নাগরিকই অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য অঙ্গ। *1
সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র :
সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে গণতান্ত্রিক সরকার বা শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়। এই ধরনের শাসনব্যবস্থায় জনসাধারণ প্রত্যক্ষভাবে কিংবা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। তাই সংকীর্ণ গণতন্ত্র বলতে অনেকেই জনগণের শাসনকে বুঝিয়েছেন। অধ্যাপক ডাইসির ভাষায় বলা যায়, যে শাসনব্যবস্থায় তুলনামূলকভাবে জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের হাতে শাসনক্ষমতা ন্যস্ত থাকে, তাকে গণতন্ত্র (Democracy) বলে অভিহিত করা যায়। এককথায় সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে রাষ্ট্রপরিচালনার এক বিশেষ পদ্ধতিকে বোঝায়। এইরূপ ব্যবস্থায় সমাজের সকল ব্যক্তির কাছে রাজনৈতিক সাম্যের দাবি উন্মুক্ত থাকে, অর্থাৎ গণতন্ত্র হল রাষ্ট্রপরিচালনার এক বিশেষ পদ্ধতি।
গণতন্ত্রের সর্বাধুনিক সংজ্ঞা :
আধুনিক গণতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করেছে ইংল্যান্ডের মহাসনদ বা ম্যাগনা কার্টা (১২১৫ খ্রি.), গৌরবময় বিপ্লব (১৬৮৮ খ্রি.), আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ (১৭৭৫ ১৭৮৩ খ্রি.) এবং ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯ খ্রি.) ইত্যাদি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি।
ম্যাকইভার, বার্কার-সহ হারবার্ট স্পেনসার, হবহাউস, গ্রিন, ল্যাক্সি প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীও গণতন্ত্রকে সংকীর্ণতা মুক্তভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন। অন্যদিকে, আধুনিক কয়েকজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের দেওয়া গণতন্ত্রের সর্বাধুনিক সংজ্ঞা নিম্নে আলোচনা করা হল-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জোসেফ শ্যুমপিটার: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জোসেফ শ্যুমপিটার মনে করেন, গণতন্ত্র হল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শাসক প্রতিনিধি নির্বাচনের এক ব্যবস্থা।
অধ্যাপক জি সি ফিন্ড: অধ্যাপক জি সি ফিল্ড বলেন যে, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা হল সেই শাসনব্যবস্থা যেখানে জনসাধারণ সক্রিয়ভাবে সরকারের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়।
রবার্ট ডাল: রবার্ট ডাল মনে করেন, গণতন্ত্র হল বিভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা বা সমন্বয়সাধনের একটি প্রক্রিয়া (“Democracy is an understanding process among different pressure groups.”)।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কার্ল পপার: কার্ল পপার মনে করতেন, গণতন্ত্র হল এমন কতগুলি প্রতিষ্ঠানের সমষ্টি, যার মাধ্যমে জনগণ শাসকশ্রেণিকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনানুসারে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্লামেনাজ: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্লামেনাজ মনে করেন, শাসিতের দ্বারা স্বাধীনভাবে নির্বাচিত ও তাদের দ্বারা গঠিত শাসনব্যবস্থাই গণতন্ত্র রূপে পরিচিত হয়। এইরূপ শাসনব্যবস্থায় শাসক জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে।
জন স্টুয়ার্ট মিল: জন স্টুয়ার্ট মিল মনে করেন, রাষ্ট্রে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগে সকলের প্রবেশাধিকারই হল গণতন্ত্র।
Class 11th All Semester Question and Answer – একাদশ শ্রেণীর সমস্ত সেমিস্টার প্রশ্নউত্তর
আরোও দেখুন:-
Class 11 All Subjects 1st Semester Question and Answer Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 All Subjects 2nd Semester Question and Answer Click here
Class 11 Suggestion 2025 (Old) – একাদশ শ্রেণীর সাজেশন ২০২৫
আরোও দেখুন:-
Class 11 Political Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 English Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Geography Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 History Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Political Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Education Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Philosophy Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Sociology Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 Sanskrit Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Class 11 All Subjects Suggestion 2025 Click here
একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 11th Political Science Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
FILE INFO : সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer with FREE PDF Download Link
PDF File Name | সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer PDF |
Prepared by | Experienced Teachers |
Price | FREE |
Download Link | Click Here To Download |
Download PDF | Click Here To Download |
সরকারের বিভিন্ন রূপ – অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography]
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
Class 11 Political Science Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Eleven XI (Class 11th) Political Science Question and Answer Suggestion
” সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Eleven XI / WB Class 11 / WBCHSE / Class 11 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB Class 11 Exam / Class 11th / WB Class 11 / Class 11 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন / একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Political Science Suggestion / Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer / Class 11 Political Science Suggestion / Class-11 Pariksha Political Science Suggestion / Political Science Class 11 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / Class 11 Political Science Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (Class 11 Political Science Suggestion / West Bengal Eleven XI Question and Answer, Suggestion / WBCHSE Class 11th Political Science Suggestion / Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer / Class 11 Political Science Suggestion / Class 11 Pariksha Suggestion / Class 11 Political Science Exam Guide / Class 11 Political Science Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / Class 11 Political Science Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Political Science Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
সরকারের বিভিন্ন রূপ – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
সরকারের বিভিন্ন রূপ – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | সরকারের বিভিন্ন রূপ – Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
সরকারের বিভিন্ন রূপ – SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান
সরকারের বিভিন্ন রূপ – SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | সরকারের বিভিন্ন রূপ – Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – প্রশ্ন উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Question and Answer, Suggestion
একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – | পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহায়ক – সরকারের বিভিন্ন রূপ – বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer, Suggestion | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Notes | West Bengal Class 11th Political Science Question and Answer Suggestion.
একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE Class 11 Political Science Question and Answer, Suggestion
একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | সরকারের বিভিন্ন রূপ – । Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion.
WBCHSE Class 11th Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Suggestion | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ –
WBCHSE Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Suggestion একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । সরকারের বিভিন্ন রূপ – | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Suggestion একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestions | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Suggestion | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – সাজেশন
Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – সরকারের বিভিন্ন রূপ – সাজেশন । Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal Class 11 Political Science Suggestion Download WBCHSE Class 11th Political Science short question suggestion . Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Suggestion download Class 11th Question Paper Political Science. WB Class 11 Political Science suggestion and important question and answer. Class 11 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 11 Political Science Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Eleven XI Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Exam
Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Eleven XI Political Science Suggestion is provided here. Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.
সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” সরকারের বিভিন্ন রূপ – একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Political Science Sarkarer Bibhinno Rup Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।